এবারের ঈদুল আজহায় ঈদ ছাপিয়ে দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ‘ছাগলকাণ্ড'। আলোচিত সমালোচিত সাদিক এগ্রো থেকে ১৫ লাখ টাকায় এক তরুণের ছাগল ক্রয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হলে, পরে জানা যায় ওই তরুণ এনবিআরের সদস্য মতিউর রহমানের ছেলে। পরবর্তীতে বিষয়টি গণমাধ্যমে অনুসন্ধান শুরু হলে বেরিয়ে আসে মতিউরের বিপুল সম্পত্তি ও রত্নভান্ডারের তথ্য।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে মতিউরের এই রত্নভান্ডারের অধিকাংশই তার প্রথম স্ত্রী নরসিংদী রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ ও দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মি আখতারের নামে। এছাড়াও দেশে বিদেশে মতিউরের সন্তানদের বিলাসবহুল জীবনযাপনও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
জানা যায়, মতিউরের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চেয়ারম্যান। ২০২৩ সালে উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছাদেক মারা গেলে স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হন এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রভাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হন লায়লা কানিজ। পরবর্তীতে জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির তিনি দুর্যোগ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক হন।
তার নির্বাচনী হলফনামা থেকে জানা গেছে, তার বাৎসরিক আয় কৃষিখাত থেকে ১৮ লাখ, বাড়ি-অ্যাপার্টমেন্ট-দোকান ও অন্যান্য ভাড়া থেকে ৯ লাখ ৯০ হাজার, শেয়ার-সঞ্চয়পত্র-ব্যাংক আমানতের লভ্যাংশ থেকে ৩ লাখ ৮২ হাজার ৫০০, উপজেলা চেয়ারম্যানের সম্মানী বাবদ ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৭৫, ব্যাংক সুদ থেকে ১ লাখ ১৮ হাজার ৯৩৯ টাকা। বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার জমা রয়েছে ৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। তার কৃষিজমির পরিমান ১৫৪ শতাংশ, তার অকৃষিজমির মধ্যে রয়েছে রাজউকে পাঁচ কাঠা, সাভারে সাড়ে ৮ কাঠা, গাজীপুরে ৫ কাঠা, গাজীপুরের পুবাইলে ৬ দশমিক ৬০ শতাংশ ও ২ দশমিক ৯০ শতাংশ, গাজীপুরের খিলগাঁওয়ে ৫ শতাংশ ও ৩৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ, গাজীপুরের বাহাদুরপুরে ২৭ শতাংশ, গাজীপুরের মেঘদুবীতে ৬ দশমিক ৬০ শতাংশ, গাজীপুরের ধোপাপাড়ায় ১৭ শতাংশ, রায়পুরায় ৩৫ শতাংশ, ৩৫ শতাংশ ও ৩৩ শতাংশ, রায়পুরার মরজালে ১৩৩ শতাংশ, সোয়া ৫ শতাংশ, ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ, ২৬ দশমিক ২৫ শতাংশ ও ৪৫ শতাংশ, শিবপুরে ২৭ শতাংশ ও ১৬ দশমিক ১৮ শতাংশ, শিবপুরের যোশরে সাড়ে ৪৪ শতাংশ, নাটোরের সিংড়ায় ১ একর ৬৬ শতাংশ। তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে তিনি তার মোট সম্পত্তির মাত্র অর্ধেকেরও কম দেখিয়েছেন হলফনামায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রায়পুরা উপজেলার মারজালে নিজ এলাকার প্রায় দেড় একর জমিতে ‘ওয়ান্ডার পার্ক ও ইকো রিসোর্ট’ নামে একটি বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলেন লায়লা কানিজ। এছাড়াও মরজাল বাসস্ট্যান্ড থেকে এক কিলোমিটার দূরত্বে মতিউর রহমান ও লায়লা কানিজ লাকী দম্পতির আধুনিক স্থাপত্যের ডুপ্লেক্স বাড়ি। কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আধুনিক স্থাপত্যের বাড়িটি বেশ বিলাসবহুল।
এদিকে লায়লা কানিজ নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদে অফিস করছেন না বলে জানা গেছে। তাকে মুঠোফোনেও পাওয়া যাচ্ছে না। রোববার (২৩ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা ছিল। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল হাসানের সভাপতিত্বে সভায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অংশ নিলেও অনুপস্থিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ। পরিষদে তার কক্ষটিও তালাবদ্ধ।
অন্যদিকে, মতিউরের দ্বিতীয় স্ত্রীও কম যান না। বিভিন্ন সূত্র বলছে, এনবিআর সদস্য মতিউর রহমান দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামে। কয়েক বছর আগে সোনাগাজীতে শ্বশুরের ভিটায় শাশুড়িকে একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি বানিয়ে দেন মতিউর রহমান। প্রায়ই সেখানে মতিউর রহমানের স্ত্রী শাম্মী আখতার, তাঁদের ছেলে মুশফিকুর রহমান (ইফাত) ও মতিউরের শাশুড়ির যাতায়াত ছিল বলে এলাকার সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
এছাড়াও মতিউর রহমানের নামেও বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে অঢেল সম্পদ। ভূমি অফিসের তথ্য মতে, সাভারে ১২ দশমিক ৫৮ শতাংশ (দশমিক ৩৮ বিঘা) জমি রয়েছে। মতিউর রহমান ২০১৬ সালের ৮ অক্টোবর সাভারের বিলামালিয়া মৌজায় এই জমি কেনেন। মতিউর রহমানের নামে গাজীপুর সদরের খিলগাঁও মৌজায় ৪৯ দশমিক ৫ শতাংশ (দেড় বিঘা) জমির তথ্য পাওয়া গেছে। এগুলো ছাড়াও মতিউর রহমানের নামে ‘আপন ভুবন’ নামে গাজীপুরে পিকনিক অ্যান্ড শুটিং স্পট আছে বলে জানা যায়।
ছাগলকাণ্ড মতিউর এনবিআর স্ত্রী মতিউরের স্ত্রী অঢেল সম্পদ
মন্তব্য করুন
এনবিআরের সাবেক সদস্য ড. মতিউর রহমানের দুর্নীতি তদন্ত নিয়ে খুব ধীর গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশন এখন পর্যন্ত কেবল তার বিদেশযাত্রার উপর নিষেধাজ্ঞা এবং তার কিছু সম্পত্তি জব্দ করেছে মাত্র। কিন্তু তাকে দুর্নীতি দমন কমিশনে হাজির করা বা তার অন্যান্য সম্পদের উৎস অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে তেমন কোন উদ্যোগ এখনও দৃশ্যমান নয়। বিশেষ করে, বেনজীর আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যদের যেমন তদন্তের শুরুতেই দুদকে তলব করা হয়েছিল। ড. মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে সেটি এখন পর্যন্ত করা হয়নি। এটি কেন করা হয়নি এবং তদন্তে কেন ধীর গতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
উল্লেখ্য যে, এর আগেও দুর্নীতি দমন কমিশনের চার বার মতিউরের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হয়েছিল এবং চার বারই দুর্নীতি দমন কমিশন তাকে শ্বেত-শুভ্রতার ক্লিন শিট দিয়েছিল। আর এই কারণেই দুর্নীতি দমন কমিশন সতর্কতার সঙ্গে এই তদন্ত করছে কি না, সেটি নিয়ে কেউ কেউ ভাবছেন।
তবে অনেকেই মনে করেন যে, ড. মতিউর রহমান অনেক প্রভাবশালী ছিলেন। প্রশাসন এবং সরকারের অন্দরমহলে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তাদের কারণেই মতিউর রহমানের ব্যাপারে একটি স্থবির তদন্ত হচ্ছে কিনা সেটিও ভেবে দেখা প্রয়োজন বলে অনেকে মনে করেন৷ বিশেষ করে, মতিউর রহমানের স্ত্রী লায়লা যেভাবে এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে নানা রকম কথাবার্তা বলছেন, তাতে অনেকেরই সন্দেহ হচ্ছে যে লায়লা এবং মতিউর রহমান হয়তো সরকারের কারও কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
বিশেষ করে, মতিউর রহমানের সঙ্গে সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ছবি ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেই সমস্ত ছবিগুলো ব্যাপারে ঐ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও মন্তব্য করেননি। তারা বিব্রত হয়েছেন কি না সেই তথ্যটিও জানা যায়নি। আর তারাই শেষ পর্যন্ত মতিউর রহমানকে বাঁচানোর জন্য কোন গোপন চেষ্টা করছেন কিনা সেটা নিয়েও জনমনে সন্দেহের উদ্রেক হয়েছে।
বিশেষ করে, দুর্নীতি দমন কমিশনে মতিউর রহমান তার স্ত্রী-পুত্রকে না ডাকার বিষয়টি নিয়ে এক ধরনের ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। মতিউর রহমান কোথায় আছেন সে তা নিয়েও প্রশ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। মতিউর রহমানকে ইতোমধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে সংযুক্ত করা হলেও এখন পর্যন্ত তিনি সেখানে অফিস করেননি। শুধুমাত্র ই-মেইলের মাধ্যমে একটি যোগদানপত্র দিয়েছেন।
বেনজীর আহমেদের ক্ষেত্রে যেমন দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তের একটি সাজ সাজ রব ছিল। সেরকম অবস্থাটি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না ড. মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে। মতিউর রহমানের স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার পরও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় মতিউর রহমানের স্ত্রীকে উপজেলা পরিষদ থেকে অব্যাহতি দেয়নি বা বরখাস্ত করেনি।
বিভিন্ন সময় আমরা দেখি যে এই ধরনের অভিযোগ আসার সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত শুরু করার পর জনপ্রতিনিধিদের সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয় এবং তার স্থলে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয় বা ভাইস চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু এখনও লায়লা রায়পুরা উপজেলার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার দায়িত্বে থাকার পিছনে স্থানীয় এমপির ভূমিকার কথা শোনা যাচ্ছে। স্থানীয় এমপির সঙ্গে তার বেশ কিছু ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে সরকার যে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করেছে তা ব্যাপক ভাবে প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু মতিউর রহমানের তদন্ত যদি প্রভাবশালীদের প্রভাবের কারণে বিঘ্নিত হয় বা শ্লথ হয়ে যায় তাহলে সাধারণ মানুষের দুর্নীতিবিরোধী অভিযান সম্পর্কে আস্থা নষ্ট হয়ে যাবে। আর এই কারণে দ্রুত মতিউর রহমান এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে সাধারণ মানুষ মনে করেন।
সাধারণ মানুষ মনে করেন, মতিউর রহমান যেহেতু চাকরি স্থলে উপস্থিত হচ্ছেন না। সেহেতু তাকে অনতিবিলম্বে সাসপেন্ড করা উচিত। মতিউর রহমানের স্ত্রী রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যানকে অনতিবিলম্বে দায়িত্ব থেকে সাময়িক দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত। আর এই বিষয়গুলো দেরি হলে দুদকের স্বচ্ছতা এবং দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের পক্ষপাতহীনতাকে নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।
মতিউর দুর্নীতি লায়লা কানিজ দুদক ধীরে চলো নীতি
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের বিখ্যাত দাবাড়ু গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমানের আকস্মিক মৃত্যুতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
শোকবার্তায় মন্ত্রী মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
শোকবার্তায় মন্ত্রী বলেন, ‘বিখ্যাত দাবাড়ু গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান দেশের একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন দাবাড়ু ছিলেন। দেশের দাবার উন্নয়ন তথা গোটা ক্রীড়াঙ্গনে তার অনবদ্য অবদানের জন্য তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তার মৃত্যু দেশের ক্রীড়াঙ্গনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। ’
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব অর্জন করা জিয়াউর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের দ্বিতীয় গ্র্যান্ড মাস্টার।
মন্তব্য করুন
সৌদি আরবের রিয়াদের মুসাসানাইয়া এলাকায় একটি সোফা তৈরির কারখানায় আগুনে পুড়ে চার বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার রয়েছেন তিনজন। বুধবার (৩ জুলাই) সৌদির স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা নাগাদ আগুনের এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন নিহতদের স্বজনরা। নিহতদের তিন পরিবার থেকেই দ্রুত মরদেহ দেশে আনতে সরকারের সহযোগিতা চাচ্ছেন।
নিহতদের মধ্যে আত্রাই উপজেলার তেজনন্দি গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে ফারুক হোসেন (৪০), শিকারপুর গ্রামের সাহাদ আলীর ছেলে এনামুল হোসেন (২৫) ও দিঘা স্কুলপাড়া গ্রামের কবেজ আলীর ছেলে শুকবর রহমান
(৪০) ।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিকেলে তেজনন্দি গ্রামের ফারুক হোসেনের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের লোকজন,পাড়া প্রতিবেশি এবং আত্মীয় স্বজন ও শুভাকাংখিরা ভিড় করে আছেন। গ্রাম জুড়েই যেন কান্না আর শোকের রোল পরে গেছে। ফারুকের স্ত্রী-দুই সন্তানকে যেন কেউ থামাতেই পারছেননা। বার বার কান্নায় ভেঙ্গে পরছেন।
ফারুকের ভাতিজা পিন্টু আলী জানান, চাচা ফারুক হোসেন গার্মেন্টেসে কাজ করতেন। গত প্রায় ৬বছর আগে ধার-দেনা করে সৌদি আরবে যান। কিন্তু যাবার পর থেকেই সেখানে নানা সমস্যার মধ্যে পরে যায়। গত প্রায় ৮মাস হচ্ছে স্থায়ীভাবে সোফা তৈরির কারখানায় কাজে যোগদান করেছেন। এরই মধ্যে বুধবার রাত ১০টা নাগাদ মোবাইল ফোনে জানতে পারেন কারখানায় আগুনে ফারুক নিহত হয়েছেন।
উপজেলার দিঘা গ্রামের নিহত শুকবর আলীর জামাই বিদ্যুৎ হোসেন বলেন, তার শ্বশুড় কৃষি শ্রমিক ছিলেন। গত আড়াই বছর আগে একমাত্র সম্বল ১১শতক জায়গা বিক্রি করে তার সাথে ধার-দেনার টাকায় সৌদি আরবে যান। এখন পর্যন্ত ধার-দেনার টাকা শোধ করতে পারেননি। শুকবরের দুই ছেলে এক মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে বড় ছেলে শামীম হোসেন প্রতিবন্ধি। তার মাথা গোঁজার একমাত্র বাড়ীর তিন শতক জায়গা ছাড়া আর কোন জমি নেই। কিভাবে শাশুড়ি,শ্যালকদের নিয়ে চলবেন তা নিয়ে ঘোর বিপাকে পরেছেন। শশুড় শুকবর আলীই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি।
শিকারপুর গ্রামের নিহত যুবক এনামুলের চাচা জাহিদুল ইসলাম জানান, এনামুল গার্মেন্টস শ্রমিক ছিলেন। অনেকটা সুখের আসায় ঘর বাঁধতে ধার-দেনা করে সৌদি আরবে যান। সেখান থেকে কেবলমাত্র রোজগারের টাকায় ধার-দেনা শোধ করে ইটের বাড়ী নির্মান করছেন। বাড়ীর কাজ শেষ হলে আগামী বছর নাগাদ দেশে এসে বিয়ে করার কথা ছিলো। কিন্তু সেটা তার ভাগ্যে সইলো না ।
বুধবার রাত অনুমান সাড়ে ১০টা নাগাদ আগুনে পুরে মারা যাবার খবর আসে। তখন থেকেই একমাত্র ছেলেকে হারানোর শোকে বাবা-মা পাথর হয়ে গেছেন। কিছুতেই যেন তাদেরকে বুঝ দিয়ে থামানো যাচ্ছেনা।
সৌদি আরবে আগুনে পুরে তিনজন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন, ‘একজন পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। বাকি দুইজনেরও তথ্য পেয়েছি। জেলা প্রশাসক স্যারের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়কে জানানো হবে। সেখান থেকে দুই দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে কাগজ পেলে নিহতদের মরদেহ দেশে ফেরাতে এবং সরকারী কোন সুযোগ সুবিধা থাকলে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।’
প্রবাসী মৃত্যু সরকারের হস্তক্ষেপ
মন্তব্য করুন
গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার
(৫ জুলাই) জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের ১২তম রাউন্ডের খেলা চলাকালীন লুটিয়ে পড়েছিলেন গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান। হাসপাতালে
নেয়া হলেও আর ফেরানো যায়নি তাকে। ৪৯ বছর বয়সে ঢলে পড়েন মৃত্যুর কোলে।
দেশের দাবাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারিগর জিয়া। ২০০২ সালে নিয়াজ মোর্শেদের
পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি
হিসেবে গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব অর্জন করেন তিনি। ২০০৫ সালে বাংলাদেশি
দাবাড়ুদের মধ্যে সর্বোচ্চ ফিদে রেটিং অর্জন করেছিলেন।
এছাড়া দেশে-বিদেশে অসংখ্য প্রতিযোগিতায় সাফল্য পেয়েছেন জিয়া।
শুক্রবার
(৫ জুলাই) গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীবের বিপক্ষে জাতীয় দাবা প্রতিযোগিতার ১২তম রাউন্ডে ম্যাচ ছিল গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমানের। নির্ধারিত
সময়েই শুরু হয় খেলা। তবে খেলার প্রায় ৩ ঘণ্টা পার হওয়ার পর হুট করেই অসুস্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন জিয়া। এরপর দ্রুতই শাহবাগের ইব্রাহিম কার্ডিয়াক
হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। চিকিৎসকরাও দ্রুতই চিকিৎসা শুরু করেন। তবে অনেকক্ষণ ধরেই তার কোনো পালসই খুঁজে পান না তারা। কিছুক্ষণ বাদে এই গ্র্যান্ডমাস্টারকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন জিয়া।
জিয়ার ম্যাচের সময় তার স্ত্রী লাবণ্যও ফেডারেশনে
ছিলেন। তার ছেলে তাহসিন তাজওয়ারও এবার জাতীয় দাবা খেলছেন। হুট করে এই দাবাড়ুর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশের দাবা অঙ্গনে।
পারিবারিকভাবে জিয়া দাবাড়ু। তার বাবা পয়গাম উদ্দিন আহমেদও ছিলেন একজন দাবাড়ু। তার পথ ধরেই স্কুল জীবন থেকে দাবার সঙ্গে সম্পৃক্ত হন জিয়া। তার ছেলে তাহসিন তাজওয়ারও পেশাগতভাবে দাবাড়ু। ২০২২ সালে ৪৪তম দাবা অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন তাজওয়ার।
গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর প্রধানমন্ত্রী শোক
মন্তব্য করুন
নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের নতুন নাম হচ্ছে বলে জানিয়েছেন
নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে বন্দর, নৌপথ ও সমুদ্র পরিবহণ মন্ত্রণালয়
করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার
(৪ জুলাই) দুপুরে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর সম্মেলন কক্ষে ভোমরা ই-পোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান।
নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা আগে স্থলবন্দর দেখতাম কিন্তু মন্ত্রণালয়ের নাম নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়।
তাই আমাদের স্মার্ট প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট একটি নাম ঠিক করে দিয়েছেন। তিনি এর নামকরণ করেছেন বন্দর, নৌপথ ও সমুদ্র পরিবহণ মন্ত্রণালয়; যা সবকিছু কাভার করে। এটা এখন আইন মন্ত্রণালয়ে আছে। খুব দ্রুতই বাস্তবায়ন হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক, সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য আশরাফুজ্জামান আশু, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য লায়লা পারভীন সেঁজুতি, সুইস কন্ট্রাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর মুজিবুল হাসান, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, পুলিশ সুপার মতিউর রহমান সিদ্দিকী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বাবু, ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী নওশাদ, সহ-সভাপতি এজাজ আহমেদ স্বপন, সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ হোসেন প্রমুখ।
নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় নাম পরিবর্তন প্রতিমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
এনবিআরের সাবেক সদস্য ড. মতিউর রহমানের দুর্নীতি তদন্ত নিয়ে খুব ধীর গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশন এখন পর্যন্ত কেবল তার বিদেশযাত্রার উপর নিষেধাজ্ঞা এবং তার কিছু সম্পত্তি জব্দ করেছে মাত্র। কিন্তু তাকে দুর্নীতি দমন কমিশনে হাজির করা বা তার অন্যান্য সম্পদের উৎস অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে তেমন কোন উদ্যোগ এখনও দৃশ্যমান নয়। বিশেষ করে, বেনজীর আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যদের যেমন তদন্তের শুরুতেই দুদকে তলব করা হয়েছিল। ড. মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে সেটি এখন পর্যন্ত করা হয়নি। এটি কেন করা হয়নি এবং তদন্তে কেন ধীর গতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সৌদি আরবের রিয়াদের মুসাসানাইয়া এলাকায় একটি সোফা তৈরির কারখানায় আগুনে পুড়ে চার বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার রয়েছেন তিনজন। বুধবার (৩ জুলাই) সৌদির স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা নাগাদ আগুনের এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন নিহতদের স্বজনরা। নিহতদের তিন পরিবার থেকেই দ্রুত মরদেহ দেশে আনতে সরকারের সহযোগিতা চাচ্ছেন।
নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের নতুন নাম হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে বন্দর, নৌপথ ও সমুদ্র পরিবহণ মন্ত্রণালয় করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর সম্মেলন কক্ষে ভোমরা ই-পোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান।