ইনসাইড বাংলাদেশ

মৌসুমী বায়ুর প্রভাব ও পাহাড়ি ঢলে সারাদেশে বৃষ্টিপাত, বন্যা পরিস্থিতি

প্রকাশ: ১০:০১ পিএম, ০২ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সারাদেশে গত কয়েকদিনের অব্যাহত ভারী বর্ষণের ফলে বিভাগীয় ও আশ-পাশের জেলাগুলোতে জলাবদ্ধতার পাশপাশি ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। জীবনযাত্রা হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির ফলে জেলা শহর ও উপজেলাসহ আশপাশের গ্রামের সুরক্ষা বাধ ভেঙে বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যেতেও দেখা যায় এসময়।
 
সিলেট
চলমান বন্যার মধ্যেই গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ফের প্লাবিত হয়েছে সিলেট। নগরের বিভিন্ন স্থানে ইতোমধ্যেই জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুরসহ সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোয় পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে বলে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে। সোমবার (১ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টা পর্যন্ত ২৫ ঘণ্টায় সিলেটে ২৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।

এসময় সিলেট নগরের বেশ কিছু এলাকার সড়ক ও বাসাবাড়ি পানিতে তলিয়ে যায়। এছাড়াও নগরের মির্জাজাঙ্গাল, মণিপুরি রাজবাড়ি, তালতলা, জামতলা, কুয়ারপা শিবগঞ্জ, শাহজালাল উপশহর, হাওয়াপাড়া, যতরপুর, মেন্দিবাগ, তোপখানা, মজুমদারি, চৌকিদেখী, দক্ষিণ সুরমাসহ বেশ কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন নগরের বাসিন্দারা।

এদিকে সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারার ৪টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে অতিক্রম করার বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে,  সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। নদীর ওই পয়েন্টে আজ সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। এ ছাড়া কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ, শেওলা, শেরপুর ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। অন্যদিকে সারী নদীর পানি গোয়াইনঘাট পয়েন্ট দিয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।

এর আগে এ বিভাগে গত ২৮ মে থেকে ভারী বৃষ্টির ফলে প্রথম দফায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে গত ১৬ জুন থেকে আবার বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন সিলেটের বাসিন্দারা। সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমে আজ পর্যন্ত ষষ্ঠবারের মতো জলাবদ্ধ পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন সিলেট মহানগরের বাসিন্দারা।

সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জে দিনভর ভারী বৃষ্টির ফলে বন্যা পরিস্থিতির ফের অবনতি ঘটে। সোমবার (১ জুলাই) সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টি বাড়তে থাকায় উজানের পাহাড়ি ঢলের সৃষ্টি হয়। পরে সোমবার রাত ৯টায় সুরমা নদীর পানি পৌর শহরের কাছে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা যায়।

এছাড়াও সুনামগঞ্জে সোমবারের বৃষ্টিতে পাঁচটি উপজেলায় আবার নতুন করে বন্যা দেখা মিলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিতে নেমে আসে উজানের পাহাড়ি ঢল। এ কারণে সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় অনেক রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়। শহরের সুরমা নদীতীরবর্তী এলাকাগুলোতেও এসময় বন্যার পানি ঢুকে যায়। পাহাড়ি ঢলের পানি জেলার তাহিরপুর উপজেলার জাদুকাটা নদ, সীমান্তের কলাগাঁও, বড়ছড়া, লাকমাছড়া হয়ে নামতে দেখা যায়। উজানের ঢলে জেলার সদর, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিতের পাশপাশি রাস্তাঘাটও তলিয়ে যায়। এমনকি মানুষের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও পানি প্রবেশ করে।

পৌর শহরের উত্তর আরপিননগর, নবীনগর, ওয়েজখালী, মল্লিকপুর, বড়পাড়া এলাকায় সুরমা নদীর পানি তীর উপচে রাস্তাঘাট ও মানুষের বাড়িঘরের আঙিনায় প্রবেশ করেছে। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা দু-একটি স্কুলে বিকেলে কিছু পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মফিজুর রহমান এসব পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করেন বলে জানা যায়। অন্যদিকে ছাতক উপজেলা শহরের কাছেও সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা যায়।  

পাউবো সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ ও এর উজানে ব্যাপক বৃষ্টির কারণেই পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। মূলত উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বেশি বৃষ্টি হলে পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে নদী ও হাওরে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে সুনামগঞ্জে রোববার সকাল নয়টা থেকে সোমবার সকাল নয়টা পর্যন্ত ১৭০ মিলিমিটার এবং ভারতের চেরাপুঞ্জিতে একই সময়ে ৩১৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।

সুনামগঞ্জে গত ১৬ জুন থেকে বন্যার দেখা মিলে। একপর্যায়ে প্লাবিত হয় জেলার ১ হাজার ১৮টি গ্রাম। আট লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। অসংখ্য ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট এসময় প্লাবিত হয়ে যায়। ২৩ জুনের পর থেকে নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে মানুষ বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করে।

চট্রগ্রাম
বিভাগীয় শহর চট্টগ্রামে তিন দিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ইতোমধ্যে জারি হয়েছে পাহাড়ধসের আগাম সতর্কবার্তা। যদিওবা এ সতর্ককতা আমলে নিচ্ছেন না এ অঞ্চলের মানুষ। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টিতে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছেন পাহাড়ের বাসিন্দারা। এমনকি প্রশাসনের সতর্কতার দিকেও কর্ণপাত নেই স্থানীয় বাসিন্দাদের। পাহাড়ধসের আশঙ্কায় নগরের ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলোয় মাইকিং করে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করা হলেও সাড়া মেলেনি তেমন। এদিকে নগরীর লালখান বাজারের বাসিন্দাদের জন্য লালখান বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হলেও বৃষ্টির মধ্যে বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র কিংবা আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিতে যাননি।

এছাড়াও চট্টগ্রাম নগরের ২৬ পাহাড়ে বর্তমানে ৬ হাজার ৫৫৮টি ঝুঁকিপূর্ণ বসতি রয়েছে। সাড়ে ৪ হাজারের বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বসতি রয়েছে নগরের কাট্টলী ভূমি সার্কেলে। এদিকে আজ সকাল থেকে টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরের কিছু কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতায় সৃষ্টি হয়েছে। উপযুক্ত নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তাঘাটে পানি জমে যাওয়ায় এতে দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারী ও যাত্রীরা। নগরের জিইসি মোড়েও সড়কের এক পাশে হাঁটুসমান পানির দেখা মিলে।

এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের উপপ্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা মোরশেদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, জিইসি মোড়ে সিটি ব্যাংক প্রান্ত থেকে সেন্ট্রাল প্লাজা পর্যন্ত সড়কের নিচে প্রায় ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি নালা থাকায় আর এটি সড়কের নিচে অবস্থিত হওয়ায় নিয়মিত পরিষ্কার করা সম্ভব হয় না। ফলে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ জন্য পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। গত বছরেও একই অবস্থা হয়েছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার দুপুর ১২টা থেকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত) চট্টগ্রামে ৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়কে পাহাড়ধস, সাজেকে আটকা ৮ শতাধিক পর্যটক

মঙ্গলবার (২ জুলাই) ভোরের দিকে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে খাগড়াছড়ির আলুটিলার সাপমারা এলাকায় পাহাড় ধসে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এসময় সড়কের ওপর মাটি জমে থাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নৈশ কোচের যাত্রীরা বিপাকে পড়েন। এমনকি ভোগান্তিতে পড়েছেন ঢাকা ও চট্টগ্রাম যাতাযাতকারী যাত্রীরা। পরে সড়ক থেকে মাটি সরানোর কাজ শুরু করেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। এছাড়া জেলার মহালছড়ির ২৪ মাইল এলাকার সড়কগুলোও পানিতে তলিয়ে যেতে দেখা যায়। একইসঙ্গে রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কেও যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এদিকে দীঘিনালা উপজেলার মেরুং স্টিল ব্রিজ এলাকায় পাহাড়ি ঢলে খাগড়াছড়ি লংগদু সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের লিডার মো. জসিমউদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আজ সকাল সোয়া নয়টার দিকে স্থানীয় লোকজন, সড়ক বিভাগ এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মিলে সড়কের মাটি সরানোর কাজ শুরু করেন।

রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার জানান, বাঘাইছড়িতে টানা ভারীবর্ষণের ফলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় প্রায় দুই হাজার পরিবার পানি বন্দি অবস্থায় রয়েছেন। ৫৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হলেও এখনো কেউ আসেনি। আর বাঘাইহাট সড়কে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সাজেকে ৮ শতাধিক পর্যটক আটকা পড়েছেন। পানি না সরা পর্যন্ত কেউ বের হতে পারবে না বলেও জানান তিনি।

ফুলগাজী ও পরশুরাম জেলার বাঁধ ভেঙে উপজেলা প্লাবিত
তিন দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তলিয়ে গেছে ফেনীর ফুলগাজী বাজার। ফলে বাঁধের চারটি স্থান ভেঙে জেলার ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হতে দেখা যায়। সোমবার (১ জুলাই) দুপুরের পর থেকে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে স্থানীয়রা।

জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফুলগাজী উপজেলার দৌলতপুর এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের তিনটি অংশে ভাঙন শুরু হয়। এতে করে পরশুরাম উপজেলার দক্ষিণ শালধর এলাকার জহির চেয়ারম্যানের বাড়িসংলগ্ন বাঁধের একটি অংশেও ভাঙন দেখা যায়।

এ বিষয়ে ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান মো. হারুন মজুমদার বলেন, বাঁধ ভাঙনের কথা জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। লোকালয় ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা মোকাবিলায় পূর্বপ্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূঁইয়া জানান, বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে উপজেলা প্রশাসন।

ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত

ফুলগাজী ও পরশুরাম জেলার বাঁধ ভেঙে উপজেলা প্লাবিতের ফলে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আজ মঙ্গলবার (২ জুলাই) পূর্বনির্ধারিত ফেনী জেলার ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করে জেলা প্রশাসক।

ফেনীতে ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পানিতে মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে  নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়ায় মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার সংবাদ মাধ্যমকে  এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে আজকের পরীক্ষা স্থগিতের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এবার ফুলগাজীতে চারটি ও পরশুরামে দুইটি কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম
ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামে হু হু করে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বিপৎসীমার কাছাকাছি রয়েছে ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি। তবে, গতকাল তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে থাকলেও আজ তা সামান্য কমে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে এসব নদনদী অববাহিকার বেশ কিছু চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়ে। তলিয়ে যায় এসব নীচু এলাকার শাক-সবজি, পাট সহ মৌসুমি ফসল। প্লাবিত এসব এলাকার বাসিন্দারা ভুগছেন বন্যা আতঙ্কে।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ৯ টার দিকে পাউবো, কুড়িগ্রামের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, গতকাল তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপরে থাকলেও গত ২৪ ঘন্টায় তা ১৫ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও ধরলার পানি তালুক শিমুলবাড়ী পয়েন্টে গত ২৪ ঘন্টায় ১২ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে অনান্য নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে গত ২৪ ঘন্টায় ৪১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৮, এছাড়াও ব্রহ্মপুত্র চিলমারী পয়েন্টে গত ২৪ ঘন্টায় ৪২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, তিস্তার পানি কিছুটা কমে বিপৎসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে স্বল্পমেয়াদী বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

শেরপুরে পাহাড়ি ঢল

দেশজুড়ে কয়েক দিনের অব্যাহত ভারী বর্ষণ এবং সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয় ও আসামের পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে শেরপুরের ঝিনাইগাতীর মহারশি নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ীর ভোগাই নদীর খালভাঙ্গা ও শ্রীবরদী উপজেলার সোমেশ্বরী নদীতেও ব্যাপকভাবে পানি বৃদ্ধির পাশপাশি দেখা যায় বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন। ফলে তিনটি উপজেলার অন্তত ৬০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

আজ মঙ্গলবার ভোরে ঝিনাইগাতী উপজেলার রামেরকুড়া, খৈলকুড়া, চতল, বনগাঁওসহ কয়েক স্থানে বাঁধ ভেঙে কমপক্ষে ১৫-২০টি গ্রাম পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঢলের পানি উপজেলা শহরের প্রধান বাজারসহ বিভিন্ন অফিস ও বাড়িতে প্রবেশ করলে বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, মহারশি নদীর ঝিনাইগাতী ব্রিজপাড় থেকে নদীর প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকা অবৈধভাবে দখল করে বসতি স্থাপন করায় নদী অনেকটা ভরাট হয়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। তারা জানান, স্ব স্ব ইউনিয়নে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পানিবন্দি মানুষের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরবর্তীতে বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে আর্থিক অনুদান ও ঢেউটিন প্রদান করা হবে।

জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুম বলেন, জেলা প্রশাসনের নজরে বিষয়টি রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার যে কোন জরুরি বিষয় মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুতির পাশপাশি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।


বন্যা   সিলেট   সুনামগঞ্জ   বাংলাদেশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

এক মাসের মধ্যে বাড়ছে না মেট্রোরেলের ভাড়া

প্রকাশ: ১০:০৪ পিএম, ০৪ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

মেট্রোরেলের ভাড়ার ওপর ভ্যাট বসানোর বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। আগামী এক মাসের মধ্যে এই কমিটি জানাবে কিভাবে মেট্রোরেলের ভাড়ার ওপর ভ্যাট আরোপ করা হবে। এই সময়ের মধ্যে মেট্রোরেলের ভাড়া বাড়বে না।

আজ বৃহস্পতিবার সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বেলা আড়াইটার দিকে এনবিআর ও ডিএমটিসিএলের মধ্যে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মূলত মেট্রোরেলের ভাড়ার ওপর ভ্যাট আরোপের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়।

এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী জানান, আজকের বৈঠকে মেট্রোরেলের ভাড়ার বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এনবিআর, আইসিটি বিভাগ ও সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়কে নিয়ে ডিএমটিসিএল একটি কারিগরি কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটি এক মাসের মধ্যে মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর কিভাবে ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত করা যায় সে বিষয়ে প্রস্তাবনা দেবে।

তিনি আরও বলেন, "আমরা সড়ক বিভাগ বা ডিএমটিসিএল কখনো বলিনি, এনবিআরকে ভ্যাট দেব না। আমরা ভ্যাট দিতে চাই। তবে এ ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত করার পরে যাত্রী সাধারণের ওপর যেন চাপ না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এসব বিষয় নিয়ে মূলত আজকের আলোচনা হয়েছে।"

এর আগে সোমবার থেকেই মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট যুক্ত হওয়ার কথা ছিল। সেই অনুযায়ী সেদিন থেকেই মেট্রোরেলের টিকিটের মূল্যের সঙ্গে অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ অর্থ দেওয়ার কথা যাত্রীদের। তবে তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

গত ৪ এপ্রিল ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডকে (ডিএমটিসিএল) চিঠি দিয়ে এনবিআর জানায়, জুলাই থেকে মেট্রোরেলের সেবা ও টিকিটে মূসক পরিশোধ করতে হবে। এরপর ডিএমটিসিএলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠন মেট্রোরেলে ভ্যাট না বসানোর অনুরোধ করে। মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর ভ্যাট মওকুফের সময়সীমা ছিল ৩০ জুন পর্যন্ত। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে এই সুবিধা দেয় এনবিআর।

মূলত, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) ট্রেনের টিকিটের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপিত রয়েছে। একইভাবে মেট্রোরেলের ভাড়া থেকেও ভ্যাট আদায় করতে চায় এনবিআর। এ নিয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। যাত্রীদের বিদ্যমান ভাড়ার মধ্য থেকেই ডিএমটিসিএল ভ্যাট কেটে রেখে পরিশোধ করতে বলেছে এনবিআর। ভ্যাট পরিশোধের পর বাকি টাকা পাবে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। তবে আয় কমাতে রাজি নয় ডিএমটিসিএল। অন্যদিকে বর্তমান ভাড়ার সঙ্গে ভ্যাট যোগ করে এখনই ভাড়া বাড়াতেও তারা রাজি নয়। এ ক্ষেত্রে তারা ভ্যাট অবহিতর মেয়াদ আরও বাড়িয়ে বর্তমান ভাড়া রাখতে আগ্রহী।


মেট্রোরেল   এনবিআর   ভাড়াবৃদ্ধি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা কোটাবিরোধীদের

প্রকাশ: ০৯:৩২ পিএম, ০৪ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে রাজধানীসহ সারাদেশে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা আন্দোলন শুরু করেছে।

গত চার দিন ধরে শাহবাগসহ দেশের বিভিন্ন স্থান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। সারা দেশের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। বিকেল ৬টায় নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আগামীকাল শুক্রবার অনলাইন ও অফলাইনে জনসংযোগ কর্মসূচি চলবে এবং শনিবার বিক্ষোভ মিছিল ও রোববার ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি পালন করা হবে।

আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে নিজেদের দাবির পক্ষে বক্তব্য রাখেন। তারা উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালে শিক্ষার্থীরা ৫৬ শতাংশ কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করেছিল, যা পরবর্তীতে সফল হয়। কিন্তু সম্প্রতি হাইকোর্ট ওই পরিপত্রকে বাতিল করে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহাল করার রায় দিয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

তারা চার দফা দাবি তুলে ধরেছেন: ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে, সব গ্রেডে অযৌক্তিক কোটার অবসান ঘটিয়ে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম কোটা রাখতে হবে, কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং দুর্নীতিমুক্ত, মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে হবে।

প্রসঙ্গত, একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ জুন ২০১৮ সালের কোটা ব্যবস্থা বাতিলসংক্রান্ত পরিপত্র বাতিল করে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল করা হয়।


কোটাব্যবস্থা   কোটা আন্দোলন   শিক্ষার্থী   শাহবাগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

পদ্মা সেতু: ষড়যন্ত্রকারী কারা

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০৪ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের যারা ষড়যন্ত্র করেছিল তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। তারা পরাজিত হয়েছে, শেষ পর্যন্ত তারা তাদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে পারেনি। কিন্তু আসলে কী হয়েছিল? কেন পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হল?  যে প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন শুরুই করেনি, সেই অর্থায়ন শুরুর আগেই তারা কেন দুর্নীতির অভিযোগ তৈরি করল এবং অর্থায়ন প্রত্যাহার করল?

সাধারণত একটি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হয় যখন প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়, টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়, অর্থ লেনদেন হয়। কিন্তু টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই, কাউকে কাজ দেয়ার আগেই বিশ্বব্যাংক কি কারণে দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপন করেছিল সেটি একটি বিস্ময়কর ঘটনা বটে। 

আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু: শেখ হাসিনার সবচেয়ে সাহসী সিদ্ধান্ত

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কতগুলো বাস্তবতার কারণে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু নিয়ে এ দুর্নীতির অভিযোগ উঠিয়েছিল। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মহলের চাপে এই অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছিল। পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল আসলে একটি ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্রের সূত্রপাত হয়েছিল ডক্টর মোহাম্মদ ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থেকে বয়স উত্তীর্ণের কারণে সরে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে। ডক্টর মোহাম্মদ ইউনূসের চাকরির বয়সসীমা অতিক্রান্ত হওয়ার প্রেক্ষিতে তাকে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থেকে অবসরে যেতে হয়। 

আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু: শেখ হাসিনার সহযোদ্ধারা

কিন্তু এই অবসরের সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নেননি। তাকে চাকরিতে বহাল রাখার জন্য তিনি আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করেন। হিলারি ক্লিনটন নিজে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। ডক্টর ইউনূস আদালতে যান তার ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ রাখার জন্য। কিন্তু সব জায়গায় তিনি ব্যর্থ হন। এই ব্যর্থ হওয়ার পরেই পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধের জন্য তিনি হিলারি ক্লিনন্টনের কাছে তদবির করেন। হিলারি ক্লিন্টনের কাছে লেখা একটি চিঠিতে দেখা যায় যে, ডক্টর মোহাম্মদ ইউনূস বলছেন যে সরকারকে চাপ দিতে হবে, শেখ হাসিনাকে চাপ দিতে হবে এবং প্রয়োজনে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করার জন্য বিশ্বব্যাংকে বলতে হবে। তাহলে শেখ হাসিনার ওপর চাপ সৃষ্টি হবে।

ড. ইউনূসের এই চিঠির প্রেক্ষিতে হিলারি ক্লিনন্টন তার একান্ত অনুগত তৎকালীন বিশ্ব ব্যাংকের সভাপতির কাছে একটি ই-মেইল বার্তা পাঠান। সেই ইমেইলে হিলারি ক্লিনন্টন পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন আপাতত বন্ধের জন্য অনুরোধ করেন। পরবর্তীতে হিলারি ক্লিন্টনের প্রভাবের কারণে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়। 

আরও পড়ুন: মুহিত-রিজভীর প্রস্তাব যেভাবে নাকচ করেছিলেন সাহাবুদ্দিন

উল্লেখ্য যে, বিশ্বব্যাংকের ঐ প্রেসিডেন্ট তার শেষ কর্মদিবসে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং বিশ্বব্যাংকের বোর্ড সভায় বা কোনও তদন্ত ছাড়াই শুধুমাত্র প্রেসিডেন্টের একক ক্ষমতা বলে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল। 

বিশ্বব্যাংকের এই একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ডক্টর ইউনূস ছাড়াও ভূমিকা রেখেছিলেন ড. ওসমান ফারুক। ওসমান ফারুক ওয়াশিংটনে আছেন এবং তিনি ডেমোক্র্যাট দলের অন্যতম একজন উপদেষ্টা। তিনিও পদ্মা সেতুতে তথাকথিত দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংকের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন৷ 

এই সময় পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপন করেছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা বেগম খালেদা জিয়া। তিনি এ নিয়ে একটি ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় নিবন্ধ লিখেছিলেন, যেখানে তিনি বাংলাদেশে বিভিন্ন বড় বড় প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপন করেছিলেন। ওয়াশিংটন পোস্টের এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হবার পর এটি নিয়ে হৈ চৈ হয়েছিল। 

পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হচ্ছে এমন একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত করেছিল ডেইলি স্টার ও প্রথম আলো। যে প্রতিবেদন গুলোর ভিত্তিতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন প্রত্যাহারে প্ররোচিত হয়েছিল। 

পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। পদ্মাসেতু বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন ছাড়া অসম্ভব। পদ্মা সেতু নিজ অর্থায়নে করা একটি অলীক প্রস্তাব এরকম লেখা লিখে তিনি ষড়যন্ত্রের অংশীদার হয়েছিলেন। 

এই ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে জবাব হিসেবে পদ্মা সেতু আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। এসময় সমস্ত ষড়যন্ত্রকারীরা আজ ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।


পদ্মা সেতু   ষড়যন্ত্রকারী   বিশ্বব্যাংক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ডেঙ্গু ইস্যুতে সতর্ক আছি: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৮:৫৬ পিএম, ০৪ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ডেঙ্গু সম্পর্কিত বিশেষজ্ঞদের প্রদত্ত পরিসংখ্যানগুলো সম্পর্কে সরকার সতর্ক আছে। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় কমিটির চলতি বছরের দ্বিতীয় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, সিঙ্গাপুরের তুলনায় বাংলাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কম। তাই সিটি করপোরেশন ও সেবা সংস্থাগুলোর কার্যক্রমে অসন্তুষ্ট হওয়ার কোনো কারণ নেই। বিশেষজ্ঞদের তথ্য অনুযায়ী সকলেই সচেতন আছেন, এবং সে কারণেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, ঢাকা-চট্টগ্রামসহ সব সিটি করপোরেশন, উপজেলা, এবং ইউনিয়ন পরিষদ তাদের করণীয় কাজগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করবে।

সভায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রতি মাসে প্রতিটি কাউন্সিলরকে ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে এবং পরিত্যক্ত মালামাল কিনতে ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস জানান, ভ্রাম্যমান আদালতের কার্যক্রম চলছে এবং পরীক্ষার দিন ছাড়া বিদ্যালয়গুলোতে অভিযান পরিচালিত হবে।


ডেঙ্গু   মেয়র   সতর্কতা   অভিযান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

পাবনায় বৃদ্ধের শরীরে ব্যাটারির এসিড নিক্ষেপের অভিযোগ

প্রকাশ: ০৮:২০ পিএম, ০৪ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরে আব্দুর রহিম (৬২) নামের এক বৃদ্ধের শরীরে ব্যাটারির এসিড নিক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের লোকজনের ওপর।

বৃহস্পতিবার (০৪ জুলাই) ভোর রাতের দিকে পাবনার চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের কুকড়াগাড়ি গ্রামে ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী রহিম ওই গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে। পরে গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বজনরা।

ভুক্তভোগী আব্দুর রহিম সাংবাদিকদের জানান, বেশকিছুদিন ধরে একই গ্রামের মৃত আজিজুল হকের ছেলে শহিদুল ইসলাম শহীদের সাথে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল আব্দুর রহিমের। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার স্থানীয়ভাবে শালীস বৈঠকও হয়। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। বৃহস্পতিবার ভোররাত ৪টার দিকে শহিদুল ইসলাম, তার দুই ছেলে শফিকুল হাফিজুরসহ বেশ কয়েকজন আব্দুর রহিমকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে ঘরের বাইরে নিয়ে আসে। এরপর আব্দুর রহিমের শরীরে  এসিড (ব্যাটারির পানি) নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়।

এতে আব্দুর রহিমের গলা থেকে কোমড় পর্যন্ত শরীরের বিভিন্ন জায়গা ঝলসে যায়। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আব্দুর রহিমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

বিষয়ে চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা জানান, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


জমি সংক্রান্ত বিরোধ   বৃদ্ধ   এসিড নিক্ষেপ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন