সম্প্রতি আমেরিকান বোস্টন কনসালটিং গ্রুপের (বিসিজি) গবেষণা বলছে, বাংলাদেশে মধ্য আয় এবং বিত্ত শ্রেণির ভোক্তার সংখ্যা খুব দ্রুত বাড়ছে এবং ২০২৫ সাল নাগাদ তা মোট জনসংখ্যার ১৭ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। ফলে দেশটিতে সম্পদের বৈষম্য আরও গভীরতর হচ্ছে। এটি আমেরিকার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের সেই তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশ থেকে ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির দেশে রূপান্তরের লক্ষণ হিসেবে দেখা গেলেও ধনী-দরিদ্রদের বিভাজন খুবই সুস্পষ্ট।
সরকারি তথ্যানুযায়ী, মাত্র ১০ শতাংশ সম্পদশালীর হাতে দেশটির মোট আয়ের ৪১ শতাংশের নিয়ন্ত্রণ, যা মোটেই সমানুপাতিক নয়। বিপরীতে নিম্ন আয়ের ১০ শতাংশ মানুষের ক্ষেত্রে এটির পরিমাণ মাত্র ১.৩১ শতাংশ।
গুলশান বনাম কড়াইল বস্তি:
জমকালো অভিজাত গুলশান ক্লাবের অদূরেই শান্ত গুলশান লেক। পাশেই একটি ১৪ তলা ভবনের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। কমলা রঙের হেলমেট এবং নিরাপত্তা সুরক্ষা সামগ্রী পরিহিত নির্মাণ শ্রমিকরা ভবনটির বাইরের দেয়াল ও কাঁচে শেষবারের মতো ছোঁয়া লাগাচ্ছেন।
নামকরা রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান বিটিআই নির্মিত ভবনটি দেশটির সবচেয়ে ব্যয়বহুল আবাসিক অ্যাপার্টমেন্ট ভবন হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। এটির ১২টি অ্যাপার্টমেন্টের প্রতিটি ৭ হাজার বর্গমিটারের, যাতে রয়েছে অত্যাধুনিক সব সুযোগ সুবিধা। বায়োমেট্রিক নিরাপত্তা পদ্ধতি এবং এলিভেটর ছাড়াও আলোক বাতিগুলো কৃত্রিম বা এআই এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হবে।
নির্মাণ শুরুর আগেই ২০২১ সালে ২০ কোটি টাকা দামে সবগুলো অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি হয়ে যায়। বিটিআই চেয়ারম্যান ফয়জুর রহমান নিজেও একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেন। ভবনটির অ্যাপার্টমেন্ট কেনার জন্য ৫০ জনেরও বেশি ব্যবসায়ীর আবেদন জমা পড়ে। সেখান থেকে সতর্কতার সঙ্গে যাচাই বাছাই শেষে মালিকানা হস্তান্তর করা হয়।
বাংলাদেশে বাড়তে থাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনকারীর সংখ্যা কত, তা অজানা। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্কের মতো জমজমাট শপিংমলগুলোর সামনে ঝলমলে বিলবোর্ডে প্যাকেটজাত খাবার থেকে শুরু করে গাড়ি ও মোবাইল ফোনের বিজ্ঞাপন যেন তারই প্রমাণ।
কিন্তু বিটিআই নির্মিত ভবনটি যেন এর সবকিছুকেই ছাড়িয়ে গিয়েছে। ১৮ কোটি মানুষের দেশটিতে এই ভবনটি হাতেগোনা কিছু বিত্তশালীর কথা বলে দিচ্ছে।
এদিকে মাত্র তিন কিলোমিটারেরও কম ব্যবধানে সেই গুলশান লেকের পাশেই ঢাকার সবচেয়ে বড় কড়াইল বস্তির অবস্থান। প্রায় ৪০টি ফুটবল মাঠের সমান এই বস্তিটির পাশেই ধনাঢ্যদের বসবাস যেন একেবারেই ভিন্ন এক চিত্র। কড়াইল বস্তিতে মাত্র ১০০ বর্গফুট খুপরি ঘরে একটি পরিবারের ৪-৫ সদস্যকে একসঙ্গে গাদাগাদি করে থাকতে হয়।
যেভাবে মিলিওনেয়ারদের উত্থান:
নিউইয়র্ক ভিত্তিক রিসার্চ ফার্ম ‘ওয়েলথ-এক্স’ ২০১০ থেকে ২০১৯ সালে সম্পদের বৃদ্ধির দিক থেকে বাংলাদেশকে গ্লোবাল লিডার হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করেছে। গবেষণায় বলা হয়, বছরে ৫ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৬০ কোটি টাকা আয় বৃদ্ধি পাওয়া ব্যক্তি পর্যায়ে সম্পদশালীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে ১৪.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেটি ১৩.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভিয়েতনামকেও ছাড়িয়ে গেছে।
ওয়েলথ-এক্স এর আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির শীর্ষ ৫টি দেশের অংশ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ, যেখানে ব্যক্তি পর্যায়ে উচ্চ সম্পদশালীর সংখ্যা আগামী পাঁচ বছরে ১১ দশমকি ৪ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশেষ করে করোনা মহামারির লকডাউন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং পরবর্তীতে অর্থনীতির শ্লথ গতি বাংলাদেশের জনগণকে আরও দারিদ্র্যের মুখে ঠেলে দেয়।
বিভিন্ন সংস্থার ধারাবাহিক জরিপ প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, দরিদ্র এবং হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) কোভিড-১৯ পরবর্তী এক জরিপে দেখা গেছে, করোনা মহামারির কারণে ঢাকার প্রায় ৫১ শতাংশ মানুষ দরিদ্র থেকে চরম দারিদ্র্যের মুখে নিপতিত হয়েছেন।
এমনকি, বাংলাদেশের অষ্টম পঞ্চ-বার্ষিক পরিকল্পনায় ব্যর্থ নীতির কারণে অবিরাম বৈষম্য এবং সম্পদের সুষম বণ্টনের অভাবের বিষয়টি স্বীকার করা হয়েছে। দেশটির অর্থনীতিবিদ এমএম আকাশ এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় উদাহরণ হিসেবে কর আদায় থেকে জিডিপি অনুপাত ৯ শতাংশকে উল্লেখ করে বলেন, এটি একটি উন্নয়নশীল দেশের ১৫ শতাংশ গড়ের অনেক নীচে।
ঢাকা ভিত্তিক থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ধারাবাহিকভাবে সরকারের করপোরেট ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং ধনীদের ওপর করারোপের পরিবর্তে কর ছাড় দেওয়ার সমালোচনা করেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিস্ময়করভাবে বাংলাদেশের মোট আয়ের ৪৫-৬৫ শতাংশ করের আওতার বাইরে থেকে যাচ্ছে। এর মূল কারণ, অতি ধনাঢ্যরা তাদের সম্পদের মূল্য বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম দেখিয়ে কর ফাঁকি দেন।
বাংলাদেশের বিলিওনিয়ারের লুকোচুরি খেলা:
প্রথম বাংলাদেশি বিলিওনিয়ার হিসেবে ফোর্বসের তালিকায় স্থান করে নেওয়া বাংলাদেশের সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজিজ খান বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি ব্যবসার মাধ্যমে তার ভাগ্য গড়েছেন।
বিশ্বে ৭৬টি দেশ রয়েছে যার প্রতিটিতে অন্তত একজন বিলিওনিয়ার রয়েছে। এসব দেশের মধ্যে ৪০টির অর্থনীতিই বাংলাদেশের তুলনায় ছোট। উদাহরণ হিসেবে, চিলির অর্থনীতির কথা ধরা যাক। দেশটির অর্থনীতি বাংলাদেশের অর্থনীতির আকারের প্রায় ৭৮ শতাংশ, কিন্তু বিলিওনিয়ারের সংখ্যা মাত্র ৭ জন। একইভাবে সাইপ্রাসের অর্থনীতি বাংলাদেশের ১৫ ভাগের এক ভাগ হলেও রয়েছে ৪ জন বিলিওনিয়ার।
বাংলাদেশি সাংবাদিক রাফি আহমেদ যিনি ‘নিখোঁজ বিলিওনিয়াররা’ নামে একটি প্রতিবেদন করেন। যেখানে তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশে অনেক বিলিওনিয়ার আছেন, কিন্তু তারা তাদের সম্পদকে বিদেশে পাচার কিংবা রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় বিনিয়োগের মাধ্যমে গোপন করছেন।
এক্ষেত্রে তিনি প্যান্ডোরা পেপার্সে ১১ বাংলাদেশির নাম প্রকাশের বিষয়টি তুলে ধরেন। রাফির বিশ্বাস, বিদেশে অর্থ পাচার এবং কর ফাঁকি দেওয়ার কারণে সম্পদশালীদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘সম্ভবত একারণেই, বাংলাদেশি বিলিওনিয়াররা আন্তর্জাতিক তালিকায় দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত।’
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) নাজনীন আহমেদ উদ্বেগজনক হারে বিদেশে অর্থ পাচার এবং আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে পণ্যের দাম কম দেখানোর বিষয়টাকে তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ থেকে বিপুল সম্পদ বিদেশে পাচারের বিষয়টি বেশ আলোচিত। ২০১৭ সালে গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) প্রতিবেদনে ‘অবৈধভাবে বিদেশে অর্থ পাচারে’র কারণে স্বল্পোন্নত দেশের মধ্যে বাংলাদেশের নাম শীর্ষে উঠে আসে। সূত্র:আল জাজিরা
অর্থ পাচার বাংলাদেশি বিলিওনিয়ার
মন্তব্য করুন
জামালপুরে গ্রাহকদের নিকট থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা আমানত আত্মসাতকারী বিভিন্ন সমবায় সমিতির প্রতারকদের বিচার ও অর্থ ফেরতের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার
(২৯ জুন) দুপুরে শহরের বকুলতলা চত্বরে এই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি-দুপ্রক, ময়মনসিংহ বিভাগীয় হিউম্যান রাইটস ফোরাম ও সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখা।
এসময় বক্তারা বলেন, মাদারগঞ্জ উপজেলায় আল-আকাবা, শতদল, রূপসী বাংলা, স্বদেশ, নবদ্বীপ, রংধনু, আশার আলো, পরশমনিসহ শতাধিক সমবায় সমিতি সমবায় অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন নিয়ে বে-আইনিভাবে ব্যাংকিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এসব সমবায় সমিতির পরিচালকরা অতি মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ৫০ হাজার গ্রাহকের নিকট থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেছে।
গ্রাহকদের আমানত নিয়ে সমিতির কর্তাব্যক্তিরা দেশে-বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলে নিজেরা এখন গা-ঢাকা দিয়েছে উল্লেখ করে বক্তারা আরও
বলেন, সারাজীবনের সঞ্চিত অর্থ ফেরত না পেয়ে সমিতির ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহকরা এখন নিঃস্ব হয়ে গেছে, অভাব-অনটনে তারা চিকিৎসা, সন্তানদের পড়াশুনা ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছে না। গত এক বছর ধরে গ্রাহকদের টাকা ফেরত না দিয়ে গত ছয় মাস আগে সমিতির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে সমিতির লোকজন গা-ঢাকা দিয়েছে।
প্রশাসন এই প্রতারকদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ক্ষোভপ্রকাশ করে গ্রাহকদের টাকা ফেরত ও সমবায় সমিতির নামে অর্থ আত্মসাতকারীদের বিচারের দাবী জানান বক্তারা।
এছাড়াও মানববন্ধন থেকে দাবী আদায়ের লক্ষ্যে গণস্বাক্ষর, স্মারকলিপি প্রদান, রেল ও সড়কপথ অবরোধসহ ধারবাহিকভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সমবায় সমিতি প্রতারক বিচার দাবি মানববন্ধন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটনের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযান এনে এমপি শাহরিয়ার আলমকে দল থেকে বহিস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।
আজ শনিবার (২৯ জুন) বেলা ১১টায় রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে রাজশাহী জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিট, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ’ ৭১ ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের উদ্যোগে এ মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ রাজশাহী মহানগর ইউনিট কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাসার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসান খন্দকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. এন্তাজুল হক বাবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. সাইফুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. মতিউর রহমান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল আওয়ামী লীগের একজন অত্যন্ত পরিশ্রমি ও নিবেদিত প্রাণ নেতা ছিলেন। বাঘা দলিল লেখক সমিতির কমিটি নিয়ে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় আওয়ামী লীগ নেতা বাবুলের। এর মূল পরিকল্পনাকারী শাহরিয়ার আলম এমপি। তাকে রাজশাহী জেলা ও মহানগরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা বাবুল হত্যার বিচার চাই এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই।
এসময় বক্তারা অপপ্রচারকারী শাহরিয়ার আলমকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবী জানান।
আওয়ামী লীগ কোন্দল এমপি শাহরিয়ার আলম খায়রুজ্জামান লিটন মানববন্ধন অবাঞ্ছিত
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
রাজশাহী আওয়ামী লীগ কোন্দল আশরাফুল ইসলাম বাবুল
মন্তব্য করুন
কুড়িগ্রামে পুরাতন পোষ্ট অফিস পাড়ায় বিদ্যুতের সট সার্কিটের আগুনে পুড়ে গেছে ৯ জন মালিকের ব্যবসায়ীক মালামালসহ ১৭টি ঘর। এতে প্রায় ১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
শুক্রবার (২৮ জুন) দিবাগত মধ্যরাতে জেলা শহরের পুরাতন পোষ্টাফিস পাড়া এলাকায় শাহাজাহান মিয়ার ঘরে আগুনের সুত্রপাত হয়। পরে তা মুহুর্তেই পাশে লাগোয়া সোহেল মিয়া, মোছা: ফাতেমা বেগম, বদিউল্লাহ, কামাল মিয়া, বিপ্লব মিয়া, কহিনুর বেগম, রাবেয়া বেগম ও নুরজাহানের ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট ২ ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে।
আগুনে পুড়ে গেছে ঘরে থাকা আসবাবপত্র, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, কসমেটিকসসহ ব্যবসায়ীক মালপত্র ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী সমিত চক্রবর্তী বলেন, আমি ব্যবসায়ীক কাজ শেষ করে একটু বাহিরে গেছিলাম। পরে এসে দেখি সেচ পাম্পের মোটরটি চলছে না। তা আমি সুইস বন্ধ করে দেই। একটু পর সেচ পাম্পের ওখানে ধোঁয়া বাহির হতে দেখি পরে তাৎক্ষণিক ভাবে আগুন ছড়িয়ে পড়ে সব রুমে। পরে আমার তিনটি রুমে থাকা বিভিন্ন মালামাল, নগদ টাকা, ফ্রিজ ও ঘরে থাকা আসবাপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, আমরা ৬টি কোম্পানির সাথে ডিলার সিপের ব্যবসা ছিল। সব মালামাল পুড়ে শেষ। শুধু নিজের জীবন নিয়ে আমরা বাহির হয়ে আসছি। এখন আমরা পথে বসে গেলাম।
কামাল মিয়া নামের একজন বলেন, ‘আমার তিনটি রুমে থাকা দুইটি এলএডি টেলিভিশন, ২টি বক্সখাট, ফ্রিজ, ৭টি ফ্যানসহ রুমে থাকা সব কিছু পুড়ে শেষ। এছাড়া শুধু পড়নে থাকা পোশাক ছাড়া কিছুই উদ্ধার করতে পারি নাই।’
কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শরিফুল ইসলাম জানান, ‘ধরনা করা হচ্ছে বিদ্যুতের সট সার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়েছে। আমরা খবর পাওয়া মাত্র গিয়ে দুই ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি আমরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘৯ জন মালিকের ১৭টি ঘর পুড়ে গেছে। তবে কি পরিমান ক্ষত্রি হয়েছে তা এখনও নিরুপন করা সম্ভব হয়নি।’
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) (ইউএনও) মুশফিকুল আলম হালিম বলেন, ‘৯ ব্যক্তির ১৭টি ঘর পুড়ে গেছে। এই পরিবারগুলোর মধ্যে এক পরিবারে এসএসসি পরিক্ষার্থী তাদের মেয়ের বই, খাতা ও জামাকাপড় পুড়ে গেছে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তার সবকিছুর ব্যবস্থা করে দিয়েছি আমরা। কেন না আগামীকাল তার পরিক্ষা। এছাড়াও অন্যন্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সরকারি ভাবে সহায়তা করতে যা করনীয় তা করা হচ্ছে।’
আগুনে ভষ্মীভূত ক্ষয় ক্ষতি ফায়ার সার্ভিস
মন্তব্য করুন