ইনসাইড বাংলাদেশ

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে বৈঠকে তিন মন্ত্রী

প্রকাশ: ০৩:২৬ পিএম, ২৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছেন তিন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা। সোমবার (২৭ মে) দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে সচিবালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 

সভায় উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এবং বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। কৃষিমন্ত্রী সভায় সভাপতিত্ব করেন।

সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শাখাওয়াত হোসেনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত রয়েছেন।

সভার শুরুতে কৃষিমন্ত্রী জানান, আরেকটি বড় উৎসব ঈদুল আজহা আসছে। এসময়ে মানুষ যাতে নিত্যপণ্য নিয়ে ভোগান্তিতে না পড়ে সেজন্য আজ এই সভা আহ্বান করা হয়েছে।

এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের সভাপতিত্বে এ সভা হয়েছিল।

দ্রব্যমূল্য   বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী   আহসানুল ইসলাম টিটু  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মৌসুমী বায়ুর প্রভাব ও পাহাড়ি ঢলে সারাদেশে বৃষ্টিপাত, বন্যা পরিস্থিতি

প্রকাশ: ১০:০১ পিএম, ০২ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সারাদেশে গত কয়েকদিনের অব্যাহত ভারী বর্ষণের ফলে বিভাগীয় ও আশ-পাশের জেলাগুলোতে জলাবদ্ধতার পাশপাশি ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। জীবনযাত্রা হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির ফলে জেলা শহর ও উপজেলাসহ আহপাশের গ্রামের সুরক্ষা বাধ ভেঙে বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যেতেও দেখা যায় এসময়।
 
সিলেট
চলমান বন্যার মধ্যেই গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ফের প্লাবিত হয়েছে সিলেট। নগরের বিভিন্ন স্থানে ইতোমধ্যেই জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুরসহ সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোয় পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে বলে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে। সোমবার (১ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টা পর্যন্ত ২৫ ঘণ্টায় সিলেটে ২৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।

এসময় সিলেট নগরের বেশ কিছু এলাকার সড়ক ও বাসাবাড়ি পানিতে তলিয়ে যায়। এছাড়াও নগরের মির্জাজাঙ্গাল, মণিপুরি রাজবাড়ি, তালতলা, জামতলা, কুয়ারপা শিবগঞ্জ, শাহজালাল উপশহর, হাওয়াপাড়া, যতরপুর, মেন্দিবাগ, তোপখানা, মজুমদারি, চৌকিদেখী, দক্ষিণ সুরমাসহ বেশ কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন নগরের বাসিন্দারা।

এদিকে সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারার ৪টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে অতিক্রম করার বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে,  সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। নদীর ওই পয়েন্টে আজ সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। এ ছাড়া কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ, শেওলা, শেরপুর ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। অন্যদিকে সারী নদীর পানি গোয়াইনঘাট পয়েন্ট দিয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।

এর আগে এ বিভাগে গত ২৮ মে থেকে ভারী বৃষ্টির ফলে প্রথম দফায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে গত ১৬ জুন থেকে আবার বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন সিলেটের বাসিন্দারা। সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমে আজ পর্যন্ত ষষ্ঠবারের মতো জলাবদ্ধ পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন সিলেট মহানগরের বাসিন্দারা।

সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জে দিনভর ভারী বৃষ্টির ফলে বন্যা পরিস্থিতির ফের অবনতি ঘটে। সোমবার (১ জুলাই) সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টি বাড়তে থাকায় উজানের পাহাড়ি ঢলের সৃষ্টি হয়। পরে সোমবার রাত ৯টায় সুরমা নদীর পানি পৌর শহরের কাছে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা যায়।

এছাড়াও সুনামগঞ্জে সোমবারের বৃষ্টিতে পাঁচটি উপজেলায় আবার নতুন করে বন্যা দেখা মিলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিতে নেমে আসে উজানের পাহাড়ি ঢল। এ কারণে সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় অনেক রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়। শহরের সুরমা নদীতীরবর্তী এলাকাগুলোতেও এসময় বন্যার পানি ঢুকে যায়। পাহাড়ি ঢলের পানি জেলার তাহিরপুর উপজেলার জাদুকাটা নদ, সীমান্তের কলাগাঁও, বড়ছড়া, লাকমাছড়া হয়ে নামতে দেখা যায়। উজানের ঢলে জেলার সদর, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিতের পাশপাশি রাস্তাঘাটও তলিয়ে যায়। এমনকি মানুষের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও পানি প্রবেশ করে।

পৌর শহরের উত্তর আরপিননগর, নবীনগর, ওয়েজখালী, মল্লিকপুর, বড়পাড়া এলাকায় সুরমা নদীর পানি তীর উপচে রাস্তাঘাট ও মানুষের বাড়িঘরের আঙিনায় প্রবেশ করেছে। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা দু-একটি স্কুলে বিকেলে কিছু পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মফিজুর রহমান এসব পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করেন বলে জানা যায়। অন্যদিকে ছাতক উপজেলা শহরের কাছেও সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা যায়।  

পাউবো সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ ও এর উজানে ব্যাপক বৃষ্টির কারণেই পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। মূলত উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বেশি বৃষ্টি হলে পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে নদী ও হাওরে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে সুনামগঞ্জে রোববার সকাল নয়টা থেকে সোমবার সকাল নয়টা পর্যন্ত ১৭০ মিলিমিটার এবং ভারতের চেরাপুঞ্জিতে একই সময়ে ৩১৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।

সুনামগঞ্জে গত ১৬ জুন থেকে বন্যার দেখা মিলে। একপর্যায়ে প্লাবিত হয় জেলার ১ হাজার ১৮টি গ্রাম। আট লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। অসংখ্য ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট এসময় প্লাবিত হয়ে যায়। ২৩ জুনের পর থেকে নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে মানুষ বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করে।

চট্রগ্রাম
বিভাগীয় শহর চট্টগ্রামে তিন দিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ইতোমধ্যে জারি হয়েছে পাহাড়ধসের আগাম সতর্কবার্তা। যদিওবা এ সতর্ককতা আমলে নিচ্ছেন না এ অঞ্চলের মানুষ। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টিতে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছেন পাহাড়ের বাসিন্দারা। এমনকি প্রশাসনের সতর্কতার দিকেও কর্ণপাত নেই স্থানীয় বাসিন্দাদের। পাহাড়ধসের আশঙ্কায় নগরের ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলোয় মাইকিং করে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করা হলেও সাড়া মেলেনি তেমন। এদিকে নগরীর লালখান বাজারের বাসিন্দাদের জন্য লালখান বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হলেও বৃষ্টির মধ্যে বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র কিংবা আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিতে যাননি।

এছাড়াও চট্টগ্রাম নগরের ২৬ পাহাড়ে বর্তমানে ৬ হাজার ৫৫৮টি ঝুঁকিপূর্ণ বসতি রয়েছে। সাড়ে ৪ হাজারের বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বসতি রয়েছে নগরের কাট্টলী ভূমি সার্কেলে। এদিকে আজ সকাল থেকে টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরের কিছু কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতায় সৃষ্টি হয়েছে। উপযুক্ত নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তাঘাটে পানি জমে যাওয়ায় এতে দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারী ও যাত্রীরা। নগরের জিইসি মোড়েও সড়কের এক পাশে হাঁটুসমান পানির দেখা মিলে।

এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের উপপ্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা মোরশেদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, জিইসি মোড়ে সিটি ব্যাংক প্রান্ত থেকে সেন্ট্রাল প্লাজা পর্যন্ত সড়কের নিচে প্রায় ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি নালা থাকায় আর এটি সড়কের নিচে অবস্থিত হওয়ায় নিয়মিত পরিষ্কার করা সম্ভব হয় না। ফলে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ জন্য পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। গত বছরেও একই অবস্থা হয়েছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার দুপুর ১২টা থেকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত) চট্টগ্রামে ৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়কে পাহাড়ধস, সাজেকে আটকা ৮ শতাধিক পর্যটক

মঙ্গলবার (২ জুলাই) ভোরের দিকে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে খাগড়াছড়ির আলুটিলার সাপমারা এলাকায় পাহাড় ধসে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এসময় সড়কের ওপর মাটি জমে থাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নৈশ কোচের যাত্রীরা বিপাকে পড়েন। এমনকি ভোগান্তিতে পড়েছেন ঢাকা ও চট্টগ্রাম যাতাযাতকারী যাত্রীরা। পরে সড়ক থেকে মাটি সরানোর কাজ শুরু করেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। এছাড়া জেলার মহালছড়ির ২৪ মাইল এলাকার সড়কগুলোও পানিতে তলিয়ে যেতে দেখা যায়। একইসঙ্গে রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কেও যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এদিকে দীঘিনালা উপজেলার মেরুং স্টিল ব্রিজ এলাকায় পাহাড়ি ঢলে খাগড়াছড়ি লংগদু সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের লিডার মো. জসিমউদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আজ সকাল সোয়া নয়টার দিকে স্থানীয় লোকজন, সড়ক বিভাগ এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মিলে সড়কের মাটি সরানোর কাজ শুরু করেন।

রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার জানান, বাঘাইছড়িতে টানা ভারীবর্ষণের ফলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় প্রায় দুই হাজার পরিবার পানি বন্দি অবস্থায় রয়েছেন। ৫৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হলেও এখনো কেউ আসেনি। আর বাঘাইহাট সড়কে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সাজেকে ৮ শতাধিক পর্যটক আটকা পড়েছেন। পানি না সরা পর্যন্ত কেউ বের হতে পারবে না বলেও জানান তিনি।

ফুলগাজী ও পরশুরাম জেলার বাঁধ ভেঙে উপজেলা প্লাবিত
তিন দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তলিয়ে গেছে ফেনীর ফুলগাজী বাজার। ফলে বাঁধের চারটি স্থান ভেঙে জেলার ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হতে দেখা যায়। সোমবার (১ জুলাই) দুপুরের পর থেকে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে স্থানীয়রা।

জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফুলগাজী উপজেলার দৌলতপুর এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের তিনটি অংশে ভাঙন শুরু হয়। এতে করে পরশুরাম উপজেলার দক্ষিণ শালধর এলাকার জহির চেয়ারম্যানের বাড়িসংলগ্ন বাঁধের একটি অংশেও ভাঙন দেখা যায়।

এ বিষয়ে ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান মো. হারুন মজুমদার বলেন, বাঁধ ভাঙনের কথা জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। লোকালয় ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা মোকাবিলায় পূর্বপ্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূঁইয়া জানান, বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে উপজেলা প্রশাসন।

ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
ফুলগাজী ও পরশুরাম জেলার বাঁধ ভেঙে উপজেলা প্লাবিতের ফলে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আজ মঙ্গলবার (২ জুলাই) পূর্বনির্ধারিত ফেনী জেলার ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করে জেলা প্রশাসক।

ফেনীতে ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পানিতে মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে  নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়ায় মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার সংবাদ মাধ্যমকে  এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে আজকের পরীক্ষা স্থগিতের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এবার ফুলগাজীতে চারটি ও পরশুরামে দুইটি কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম
ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামে হু হু করে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বিপৎসীমার কাছাকাছি রয়েছে ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি। তবে, গতকাল তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে থাকলেও আজ তা সামান্য কমে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে এসব নদনদী অববাহিকার বেশ কিছু চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়ে। তলিয়ে যায় এসব নীচু এলাকার শাক-সবজি, পাট সহ মৌসুমি ফসল। প্লাবিত এসব এলাকার বাসিন্দারা ভুগছেন বন্যা আতঙ্কে।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ৯ টার দিকে পাউবো, কুড়িগ্রামের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, গতকাল তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপরে থাকলেও গত ২৪ ঘন্টায় তা ১৫ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও ধরলার পানি তালুক শিমুলবাড়ী পয়েন্টে গত ২৪ ঘন্টায় ১২ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে অনান্য নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে গত ২৪ ঘন্টায় ৪১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৮, এছাড়াও ব্রহ্মপুত্র চিলমারী পয়েন্টে গত ২৪ ঘন্টায় ৪২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, তিস্তার পানি কিছুটা কমে বিপৎসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে স্বল্পমেয়াদী বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

শেরপুরে পাহাড়ি ঢল

দেশজুড়ে কয়েক দিনের অব্যাহত ভারী বর্ষণ এবং সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয় ও আসামের পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে শেরপুরের ঝিনাইগাতীর মহারশি নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ীর ভোগাই নদীর খালভাঙ্গা ও শ্রীবরদী উপজেলার সোমেশ্বরী নদীতেও ব্যাপকভাবে পানি বৃদ্ধির পাশপাশি দেখা যায় বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন। ফলে তিনটি উপজেলার অন্তত ৬০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

আজ মঙ্গলবার ভোরে ঝিনাইগাতী উপজেলার রামেরকুড়া, খৈলকুড়া, চতল, বনগাঁওসহ কয়েক স্থানে বাঁধ ভেঙে কমপক্ষে ১৫-২০টি গ্রাম পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঢলের পানি উপজেলা শহরের প্রধান বাজারসহ বিভিন্ন অফিস ও বাড়িতে প্রবেশ করলে বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, মহারশি নদীর ঝিনাইগাতী ব্রিজপাড় থেকে নদীর প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকা অবৈধভাবে দখল করে বসতি স্থাপন করায় নদী অনেকটা ভরাট হয়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। তারা জানান, স্ব স্ব ইউনিয়নে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পানিবন্দি মানুষের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরবর্তীতে বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে আর্থিক অনুদান ও ঢেউটিন প্রদান করা হবে।

জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুম বলেন, জেলা প্রশাসনের নজরে বিষয়টি রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার যে কোন জরুরি বিষয় মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুতির পাশপাশি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।


বন্যা   সিলেট   সুনামগঞ্জ   বাংলাদেশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

এমপি আনার হত্যার ঘটনায় দোষ স্বীকার করলেন মোস্তাফিজ

প্রকাশ: ০৯:৫৮ পিএম, ০২ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ মামলার আসামি মোস্তাফিজুর রহমান ফকির আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
 
এদিন আসামি মোস্তাফিজকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তিনি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় সেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান তার জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন।

এর আগে, গত ২৭ জুন আসামি মোস্তাফিজ ও ফয়সাল আলী শাজীর ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। আসামি ফয়সাল আলী শাজী বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছেন।

গত ২৬ জুন খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে মোস্তাফিজুর ও ফয়সালকে গ্রেফতার করে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে ডিবির একাধিক টিম। তবে আনারকে হত্যার মিশনে অংশ নেয়া সাতজনকে গ্রেফতারের দাবি করলেও, এখনও সুনির্দিষ্ট কারণ জানতে পারেনি ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিকসহ অন্যান্য কারণ আমলে নিয়েই চলছে তদন্ত।

উল্লেখ্য, ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে ভারতে যান এমপি আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গের বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন চিকিৎসক দেখানোর কথা বলে ওই বাড়ি থেকে বের হন তিনি। এরপর থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন তিনি।

পাঁচ দিন পর ১৮ মে বরাহনগর থানায় এমপি আনার নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপর আর খোঁজ মেলেনি তিন বারের এ সংসদ সদস্যের। ২২ মে হঠাৎ খবর ছড়িয়ে পড়ে, কলকাতার পাশেই নিউটাউন এলাকায় সাঞ্জীভা গার্ডেনস নামে একটি বহুতল আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে আনোয়ারুল আজিম খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া যায় রক্তের ছাপ। তবে ঘরে মেলেনি তার মরদেহ।

পুলিশের তথ্যমতে, সংসদ সদস্য আনার কলকাতা যান ১২ মে। সেখানে বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাসায় ওঠেন। পরদিন তাকে প্রলুব্ধ করে নিউটাউনের ওই ফ্ল্যাটে নেয়া হয়। তখন ওই ফ্ল্যাটে উপস্থিত ছিলেন শিলাস্তি, শিমুল, তানভীর, জিহাদ হাওলাদার, সিয়াম হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান ও ফয়সাল আলী।

পরে ২২ মে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় এমপি আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ মামলা দায়ের করেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।


এমপি আনার   আনোয়ারুল আজিম হত্যা   ডিবি   মোস্তাফিজ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

পটুয়াখালীতে প্রশ্নপত্রের ছবি তোলায় শিক্ষকের কারাদণ্ড


Thumbnail

পটুয়াখালীর বাউফলে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করে প্রশ্নপত্রের ছবি তোলার অপরাধে এক শিক্ষককে তিন মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

 

মঙ্গলবার (০২ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার কালিশুরী ইউনিয়নের পোনাহুড়া ইসলামিয়া নেছারিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

 

সাজাপ্রাপ্ত মামুনুর রশিদ ফেরদৌস (৩৯) কারখানা দারুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসার আরবী বিষয়ের শিক্ষক।

 

পরীক্ষা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, বিনা অনুমোতিতে পরীক্ষা চলাকালীন কেন্দ্রে প্রবেশ করেন শিক্ষক মামুনুর রশিদ। ওই কেন্দ্রের একটি কক্ষে গিয়ে নিজের মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নপত্রের ছবি তোলার সময় তাকে হাতেনাতে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে মামুনুর রশিদ ফেরদৌসকে তিন মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। 

 

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও এসিল্যান্ড প্রতীক কুমার কুন্ডু বলেন, পাবলিক পরীক্ষাসমূহ (অপরাধ) আইন ১৯৮০ এর ১১ ধারায় ওই শিক্ষককে তিন মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। এ সময় তার মুঠোফোনটি জব্দ করা হয়। 


প্রশ্নপত্রের ছবি   শিক্ষকের কারাদণ্ড  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

জামালপুরের মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত পলাতক আসামী গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ০৮:০৮ পিএম, ০২ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

জামালপুরে পলাতক থাকার ১০ বছর পর হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১৪।

 

আজ মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে জামালপুর শহরের ফৌজদারী মোড় এলাকা থেকে জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

 

বিকালে জামালপুর র‌্যাব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানি কমান্ডার মেজর আব্দুর রাজ্জাক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

 

তিনি জানান- ২০১৬ সালের ১ অক্টোবর রাতে সরিষাবাড়ীর মুলবাড়ি এলাকায় ইজিবাইক চুরির পর ইজিবাইকের চালক লাইজু মিয়াকে গলায় রশি পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে কয়েকজন। এই ঘটনায় নিহতের পিতা বাদি হয়ে সরিষাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করলে পুলিশ সন্দেহ জনকভাবে রুবেল মিয়া ও মনি তাহেরকে গ্রেপ্তার করে। পরে আসামিরা ১৬৪ ধারায় স্বীকারুক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ও ঘটনার বর্ণনা করেন। সেই সময় থেকেই পলাতক ছিলো জাকির হোসেন। 

 

মামলার রায় হওয়ার পর থেকেই জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালায় র‌্যাব। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় দুপুরে জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এতোদিন জাকির হোসেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন নামে অবস্থান করছিলো বলে জানায় র‌্যাব। 

গত ০৯ জুন ইজিবাইক চালক লাইজু হত্যা মামলায় জাকির হোসেনসহ আরো ৪জনকে মৃত্যু দন্ডের আদেশ দেয় আদালত।


মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী   পলাতক আসামী   গ্রেপ্তার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ফেনীর ‘দুঃখ ঘোচাতে’ টেকসই বাঁধ নির্মানের আশ্বাস

প্রকাশ: ০৭:৪৭ পিএম, ০২ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানির প্রবল চাপে ফেনীর ‍ফুলগাজী ও পরশুরামে মহুরী-কহুয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে পড়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে দুই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। তাছাড়া এঘটনায় এই দুই উপজেলার এসএসসি পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়। 

মঙ্গলবার (২ জুলাই) পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকসহ বন্যার্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন ফেনী- আসনের (ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া) সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী নাসিম। সময় ফেনীর দুঃখ হিসেবে আলোচিত মুহুরী-কহুয়া-সিলোনীয়া নদী বন্যা নিয়ন্ত্রণ টেকসই বাঁধ বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

আলাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘সকালে বন্যা দুর্গত এলাকা দেখে আসি। এরপর পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সাথে বাঁধের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখেছি। মুহুরী-কহুয়া-সিলোনিয়া নদীতে স্থায়ী টেকসই বাঁধ নির্মাণ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি। ইতোমধ্যে প্রকল্পের সমীক্ষা করা হয়েছে এবং জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে চেষ্টা করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেনটেকসই বাঁধ নির্মাণে দাপ্তরিক কাজ দ্রুততার সাথে চলছে। এই প্রকল্প ব্যয় প্রায় ৯শ কোটি টাকা হবে। এর দ্রুত বাস্তবায়ন হলে স্থায়ী সমাধান হবে। এতে মানুষের কষ্ট এবং ফসলহানি রোধ হবে।’

এর আগে সোমবার (১ জুলাই) রাতে বাঁধ ভাঙ্গার খবর পেয়ে রাতেই ঢাকা থেকে নিজ সংসদীয় আসনে যান ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন নাছিম। এবিষয়ে পরে তিনি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীকে অবহিত করলে আজ (মঙ্গলবার) বাঁধের অবস্থা সরেজমিনে দেখতে প্রতিমন্ত্রী ফেনীতে আসেন।


ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের দৌলতপুর এবং পরশুরামের শালধর এলাকায় বাঁধের ভাঙন এবং বন্যার্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে মুহুরী-কহুয়া-সিলোনিয়া নদীতে টেকসই দীর্ঘস্থায়ী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নিয়ে একটি সমীক্ষা করা হয়েছে। দুই মাসের মধ্যে প্রকল্পটি একনেকে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হবে। দ্রুততর সময়ে প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে।’

জেলা প্রশাসক শাহীন আক্তার জানান,‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত পরিস্থিতি তদারকি হচ্ছে। যেসব এলাকা প্লাবিত হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা ওইসব এলাকা পরিদর্শন করছেন। দুর্যোগ মোকাবিলায় শুকনো খাবারসহ অন্যান্য সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।’

উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার (১ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফুলগাজী উপজেলার দৌলতপুর এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের তিনটি অংশে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এতে উত্তর দৌলতপুর, দক্ষিণ দৌলতপুরসহ পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়। এছাড়া পরশুরাম উপজেলার দক্ষিণ শালধর এলাকার জহির চেয়ারম্যানের বাড়ি সংলগ্ন বাঁধের একটি অংশে বাঁধ ভেঙে দক্ষিণ শালধর, মালিপাথর, নিলক্ষ্মী, ঘোষাইপুর এবং পাগলিরকুল এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া মুহুরী নদীতে বন্যার পানিতে মাছ ধরতে গিয়ে এক যুবক প্রাণ হারিয়েছেন বলে তার স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। রাতেই মুহুরী বাঁধের একটি স্থান ভেঙে ফুলগাজী বাজার পানিতে তলিয়ে যায়। ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কে তিনফুট পানি উঠে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যে প্লাবিত লোকালয়ে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে।


বাঁধ নির্মাণ   বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত   পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন