ইনসাইড বাংলাদেশ

কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত

প্রকাশ: ১২:৩৩ পিএম, ৩০ জুলাই, ২০২২


Thumbnail কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত

“পদ্মা সেতুর দার্শনিক ভিত্তি এবং কমিউনিটি ক্লিনিক” শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৩০ জুলাই) বেলা সোয়া ১১ টায় মহাখালীর বিএমআরসি ভবনে এই গোলটেবিল আলোচনা শুরু হয়।

আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট এর সভাপতি অধ্যাপক ডা: সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন পরিপ্রেক্ষিতের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীর।

আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্ন শুধু দেখেন না, স্বপ্ন দেখান। নিজেও দেখেন এবং মানুষকেও দেখান। সেই স্বপ্ন আর স্বপ্ন থাকে না বাস্তবায়ন করেই তিনি দেখান। তার অন্যতম উদাহরণ পদ্মা সেতু।

তিনি বলেন, তিনি শুধু স্বপ্ন দেখেন নি, বাস্তবায়ন করে দেখিয়ে দিলেন যে, পদ্মা সেতু কিভাবে করা সম্ভব। সারা পৃথিবীতে আমাজান নদীর পরেই খরস্রোতা ভয়াবহ একটি নদী হলো পদ্মা। সেই তিনি বাস্তবায়ন করেছেন। শেখ হাসিনার দর্শনের মূল শক্তিই হলো দেশপ্রেম, দেশের উন্নয়ন, মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন।

আলোচনায় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেনিং ইনিষ্টিটিউট এর পরিচালক নাহিদ ফেরদৌসি বলেন, পদ্মা সেতু হওয়ার ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা পাবে। 

তিনি বলেন, পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে রাজধানীদে যাতায়াতের সময় প্রায় ২-৬ ঘণ্টা হ্রাস করেছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা বা দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া সবকিছুকে দূরে ঠেলে মাত্র ১০ মিনিটে প্রমত্তা পদ্মা পারি দিতে সহায়তা করছে। অনেক মানুষ পাচ্ছে পুনঃজীবন। 

তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতুর রূপকার হিসেবে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ধ্রুব নক্ষত্রের মতো জ্বলজ্বল করতে থাকবেন ইতিহাসে। 

আলোচনায় মূল প্রবন্ধে পরিপ্রেক্ষিতের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীর বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সেবার এক বৈপ্লবিক মডেল। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে দেশের সকল মানুষকে প্রাথমিক, মৌলিক এবং মানসম্মত স্বাস্থ্য সেবার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশী উপকৃত হয়েছেন পিছিয়ে পরা, সুবিধা বঞ্চিত, বৈষম্যের শিকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠী।

তিনি বলেন, আলোচনার শুরুতেই আমি কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাষ্টকে ধন্যবাদ জানাতে চাই গোলটেবিল বৈঠকের জন্য এরকম একটি তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় নির্বাচনের জন্য। আজকের বিষয়বস্তুতে তিনটি জিনিস একত্রিত করা হয়েছে। পদ্মা সেতু, দার্শনিক ভিত্তি এবং কমিউনিটি ক্লিনিক। একটি রাষ্ট্রের বিকাশের অন্যতম অনুষঙ্গ হলো উন্নয়ন। উন্নয়ন বিহীন একটি রাষ্ট্র ব্যর্থ এবং অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিনত হয়। আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় উন্নয়ন সহজ সরল কোন সমীকরণ নয়। উন্নয়ন একটি রাষ্ট্রের চেহারা, চরিত্র এবং বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ। একটি রাষ্ট্র কার দ্বারা কিভাবে পরিচালিত হচ্ছে। সেই রাষ্ট্রে জনগনের হিস্যা বা মালিকানা কতটা তা বোঝা যায় উন্নয়নের  ধরন থেকে। অগনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে উন্নয়ন হয় ব্যক্তি বা গোষ্ঠী স্বার্থে আর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উন্নয়নের মূল লক্ষ্য হন সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ। একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বেশীর ভাগ মানুষ যেন তার সুফল ভোগ করে, এটিই সুশাসনের একটি লক্ষন। যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গত এক দশকে যে উন্নয়ন হয়েছে তার সুবিধা পেয়েছে মাত্র ১০ ভাগ জনগন। ৯০ ভাগ জনগোষ্ঠী উন্নয়নের কোন সুফল পায়নি। রাষ্ট্র ক্ষমতার নিয়ন্ত্রক বড় বড় কর্পোরেট হাউস গুলোকে সুবিধা দিতেই উন্নয়ন নক্সা তৈরী করা হয়েছে। কাতার, কুয়েত এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের উন্নয়ন গুলো যদি বিশ্লেষন করা যায় তাহলে দেখা যাবে মুষ্টিমেয় ধনী গোষ্ঠীর জন্যই রাষ্ট্র প্রায় সব উন্নয়ন করছে। তাই একটি উন্নয়নের ধারা দেখলেই বোঝা যায় রাষ্ট্র ক্ষমতায় কারা আছেন। সরকার আসলে কাদের স্বার্থ দেখছে। কোন নাগরিকের প্রতিনিধিত্ব করছে। কাজেই যেকোন উন্নয়নের একটি দার্শনিক ভিত্তি আছে। এই দার্শনিক ভিত্তি জানা জরুরী রাষ্ট্রের শ্রেনী চরিত্র বোঝার জন্য। প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে উন্নয়নের দার্শনিক ভিত্তি হবে জনগনের স্বার্থ রক্ষা, জনকল্যান। একটি সরকার যতো বেশী দরিদ্র বান্ধব উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে, সেই সরকার ততো বেশী জনগনের। একটি সরকার যখন তার উন্নয়ন পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে, সিংহভাগ জনগনের আকাংখা এবং চাহিদা বিবেচনা করে তখন সেই সরকারকে প্রকৃত অর্থে জনগনের সরকার বলা যায়।

তিনি আরও বলেন, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যে জনগনের সরকার তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ পদ্মা সেতু এবং কমিউনিটি ক্লিনিক। শেখ হাসিনার সরকার যে বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ চায় তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো পদ্মা সেতু এবং কমিউনিটি ক্লিনিক। বঙ্গবন্ধু কন্যার সরকার যে জনগনের ক্ষমতায়ন বিশ্বাস করে তার প্রমাণ পদ্মা সেতু এবং কমিউনিটি ক্লিনিক।

সৈয়দ বোরহান কবীর বলেন, পদ্মা সেতু এবং কমিউনিটি ক্লিনিক দুটি ভিন্ন ধারার উন্নয়ন উদ্যোগ। পদ্মা সেতু একটি অবকাঠামো। দেশীয় অর্থায়নে এই সেতু বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রতীক। পদ্মা সেতু আমাদের গর্ব। অহংকার। কিন্তু কার জন্য এই পদ্মা সেতু? এই পদ্মা সেতু বৈষম্যের শিকার দক্ষিনাঞ্চলের জনগনের জন্য উন্নয়নের দুয়ার। এর মাধ্যমে সবচেয়ে বেশী উপকৃত হয়েছেন প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। পদ্মা সেতু বৈষম্যের শিকার, পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠীর জন্য সামনে এগিয়ে যাওয়ার সেতু। অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার প্রতীক। দেশের সিংহভাগ জনগোষ্ঠী সরাসরি ভাবে পদ্মা সেতুর মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছে। তাদের জীবন, জীবিকা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং আর্থ সামাজিক উন্নয়নের সুযোগ পাচ্ছে। এটি কেবল একটি আধুনিক দৃষ্টি নন্দন স্থাপত্য শৈলী না জনগনের উন্নয়নের জীয়ন কাঠি। 

অন্যদিকে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সেবার এক বৈপ্লবিক মডেল। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে দেশের সকল মানুষকে প্রাথমিক, মৌলিক এবং মানসম্মত স্বাস্থ্য সেবার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশী উপকৃত হয়েছেন পিছিয়ে পরা, সুবিধা বঞ্চিত, বৈষম্যের শিকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠী।

তিনি আরও বলেন, লক্ষ্য করুন, পদ্মা সেতু এবং কমিউনিটি ক্লিনিক শেষ পর্যন্ত এসে অভিন্ন লক্ষ অর্জনে এক বিন্দুতে মিলিত হয়েছে। এই দুই উদ্যোগের মাধ্যমে রাষ্ট্রের মালিকানা যে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর তা প্রমাণিত হয়েছে। এই দুই উদ্যোগেই বৈষম্য বিলোপের ক্ষেত্রে মাইলফলক। পদ্মা সেতু এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের দার্শনিক ভাবনা এক এবং অভিন্ন। বৈষম্য মুক্ত, দারিদ্রমুক্ত, সবার সোনার বাংলা বির্নিমানের দুটি পিলার। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, দেশের সরকার প্রান্তিক মানুষের স্বার্থ সংরক্ষন করে। গরীব মানুষের উন্নয়ন চায়। এই সরকার জনগনের সরকার। প্রশ্ন হলো, পদ্মা সেতু এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মতো উদ্যোগ দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কেন নিলেন? কিংবা আরো সহজ করে বললে, কেন শেখ হাসিনার উন্নয়ন ভাবনা প্রান্তিক, বৈষম্যের স্বীকার জনগনের ভাগ্য পরিবর্তনের আকাংখা আচ্ছন্ন। এর কারণ হলো শেখ হাসিনার রাষ্ট্র চিন্তা দর্শন। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা তার রাষ্ট্র চিন্তা দর্শন নিয়ে সব সময় স্পষ্ট এবং খোলামেলা কথা বলেন। বিশ^নেতার রাষ্ট্র চিন্তা দর্শন হলো, ‘জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ। জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ বির্নিমাণ।’ তাই শেখ হাসিনার দার্শনিক ভিত্তি বুঝতে হলে আমাদের জাতির পিতার স্বপ্নের কথা জানতেই হবে। জাতির পিতা চেয়েছিলেন একটি স্বাধীন সার্বভৌম, আত্ম মর্যাদাশীল স্বনির্ভর বাংলাদেশ। তিনি তার জীবন উৎসর্গ করেছেন বাঙালীর মুক্তির জন্য, বৈষম্যের বিরুদ্ধে, দারিদ্রের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। ‘সোনার বাংলা’ হলো বঙ্গবন্ধুর সব স্বপ্নের  পরিণতির নাম। বাংলাদেশের কাঙ্খিত ঠিকানার নাম। সোনার বাংলা অর্থ সাম্যের বাংলাদেশ, সব মানুষের বাংলাদেশ। সুখী সমৃদ্ধ দেশ। এজন্যই তার নেতৃত্বে ‘বাংলাদেশ’ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটেছিল। ত্রিশ লাখ রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছিলাম স্বাধীনতা। কিন্তু ৭৫ এর ১৫ আগষ্ট জাতির পিতার স্বপ্নের যাত্রা হোচট খায়। বাংলাদেশের অস্তীত্ব সংকটে পরে। আবার এদেশকে পাকিস্তান বানানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রটি হয়তো এতোদিন থাকতো না যদি না ১৯৮১ তে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিয়ে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন না করতেন। ১৯৭৫ এর পর থেকে শেখ হাসিনা একটি লক্ষ্যে অবিচল হেটেছেন। তা হলো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ বির্ণিমান। তার এই ক্লান্তিহীন সংগ্রামে অনেক প্রতিকূলতাকে জয় করতে হয়েছে, অনেক বাধা এসেছে, ষড়যন্ত্র হয়েছে, তার জীবন হুমকির মুখে পরেছে। কিন্তু সব কিছুকে মারিয়েই তিনি আজ সূর্যের মতো দীপ্তমান। পদ্মা সেতু হলো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বন্দরে নোঙ্গরের সেতু। আর কমিউনিটি ক্লিনিক হলো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকারের প্রতীক। সব মানুষের জন্য স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার যে স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক তার অনবদ্য বাস্তবায়ন। পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে জনগণের টাকায়। কমিউনিটি ক্লিনিকের জমিটিও জনগণের। দুটি মালিকই এদেশের জনগণ।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার উন্নয়নের দার্শনিক ভিত্তির নিপুন বাস্তবায়ন পদ্মা সেতু এবং কমিউনিটি ক্লিনিক। এই দুটি প্রমাণ করেছে, এই রাষ্ট্র সব মানুষের। জনগণের। মুষ্টিমেয় সুশীল নয়, রাষ্ট্রের মালিক আসলে সিংহভাগ খেটে খাওয়া জনগণ। শেখ হাসিনা তাদের নেতা।

কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক ডা: সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেনিং ইনিষ্টিটিউট এর পরিচালক নাহিদ ফেরদৌসি, কমিউনিটি গ্রুপ এন্ড কমিউনিটি সার্পোট গ্রুপ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট এর ন্যাশনাল কোঅর্ডিনেটর শাহানা পারভীন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা: এ.বি.এম আবদুল্লাহ।

কমিউনিটি ক্লিনিক   গোলটেবিল   আলোচনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

অভিনব কায়দায় নিয়োগ বাণিজ্য, জমির বদলে চাকরি

প্রকাশ: ১১:১৯ এএম, ০৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় ২৪ শতক সম্পত্তির বিনিময়ে একটি বিদ্যালয়ে বিভিন্ন পদে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।

 

উপজেলার নান্দিনা মধু উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক ও আয়া পদে এই নিয়োগ বাণিজ্য হয়। এতে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আনোয়ার হোসেন ম্যানেজিং কমিটিকে বোকা বানিয়ে তিনি এই নিয়োগ বাণিজ্য করেন।

 

নিয়োগ পরিক্ষার ফলাফলে দেখা যায় অফিস সহায়ক পদে মোঃ ইউসুফ আলী ও আয়া পদে মোছাঃ আকলিমা খাতুন নির্বাচিত হয়েছেন। তবে পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে থেকই জানা ছিলো এ দুজন নির্বাচিত হবেন।

 

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আগে থেকেই তাদের নির্বাচিত করা হয়েছিলো। নিয়োগ পরীক্ষা শুধুমাত্র একটি লোক দেখানো বিষয়।

 

বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই নিয়োগ পরীক্ষার জন্য পূর্বেই মিটিং করা হয়েছিল। যারা নিয়োগ পাবে তাদেরই বিদ্যালয়ের পাশে ২৪ শতক সম্পত্তি কিনে দিতে হবে অথবা সমপরিমাণ টাকা দিতে হবে।’

 

সহকারি কমিশনার (ভূমি') ইশরাত জাহান সাংবাদিকদের এড়িয়ে বলেন, ‘আমি নিয়োগ কমিটির সদস্য। এবিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবোনা।’

এরপর ডিজির প্রতিনিধি, উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে নিয়ে সহকারি কমিশনান (ভূমি) নিজ গাড়িতে করে দ্রুত চলে যান। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর গাড়িতে চলমান থাকতে থাকতে তারা তোয়াক্কাও করেন না।


নিয়াগ বাণিজ্য   জমির বদলে চাকরি   প্রধান শিক্ষক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কুড়িগ্রামে বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে দুই বোনসহ ৩জনের মৃত্যু

প্রকাশ: ১০:৫৯ এএম, ০৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা থানা এলাকায় পৃথক ঘটনায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই বোনসহ তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

 

শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। কচাকাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিশ্বদেব রায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তিনজনের মরদেহ পরিরারের কাছে দেয়া হয়েছে। এবিষয়ে পৃথক অপমৃত্যুর মামলা করা হবে।

 

নিহতরা হলেন, উপজেলার কালিগঞ্জ ইউনিয়নের বেগুনী পাড়া গ্রামের শাহাদাৎ হোসেনের দুই মেয়ে সুমাইয়া (১১), মাছুমা (৬) এবং নারায়নপুর ইউনিয়নের ব্যাপারী পাড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহমান মুন্সির ছেলে সিরাজুল ইসলাম।

 

কচাকাটা থানার পুলিশ জানায়, শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সুমাইয়া ও মাছুমা কলাগাছের ভেলা নিয়ে বাড়ির পাশে খালার বাড়িতে রওনা দেয়। এসময় বাড়ির অদূরে তাদের সেচ পাম্পের টাঙ্গানো বিদ্যুতের তারে দুই বোনের গলা আটকে যায়। এতে বিদ্যুস্পৃষ্ট হয় ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

অপর দিকে প্রায় একই সময় নারায়ণপুর ইউনিয়নের ব্যাপারীপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম ভেলাযোগে পাশের বাড়িতে যাওয়ার সময় ভেলার লগি বিদ্যুৎ সরবরাহের মেইন লাইনের তারে লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তারও মৃত্যু হয়।


বিদ্যুৎস্পৃষ্ট   মৃত্যু   আপন বোন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত

প্রকাশ: ১০:১৬ এএম, ০৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি বৃদ্ধিতে যমুনার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ফুলজোড়, ইছামতি, করতোয়া নদীসহ প্রায় সব নদ-নদীর পানিও বাড়ছে। এতে জেলার ৫টি উপজেলার ১ হাজার ২৭৬ পরিবারের সাড়ে ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। 

 

এদিকে গত ১২ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহরের হার্ডপয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার ও কাজিপুরের মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। 

 

এতে প্রতিদিনই নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের অনেকেই। একই সঙ্গে চরাঞ্চলের ৪০০ হেক্টর ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। 

 

শনিবার (৬ জুলাই) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

 

জানা যায়, হু হু করে যমুনায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার চরাঞ্চলের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব অঞ্চলের শত শত পরিবার। তলিয়ে গেছে আবাদি জমি, রাস্তাঘাট ও বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বন্যাকবলিত মানুষগুলো বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে শুরু করেছেন। 

 

এদিকে, সদর উপজেলার কাওয়াকোলা, শাহজাদপুরের হাটপাচিল ও কাজিপুরের খাসরাজবাড়িতে চলছে নদীভাঙন। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এ এলাকায় শত শত বাড়ি-ঘর যমুনায় বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও হুমকির মুখে রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারী বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান।'

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবুল কুমার সূত্রধর জানান, বন্যার পানিতে জেলার ৪০৮ হেক্টর জমির পাট, তিল, কলা ও মরিচ ক্ষেত প্লাবিত হয়েছে। এখনও ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা যায়নি।'

 

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, সর্বশেষ জেলার ৫টি উপজেলার ১ হাজার ২৭৬টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে। ৫০০ মেট্রিক টন চাল আর ১০ লাখ টাকা মজুদ আছে। সময়মতো সেগুলো বিতরণ করা হবে।'

 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান জানান, কয়েকদিন ধরেই যমুনার পানি দ্রুতগতিতে বেড়েছে'। ইতোমধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। আগামী ২-৩ দিন ধীরগতিতে পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। জেলার ভাঙনকবলিত এলাকাগুলোয় জিওটিউব ও জিওব্যাগ ডাম্পিং করে ভাঙন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে। 

 

পানি বাড়লেও এ মৌসুমে বড় ধরনের বন্যা না হলেও মাঝারি বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।'


বন্যা পরিস্থিতি   যমুনার পানি   বৃদ্ধি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

জামালপুরে কমছে যমুনা নদীর পানি

প্রকাশ: ০৯:৫২ এএম, ০৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

জামালপুরে যমুনা নদীর পানি শনিবার ( জুলাই) সকাল থেকে কমতে শুরু করেছে। তবে পানি কমলেও তা বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় যমুনাতীরে নিম্নাঞ্চলে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে রয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৫০ হাজার মানুষ।

শনিবার ( জুলাই) সকাল ৬টায় যমুনা নদীর বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে সেন্টিমিটার পানি কমে বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

জানা যায়, যমুনার পানি বেড়ে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার সদর ইউনিয়ন, চিনাডুলী, পাথর্শী, সাপধরী, বেলগাছা, কুলকান্দি, নোয়ারপাড়া, পলবান্দা, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়ন, চিকাজানী, চুকাইবাড়ী, বাহাদুরাবাদ, চর আমখাওয়া, ডাংধরা, পাররামরামপুর, হাতিভাঙ্গা, পৌরসভার, মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া, আদ্রা, মাহমুদপুর, নাংলা, কুলিয়া, মাদারগঞ্জ উপজেলার চরপাকেরদহ জোড়খালী ইউনিয়নের এলাকা প্লাবিত হয়। এতে ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে।


জামালপুর   যমুনা   নদী   পানি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধায় তিন শতাধিক স্কুল-কলেজে বন্যার পানি

প্রকাশ: ০৯:৪৪ এএম, ০৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

পাহাড়ি ঢল আর কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় অনেক পরিবার বিপাকে পড়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র উঁচু স্থানে ছুটছে মানুষ। পানি উঠে যাওয়ায় কুড়িগ্রাম গাইবান্ধায় তিন শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলাসহ সব নদ-নদীর পানি আরও বেড়েছে। এতে জেলার ২৫৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এগুলোর মধ্যে ১৪০টিতে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ।

জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখা এবং জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে ১৪৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিবন্দী হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৩৭টিতে শ্রেণি পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। দুটি বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মাধ্যমিক পর্যায়ের ১০৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। এসবের মধ্যে বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল ৭১টি এবং মাদ্রাসা ৩২টি। চিলমারী রাজিবপুরে তিনটি বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ছাড়া রৌমারী রাজিবপুর এলাকায় ছয়টি কলেজে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

গাইবান্ধার ৪টি উপজেলার ২৭টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার পরিবার। নদীতীরবর্তী ৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

গতকাল দুপুরে জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ব্রহ্মপুত্র যমুনার চরাঞ্চলের ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। অনেক টিনশেড ঘর বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। অনেকে নৌকায় করে ঘরের জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। জমিতে পানি আটকে বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলায় পাঠদান বন্ধ থাকা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাদ্রাসা।


কুড়িগ্রাম   গাইবান্ধা   স্কুল   কলেজে   বন্যা   পানি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন