ইনসাইড বাংলাদেশ

মৌসুমী বায়ুর প্রভাব ও পাহাড়ি ঢলে সারাদেশে বৃষ্টিপাত, বন্যা পরিস্থিতি

প্রকাশ: ১০:০১ পিএম, ০২ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সারাদেশে গত কয়েকদিনের অব্যাহত ভারী বর্ষণের ফলে বিভাগীয় ও আশ-পাশের জেলাগুলোতে জলাবদ্ধতার পাশপাশি ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। জীবনযাত্রা হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির ফলে জেলা শহর ও উপজেলাসহ আশপাশের গ্রামের সুরক্ষা বাধ ভেঙে বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যেতেও দেখা যায় এসময়।
 
সিলেট
চলমান বন্যার মধ্যেই গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ফের প্লাবিত হয়েছে সিলেট। নগরের বিভিন্ন স্থানে ইতোমধ্যেই জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুরসহ সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোয় পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে বলে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে। সোমবার (১ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টা পর্যন্ত ২৫ ঘণ্টায় সিলেটে ২৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।

এসময় সিলেট নগরের বেশ কিছু এলাকার সড়ক ও বাসাবাড়ি পানিতে তলিয়ে যায়। এছাড়াও নগরের মির্জাজাঙ্গাল, মণিপুরি রাজবাড়ি, তালতলা, জামতলা, কুয়ারপা শিবগঞ্জ, শাহজালাল উপশহর, হাওয়াপাড়া, যতরপুর, মেন্দিবাগ, তোপখানা, মজুমদারি, চৌকিদেখী, দক্ষিণ সুরমাসহ বেশ কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন নগরের বাসিন্দারা।

এদিকে সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারার ৪টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে অতিক্রম করার বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে,  সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। নদীর ওই পয়েন্টে আজ সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। এ ছাড়া কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ, শেওলা, শেরপুর ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। অন্যদিকে সারী নদীর পানি গোয়াইনঘাট পয়েন্ট দিয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।

এর আগে এ বিভাগে গত ২৮ মে থেকে ভারী বৃষ্টির ফলে প্রথম দফায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে গত ১৬ জুন থেকে আবার বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন সিলেটের বাসিন্দারা। সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমে আজ পর্যন্ত ষষ্ঠবারের মতো জলাবদ্ধ পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন সিলেট মহানগরের বাসিন্দারা।

সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জে দিনভর ভারী বৃষ্টির ফলে বন্যা পরিস্থিতির ফের অবনতি ঘটে। সোমবার (১ জুলাই) সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টি বাড়তে থাকায় উজানের পাহাড়ি ঢলের সৃষ্টি হয়। পরে সোমবার রাত ৯টায় সুরমা নদীর পানি পৌর শহরের কাছে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা যায়।

এছাড়াও সুনামগঞ্জে সোমবারের বৃষ্টিতে পাঁচটি উপজেলায় আবার নতুন করে বন্যা দেখা মিলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিতে নেমে আসে উজানের পাহাড়ি ঢল। এ কারণে সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় অনেক রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়। শহরের সুরমা নদীতীরবর্তী এলাকাগুলোতেও এসময় বন্যার পানি ঢুকে যায়। পাহাড়ি ঢলের পানি জেলার তাহিরপুর উপজেলার জাদুকাটা নদ, সীমান্তের কলাগাঁও, বড়ছড়া, লাকমাছড়া হয়ে নামতে দেখা যায়। উজানের ঢলে জেলার সদর, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিতের পাশপাশি রাস্তাঘাটও তলিয়ে যায়। এমনকি মানুষের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও পানি প্রবেশ করে।

পৌর শহরের উত্তর আরপিননগর, নবীনগর, ওয়েজখালী, মল্লিকপুর, বড়পাড়া এলাকায় সুরমা নদীর পানি তীর উপচে রাস্তাঘাট ও মানুষের বাড়িঘরের আঙিনায় প্রবেশ করেছে। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা দু-একটি স্কুলে বিকেলে কিছু পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মফিজুর রহমান এসব পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করেন বলে জানা যায়। অন্যদিকে ছাতক উপজেলা শহরের কাছেও সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা যায়।  

পাউবো সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ ও এর উজানে ব্যাপক বৃষ্টির কারণেই পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। মূলত উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বেশি বৃষ্টি হলে পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে নদী ও হাওরে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে সুনামগঞ্জে রোববার সকাল নয়টা থেকে সোমবার সকাল নয়টা পর্যন্ত ১৭০ মিলিমিটার এবং ভারতের চেরাপুঞ্জিতে একই সময়ে ৩১৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।

সুনামগঞ্জে গত ১৬ জুন থেকে বন্যার দেখা মিলে। একপর্যায়ে প্লাবিত হয় জেলার ১ হাজার ১৮টি গ্রাম। আট লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। অসংখ্য ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট এসময় প্লাবিত হয়ে যায়। ২৩ জুনের পর থেকে নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে মানুষ বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করে।

চট্রগ্রাম
বিভাগীয় শহর চট্টগ্রামে তিন দিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ইতোমধ্যে জারি হয়েছে পাহাড়ধসের আগাম সতর্কবার্তা। যদিওবা এ সতর্ককতা আমলে নিচ্ছেন না এ অঞ্চলের মানুষ। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টিতে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছেন পাহাড়ের বাসিন্দারা। এমনকি প্রশাসনের সতর্কতার দিকেও কর্ণপাত নেই স্থানীয় বাসিন্দাদের। পাহাড়ধসের আশঙ্কায় নগরের ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলোয় মাইকিং করে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করা হলেও সাড়া মেলেনি তেমন। এদিকে নগরীর লালখান বাজারের বাসিন্দাদের জন্য লালখান বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হলেও বৃষ্টির মধ্যে বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র কিংবা আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিতে যাননি।

এছাড়াও চট্টগ্রাম নগরের ২৬ পাহাড়ে বর্তমানে ৬ হাজার ৫৫৮টি ঝুঁকিপূর্ণ বসতি রয়েছে। সাড়ে ৪ হাজারের বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বসতি রয়েছে নগরের কাট্টলী ভূমি সার্কেলে। এদিকে আজ সকাল থেকে টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরের কিছু কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতায় সৃষ্টি হয়েছে। উপযুক্ত নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তাঘাটে পানি জমে যাওয়ায় এতে দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারী ও যাত্রীরা। নগরের জিইসি মোড়েও সড়কের এক পাশে হাঁটুসমান পানির দেখা মিলে।

এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের উপপ্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা মোরশেদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, জিইসি মোড়ে সিটি ব্যাংক প্রান্ত থেকে সেন্ট্রাল প্লাজা পর্যন্ত সড়কের নিচে প্রায় ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি নালা থাকায় আর এটি সড়কের নিচে অবস্থিত হওয়ায় নিয়মিত পরিষ্কার করা সম্ভব হয় না। ফলে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ জন্য পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। গত বছরেও একই অবস্থা হয়েছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার দুপুর ১২টা থেকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত) চট্টগ্রামে ৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়কে পাহাড়ধস, সাজেকে আটকা ৮ শতাধিক পর্যটক

মঙ্গলবার (২ জুলাই) ভোরের দিকে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে খাগড়াছড়ির আলুটিলার সাপমারা এলাকায় পাহাড় ধসে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এসময় সড়কের ওপর মাটি জমে থাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নৈশ কোচের যাত্রীরা বিপাকে পড়েন। এমনকি ভোগান্তিতে পড়েছেন ঢাকা ও চট্টগ্রাম যাতাযাতকারী যাত্রীরা। পরে সড়ক থেকে মাটি সরানোর কাজ শুরু করেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। এছাড়া জেলার মহালছড়ির ২৪ মাইল এলাকার সড়কগুলোও পানিতে তলিয়ে যেতে দেখা যায়। একইসঙ্গে রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কেও যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এদিকে দীঘিনালা উপজেলার মেরুং স্টিল ব্রিজ এলাকায় পাহাড়ি ঢলে খাগড়াছড়ি লংগদু সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের লিডার মো. জসিমউদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আজ সকাল সোয়া নয়টার দিকে স্থানীয় লোকজন, সড়ক বিভাগ এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মিলে সড়কের মাটি সরানোর কাজ শুরু করেন।

রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার জানান, বাঘাইছড়িতে টানা ভারীবর্ষণের ফলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় প্রায় দুই হাজার পরিবার পানি বন্দি অবস্থায় রয়েছেন। ৫৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হলেও এখনো কেউ আসেনি। আর বাঘাইহাট সড়কে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সাজেকে ৮ শতাধিক পর্যটক আটকা পড়েছেন। পানি না সরা পর্যন্ত কেউ বের হতে পারবে না বলেও জানান তিনি।

ফুলগাজী ও পরশুরাম জেলার বাঁধ ভেঙে উপজেলা প্লাবিত
তিন দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তলিয়ে গেছে ফেনীর ফুলগাজী বাজার। ফলে বাঁধের চারটি স্থান ভেঙে জেলার ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হতে দেখা যায়। সোমবার (১ জুলাই) দুপুরের পর থেকে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে স্থানীয়রা।

জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফুলগাজী উপজেলার দৌলতপুর এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের তিনটি অংশে ভাঙন শুরু হয়। এতে করে পরশুরাম উপজেলার দক্ষিণ শালধর এলাকার জহির চেয়ারম্যানের বাড়িসংলগ্ন বাঁধের একটি অংশেও ভাঙন দেখা যায়।

এ বিষয়ে ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান মো. হারুন মজুমদার বলেন, বাঁধ ভাঙনের কথা জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। লোকালয় ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা মোকাবিলায় পূর্বপ্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূঁইয়া জানান, বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে উপজেলা প্রশাসন।

ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত

ফুলগাজী ও পরশুরাম জেলার বাঁধ ভেঙে উপজেলা প্লাবিতের ফলে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আজ মঙ্গলবার (২ জুলাই) পূর্বনির্ধারিত ফেনী জেলার ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করে জেলা প্রশাসক।

ফেনীতে ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পানিতে মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে  নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়ায় মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার সংবাদ মাধ্যমকে  এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে আজকের পরীক্ষা স্থগিতের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এবার ফুলগাজীতে চারটি ও পরশুরামে দুইটি কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম
ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামে হু হু করে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বিপৎসীমার কাছাকাছি রয়েছে ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি। তবে, গতকাল তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে থাকলেও আজ তা সামান্য কমে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে এসব নদনদী অববাহিকার বেশ কিছু চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়ে। তলিয়ে যায় এসব নীচু এলাকার শাক-সবজি, পাট সহ মৌসুমি ফসল। প্লাবিত এসব এলাকার বাসিন্দারা ভুগছেন বন্যা আতঙ্কে।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ৯ টার দিকে পাউবো, কুড়িগ্রামের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, গতকাল তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপরে থাকলেও গত ২৪ ঘন্টায় তা ১৫ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও ধরলার পানি তালুক শিমুলবাড়ী পয়েন্টে গত ২৪ ঘন্টায় ১২ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে অনান্য নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে গত ২৪ ঘন্টায় ৪১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৮, এছাড়াও ব্রহ্মপুত্র চিলমারী পয়েন্টে গত ২৪ ঘন্টায় ৪২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, তিস্তার পানি কিছুটা কমে বিপৎসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে স্বল্পমেয়াদী বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

শেরপুরে পাহাড়ি ঢল

দেশজুড়ে কয়েক দিনের অব্যাহত ভারী বর্ষণ এবং সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয় ও আসামের পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে শেরপুরের ঝিনাইগাতীর মহারশি নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ীর ভোগাই নদীর খালভাঙ্গা ও শ্রীবরদী উপজেলার সোমেশ্বরী নদীতেও ব্যাপকভাবে পানি বৃদ্ধির পাশপাশি দেখা যায় বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন। ফলে তিনটি উপজেলার অন্তত ৬০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

আজ মঙ্গলবার ভোরে ঝিনাইগাতী উপজেলার রামেরকুড়া, খৈলকুড়া, চতল, বনগাঁওসহ কয়েক স্থানে বাঁধ ভেঙে কমপক্ষে ১৫-২০টি গ্রাম পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঢলের পানি উপজেলা শহরের প্রধান বাজারসহ বিভিন্ন অফিস ও বাড়িতে প্রবেশ করলে বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, মহারশি নদীর ঝিনাইগাতী ব্রিজপাড় থেকে নদীর প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকা অবৈধভাবে দখল করে বসতি স্থাপন করায় নদী অনেকটা ভরাট হয়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। তারা জানান, স্ব স্ব ইউনিয়নে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পানিবন্দি মানুষের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরবর্তীতে বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে আর্থিক অনুদান ও ঢেউটিন প্রদান করা হবে।

জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুম বলেন, জেলা প্রশাসনের নজরে বিষয়টি রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার যে কোন জরুরি বিষয় মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুতির পাশপাশি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।


বন্যা   সিলেট   সুনামগঞ্জ   বাংলাদেশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে 'বাংলা ব্লকেড', তীব্র যানজটে জনদুর্ভোগ চরমে

প্রকাশ: ০৭:২৩ পিএম, ০৭ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিকিখার্থীদের পুর্ব ঘোষিত ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচীর ফলে অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে পুরো রাজধানী। সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দফা দাবিতে আন্দোলনকারীরা আজ রাজধানীর শাহবাগ মোড়ের সঙ্গে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় অবরোধ শুরু করেন।

‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ রোববার বেলা সোয়া তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিল শুরু করেন।  মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে টিএসসি হয়ে শাহবাগ মোড়ে আসে৷ বিকেল পৌনে চারটার দিকে তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করলে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এই মোড় দিয়ে সব ধরনের যন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং ছাত্র ধর্মঘট কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়ে বেলা আড়াইটার পর শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে থাকেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হল ও বিভাগের ব্যানারে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা আসতে থাকেন। দেখা যায়, বেলা সোয়া তিনটার সময় গ্রন্থাগারের সামনের সড়ক জনসমুদ্রে পরিণত হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পয়েন্টে অবরোধ করায় এসব এলাকার মধ্যদিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে রাজধানীর বড় একটি অংশ। এদিকে অফিস শেষে ঘরমুখী মানুষ পড়েছেন ব্যাপক ভোগান্তিতে। এসময় বাসসহ অন্যান্য যানবাহন প্রধান সড়কগুলোয় আটকা পড়ে থাকে ঘন্টার পর ঘন্টা। দেখা যায়, অনেকেই গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করেছেন।

এমনিতেও সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসের ব্যস্ততার কারণে সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় যানজটের দেখা মিলে। এসময় দুপুরে কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

পরে বিকাল চারটায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ শাহবাগ মোড় ও সংলগ্ন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ের পাশপাশি হানিফ ফ্লাইওভারে ওঠানামার চানখাঁরপুল মোড় অবরোধ করে বসেন। এর সঙ্গে সায়েন্স ল্যাব মোড়েও অবরোধ শুরু হলে আজিমপুর–নিউমার্কেট থেকে মিরপুর ও গাবতলীর পথে চলাচলের সড়কটি দিয়েও যান চলাচল ব্যাহত হতে দেখা যায়।

এদিকে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নেন ইডেন কলেজের ছাত্রীরা। অন্যদিকে আগারগাঁও মোড় অবরোধ করে সড়কে নামে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও পুরান ঢাকার কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন।

রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোয় শিক্ষার্থীদের অবরোধ কর্মসূচীর ফলে ঢাকার তাঁতীবাজার, রায় সাহেব বাজার মোড়, বংশাল, গুলিস্তান, পুরানা পল্টন, শাহবাগ, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, আগারগাঁও, মিরপুরের কাজী পাড়া, শেওড়া পাড়া ও মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকা, নিউমার্কেট, সায়েন্স ল্যাবসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়কে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে অনেকটাই স্থবির হয়ে গেছে পুরো রাজধানী।

এদিকে চানখাঁরপুলে শিক্ষার্থীদের অবরোধের ফলে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ উড়ালসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলে বেলা দুইটা থেকে থেমে থেমে গাড়ি চলতে দেখা যায়। ফলে বিকেল চারটার পর থেকে উড়ালসড়ক হয়ে রাজধানীর ভেতরে কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে দেখা যায়নি।

যাত্রাবাড়ী মোড়ে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা অবস্থান করে দেখা যায়, দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা বাসগুলো সড়কের একই স্থানে থেমে আছে। এসময় যাত্রীরা বিরক্ত হয়ে বাস থেকে নেমে হেঁটে রওনা করেন।

যাত্রাবাড়ী মোড় থেকে এক কিলোমিটার দূরের দক্ষিণ কুতুবখালী এলাকার ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাত্রাবাড়ীর দিকে আসছিলেন ভৈরব থেকে আসা তসলিম উদ্দিন। তাঁর মাথায় ২০ কেজির চালের বস্তা। আর পিঠে আরেকটি ব্যাগ। সঙ্গে হাঁটছেন স্ত্রীও। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এক ঘণ্টা গাড়িতে বসে বিরক্ত হয়ে নেমে গেছেন। রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে, এটা শুনে হেঁটেই রওয়া করেছেন। যাবেন খিলগাঁও।

এদিকে যানজটে দীর্ঘ সময় গাড়িতে বসে থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে অনেকেই  ফেসবুকেও করেছেন পোস্ট। এমনই একজন লিখেছেন, ‘কোনো সুস্থ মানুষ একটানা ৪ ঘণ্টা এক জায়গায় বসে থাকে কীভাবে?’


কোটাবিরোধী আন্দোলন   ছাত্র আন্দোলন   ঢাকা   অবরোধ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দল হেরে যাওয়ায় ব্রাজিল সমর্থক শিক্ষকের ছুটির আবেদন

প্রকাশ: ০৭:২২ পিএম, ০৭ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

কোপা আমেরিকা ফুটবল টুর্নামেন্টে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলায় উরুগুয়ের কাছে হেরে গেছে ব্রাজিল। রোববার (০৭ জুলাই) সকালে অনুষ্ঠিত খেলায় প্রতিপক্ষ উরুগুয়ের কাছে ট্রাইবেকারে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় দলটি। 

 

এদিকে ম্যাচ হেরে হতাশার ছায়া নেমে আসে বাংলাদেশে ব্রাজিল ভক্তদের মাঝে। প্রিয় দল হেরে যাওয়ায় পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া প্রি ক্যাডেট স্কুলের সহকারী শিক্ষক ব্রাজিল সমর্থক সন্তোষ কুমার মনের কষ্টে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটির আবেদন করেছেন।

ভরাক্রান্ত মন নিয়ে তিনি রোববার একদিনের জন্য ছুটির আবেদন করেছেন তিনি। সেই ছুটির আবেদন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে।


 

লিখিত আবেদনে ওই শিক্ষক বলেন, 'অত্যন্ত ভারাক্রান্ত মনে জানাচ্ছি যে, প্রিয় দল ব্রাজিল আজ সকালে কোপা আমেরিকা কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ট্রাইবেকারে পরাজিত হয়েছে। প্রিয় দল ব্রাজিল পরাজিত হওয়ায় আমি ভীষণভাবে মর্মাহত। এই অবস্থায় আমি বিদ্যালয় যেতে পারছি না। আমাকে একদিনের ছুটি দিতে বার্ধিত করবেন।' 

 

এ বিষয়ে দাশুড়িয়া প্রি ক্যাডেট স্কুলের পরিচালক গোপাল অধিকারী জানান, 'ব্রাজিল হেরে যাওয়ায় স্কুলের সহকারী শিক্ষক সন্তোষ কুমার মনের দুঃখ  নিয়ে একদিনের ছুটির আবেদন করেছেন। আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে একদিনের ছুটি দিয়েছি। আগামীকাল সোমবার তিনি স্কুলে আসবেন।' 


ব্রাজিল সমর্থক   ছুটির আবেদন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কুড়িগ্রামে তিন নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে, ৩৪১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ

প্রকাশ: ০৬:৫৬ পিএম, ০৭ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

কুড়িগ্রামে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি।  ব্রহ্মপুত্রের পানি সামান্য হ্রাস পেয়ে চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে পানি বৃদ্ধি পেয়ে ধরলার পানি তালুক শিমুলবাড়ী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ও দুধকুমারের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেড়েছে তিস্তার পানিও।

 

এদিকে বন্যার পানি উঠায় জেলার ৯ উপজেলায় ৩৪১টি প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও মাদ্রাসায় পাঠদান সাময়িক বন্ধ করে হয়েছে।

 

বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকায় জেলার নদ-নদীর অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে ৭ দিন ধরে বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ। অনেকেই ঘর-বাড়ি ছেড়ে গবাদি পশু নিয়ে উচু সড়ক ও বাঁধে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।

 

বিশুদ্ধ খাবার পানি ও শুকনো খাবার সংকটে পড়েছেন চরাঞ্চলের বন্যা কবরিতরা। পাশাপাশি গবাদি পশুর খাদ্য সংকট নিয়েও বিপাকে পড়েছেন তারা। তবে বানভাসি মানুষের মাঝে সরকারি ভাবে কিছু ত্রাণ সহয়তা লক্ষ্য করা গেলেও বেসরকারি ভাবে তেমন ত্রাণ সহয়তা দেখা যায়নি।

 

কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের পোড়ার চরের জহুরুল হক বলেন, গত ৫-৬ দিন ধরে আমার চরের সব বাড়িতে পানি। গরু ছাগল হাস মুরগী নিয়ে পাশের উঁচু একটি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছি আমরা। আমার এখানকার সবারে খুব কষ্ট। 

 

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সামছুল আলম জানান, বন্যার পানি উঠার কারণে ১২১টি মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও মাদ্রাসায় পাঠদান সাময়িক বন্ধ করা হয়েছে, বন্যা নাই এমন সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে ।


কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নবেজ উদ্দিন জানান, ৯ উপজেলায় বন্যায় প্লাবিত বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২৫৩টি। এর মধ্যে পাঠদান বন্ধ রয়েছে ২২০টির।

জেলা ত্রাণ ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল হাই সরকার জানান, বন্যা মোকাবেলায় ৩শ ১৭ মেট্রিক টন চাল, ২১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও ১৯ হাজার ৩০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।  


বন্যা পরিস্থিতি   পানিবন্দি   বিদ্যালয়ের পাঠদান   বন্ধ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কোটা বাতিলের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ

প্রকাশ: ০৬:৪৭ পিএম, ০৭ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সারা দেশব্যাপী চলছে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহালের দাবিতে আন্দোলন। এবার সেই কোটাবিরোধী আন্দোলনেরই অংশ হিসেবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কোটবাড়ি এলাকা অবরোধ করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা।

রোববার বিকেল ৩টা থেকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী  'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন' ব্যানারে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করে। এতে, মহাসড়কে আলেখার চর থেকে পদুয়ার বাজার পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার যানজট দেখা দিয়েছে।

বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা কোটা পদ্ধতি পুরোপুরি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মহাসড়কে অবরোধস্থলে উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে।

এর আগে, দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মহাসড়কে এসে অবস্থান নেয় তারা। কুমিল্লার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা ব্যানার নিয়ে এসে অবরোধে যোগ দেয়।

এ বিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী জানান, 'বিকেল ৩টা থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের অবরোধ চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তাদের সঙ্গে কথা বলছে।'

কুমিল্লা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুফতি আলমগীর হোসেন বলেন, 'শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে আলেখার চর থেকে পদুয়ার বাজার পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই পাশে রাস্তা বন্ধ হয়ে আছে। ওই ৫-৬ কিলোমিটারে কোনো যানবাহন চলছে না।'


কোটাবিরোধী আন্দোলন   ছাত্র আন্দোলন   ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক   অবরোধ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বগুড়ায় রথযাত্রায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৫ জনের মৃত্যু, আহত অন্তত ৩০

প্রকাশ: ০৬:৩৯ পিএম, ০৭ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

বগুড়ায় রথযাত্রার সময় বিদ্যুতায়িত হ‌য়ে ৫ জ‌নের মৃত্যু হ‌য়ে‌ছে। এ সময় আহত হ‌য়ে‌ছেন অন্তত ৩০ জন। রোববার (৭ জুলাই) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে বগুড়া শহ‌রের সেউজগাড়ী মো‌ড়ে এ দুর্ঘটনা ঘ‌টে।  বগুড়া সদর থানা‌র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইহান ও‌লিউল্লাহ হতাহতের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহতরা হ‌লেন, অলোক সরকার (৪০), আতশী রানী (৪০), র‌ঞ্জিতা মোহন্ত (৬০), নরেশ মোহন্ত (৬৫) এবং অজ্ঞাত পরিচয় এক নারী।

জানা গে‌ছে, সেউজগাড়ী ইসকন ম‌ন্দির থেকে রথযাত্রা‌ বের হয় বিকেল ৫টায়। ১০ মিনিট পথ অতিক্রম করার পর সেউজগাড়ী আমতলা এলাকায় পৌঁছায়। এ সময় স্টেশন সড়কে র‌থের চূড়াটি সড়কের ওপর দিয়ে যাওয়া উচ্চ ভোল্টের বৈদ্যুতিক তা‌রের সংস্প‌র্শে আসে। এতে আগুন ধরে যায়।

এ সময় র‌থের ওপরে বসে থাকা এবং নিচে থাকা অন্তত ৩০ জন আহত হন। তাঁদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান‌ মে‌ডি‌কেল ক‌লেজ হাসপাতা‌ল ও বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

বগুড়া সদর থানা‌র ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ ব‌লেন, রথযাত্রার সময় র‌থের চূড়া‌টি বিদ্যুতের তা‌রের সংস্প‌র্শে এলে এ দুর্ঘটনা ঘ‌টে। আহত‌দের মধ্যে মে‌ডি‌কেল কলেজে ৪ জন এবং মোহাম্মদ আলী হাসপাতা‌লে এক জন মারা যান।


রথযাত্রা   বিদ্যুৎস্পৃষ্ট   মৃত্যু   বগুড়া  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন