সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে শাহজাদপুরে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। গত দু’সপ্তাহে জালালপুর, খুকনী ও কৈজুরী ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী এলাকার দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি নদীতে চলে গেছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, প্রতি বছরই যমুনার পানি বৃদ্ধি ও কমার সময় ভাঙ্গনের কবলে পড়ে নদী তীরবর্তী অঞ্চল। এ বছর জুনের প্রথম থেকে যমুনার পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার যমুনা নদী তীরবর্তী জালালপুর, গালা, খুকনী ও কৈজুরী ইউনিয়নে যমুনা তীরবর্তী অঞ্চলে নতুন করে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে জালালপুর, মনোকষা, হাটপাঁচিল, ভেকা, ব্রাহ্মণ গ্রামসহ এই এলাকার প্রায় ২০টি গ্রামের দেড় শতাধিক বাড়িঘর ও প্রায় ৩৫০ একর ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষ।
কৈজুরি গ্রামের আবদুল খালেক জানান, ‘বছরের পর বছর যমুনার ভাঙনে বসতভিটা ও ফসলি জমি হারিয়ে এই এলাকার অনেক মানুষ এখন ভূমিহীন। বাস্তচ্যুত এসব মানুষ স্থানান্তরিত হয়ে পেশা বদলিয়ে প্রান্তিক দিনমজুর হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করছেন। জালালপুর গ্রামের ভাঙ্গনের শিকার আবদুস সালাম বলেন, জরুরি ভিত্তিতে ভাঙ্গন-রোধ করা না হলে আরও শত শত বাড়িঘর ও স্থাপনা নদীতে চলে যাবে।’
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘শাহজাদপুর উপজেলায় যমুনার ডানতীর সংরক্ষণের জন্য সাড়ে ছয় কিলোমিটার এলাকায় ৬৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণকাজ চলছে। বাঁধ নির্মাণ শেষ হলে ভাঙ্গন-রোধ হবে।'
এদিকে গত চার দিন যমুনার পানি কমতে থাকার পর গতকাল থেকে আবারো যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বাড়তে শুরু করেছে। রোববার সকালে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষাবাঁধ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৬১ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ১ দশমিক ২৯ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপদসীমা ১২ দশমিক ৯০ মিটার) সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
নদী ভাঙ্গন যমুনা নদী পানি বৃদ্ধি নদী গর্ভে বিলীন
মন্তব্য করুন
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক অবরোধ করেছেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের আশেকপুর বাইপাস এলাকায় অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা।
এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দু’পাশেই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পরেছেন সাধারণ যাত্রীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘বৈষম্যমূলক কোটার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। আমরা ইতোপূর্বেও সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। এ বৈষম্য দূর না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
কোটা বাতিল দাবি ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ
মন্তব্য করুন
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় ২৪ শতক সম্পত্তির বিনিময়ে একটি বিদ্যালয়ে বিভিন্ন পদে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার নান্দিনা মধু উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক ও আয়া পদে এই নিয়োগ বাণিজ্য হয়। এতে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আনোয়ার হোসেন ম্যানেজিং কমিটিকে বোকা বানিয়ে তিনি এই নিয়োগ বাণিজ্য করেন।
নিয়োগ পরিক্ষার ফলাফলে দেখা যায় অফিস সহায়ক পদে মোঃ ইউসুফ আলী ও আয়া পদে মোছাঃ আকলিমা খাতুন নির্বাচিত হয়েছেন। তবে পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে থেকই জানা ছিলো এ দুজন নির্বাচিত হবেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আগে থেকেই তাদের নির্বাচিত করা হয়েছিলো। নিয়োগ পরীক্ষা শুধুমাত্র একটি লোক দেখানো বিষয়।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই নিয়োগ পরীক্ষার জন্য পূর্বেই মিটিং করা হয়েছিল। যারা নিয়োগ পাবে তাদেরই বিদ্যালয়ের পাশে ২৪ শতক সম্পত্তি কিনে দিতে হবে অথবা সমপরিমাণ টাকা দিতে হবে।’
সহকারি কমিশনার (ভূমি') ইশরাত জাহান সাংবাদিকদের এড়িয়ে বলেন, ‘আমি নিয়োগ কমিটির সদস্য। এবিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবোনা।’
এরপর ডিজির প্রতিনিধি, উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে নিয়ে সহকারি কমিশনান (ভূমি) নিজ গাড়িতে করে দ্রুত চলে যান। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর গাড়িতে চলমান থাকতে থাকতে তারা তোয়াক্কাও করেন না।
নিয়াগ বাণিজ্য জমির বদলে চাকরি প্রধান শিক্ষক
মন্তব্য করুন
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা থানা এলাকায় পৃথক ঘটনায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই বোনসহ তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার
(৫ জুলাই) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। কচাকাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিশ্বদেব রায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তিনজনের মরদেহ পরিরারের কাছে দেয়া হয়েছে। এবিষয়ে পৃথক অপমৃত্যুর মামলা করা হবে।
নিহতরা হলেন, উপজেলার কালিগঞ্জ ইউনিয়নের বেগুনী পাড়া গ্রামের শাহাদাৎ হোসেনের দুই মেয়ে সুমাইয়া (১১),
মাছুমা (৬) এবং নারায়নপুর ইউনিয়নের ব্যাপারী পাড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহমান মুন্সির ছেলে সিরাজুল ইসলাম।
কচাকাটা থানার পুলিশ জানায়, শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সুমাইয়া ও মাছুমা কলাগাছের ভেলা নিয়ে বাড়ির পাশে খালার বাড়িতে রওনা দেয়। এসময় বাড়ির অদূরে তাদের সেচ পাম্পের টাঙ্গানো বিদ্যুতের তারে দুই বোনের গলা আটকে যায়। এতে বিদ্যুস্পৃষ্ট হয় ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।
অপর দিকে প্রায় একই সময় নারায়ণপুর ইউনিয়নের ব্যাপারীপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম ভেলাযোগে পাশের বাড়িতে যাওয়ার সময় ভেলার লগি বিদ্যুৎ সরবরাহের মেইন লাইনের তারে লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তারও মৃত্যু হয়।
মন্তব্য করুন
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি বৃদ্ধিতে যমুনার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ফুলজোড়, ইছামতি, করতোয়া নদীসহ প্রায় সব নদ-নদীর পানিও বাড়ছে। এতে জেলার ৫টি উপজেলার ১ হাজার ২৭৬ পরিবারের সাড়ে ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এদিকে গত ১২ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহরের হার্ডপয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার ও কাজিপুরের মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
এতে প্রতিদিনই নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের অনেকেই। একই সঙ্গে চরাঞ্চলের ৪০০ হেক্টর ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন।
শনিবার (৬ জুলাই) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, হু হু করে যমুনায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার চরাঞ্চলের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব অঞ্চলের শত শত পরিবার। তলিয়ে গেছে আবাদি জমি, রাস্তাঘাট ও বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বন্যাকবলিত মানুষগুলো বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে শুরু করেছেন।
এদিকে, সদর উপজেলার কাওয়াকোলা, শাহজাদপুরের হাটপাচিল ও কাজিপুরের খাসরাজবাড়িতে চলছে নদীভাঙন। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এ এলাকায় শত শত বাড়ি-ঘর যমুনায় বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও হুমকির মুখে রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারী বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান।'
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবুল কুমার সূত্রধর জানান, বন্যার পানিতে জেলার ৪০৮ হেক্টর জমির পাট, তিল, কলা ও মরিচ ক্ষেত প্লাবিত হয়েছে। এখনও ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা যায়নি।'
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, সর্বশেষ জেলার ৫টি উপজেলার ১ হাজার ২৭৬টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে। ৫০০ মেট্রিক টন চাল আর ১০ লাখ টাকা মজুদ আছে। সময়মতো সেগুলো বিতরণ করা হবে।'
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান জানান, কয়েকদিন ধরেই যমুনার পানি দ্রুতগতিতে বেড়েছে'। ইতোমধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। আগামী ২-৩ দিন ধীরগতিতে পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। জেলার ভাঙনকবলিত এলাকাগুলোয় জিওটিউব ও জিওব্যাগ ডাম্পিং করে ভাঙন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।
পানি বাড়লেও এ মৌসুমে বড় ধরনের বন্যা না হলেও মাঝারি বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।'
বন্যা পরিস্থিতি যমুনার পানি বৃদ্ধি
মন্তব্য করুন