লিবিয়ায় ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশ থেকে লোক নিয়ে জিম্মি করে রাখত এতটি চক্র। এরপর তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের র্দশ্য ধারণ করে পাঠাত স্বজনদের কাছে। এসব দেখিয়ে তারা হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা। এই চক্রের মূলহোতা বাদশা মিয়া (৪২) ও তার সহযোগী আরজু বেগমকে (৩১) কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি।
শুক্রবার (২৮ জুন) গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান।
তিনি বলেন, মানব পাচারকারী চক্রটি বিদেশগামী অসহায় লোকদের উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে প্রথমে ভিজিট ভিসায় দুবাই নিয়ে যায়। তারপর লিবিয়ায় থাকা আরজু বেগমের স্বামী রেজাউল করিমের তত্ত্বাবধানে তাদের জিম্মি করা হয়। জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য অপর একটি চক্রের কাছে হস্তান্তর করে। এই চক্রটি ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে ইমোতে কল দিয়ে নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে মুক্তিপণ দাবি করত। মুক্তিপণ আদায়ের পর ভুক্তভোগীদের ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পাঠিয়ে দিত। ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় অনেকেই মারা যায়। মারা যাওয়া কিছু লোক উদ্ধার হয় এবং তাদের মধ্য থেকে অল্পসংখ্যক লোক ইউরোপে পৌঁছাতে পেরেছে।
গত বছর মাগুরার মো. নাছির হোসেন নামে এক ভুক্তভোগীর দায়ের করা মামলার তদন্তে নেমে এই দুজনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম টিএইচবি শাখার একটি দল। মামলায় ওই ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, তার চাচা ওমর আলীর মাধ্যমে তিনি ভারত ও দুবাই হয়ে লিবিয়া যান। সেখানে লিবিয়া প্রবাসী মাহবুবুর রহমান ছদরুলের তত্ত্বাবধানে তিনি টাইলসের কাজ করতেন। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে নাছিরকে লিবিয়ার অজ্ঞাত স্থানে মানব পাচারকারী চক্র আটক করে। তারপর তার পরিবারের কাছে ১৫ লাখ টাকা দাবি করে। এরপর তার পরিবারকে বিকাশ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে বাধ্য করে।
আজাদ রহমান বলেন, বাদশা মিয়া তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে একটি চলতি হিসেব খুলে আরজু বেগমকে তা ব্যবহার করতে দেন। ওই হিসেবে মোট ১২ লাখ ৫০ হাজার ৯১০ টাকা জমা হয় এবং ১০ লাখ ৯৭ লাখ ২৮৫ টাকা তোলা হয়। বাদশা মিয়া ও আরজু সম্পর্কে চাচাতো ভাই-বোন। তারা কক্সবাজারের পেকুয়ার বাসিন্দা। দুজনই আদালতে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের সঙ্গে সংযোগ থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
মানব পাচার মুক্তিপণ চক্র গ্রেফতার
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের তিস্তা নদীর মহাপরিকল্পনা নিয়ে চীন-ভারতের কূটনৈতিক লড়াই এখন শেষ পরিণতির অপেক্ষায়। আগামী ৮ জুলাই প্রধানমন্ত্রী চীন সফরে যাচ্ছেন। সেখানে অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বিষয়ে চীনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো এ কথা স্বীকার করেছে।
ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, তিস্তা নিয়ে ভারত যেমন প্রস্তাব দিয়েছে, তেমনই চীনের প্রস্তাবও আছে। যে প্রস্তাবটি সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য হবে বাংলাদেশের কাছে, সেই প্রস্তাবটি বাংলাদেশ গ্রহণ করবে। প্রধানমন্ত্রী এটাও বলেছেন, দেশের স্বার্থ সবার আগে বিবেচনা করা হবে।
পানি চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার প্রেক্ষিতে তিস্তাকে ঘিরে একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রথম এগিয়ে আসে চীন। চীন বাংলাদেশ অংশে তিস্তার প্রবেশমুখে অনেকগুলো জলাধার নির্মাণ করা এবং জলাধারের মাধ্যমে বর্ষা মৌসুমে পানি সংগ্রহ করা এবং সেই পানি শুষ্ক মৌসুমে ছেড়ে দিয়ে নদীকে সজীব রাখার একটি প্রস্তাব দেয়। একশ কোটি ডলারের এই প্রস্তাবটির সম্ভাব্যতা যাচাই হওয়ার পরেও এটা থেমে আছে।
ভারত এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে আসছে। তবে নির্বাচনের পর পর ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশ সফর করেন এবং তখন তিনি তিস্তা নিয়ে বিকল্প প্রস্তাব দেন। তিস্তা মহাপরিকল্পনার বিকল্প প্রস্তাবটি এবার প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা হয় এবং ভারত নিয়ে একটি সমীক্ষার জন্য প্রস্তাব দিয়েছে। ভারতের বিশেষজ্ঞ দল তিস্তার নাব্যতা ঠিক রাখা এবং তিস্তা নদীকে সজীব রাখার জন্য যৌথভাবে বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে চাই।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মনে করা হচ্ছে যে, ভারত এবং বাংলাদেশ যৌথভাবে যেহেতু তিস্তা নদীর পানি ব্যবহার করে সেই জন্য ভারতের প্রস্তাবটি ব্যাপারে তারা বেশি আগ্রহী। কারণ এই প্রস্তাবটি হলে ভারতের সঙ্গে পানি চুক্তির বিষয়টি নিয়েও মীমাংসা করা যাবে।
অন্যদিকে চীনের প্রস্তাবটি যদি বাংলাদেশ গ্রহণ করে তাহলে সেক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে পানি চুক্তি নিয়ে বৈরিতা সৃষ্টি হতে পারে। প্রত্যেকটি নদীর উৎস হল ভারত। সে কারণে দীর্ঘমেয়াদী সঙ্কটের কথাও বাংলাদেশ চিন্তা করছে।
তবে এখন অর্থনৈতিক সংকটে থাকা বাংলাদেশের জন্য চীনের সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীন এবার প্রধানমন্ত্রীর সফরে সাতশ কোটি ডলার সহায়তা দেবে বলে প্রাথমিক সূত্রে জানা গেছে। এই সাতশ কোটি ডলারের মধ্যে দুইশ কোটি ডলার হবে বাজেট সহায়তা। আর এই সহায়তা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে তোলার ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। আর চীন কোন কিছুর বিনিময় ছাড়াই এ ধরনের প্রস্তাব দেবে এটা ভাবা যায় না।
এখন একদিকে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক এবং প্রত্যেকটি নদীর উৎসমুখ ভারতে থাকার কারণে পানির জন্য ভারত নির্ভরতা, অন্যদিকে আর্থিক বিষয়ে চীনের উপর নির্ভরতা। এই দুটির মধ্যে সমন্বয় করে বাংলাদেশ তিস্তা নিয়ে কোন প্রকল্প গ্রহণ প্রকল্প গ্রহণ করবে সেটি দেখার বিষয়। তবে তিস্তা নিয়ে চীন ভারতের কূটনৈতিক লড়াই এখন বেশ জমে উঠেছে।
তিস্তা চুক্তি চীন ভারত বাংলাদেশ কূটনীতি
মন্তব্য করুন
সাদিক
অ্যাগ্রোকে
প্রতারণায়
সহায়তার
অভিযোগে
সাভার
কেন্দ্রীয়
গো
প্রজনন
ও
দুগ্ধ
খামারে
অভিযান
চালিয়েছে দুদক
দুদক। এ সময় সাভারে কেন্দ্রীয় গো প্রজনন কেন্দ্রে নিষিদ্ধ ব্রাহমা প্রজাতির ৫টি গাভী ও ৭টি বাছুরের সন্ধান পেয়েছে দুদকের আভিযানিক দল।
সোমবার (১ জুলাই)
দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের টিম সেখানে অভিযান চালায়।
গেল
বছর
কোন
প্রক্রিয়ায়
সরকারের
এই
প্রতিষ্ঠান
থেকে
১৬টি
ব্রাহমা
জাতের
গরু
সাদিক
এগ্রোকে
দেওয়া
হয়েছে,
সে
বিষয়সহ
অন্যান্য
বিষয়ে
খোঁজ
নিতে
অভিযান
চালায়
দুদকের
টিম।
জানা যায়, বাংলাদেশ মাংস উৎপাদনে
স্বনির্ভরতা অর্জনের পর সরকার ২০১৬ সালে ব্রাহমা প্রজাতির গরু আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা
আরোপ করে। কিন্তু ২০২১ সালের জুলাই মাসে নিষেধাজ্ঞা না মেনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে টার্কিশ
এয়ারলাইন্সে করে ১৮ টি ব্রাহমা জাতের গরু দেশে আনে সাদিক অ্যাগ্রো। তবে গরু আমদানির বৈধ কাগজ উপস্থাপন করতে পারেননি সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক ইমরান হোসেন।
গরু আমদানি করতে সাদিক অ্যাগ্রো
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জাল কাগজপত্র ব্যবহার করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। জাল নথি দিয়ে
গরু আনার ঘটনায় তখন আদালতে মামলা করা হয়। পরবর্তীতে আদালতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের
পক্ষে রায় দিলে ওই ১৭টি
ব্রাহমা গরু বাজেয়াপ্ত করে রাখা হয় কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে।
উল্লেখ্য, নিষিদ্ধ
ব্রাহমা জাতের গরু আমদানিতে সাদিক অ্যাগ্রো তিনটি জাল নথি জমা দিয়েছিলে। নথিগুলো হলো-
গবাদিপশু আমদানি-সংক্রান্ত একটি নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি), প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাণী কোয়ারেন্টাইন বিভাগের কাছ থেকে একটি চিঠি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে গবাদিপশু আমদানির অনুমতিপত্র, যার প্রতিটিকেই জাল হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন তখনকার শুল্ক কর্মকর্তারা।
সাদিক অ্যাগ্রো প্রতারণা ব্রাহমা গরু সাভার ডেইরি ফার্ম দুদক
মন্তব্য করুন
বিভিন্ন দাবিতে
ফের কর্মবিরতি
পালন শুরু
করেছেন পাবনা
পল্লী বিদ্যুৎ
সমিতি-১
এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সোমবার
(০১ জুলাই)
সকাল থেকে
পাবনা পল্লী
বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর প্রধান
কার্যালয় চাটমোহরে
এই কর্মবিরতি
পালন শুরু
হয়েছে।
পবিস-১
কর্মকর্তা-কর্মচারী
কল্যাণ পরিষদের
সভাপতি এ
জি এম
(মানব সম্পদ)
খ ম
কুদরত-ই
এলাহীর সভাপতিত্বে
সকাল থেকে
দুপুর পর্যন্ত
সমিতির কার্যালয়ের
সামনে তারা
এ কর্মসূচী
পালন করেন।
নিজেদের দাবী
সমূহ তুলে
ধরে বক্তব্য
দেন, পাবনা
পল্লী বিদ্যুৎ
সমিতি-১
এর এজিএম
(আইটি) সামিরুল
ইসলাম, জুনিয়র
ইঞ্জিনিয়র হাসানুজ্জামান,
লাইনম্যান সাজেদুর
রহমান, লাইন
টেকনিশিয়ান আখতার
উদ্দিন প্রমুখ।
পবিস-১
কর্মকর্তা-কর্মচারী
কল্যাণ পরিষদের
সভাপতি খ
ম কুদরত-ই এলাহী জানান,
পল্লী বিদ্যুৎ
সমিতির কর্মকর্তা
কর্মচারীরা জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে
দেশের প্রত্যন্ত
এলাকায় বিদ্যুৎ
সরবরাহে কাজ
করছেন। নিরলসভাবে
সেবা দিয়ে
আসছেন। অথচ
পল্লী বিদ্যুতায়ন
বোর্ডের দ্বৈত
নীতির কারণে
সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বঞ্চিত
হচ্ছেন। একই
প্রতিষ্ঠানে চাকুরী
করলেও পদ,
বেতন, ভাতা,
উৎসব ভাতা
ও পদোন্নতির
ক্ষেত্রে পল্লী
বিদ্যুৎ সমিতির
কর্মকর্তা কর্মচারীরা
বৈষম্যের শিকার
হচ্ছেন।
তিনি আরো
বলেন, বৈষম্যহীন
অভিন্ন চাকুরী
বিধির দাবীতে
এর আগে
গত ৫
মে থেকে
সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি
পালন শুরু
করলে বিদ্যুৎ
বিভাগ পরবর্তী
পনেরো কার্যদিবসের
মধ্যে বিষয়টি
নিয়ে আলোচনায়
বসবে এমন
আশ্বাস দিলে
সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে
ফিরেছিলেন। সমস্যা
সমাধানে এখন
পর্যন্ত কোন
পদক্ষেপ না
নেওয়ায় ফের
আমরা কর্মবিরতিতে
নামতে বাধ্য
হয়েছি। কেন্দ্রীয়
কমিটির পরবর্তী
নির্দেশনা না
পাওয়া পর্যন্ত
জরুরী বিদ্যুৎ
সচল ও
গ্রাহক সেবা
অক্ষুন্ন রেখে
আমরা আমাদের
শান্তিপূর্ণ কর্মবিরতি
কর্মসূচী অব্যাহত
রাখবো।
মন্তব্য করুন
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য নতুন পেনশন স্কীম ‘প্রত্যয়’ নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়েছে। আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটে গেছে। নতুন পেনশন ব্যবস্থায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুবিধা কমবে এ বক্তব্য দিয়ে তারা আন্দোলনে গেছে। শিক্ষকরা তাই নতুন ব্যবস্থাটি প্রত্যাহারের দাবি করেছেন। আজ থেকে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে।
নতুন অর্থবছর অর্থাৎ ২০২৪-২৫ এর শুরুর দিন থেকে চালু হচ্ছে সার্বজনীন পেনশন কর্মসূচি ‘প্রত্যয়’। স্বশাসিত, স্বায়ত্বশাসিত, রাষ্ট্রয়াত্ত্ব, সংবিধিবদ্ধ, সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীন অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর চাকরিতে আজ থেকে অর্থাৎ পহেলা জুলাই থেকে যারা যোগ দেবেন তাদের জন্য এই কর্মসূচি প্রযোজ্য হবে। আর এটি মেনে নিতে রাজি নয় শিক্ষক সমাজ। তারা এই সিদ্ধান্তকে বৈষম্যমূলক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
তবে এখন পর্যন্ত সরকার নতুন পেনশন স্কিম নিয়ে অনঢ় অবস্থানে রয়েছে। এ অবস্থা থেকে সরে আসার কোন উপায় নেই বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন। তিনি বলেছেন, প্রশাসনেও আগামী অর্থবছর থেকে অর্থাৎ ২০২৫ এর পহেলা জুলাই থেকে এই ব্যবস্থা চালু হবে। পর্যায়ক্রমে জাতীয় পেনশন স্কিমের আওতায় সব সরকারি কর্মকর্তারা যাবেন বলেও অর্থ মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে।
কিন্তু শিক্ষকরা এই অবস্থা মেনে নিতে রাজি না। আর এটি নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি তারা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান। আন্দোলনরত শিক্ষকদের একজন প্রতিনিধি বলেছেন, তারা মনে করেন প্রধানমন্ত্রী যদি পুরো বিষয়টি জানেন, তাহলে নিশ্চয় তিনি এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
শিক্ষকদের একজন নেতা দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে অন্ধকারে রেখে, ভুল বুঝিয়ে শিক্ষকদের উপর নতুন পেনশন ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। একারণে তারা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চান। এব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগেরও চেষ্টা করা হচ্ছে।
শিক্ষকদের একজন প্রতিনিধি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে সরকারি কাজে ভীষণ ব্যস্ত রয়েছেন। জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশন চলছে। এই বাজেট অধিবেশন ৩ জুলাই শেষ হতে পারে। আগামী ৮ জুলাই প্রধানমন্ত্রী চীন সফরে যাবেন। এর আগে যেকোনভাবে শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। তারা মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের ব্যাপারে সমবেদনাশীল। এবং শিক্ষকদের প্রতি তিনি আলাদা সম্মান প্রদর্শন করেন। একারণেই পুরো বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলা হলে তিনি এর একটি সমাধান করবেন।
শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, এই ব্যবস্থাটি বৈষম্যমূলক এবং এই ব্যবস্থা কার্যকর হলে মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আসবেন না। এমনিতেই বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে মেধার সংকট দেখা দিচ্ছে। এর মধ্যে যদি এই পেনশন ব্যবস্থা চালু হয় তাহলে ক্রমান্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মেধাশূন্য হয়ে যাবে। আর তাদের মতে এই পেনশন ব্যবস্থায় শিক্ষকদের ক্ষতি ছাড়া কোন লাভ নেই।
বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থায় শিক্ষকদের বেতন থেকে কোন টাকা কাটা হয় না। কিন্তু ‘প্রত্যয়’ ব্যবস্থায় ১০ শতাংশ টাকা কাটার বিধান করা হয়েছে। বর্তমান ব্যবস্থায় অধ্যাপকরা গ্র্যাচুয়িটি বা আনুতোষিক বাবদ এককালীন ৮০ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকা পান। অন্যদিকে ‘প্রত্যয়’ পেনশন ব্যবস্থায় কোন আনুতোষিক নেয়। বর্তমান ব্যবস্থায় বেতন থেকে টাকা না কেটে অধ্যাপকদের মাসিক পেনশন পান ৭৫ হাজার ৭’শত নব্বই টাকা। অন্যদিকে প্রত্যয়ে বেতন থেকে কেটে এবং প্রতিষ্ঠানের টাকায় পেনশন মাসে ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৬০ টাকা। এই পার্থক্যগুলো পর্যালোচনা করে তারা মনে করছেন ‘প্রত্যয়’ শিক্ষকদের জন্য শুধু নয়, পুরো শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য এক অন্ধকার অধ্যায়ের সূচনা করবে। এখন দেখার বিষয় প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সময় দেন কিনা?
প্রত্যয় স্কিম সার্বজনীন পেনশন প্রত্যাহার শিক্ষকদের কর্মবিরতি
মন্তব্য করুন
সংসদে সদ্য পাস হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে যত্ন ও স্বচ্ছতার সঙ্গে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (১ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় এই বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে এ নির্দেশনার কথা জানান।
উল্লেখ্য, রোববার (৩০ জুন) সংসদ অধিবেশনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেট পাস হয়। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে এ বাজেট কণ্ঠভোটে পাস হয়, যা ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে।
এরও আগে শনিবার (২৯ জুন) বিকেলে সংসদে অর্থবিল উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং পরে সেটি সংসদে পাস হয়।
বাজেট ২০২৪-২৫ অর্থবছর সংসদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের তিস্তা নদীর মহাপরিকল্পনা নিয়ে চীন-ভারতের কূটনৈতিক লড়াই এখন শেষ পরিণতির অপেক্ষায়। আগামী ৮ জুলাই প্রধানমন্ত্রী চীন সফরে যাচ্ছেন। সেখানে অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বিষয়ে চীনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো এ কথা স্বীকার করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য নতুন পেনশন স্কীম ‘প্রত্যয়’ নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়েছে। আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটে গেছে। নতুন পেনশন ব্যবস্থায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুবিধা কমবে এ বক্তব্য দিয়ে তারা আন্দোলনে গেছে। শিক্ষকরা তাই নতুন ব্যবস্থাটি প্রত্যাহারের দাবি করেছেন। আজ থেকে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে।