ইনসাইড বাংলাদেশ

তিস্তা নিয়ে চীন-ভারতের কূটনৈতিক লড়াই

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০১ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশের তিস্তা নদীর মহাপরিকল্পনা নিয়ে চীন-ভারতের কূটনৈতিক লড়াই এখন শেষ পরিণতির অপেক্ষায়। আগামী ৮ জুলাই প্রধানমন্ত্রী চীন সফরে যাচ্ছেন। সেখানে অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বিষয়ে চীনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো এ কথা স্বীকার করেছে।

ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, তিস্তা নিয়ে ভারত যেমন প্রস্তাব দিয়েছে, তেমনই চীনের প্রস্তাবও আছে। যে প্রস্তাবটি সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য হবে বাংলাদেশের কাছে, সেই প্রস্তাবটি বাংলাদেশ গ্রহণ করবে। প্রধানমন্ত্রী এটাও বলেছেন, দেশের স্বার্থ সবার আগে বিবেচনা করা হবে।

পানি চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার প্রেক্ষিতে তিস্তাকে ঘিরে একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রথম এগিয়ে আসে চীন। চীন বাংলাদেশ অংশে তিস্তার প্রবেশমুখে অনেকগুলো জলাধার নির্মাণ করা এবং জলাধারের মাধ্যমে বর্ষা মৌসুমে পানি সংগ্রহ করা এবং সেই পানি শুষ্ক মৌসুমে ছেড়ে দিয়ে নদীকে সজীব রাখার একটি প্রস্তাব দেয়। একশ কোটি ডলারের এই প্রস্তাবটির সম্ভাব্যতা যাচাই হওয়ার পরেও এটা থেমে আছে।

ভারত এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে আসছে। তবে নির্বাচনের পর পর ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশ সফর করেন এবং তখন তিনি তিস্তা নিয়ে বিকল্প প্রস্তাব দেন। তিস্তা মহাপরিকল্পনার বিকল্প প্রস্তাবটি এবার প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা হয় এবং ভারত নিয়ে একটি সমীক্ষার জন্য প্রস্তাব দিয়েছে। ভারতের বিশেষজ্ঞ দল তিস্তার নাব্যতা ঠিক রাখা এবং তিস্তা নদীকে সজীব রাখার জন্য যৌথভাবে বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে চাই।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মনে করা হচ্ছে যে, ভারত এবং বাংলাদেশ যৌথভাবে যেহেতু তিস্তা নদীর পানি ব্যবহার করে সেই জন্য ভারতের প্রস্তাবটি ব্যাপারে তারা বেশি আগ্রহী। কারণ এই প্রস্তাবটি হলে ভারতের সঙ্গে পানি চুক্তির বিষয়টি নিয়েও মীমাংসা করা যাবে।

অন্যদিকে চীনের প্রস্তাবটি যদি বাংলাদেশ গ্রহণ করে তাহলে সেক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে পানি চুক্তি নিয়ে বৈরিতা সৃষ্টি হতে পারে। প্রত্যেকটি নদীর উৎস হল ভারত। সে কারণে দীর্ঘমেয়াদী সঙ্কটের কথাও বাংলাদেশ চিন্তা করছে।

তবে এখন অর্থনৈতিক সংকটে থাকা বাংলাদেশের জন্য চীনের সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীন এবার প্রধানমন্ত্রীর সফরে সাতশ কোটি ডলার সহায়তা দেবে বলে প্রাথমিক সূত্রে জানা গেছে। এই সাতশ কোটি ডলারের মধ্যে দুইশ কোটি ডলার হবে বাজেট সহায়তা। আর এই সহায়তা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে তোলার ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। আর চীন কোন কিছুর বিনিময় ছাড়াই এ ধরনের প্রস্তাব দেবে এটা ভাবা যায় না।

এখন একদিকে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক এবং প্রত্যেকটি নদীর উৎসমুখ ভারতে থাকার কারণে পানির জন্য ভারত নির্ভরতা, অন্যদিকে আর্থিক বিষয়ে চীনের উপর নির্ভরতা। এই দুটির মধ্যে সমন্বয় করে বাংলাদেশ তিস্তা নিয়ে কোন প্রকল্প গ্রহণ প্রকল্প গ্রহণ করবে সেটি দেখার বিষয়। তবে তিস্তা নিয়ে চীন ভারতের কূটনৈতিক লড়াই এখন বেশ জমে উঠেছে।


তিস্তা চুক্তি   চীন   ভারত   বাংলাদেশ   কূটনীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

যুক্তরাজ্যের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপি

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০৩ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

আগামীকাল যুক্তরাজ্যের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের নির্বাচনে যে সমস্ত আগাম জরিপ প্রকাশিত হচ্ছে, তাতে ঋষি সুনাকের ভরাডুবি অত্যাসন্ন বলেই মনে করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন পর লেবার পার্টি ব্রিটেনের সরকার গঠন করতে পারে এমন আভাসও দেখা যাচ্ছে। তবে এ সব পূর্বাভাসকে পাশ কাটিয়ে নির্বাচনের ফলাফলের দিকে দৃষ্টি রয়েছে সবার।

বাংলাদেশে এই নির্বাচন নানা কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। ভারতের নির্বাচনের দিকে যেমন আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয় রাজনৈতিক দল তাকিয়ে ছিল। এবার যুক্তরাজ্যে নির্বাচনের দিকেও প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল নজর রাখছে। নানা কারণে এই নির্বাচন আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনে যদি শেষ পর্যন্ত কনজারভেটিভ পার্টি পরাজিত হয় এবং লেবার পার্টি সরকার গঠন করে তাহলে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সে দেশে থাকাটা কঠিন হয়ে পড়বে।

ইতিমধ্যে তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করছে বলে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন। যদি লেবার পার্টি ক্ষমতায় আসে তাহলে তারেক জিয়ার রাজনৈতিক আশ্রয় জটিল হয়ে পড়বে। কারণ লেবার পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। তাছাড়া এবার লেবার পার্টি থেকে যারা নির্বাচন করছেন তাদের মধ্যে অন্যতম রয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিকি। এই নির্বাচনে যদি লেবার পার্টি সরকার গঠন করে তাহলে টিউলিপ সিদ্দিকের মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কারণ লেবার পার্টির ছায়া ক্যাবিনেটে টিউলিপ সিদ্দিকী ছায়া মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। লেবার পার্টিতে তার প্রভাব অনেক বেশি৷

তাছাড়াও লেবার পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। ৭৫’র ১৫ আগস্টের পর বিশ্বে যে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের দাবিতে জনমত গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল তা ব্রিটেন থেকে শুরু হয়েছিল। এবং শেখ হাসিনার পক্ষে সেসময় বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের দাবিতে যারা দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁরা প্রায় সবাই লেবার পার্টির এমপি।

আর এবারও আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রিটেনের কাছ থেকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দণ্ডিত তারেক জিয়াকে ফেরত চাইছেন। আর এক্ষেত্রে লেবার পার্টি ক্ষমতায় আসলে ফিরিয়ে আনার পথ অনেক সহজ হবে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর জন্য ফাস্ট ট্র্যাক চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। আর এই চুক্তির আওতায় বেশ কিছু অভিবাসীদেরকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

কনজারভেটিভ পার্টির সঙ্গে লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়ার একটি গোপন সম্পর্ক রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র বলছে। বিশেষ করে যেসমস্ত পাকিস্তান বংশোদ্ভূত ব্যক্তি রয়েছেন তাদের একটি প্রভাব কনজারভেটিভ পার্টিতে রয়েছে। এই কারণেই তারেকের সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ এবং সেখানে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা সহজ হচ্ছে।

সেখানে যদি সরকার পরিবর্তন হয় এবং লেবার পার্টি ক্ষমতায় আসে তাহলে তারেক জিয়ার সাথে এই সম্পর্কের ইতি ঘটবে বলে অনেকে মনে করছেন। তারেক জিয়া এবং তার অনুগত বাহিনীরা টিউলিপ সিদ্দিকীকে নির্বাচনে পরাজিত করার জন্য একধরনের প্রচারণা করছে। যেটি লন্ডনে বাঙালীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কারণ লন্ডনে দলমত নির্বিশেষে বাঙালি অভিবাসীদের পক্ষে সবাই একাট্টা। এখানে তারা আওয়ামী লীগ-বিএনপি দেখতে চায় না। কিন্তু তারেক জিয়া বাঙালিদের মধ্যেই বিভক্তি সৃষ্টির মতো ন্যাক্কারজনক কাজ করছেন এবং টিউলিপ সিদ্দিকীর নির্বাচনী এলাকায় টিউলিপ সিদ্দিকী বিরোধী প্রচারণা করা হচ্ছে। যদিও এই প্রচারণা হালে পানি পায়নি। কারণ ব্রিটিশ নাগরিকরা তারেক জিয়ার এই কুৎসিত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রকে মোটেও আমলে নিচ্ছে না। আর এ বাস্তবতায় শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের ফলাফল কি হয় সেটির উপর তারেক জিয়ার থাকা না থাকা অনেকটাই নির্ভর করছে। একারণেই এ নির্বাচন বাংলাদেশের প্রধান দু’টি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির কাছে আলাদা গুরুত্ব বহন করছে।


যুক্তরাজ্য নির্বাচন   লেবার পার্টি   কনজারভেটিভ পার্টি   আওয়ামী লীগ   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মডেল মসজিদ নির্মাণে স্বামীর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ স্ত্রীর

প্রকাশ: ০৮:৫৭ পিএম, ০৩ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

ইসলামিক জ্ঞান ও সংস্কৃতি প্রচারের উদ্দেশ্যে সরকার ২০১৭ সালে দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৬৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়। এই প্রকল্পটি দুবার সময়সীমা বাড়ানোর পরও শেষ না হওয়ায়, আরও দু বছরের জন্য মেয়াদ বাড়ানো হয়। শুরুতে ৮৪২ কোটি টাকা বাজেট ছিল, তবে পরবর্তীতে এটি বেড়ে ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকায় পৌঁছায়।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অধীনে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় প্রকল্পটির নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠে এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে, যা এটিকে বিতর্কিত করে তোলে। নীলফামারী গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ ও নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। তার স্ত্রী রেজওয়ান আহমেদ খুশবু প্রমাণসহ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।

জানা যায়, দিনাজপুর গণপূর্ত বিভাগ থেকে ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আশরাফুজ্জামান নীলফামারীতে যোগদান করেন। তিনি তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশে নীলফামারী সদর ও জলঢাকা উপজেলায় নির্মিতব্য মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের তদারকির দায়িত্ব পান। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে নীলফামারী সদর উপজেলার মডেল মসজিদের নির্মাণকাজ শেষ হয়। সদর উপজেলার মডেল মসজিদের নির্মাণকাজের চুক্তিমূল্য ছিল ১৩ কোটি ৫ লাখ টাকা, যা ১৬ কোটি ৯২ লাখ ৩৫ হাজার টাকায় শেষ হয়। জলঢাকা উপজেলার মডেল মসজিদের নির্মাণকাজ এখনও চলমান রয়েছে। এ দুই মসজিদ নির্মাণকাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৪৫ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে।

খুশবু অভিযোগ করে বলেন, ‘২০২১ সালের জুলাই অথবা আগস্ট মাসে মোবাইল ফোনে আমার স্বামী মডেল মসজিদ নির্মাণকাজ হতে ঘুষ গ্রহণের বিষয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির সঙ্গে আলাপচারিতার করতে শুনি। ফোনালাপ শেষে আমি তাকে বলি, মসজিদ আল্লাহর ঘর। এখান থেকে তুমি ঘুষ নেবে?’ এতে সে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয় এবং আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। এ সময় গর্ভে সন্তান থাকায় প্রচণ্ড রকম অপমানিত বোধ করলেও কাউকে কিছু বলিনি। কিন্তু এরপর থেকেই সামান্য ব্যাপারেও কথাকাটাকাটি হতে শুরু হয়। এভাবে ধীরে ধীরে শুরু হয় শারীরিক নির্যাতন। খুশবু আরও বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণকাজে স্বামীর ঘুষ নেওয়ার তথ্য পেয়ে বারবার অনুরোধ করেও তাকে দুর্নীতি থেকে সরাতে ব্যর্থ হয়েছি। এমনকি দুর্নীতিতে বাধা দেওয়ায় আমাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। বলে, তুই ও তোর পরিবার আমার কিছুই করতে পারবি না। আমার ক্ষমতা ও টাকার কাছে তোরা ভেসে যাবি। এভাবে বলতে বলতে অনেক মারধর করে। তার ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি মেনে নিলে চুপচাপ থাকলে সব স্বাভাবিক থাকত। নির্যাতন করত না। যখন সে সৎ ছিল তখন কোনো সমস্যা হয়নি।

তিনি আরও জানান, তার স্বামী তাকে বলে যে সে এরকম থাকতে চায় না, বড়লোক হতে হবে। যদি মডেল মসজিদ থেকে ঘুষ নিতে না দিস তাহলে বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আয়। সংসারের সুখ-শান্তির কথা বিবেচনা করে নানা অজুহাতে তাকে ৭ লাখ টাকা এনে দেন। এছাড়া বিয়ের সময় তার বাবার কাছ থেকে সাড়ে ১২ লাখ টাকা যৌতুক নেওয়া হয়। বিয়ের পর বাড়ি সংস্কারের কথা বলে আরও আট লাখ টাকা নেওয়া হয়।

সন্তান জন্মের পর খুশবু একদিন মেসার্স আব্দুর রাফি ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র দেখতে পান। তিনি জিজ্ঞেস করলে আশরাফুজ্জামান উত্তর দেন যে নানা কাজে টাকা-পয়সা লেনদেন করতে হয়, তাই এই প্রতিষ্ঠান। যদিও প্রতিষ্ঠানের লেনদেন হয়েছে মূলত অন্য উৎস থেকে।

তিনি আরও বলেন, নীলফামারী সদর উপজেলার রূপালী ব্যাংকে তার নামে একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয় এবং তার স্বামী জোরপূর্বক ব্ল্যাংক চেকে স্বাক্ষর নেন। খুশবু সচিবের কাছে অভিযোগ করেন, এবং সচিব সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দেন।

আশরাফুজ্জামানের বাবা আব্দুল মান্নান একজন পল্লী চিকিৎসক ছিলেন। পাঁচ বছরে তাদের বাড়ির চেহারা বদলেছে; দুই কক্ষের ঘর থেকে পাঁচ কক্ষের আলিশান বাড়ি হয়েছে। বাড়ির একপাশে মেসার্স আব্দুর রাফি ট্রেডার্সের নামে একটি গুদাম ঘর তৈরি করা হয়েছে। ২০২২ সালে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া হয় এবং ২০২৩ সালের মে মাসে প্রায় ১১০০ মণ ভুট্টা ক্রয় করে সেই গুদামে রাখা হয়। যদিও প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো ভুট্টা বিক্রি হয়নি। ব্যাংক স্টেটমেন্টে দেখা যায় জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ৩৪ লাখ ৮৭ হাজার টাকা জমা হয়েছে এবং ৩৩ লাখ ৪৬ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ ১৯ লাখ ৯৭ হাজার টাকা এফডিআর ক্লোজড বাবদ জমা হয়েছে।

মডেল মসজিদ প্রকল্পের পরিচালক নজিবুর রহমান জানান, ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নীলফামারী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদুজ্জামান জানান, উপসহকারী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামানের সঙ্গে তার স্ত্রীর পারিবারিক কলহ ছিল এবং তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। এরপর মেয়েপক্ষ তার বিরুদ্ধে মামলা করে, যার কারণে আশরাফুজ্জামান জামিনে আছেন।

আশরাফুজ্জামান তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার সাবেক স্ত্রী তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে এবং তাকে হয়রানি করার জন্য এই সমস্ত অভিযোগ উত্থাপন করেছে।


মডেল মসজিদ   দুর্নীতি   তদন্ত  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

জাহাঙ্গীর আলমকে বাদ দিয়ে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা

প্রকাশ: ০৮:৫২ পিএম, ০৩ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সম্মেলনের ১৯ মাস ১৪ দিন পর ঘোষণা করা হয়েছে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি। তবে এ কমিটিতে জায়গা হয়নি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাঙ্গাঙ্গীর আলম। তাঁকে কোনো পদে, এমনকি সদস্য হিসেবেও রাখা হয়নি।

বুধবার (৩ জুলাই) বিকেলে ৭৫ সদস্য বিশিষ্ট এই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ৭৫ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির(২০২২-২০২৫) অনুমোদন দেন। কমিটিতে উপদেষ্টা পরিষদের ২৮ সদস্যের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

এর আগে ২০২২ সালের ১৯ নভেম্বর গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছিল। ওই সম্মেলনে শুধু সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের পদে নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর দীর্ঘ সময় চলে গেলেও করা হয়নি পূর্ণাঙ্গ কমিটি। নিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।


জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের অনুমোদনে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আজমত উল্লা খানকে সভাপতি আতা উল্যাহ মন্ডলকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। এছাড়া কমিটির সহ-সভাপতি করা হয়েছে সামসুন নাহার ভূঁইয়া, মতিউর রহমান, আবদুল হাদী, রেজাউল করিম ভূঁইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন, ওসমান আলী, আসাদুর রহমান, সফর উদ্দিন খান, শেখ মো. আসাদুল্লাহ, হেদায়েতুল ইসলাম মো. আবদুল আলীম মোল্লাকে।

কমিটির অন্যান্য পদের নেতারা হলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন সরকার, কাজী ইলিয়াস আহমেদ বি এম নাসির উদ্দিন।


কমিটিতে স্থান পেয়েছেন আইনবিষয়ক সম্পাদক খালেদ হোসেন, কৃষি সমবায়বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন মোল্লা, তথ্য গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক ফজলুর রহমান, ত্রাণ সমাজ কল্যাণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মওলানা আক্তার হোসেন গাজীপুরী, প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক আবদুল হালিম সরকার, বন পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক সাইজ উদ্দিন মোল্লা, বিজ্ঞান প্রযুত্তিবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ উল্লাহ, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক হোসনে আরা, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. খালেকুজ্জামান, যুব ক্রীড়া সম্পাদক হীরা সরকার, শিক্ষা মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান, শিল্প বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক মো. বাছির উদ্দিন এবং শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মো. সোলায়মান মিয়া।


কমিটিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল মেহের আফরোজ চুমকি এবং কাজী আলিম উদ্দিন, অধ্যাপক এম বারী, ওয়াজ উদ্দিন মিয়া, মো. আবদুর রউফসহ ৩৬ জনকে মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।


সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয় ২০২২ সালের ১৯ নভেম্বর। সে সময় সভাপতি করা হয় আজমত উল্লা খানকে আর সাধারণ সম্পাদক করা হয় আতা উল্যাহ মন্ডলকে। জাহাঙ্গীর আলম দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর সাধারণ সম্পাদক পদে আসেন আতা উল্যাহ মন্ডল। আজ ঘোষিত নতুন কমিটিতে আজমত উল্লা খানকে সভাপতি আতা উল্যাহ মন্ডলকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।


এর আগে ২০২২ সালের ১৯ নভেম্বর ভাওয়াল রাজবাড়ী মাঠে সম্মেলন শেষে মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতার নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পরে জাহাঙ্গীর আলমকে দলে ফিরিয়ে আনেন ওবায়দুল কাদের।

বিষয়টি পত্রের মাধ্যমেও জানানো হয়। দীর্ঘদিন পর গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হলেও এবার সদস্য হিসেবেও জাহাঙ্গীর আলমকে রাখা হয়নি।


গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগ   কমিটি ঘোষণা   পূর্ণাঙ্গ কমিটি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

‘সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই’

প্রকাশ: ০৮:৫২ পিএম, ০৩ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হেসেন জানিয়েছেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই। বুধবার (৩ জুলাই) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে পিরোজপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য শামীম শাহনেওয়াজের প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রী এ কথা জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হেসেন বলেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ালে বিভিন্ন পদের বিপরীতে চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়ে যাবে। এতে নিয়োগের ক্ষেত্রে আরও বেশি প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হতে পারে। এতে যাদের বয়স বর্তমানে ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে তারা চাকরিতে আবেদন করার সুযোগ পেলেও অনূর্ধ্ব ৩০ বছরের প্রার্থীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হতে পারে।

মন্ত্রী বলেন, এসব শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই।

তিনি বলেন, আগে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের সেশনজট থাকলেও বর্তমানে উল্লেখযোগ্য কোনো সেশনজট নেই বললেই চলে। শিক্ষার্থীরা ১৬ বছরে এসএসসিসহ ২৩/২৪ বছরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাখ করে থাকে।

জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর হওয়ার ফলে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পরও তারা চাকরিতে আবেদনের জন্য কমপক্ষে ৬/৭ বছর সময় পেয়ে থাকে। এছাড়া ৩০ বছর বয়সসীমার মধ্যে একজন প্রার্থী আবেদন করলে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ২/১ বছর লেগে যায়। ফলে চাকুরিতে যোগদানের জন্য ন্যূনতম বয়স ৩০ বছর থেকে ৩৫ বছর করার যে দাবি করা হচ্ছে প্রকৃত পক্ষে তার কাছাকাছি পর্যায়ে উপনীত হয়।

পাবলিক সার্ভিস কমিশনের রিপোর্টের প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় বিভিন্ন স্তরে উত্তীর্ণ প্রার্থীগণের বয়স ও জেন্ডারভিত্তিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী কম বয়সী (২৩-২৫) সুপারিশকৃত প্রার্থীর সংখ্যা সব থেকে বেশি (৩৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ) এবং বেশি বয়সী (২৯-এর ঊর্ধ্বে) সুপারিশকৃত প্রার্থীর সংখ্যা সব থেকে কম ১ দশমিক ৭১ শতাংশ)।

মন্ত্রী আরও বলেন, চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা ৫৭ বছর থেকে ৫৯ বছরে উন্নীত হওয়ার বর্তমানে শূন্যপদের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই কমে গেছে।


জনপ্রশাসনমন্ত্রী   ফরহাদ হোসেন   সরকারি চাকরির বয়স  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সরকার কি পঁচা শামুকে পা কাটছে?

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৩ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

একদিকে সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে শিক্ষকদের আন্দোলন অন্যদিকে কোটা বিরোধী আন্দোলন। সবকিছু মিলিয়ে বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আন্দোলন জমে উঠেছে। এনিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। কোন রাজনৈতিক দলের আন্দোলন নয় বরং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সরকার যদি এখনই গুরুত্ব না দেয় তাহলে এসব আন্দোলনগুলো পরবর্তীতে সরকারের জন্য বড় ধরনের মাথা ব্যাথার কারণ হবে। সরকার কি এ আন্দোলনগুলোকে গুরুত্বহীন মনে করছে? সরকার কি পঁচা শামুকে পা কাটছে? এই প্রশ্ন এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ বড়ভাবেই উঠেছে। 

একথা ঠিক গত ১৫ বছরে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক আন্দোলনকে সামাল দিয়েছে বেশ দক্ষতার সঙ্গে। কিন্তু এটা অস্বীকার উপায় নেই বিভিন্ন সময় সরকারকে পিছু হটে দাবি মোকাবেলা করতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। আর এবার শিক্ষার্থীদের সাথে যুক্ত হয়েছে শিক্ষকরা। আর শিক্ষক এবং ছাত্রদের এই আন্দোলন যে কিরকম ভয়াবহ হতে পারে তা এ সরকারের অজানা থাকার কথা না। কারণ বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের আন্দোলন যেকোন সরকারের জন্য বড় ধরনের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। 

এই সরকারের ১৫ বছরের বেশি সময়ের মেয়াদে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করেছিলো। গোটা দেশ অচল হয়ে গিয়েছিলো। কোটা বিরোধী আন্দোলনের সময়ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই আন্দোলনের দাবি মেনে নিয়েছিলেন এবং সমস্ত কোটা বাতিল করেছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য কোটা পুনরায় চালু হয়। সেই কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। 

সেই আন্দোলন যৌক্তিক-অযৌক্তিক সেটি ভিন্ন বিষয়। কিন্তু শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন যে সারাদেশে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে তা সহজেই অনুমান করা যায়। পাশাপাশি শিক্ষকদের সাথে অযাচিতভাবে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে সরকার। এবং সেক্ষেত্রে কিছু কিছু মন্ত্রীর বক্তব্য এতই দায়িত্ব জ্ঞানহীন যে তা শিক্ষকদের ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। 

এ দু’টি আন্দোলনের মধ্যে কোন যোগসূত্র নেই। কিন্তু দু’টি আন্দোলন যদি একসাথে দানা বেধে ওঠে তাহলে সরকারের জন্য সেটি চাপ সৃষ্টি করতে পারে। আর একারণে এখনই সতর্কতার সাথে পরিস্থিতির মোকাবেলা করা দরকার বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেকোন সংগ্রামের আঁতুড়ঘর। এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকে সবসময় সমীহের চোখে দেখতে হবে। অতীতে, এমনকি সেনা সমর্থিত ড. ফখরুদ্দিনের সরকারকেও এই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কাছে ন্যাক্কারজনকভাবে পরাজিত হতে হয়েছিল এবং নতি স্বীকার করতে হয়েছিল। সেসময় শিক্ষকদের গ্রেপ্তার এবং হয়রানি, শিক্ষার্থীদের দমানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। আওয়ামী লীগ নিশ্চয় সেই পথে যাবে না। তবে দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এই বিষয়গুলো নিয়ে উভয় পক্ষের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা শুরু করতে হবে। যাদের উপর শিক্ষকদের আস্থা আছে, যাদের উপর শিক্ষার্থীরা আস্থা রাখেন তাদেরকেই দায়িত্ব দিতে হবে সমঝোতা চেষ্টার জন্য। দায়িত্ব জ্ঞানহীন যে সমস্ত মন্ত্রী সরকারে আছেন তারা যদি শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তাহলে এর সমাধান হবে না। আর আমলাদের আমলাতান্ত্রিক পদ্ধতির বাইরে এসে সরকার প্রধানকে নির্মোহভাবে পরিস্থিতির বিশ্লেষণ করতে হবে এবং বাস্তবতা অনুধাবন করতে হবে বলেই সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। 

শিক্ষকরা এই পুরো পেনশন স্কিমের জন্য আমলাদের উপর দোষ চাপাচ্ছেন। কাজেই আমলাদেরকে দূরে সরিয়ে রেখে, আমলা নির্ভর মন্ত্রীদেরকে আলোচনার টেবিলে না এনে শিক্ষকদের যাদের প্রতি আস্থা রয়েছে তাদেরকে দায়িত্ব দেয়া উচিত আলোচনার জন্য। এই আন্দোলনকে অনেকেই রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করবে। অনেকে এর থেকে রাজনৈতিক ফয়দা লোটার চেষ্টা করবে। কাজেই এখনই এই বিষয়ে সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।


সর্বজনীন পেনশন স্কিম   কোটা আন্দোলন   সরকার   শিক্ষক   শিক্ষার্থী  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন