আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারত বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্ক অন্যদের জন্য মডেল।
মঙ্গলবার (০২ জুলাই) সন্ধ্যায় ভারতের নৌ বাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে. ত্রিপাঠি প্রধানমন্ত্রীর সংসদ ভবন কার্যালয়ে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আলোচনার মাধ্যমে স্থল সীমানা, সমুদ্রসীমার সমাধান করেও বাংলাদেশ ও ভারত উদাহরণ তৈরি করেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতীয় অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় জনগণের সহায়তা ও অবদান সবসময় স্মরণ করি।
ভারতের নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে. ত্রিপাঠী বলেন, তিনি বাংলাদেশকে নিজের বাড়ির মতো অনুভব করছেন কারণ প্রকৃতিগত দিক থেকে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে পার্থক্য সামান্য।
উভয় দেশের নৌবাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা সম্পর্কে অ্যাডমিরাল দীনেশ ত্রিপাঠি বলেন, যদি বাংলাদেশ নৌবাহিনী কোনো সহযোগিতা চায়, তবে না বলার কোনো সুযোগ নেই।
ভারতের নৌবাহিনী প্রধান বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘর (বিএমএম) পরিদর্শন করেন এবং এটিকে বিশ্বমানের বলে উল্লেখ করে বলেন, তিনি বিএমএম পরিদর্শন করে অত্যন্ত মুগ্ধ হয়েছেন।
বাংলাদেশের অনেক নৌ কর্মকর্তা ভারতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন উল্লেখ করে দীনেশ ত্রিপাঠী বলেন, বাংলাদেশ চাইলে আরও অফিসার পাঠাতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং ভারতের নৌ বাহিনী প্রধান বলেছেন বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরকে শান্তিপূর্ণ রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারত উভয়েরই মানসিকতা একই। এক্ষেত্রে উভয় দেশই একসঙ্গে কাজ করবে। দুই দেশ এই অঞ্চলে কোনো ব্যাঘাত আশা করে না।
ধানমন্ডি-৩২-এ বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পরিদর্শনের কথা উল্লেখ করেও ভারতের নৌ প্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মত্যাগ ও অবদানের প্রতিফলন দেখে তিনি অভিভূত হয়ে পড়েন।
ভারতের নৌবাহিনী প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসাও করেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: বাসস
বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক মডেল শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে পৌঁছানোর পর অনলাইনভিত্তিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে চলে আসে তার ছবি, পর্যায়ক্রমে সমাধানও। পরীক্ষাকেন্দ্রের কক্ষে বসেই স্মার্টফোনে পাওয়া সেই সমাধান দেখে উত্তরপত্রে লেখেন পরীক্ষার্থীরা। প্রশ্ন, উত্তরপত্র ও কলমের সঙ্গে স্মার্টফোনও এসব পরীক্ষার্থীদের কাছে অপরিহার্য সরঞ্জাম।
মাত্র দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে এভাবেই উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষা দিচ্ছে একটি কেন্দ্রের প্রায় এক হাজার পরীক্ষার্থী! কেন্দ্র কমিটিকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে কব্জায় নিয়ে পরীক্ষার্থীদের জন্য এমন বন্দোবস্ত করেছে একটি চক্র। ‘মিশন এ প্লাস’ নামের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে চলছে এমন কার্যক্রম। আশ্চর্যের বিষয় কলেজের অধ্যক্ষ ও পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিবের মদদে কেন্দ্র কমিটির সরাসরি সম্পৃক্ততায় বছরের পর বছর চলছে প্রশ্নফাঁস ও নকল বাণিজ্য।
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার দুর্গম এক জনপদ মনসুর নগর ইউনিয়ন। সেখানে উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতকের জন্য একটি মাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আলহাজ ফরহাদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজ। তার পাশেই এম মনসুর আলী জাতীয় উচ্চবিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়টিই অত্র অঞ্চলের এইচএসসি পরীক্ষার একমাত্র কেন্দ্র। যা শুধুমাত্র করা হয়েছে ফরহাদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের জন্য। দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় উপজেলা সদর থেকে এই কেন্দ্রে সড়ক ও নৌপথে পৌঁছাতে সময় লাগে চার থেকে ছয় ঘণ্টা। ফলে উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষা অফিস থেকে কেউ কেন্দ্র পরিদর্শনে যান না বললেই চলে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রটিকে ঘিরে গত ছয় বছর ধরে যেন চলছে প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে নকল বাণিজ্যের উৎসব। বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য শাখা মিলিয়ে অন্তত ৯টি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে এই কারবার চালাচ্ছে চক্রটি। গ্রুপগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ‘মিশন এ প্লাস’ ও ‘রাসেলস ভাইপার’। গ্রুপ দুটিতে বিজ্ঞান বিভাগের প্রায় দুইশ শিক্ষার্থী যুক্ত আছে। যারা সবাই একই কলেজ ও কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী। গত পহেলা জুলাই টাকা দিয়ে পরীক্ষার্থী পরিচয়ে ‘মিশন এ প্লাস’ গ্রুপে যুক্ত হন দেশ রূপান্তরের এই প্রতিবেদক। পরদিন ছিল বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা।
পরীক্ষা শুরুর কিছু সময় আগেই ওই গ্রুপে প্রশ্নপত্র ও এর আংশিক উত্তর দিয়ে দেয় ‘মিশন এ প্লাস’ ও ‘রাসেলস ভাইপার’ গ্রুপের নিয়ন্ত্রক শাকিল রানা। এরপর পর্যায়ক্রমে পুরো প্রশ্নেরই উত্তর দেওয়া হয়। একই চিত্র ছিল ‘রাসেলস ভাইপার’ গ্রুপের ক্ষেত্রেও। এই গ্রুপেও প্রশ্ন ও উত্তর দেয় শাকিল। গ্রুপ দুটির সার্বিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গেছে চারজন এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে। যারা সবাই শাকিলের নির্দেশ মেনে চলে।
প্রশ্নফাঁস, গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ ও সমাধান দেওয়ার বিষয়ে চক্রের প্রধান শাকিল রানার বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। গ্রুপের অ্যাডমিনে থাকা তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরে কল করলে অভিযোগ শুনে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে ফোন বন্ধ করে রাখেন। এর প্রায় আধা ঘণ্টা পরে নিজেই কল করে নির্দোষ দাবি করে বলেন, ‘আপনি যে শাকিলের কথা বলছেন আমি সেই শাকিল নই। আমি এ সবের সঙ্গে যুক্ত না।’ তাহলে প্রশ্নফাঁসের গ্রুপগুলোতে তার ফোন নম্বর অ্যাডমিনে আছে কীভাবে জানতে চাইলে শাকিল বলেন, ‘সেটা আমি জানি না।’
একইভাবে ‘করোনা ভাইরাস’ নামে আরও একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এমন কার্যক্রম চালানোর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই গ্রুপটিতে মানবিক বিভাগের প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া হয়। তবে গ্রুপের সঙ্গে যুক্তদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এমন আরও ছয়টি গ্রুপের ব্যাপারে জানা গেলেও সেগুলোর নাম ও সদস্যসংখ্যা জানা যায়নি। বিজ্ঞান বিভাগের গ্রুপ দুটির নিয়ন্ত্রণকারী শাকিল রানা ২০২৩ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন আলহাজ ফরহাদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজ থেকে। তার ফেসবুক আইডি ঘেঁটে জানা গেছে, বর্তমানে পড়াশোনা করছেন রাজধানীর তেজগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের গণিত বিভাগে।
এসব গ্রুপে পাওয়া প্রশ্ন এবং কেন্দ্রে বসে স্মার্টফোন দেখে পরীক্ষা দেওয়ার প্রমাণ সংগ্রহে জোর দেওয়া হয়। যারই ধারাবাহিকতায় গত ২ জুলাই বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষার দিনে কেন্দ্রটির একটি ভিডিওচিত্র সংগ্রহ করা হয়। যাতে পরীক্ষার শেষ সময়ে কেন্দ্রের একটি কক্ষে দেখা যায়, কয়েকজন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা শেষ করে প্রবেশপত্রসহ অন্যান্য সরঞ্জাম গুছিয়ে উঠে যাচ্ছেন। তবে বেশিরভাগই আবার দ্রুতগতিতে লিখে যাচ্ছেন উত্তরপত্রে। যারা লিখছিলেন তাদের সবার সামনেই প্রশ্নপত্র ও একটি করে স্মার্টফোন রাখা। স্মার্টফোনে দেখে পরীক্ষার্থীদের সবাই নির্ভয়ে লিখছেন। পাশেই নির্বিকার দাঁড়িয়ে দায়িত্বরত কক্ষ পরিদর্শক।’
প্রশ্নফাঁস ও নকল বাণিজ্যে মদদের অভিযোগ আছে এই কেন্দ্র সচিবের বিরুদ্ধে। সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বললাম তো এখন কথা বলতে পারব না।’
এ অবৈধ কর্মকাণ্ডে মদদের অভিযোগ আছে আলহাজ ফরহাদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধেও। অভিযোগের বিষয়ে মোবাইল ফোনে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এখন পরীক্ষা কেন্দ্রে আছি। আমার সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট আছেন। এখন কোনো বক্তব্য দেওয়া যাবে না।’
পাবলিক পরীক্ষাসমূহ (অপরাধ) আইন ১৯৮০ অনুযায়ী কেন্দ্রটিতে পরীক্ষা চলাকালে পুরো কার্যক্রমে চারটি অপরাধ হয়েছে। আইনটির ৪ এর ক ও খ উপধারা অনুযায়ী পাবলিক পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস বা বিতরণের জন্য অপরাধে জড়িতরা তিন থেকে চার বছরের কারাদণ্ড বা অর্থসহ উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। ৯ এর ক ও খ উপধারা অনুযায়ী পরীক্ষার্থীদের লিখিত, মৌখিক ও যান্ত্রিক উপায়ে নকলে সহায়তা করার জন্য দুই থেকে তিন বছর কারাদ-সহ অর্থদণ্ডের বিধান আছে। এছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বরত কোনো ব্যক্তি যদি এসব অপরাধে সহায়তা করেন সেক্ষেত্রে আইনের ১২ ধারা অনুযায়ী পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
এভাবে অবাধে নকল ও প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমি বিষয়টি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে জানাব। যেহেতু দুর্গম এলাকা, তাই কেন্দ্রটি যেন বাতিল না করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
কেন্দ্রটির সার্বিক চিত্র তুলে ধরে বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি সিরাজগঞ্জের এডিসিকে জানানো হয়েছে। আমরা চেয়ারম্যান স্যারের (বোর্ড চেয়ারম্যান) সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।’
উদ্ভাসের বড় ভাইরা সমাধান দেন প্রশ্নের : শাকিল রানা আলহাজ ফরহাদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের কয়েকজন পরীক্ষার্থীকে নিয়ে নকল ও প্রশ্নফাঁস বাণিজ্যের চক্র গড়ে তুলেছেন। চক্রটির সঙ্গে সম্পৃক্ত বর্তমান পরীক্ষার্থীদের মধ্যে অন্তত চারজনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। তবে এই চক্রের সঙ্গে সরাসরি জড়িত বর্তমান পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অন্তত ১০ জন। চক্রে থাকা এই পরীক্ষার্থীরাই অন্য পরীক্ষার্থীদের টাকার বিনিময়ে হোয়টাসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত করেন। এর আগে যাচাই-বাছাই করা হয়, তারা আসলেই আলহাজ ফরহাদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ও এম মনসুর আলী জাতীয় উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী কি-না। এরপর প্রতিটি পরীক্ষার দিন পরীক্ষা শুরুর অন্তত দশ মিনিট আগে থেকেই গ্রুপগুলোতে চলে আসে প্রশ্নপত্র। তারপর সমাধান। চক্রে থাকা দুজন পরীক্ষার্থী ও গ্রুপে যুক্ত থাকা ছয়জন পরীক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয় দেশ রূপান্তরের। তারা বলেন, শাকিল প্রশ্ন নিয়ে প্রথমে ঢাকায় উদ্ভাস কোচিং সেন্টারে পড়ান তার এমন বড় ভাইদের কাছে পাঠান। তারা সেগুলো সমাধান করে আবার পাঠান শাকিলকে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রুপ থেকে মুছে ফেলা হয় প্রশ্ন ও উত্তর। উদ্ভাসের বড় ভাইদের দিয়ে প্রশ্ন সমাধানের বিষয়ে শাকিল বলেন, ‘আমি এসব জানি না ভাই।’
কেন্দ্র হারানোর ভয়ে চুপ থাকেন এলাকাবাসী : এভাবে অবাধে প্রশ্নফাঁস ও নকল করে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকায় প্রতি বছরই ভালো ফলাফল করে আলহাজ ফরহাদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ কারণে পাসের জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার শিক্ষার্থীরাও নদী পার হয়ে এই কলেজে পড়তে আসেন। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি না জানলেও কেন্দ্রে যে মোবাইল ফোন দেখে পরীক্ষা দেওয়া যায় তা এলাকার সবাই জানেন। তবে এগুলো নিয়ে কেউ মুখ খোলেন না শুধু এই ভয়ে যে, সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষ জানতে পারলে কেন্দ্র বাতিল করে দেবে। এ বিষয়ে কথা হয় ওই এলাকার এক ছাত্রনেতার সঙ্গে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকের সিরাজগঞ্জ থেকে আসা কষ্টকর হয়ে পড়ে, তাই তাদের অনুপস্থিতির সুযোগ কাজে লাগিয়ে কলেজের অধ্যক্ষের তত্ত্বাবধানে এসব কার্যক্রম চালাচ্ছে একটি চক্র। সচেতন মানুষ এটি নিয়ে কথা বলেন না। এর কারণ, বিষয়টি জানাজানি হলে কেন্দ্র বাতিল হতে পারে। এই কেন্দ্র বাতিল হলে, কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। আমাদের দাবি থাকবে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি দেওয়া হোক, কিন্তু কেন্দ্রটি যেন বাতিল না করা হয়।’
(তথ্যসূত্র: দেশ রূপান্তর, ৮ জুলাই, ২০২৪)
মন্তব্য করুন
আজ সোমবার (৮ জুলাই) বিকেলে দেশের শীর্ষ মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্কে বিভ্রাট দেখা দেয়। কিছু সময়ের জন্য অনেক গ্রাহক নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। ইন্টারনেট, ভয়েস কল ও এসএমএস সেবা বন্ধ হয়ে যায়। তবে সমস্যাটি বর্তমানে সমাধান করা হয়েছে বলে জানিয়েছে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ।
বিকেল থেকেই গ্রামীণফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে অনেকেই নেটওয়ার্ক সমস্যা অনুভব করেন। কিন্তু এই সমস্যা সকল গ্রাহকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল না।
গ্রামীণফোনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে একটি দুঃখ প্রকাশ পোস্ট দেয়া হয়েছে। পোস্টে বলা হয়, "কারিগরি সমস্যার কারণে কিছু গ্রাহকের কল ও ইন্টারনেট সেবা ব্যবহারে সাময়িক সমস্যা হওয়ায় আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমাদের কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করে সমস্যাটি সমাধান করেছেন। আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।"
উল্লেখ্য, গত বছরের সেপ্টেম্বরে গ্রামীণফোনে কারিগরি সমস্যার কারণে নেটওয়ার্ক বিভ্রাট ঘটে। একই বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফাইবার অপটিক ক্যাবল কাটা পড়ায় দুই ঘণ্টার জন্য গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন ছিল।
গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ সমস্যাটি দ্রুত সমাধান করতে পেরেছে, যা তাদের দক্ষ কর্মীদের প্রচেষ্টার ফল। তারা গ্রাহকদের ধৈর্য ও সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে।
গ্রামীণফোন নেটওয়ার্ক ভোগান্তি
মন্তব্য করুন
খুলনায় অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ সংগ্রহের সময় যমুনা
টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি রাশেদ নিজাম ও ক্যামেরাপারসন নির্মল চন্দ্রের ওপর হামলা
হয়েছে। সোমবার (৮ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে খুলনার কে ডি ঘোষ রোডে জেলা পরিষদের প্রশাসনিক
কর্মকর্তা এস এম মাহবুবুর রহমান এবং তার দুই সহযোগী এই হামলা চালান।
রাশেদ নিজাম জানান, খুলনার চুকনগরে জেলা পরিষদের একটি মার্কেট
নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পান তিনি। অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য ক্যামেরাপারসনসহ
মাহবুবুর রহমানের কার্যালয়ে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। মারমুখী হয়ে তাদের ধাক্কা
দিয়ে কক্ষ থেকে বের করে দেন এবং হত্যার হুমকি দেন। এছাড়াও ক্যামেরার মেমোরি কার্ড কেড়ে
নেয়ার চেষ্টা করেন অভিযুক্তরা।
হামলার পর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজা
রশীদের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। তিনি ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এছাড়া খুলনা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) এবং
ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দুই সংগঠনই দ্রুত
অপরাধীদের গ্রেফতার এবং শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
সংবাদ সংগ্রহের সময় সাংবাদিকদের ওপর এ ধরনের হামলার ঘটনায়
উদ্বেগ প্রকাশ করে ডিআরইউ সভাপতি বলেছেন, "সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে
নির্যাতনের শিকার হওয়া কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।" ক্র্যাব সভাপতি আরও বলেন,
"এ ধরনের হামলা মুক্ত গণমাধ্যমের প্রতি হুমকি স্বরূপ। আমরা অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক
শাস্তি চাই।"
মন্তব্য করুন
৪ ঘণ্টা পর রেলপথ অবরোধ প্রত্যাহার করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এ অবরোধ প্রত্যাহার করেন তারা।
এর আগে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের
চারুকলাসংলগ্ন এলাকায় রেলপথে অবস্থান নেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এতে রাজশাহীর
সঙ্গে সারা
দেশের রেল
যোগাযোগ সাময়িকভাবে
বন্ধ হয়ে
যায়
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা
বলেন, ‘এর
আগে ৪
দফা দাবি
আদায়ে আন্দোলন
হলেও সোমবার
থেকে এক
দফা দাবিতে
অবস্থান কর্মসূচি
চলে। আমরা
চাই, অবিলম্বে
কোটা পদ্ধতির
সংস্কারের মাধ্যমে
জাতীয় সংসদে
আইন পাস
করতে হবে।
আর দাবি
আদায় না
হওয়া পর্যন্ত
এ আন্দোলন
চলবে।’
শিক্ষার্থীদের দাবি, ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকুরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও বৈষম্যমূলক কোটা সংস্কার করতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।
সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিক ভোগের সুযোগ এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে৷
উল্লেখ্য, গত
৫ ও
৬ জুলাই
কোটা সংস্কারের
দাবিতে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক
অবরোধ করেন
শিক্ষার্থীরা।
কোটা আন্দোলন রাবি রেল অবরোধ প্রত্যাহার
মন্তব্য করুন
গাজীপুর মহানগরে বাড়ি নির্মাণের সময় মাটি খুঁড়তে গিয়ে কলস
ভর্তি ‘গ্রেনেড’ পাওয়া গেছে। এ ঘটনা জানার পরপরই ঢাকা থেকে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট
ঘটনাস্থলে এসে কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানার ওসি সৈয়দ রাফিউল
করিম জানান, সোমবার সকালে জোড়পুকুর পাড় এলাকায় মাটির খোঁড়াখুঁড়ির সময় এসব গ্রেনেড সদৃশ
বস্তু পাওয়া যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা রাজুর তথ্য অনুযায়ী, আবুল কাশেম নামে
একজন কাপাসিয়া উপজেলার বাসিন্দা সম্প্রতি গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ ছায়াবীথি (জোড়পুকুর
পাড়) এলাকায় সাড়ে তিন কাঠা জমি কিনে বাড়ি নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সকালে শ্রমিকরা
মাটি খনন করতে গিয়ে সকাল ১০টার দিকে একটি মাটির কলস খুঁজে পান। কোদালের আঘাতে কলসটি
ভেঙে গেলে ভেতরে গ্রেনেড সদৃশ বস্তু দেখা যায়।
পুলিশকে বিষয়টি জানানো হলে তারা ঘটনাস্থলে এসে প্রাথমিকভাবে
এগুলোকে পরিত্যক্ত গ্রেনেড বলে ধারণা করেন এবং নিরাপত্তার জন্য এলাকাটি খালি করে দেন।
বাড়ির মালিক আবুল কাশেম বলেন, “সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শ্রমিকরা
আমাকে বিষয়টি জানায়। আমি প্রথমে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করি এবং পরে সদর
থানায় গিয়ে পুলিশকে জানাই। বর্তমানে জমির গেইটে তালা লাগানো হয়েছে এবং কাউকে ভেতরে
প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।”
ওসি সৈয়দ রাফিউল করিম বলেন, গ্রেনেড সদৃশ বস্তুগুলো পরীক্ষা
করে নিরাপত্তার স্বার্থে আশপাশের লোকজনকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঢাকা থেকে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ
ইউনিট এসে বস্তুগুলো পরীক্ষা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবে।
Top of Form
Bottom of Form
মন্তব্য করুন