ইনসাইড বাংলাদেশ

বানারীপাড়ায় ৮ পরিবারকে ভূমিহীন ও গৃহহীন করলো উপজেলা প্রশাসন

প্রকাশ: ১১:৩৪ এএম, ০৩ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

গত ১১ জুন বরিশাল জেলাকে ভূমিহীনমুক্ত গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার ঘোষণার ২১ দিনের মাথায় সেই বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলায় পুর্নবাসিত না করে আষাঢ়ের ঘনঘোর বৃষ্টির মধ্যে বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ করে টি পরিবারকে ভূমিহীন গৃহহীন করে পথে নামিয়ে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

জানা গেছে, ওই সম্পত্তিতে এসিল্যান্ডের বাসভবন নির্মাণের উদ্দেশ্যে উচ্ছেদ অভিযান করা হয়েছে। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মুনতাহসিন তাসমিম রহমান অনিন্দ্র' নেতৃত্বে মঙ্গলবার ( জুলাই) সকাল ৮টায় শুরু করে বৃষ্টির মধ্যে প্রায় দিনভর উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এতে তিনটি টিনসেড বিল্ডিংসহ টি বসত ঘর,রান্না ঘর,হাস-মুরগী,কবুতর ছাগলের ঘর ভেকু দিয়ে গুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়।

এসময় ওই বাড়িতে প্রবেশের পৌরসভার একটি রাস্তা পারিবারিক কবরস্থানও ভেঙ্গে ফেলা হয়।  

অভিযানে যাদেরকে ভূমিহীন গৃহহীন করা হয়েছে তারা হলেন আঃ ওয়াহেদ হাওলাদার,আব্দুল মালেক বেপারী,সালেক বেপারী,সুজন বেপারী,সাইদুল হাওলাদার,জাহাঙ্গীর হাওলাদার,বাদশা হাওলাদার  তৈয়ব হাওলাদার এরা সবাই দিনমজুর হতদরিদ্র।

উচ্ছেদের পরে রাস্তায় খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নেওয়া ভূমি গৃহহারা পরিবারগুলো জানায়, ১৯৬৯ সাল থেকে প্রায় ৫৫ বছর ধরে উপজেলা পরিষদের পিছনে পৌর শহরের নম্বর ওয়ার্ডে ২৮ শতক খাস সম্পত্তি লিজ নিয়ে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। গত কয়েক বছর ধরে তাদের লিজ নবায়ন বন্ধ করে দেওয়া হয়। লিজ নবায়নের জন্য উপজেলা ভূমি অফিসসহ ইউএনও জেলা প্রশাসকের দপ্তরে দৌঁড়ঝাপ করেও তারা ব্যর্থ হন।

গত মাসে তাদের উচ্ছেদ করার উদ্যোগ নেওয়ায় তারা বরিশাল আদালতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করেন। এছাড়া হাইকোর্টেও মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। এরই মধ্যে অনেকটা ফিল্মি স্টাইলে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। এসময় অনেক কাকুতি মিনতি হাত-পা ধরেও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট মুনতাহসিন তাসমিম রহমান অনিন্দ্র' মন গলানো সম্ভব হয়নি।

উপরন্তু মালেক বেপারীর স্ত্রী তাহমিনা তার ছেলে তানভীরকে দুই বছরের সাজা দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় বলে তাদের অভিযোগ।

প্রসঙ্গে বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডা. অন্তরা হালদার জানান, অবৈধ ভাবে দখল করে রাখা ওই খাস সম্পত্তিতে এসিল্যান্ডের বাসভবন নির্মাণ করার উদ্দেশ্যে উচ্ছেদ অভিযান করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সম্প্রতি বরিশাল জেলাকে ভূমিহীনমুক্ত গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করার পরে পুর্নবাসিত না করে উচ্ছেদ অভিযান সাংঘর্ষিক  অমানবিক কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ওই পরিবারগুলোকে জমিসহ ঘর পাওয়ার আবেদন করতে বলবেন।’

বিষয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট মুনতাহসিন তাসমিম রহমান অনিন্দ্র বলেন, উচ্ছেদ মিস কেস ০৩ বিপি ২৩/২৪ এর চূড়ান্ত আদেশ উপরের অফিস আদেশের প্রেক্ষিতে উচ্ছেদ কার্যক্রমটি পরিচালনা করা হয় এছাড়া বিষয়ে আদালতের কোন নিষেধাজ্ঞা কিংবা স্থিতিবস্থা বজায়ের আদেশ ছিলনা। হুমকি নয়,সরকারি কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করলে সাজার বিধান রয়েছে সেটা তাদের মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি তার।


ভূমিহীন   গৃহহীন   উপজেলা প্রশাসন   উচ্ছেদ অভিযান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ছাত্র-শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত বিএনপি

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৫ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়েছে। ৩ দিন ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করার পর দলটি আবার হতাশায় ভেঙে পড়েছে। তারা ভেবেছিল যে বেগম খালেদা জিয়ার ইস্যুতে অন্তত নেতা কর্মীরা চাঙ্গা হবে। কিন্তু বিএনপির এই ৩ দিনের কর্মসূচি রীতিমতো ফ্লপ হয়েছে বিএনপি নেতারাও স্বীকার করছেন যে এই কর্মসূচির মাধ্যমে নেতাকর্মীদের হতাশা কাটাতে পারছেন না তারা। সরকার পতনের যে দল সংগঠন এবং দলের ভিতরে হতাশা দূর করাটাই তাদের লক্ষ্য। কিন্তু সেই লক্ষ্য পূরণে ও তিন দিনের আন্দোলনের কর্মসূচি ব্যর্থ হচ্ছে। 

এর মধ্যে বিএনপির কোনো নেতা কোটা বিরোধী আন্দোলন এবং শিক্ষকদের প্রত্যয় পেনশন স্কিম নিয়ে আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করার পক্ষে মতামত দিচ্ছেন। কিন্তু বিএনপির আরেক অংশের নেতৃত্ব এই দুটি কি ফাঁদ মনে করছেন? তারা মনে করছেন, শিক্ষকদের যে আন্দোলন হচ্ছে সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার এবং এই আন্দোলনের সঙ্গে আওয়ামী সমর্থিত শিক্ষকরাই জড়িত৷ এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হলে আবার নতুন করে হতাশ হতে হবে। 

বিএনপির মধ্যে শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে সম্পূর্ণ দ্বিধাবিভক্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিএনপির কোন কোন নেতা মনে করছেন, এটা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। আমলাতন্ত্রের সঙ্গে শিক্ষকদের বিরোধ। যারা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা সবাই আওয়ামীপন্থি। কাজেই তারা এক সময় মিটমাট করে ফেলবেন তখন বিএনপিকে পস্তাতে হবে। 

বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের কেউ কেউ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। তারা মনে করছে যে, সরকারকে চাপে ফেলার জন্য এই আন্দোলনে বিএনপির সংহতি প্রকাশ করা উচিত এবং বিএনপি যদি আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয় তাহলে লাভ হবে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে এই আন্দোলনে যুক্ত হওয়া নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দ্ব এখনও কাটেনি। বরং এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে প্রবলভাবে। 

শুধু শিক্ষকদের আন্দোলন নয়, কোটা বিরোধী আন্দোলন নিয়েও বিএনপির অবস্থান দ্বিধাবিভক্ত। ছাত্রদলের নতুন কমিটি হয়েছে। ছাত্রদলের অনেক নেতাই কোটাবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে নানা ভাবে যুক্ত হচ্ছেন। কিন্তু প্রকাশ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে এই আন্দোলনের সঙ্গে সমান্তরালভাবে কর্মসূচি দেয়া বা আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য উস্কানি দেয়া ইত্যাদি প্রবণতাগুলো এখনও পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। বরং তারা কোটাবিরোধী আন্দোলনের সমাপ্তি কী হয়, কীভাবে এই আন্দোলনকে সরকার মোকাবিলা করে সেটাই দেখতে চাইছে। 

বিএনপির নেতারা মনে করছেন, এই সমস্ত শ্রেণি পেশার আন্দোলনগুলো জনপ্রিয় হলেও তার সঙ্গে রাজনৈতিক সংস্রব নেই। এসব আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বরং বিএনপি আরও দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। কারণ এই আন্দোলনগুলোর মাধ্যমে বিএনপির মূল দাবিগুলো অকার্যকর এবং দুর্বল হবে। 

বিএনপির কোনো নেতা এটা মনে করেন যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দুর্নীতি এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির ইস্যুগুলিকে আড়াল করার জন্যই কোটা বিরোধী আন্দোলন বা শিক্ষকদের পেনশন স্কিমের আন্দোলনকে সামনে আনা হয়েছে। এটি সরকারের একটি কৌশল। 

বিএনপির একজন নেতা একজন নেতা বলছিলেন যে দুর্নীতিবাজদের নিয়ে যখন সারা দেশে হৈ চৈ হচ্ছিল তখনই শিক্ষকদের ‘প্রত্যয়’ স্কিম নিয়ে আন্দোলন আর শিক্ষার্থীদের কোটা বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে। এটি একটি সাজানো নাটক বলে মন্তব্য করেন ঐ বিএনপি নেতা। তিনি মনে করেন, এই সমস্ত আন্দোলন করে সরকার মূল ইস্যু থেকে দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরাতে চেয়েছে। তবে, সামনের দিনগুলোতে কোটাবিরোধী আন্দোলন এবং শিক্ষকদের আন্দোলন কিভাবে এগোয় সেটির দিকেই লক্ষ্য রাখতে চাইছেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ। 


কোটা আন্দোলন   শিক্ষকদের আন্দোলন   বিএনপি   দ্বিধাবিভক্ত  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

‘আগে যারা খবরদারি করতো, পদ্মাসেতু নির্মাণের পর তাদের মানসিকতা বদলে গেছে’

প্রকাশ: ০৫:৩৭ পিএম, ০৫ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “যারা ভেবেছিল তাদের সহায়তা ছাড়া বাংলাদেশ চলতেই পারবেনা, সেই ধারণাটা বদলে গেছে। সেই ধারণা আর নেই। আগে যারা কথায় কথায় খবরদারি করতো, পদ্মাসেতু নির্মাণের পর তাদের মানসিকতা বদলে গেছে। পদ্মাসেতুর জন্য আজ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।”

বাংলাদেশের অহংকার, গর্বের অর্জন পদ্মা বহুমুখী সেতুর সমাপনী অনুষ্ঠানের সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। শুক্রবার (৫ জুলাই) মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২০০১ সালে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের গ্যাস অন্য দেশের কাছে বিক্রি করতে রাজি হই নাই বলেই সেবার সরকার গঠন করতে পারি নাই। বাংলাদেশের সম্পদ বেঁচে ক্ষমতায় আসতে হবে, শেখ মুজিবের মেয়ে এটা কখনও চায় নাই।”

এর আগে বক্তব্যের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, সাধারণত কোন প্রকল্প সমাপ্ত হলে, কোন অনুষ্ঠান হয়না। কিন্তু পদ্মাসেতুর ওপর দিয়ে অনেক ঝড়-ঝাপটা গেছে। যার জন্য পদ্মাসেতু সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাতেই আজকের এই আয়োজন।

সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এছাড়াও সমাবেশে অংশ নেন কূটনৈতিক, রাজনীতিবিদ ও আমলাসহ দেড় হাজারের বেশি মানুষ।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতুতে যান চলাচলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর পর থেকে গত দুই বছর সেতুর ওপর দিয়ে এক কোটি ২৭ লাখ যানবাহন পারাপার হয়েছে। গত ২৯ জুন পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে এক হাজার ৬৬১ কোটি টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১৯ হাজার যান চলাচল করেছে এই সেতুতে। দৈনিক গড়ে দুই কোটি ৩০ লাখ টাকার টোল আদায় হয়েছে বলেও মন্ত্রিপরিষদের সমন্বয় ও সংস্কার বিভাগের সচিব মাহমুদুল হোসাইন খান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করতে মোট বরাদ্দ থেকে ১ হাজার ৮৩৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা কম খরচ হয়েছে। আমরা ওই টাকা নিয়ম অনুযায়ী সরকারি কোষাগারে জমা দেব।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা   বাংলাদেশ   পদ্মা সেতু   সমাবেশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

আমলাদের বিরুদ্ধে রাজনীতিবিদদের একটি বিজয়

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ০৫ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

আপাতত মেট্রোরেলের ভাড়া বাড়ছে না। মেট্রোরেলের ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে এনবিআরের চেয়ারম্যান রহমাতুল মুনিমের একটি প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছিলো। সেই দ্বন্দ্বে আপাতত রাজনীতিবিদদের জয় হলো। আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতা ওবায়দুল কাদেরের কাছে শেষ পর্যন্ত এনবিআরের চেয়ারম্যানকে আপাতত বশ মানতে হয়েছে। 

১ জুলাই থেকে মেট্রোরেলের ভাড়ার উপরে ১৫% ভ্যাট বসানোর প্রস্তাব করেছিলো এনবিআর। কিন্তু সেই প্রস্তাব গৃহীত হয়নি। এখন পর্যন্ত ভ্যাট আদায় হয়নি। ভ্যাট আদায় করা হবে কি হবে না এটি নিয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে। সেই কমিটিতে এনবিআরের প্রতিনিধিরাও আছে। আগামী এক মাসের মধ্যে উভয়পক্ষ আলাপ-আলোচনা করে এব্যাপারে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে। 

তবে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যেহেতু এটি একটি নতুন পরিবহণ ব্যবস্থা এবং মানুষ এর সুবিধা ভোগ করছে। তাই এখানে ভ্যাট আরোপের জন্য আরেকটু সময় প্রয়োজন। তাছাড়া কারিগরি এবং প্রযুক্তিগত কিছু বিষয় রয়েছে। কারিগরি ব্যবস্থাপনার কিছু সংশোধন করা ছাড়া এখানে ভ্যাট আদায় করলে জটিলতা হতে পারে। সেকারণেই মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ এর আগে এনবিআরকে জানিয়েছিলো যে,আপাতত মেট্রোরেলের উপর যাতে ভ্যাট বসানো না হয়। 

কিন্তু মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের এই দাবি প্রত্যাখান করে এনবিআর জানিয়ে দেয়, মেট্রোরেলের ভাড়ার উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হবে। পরে বিষয়টি প্রকাশ্য বিতর্কে রূপ নেয়। এনবিআরের বক্তব্যের বিপরীতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অন্তত দু’টি অনুষ্ঠানে এনবিআরের সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এবিষয়টি নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন, এভাবে এর ওপর ভ্যাট আরোপ করা যাবে না। এরকম বাস্তবতায় শেষ পর্যন্ত এবারের বাজেটে মেট্রোরেলের ওপর ভ্যাট আদায়ের সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়। এখন উভয় পক্ষ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে ভ্যাট আদায় করা হবে কি হবে না। 

বাংলাদেশে আমলাতন্ত্রের বাড়-বাড়ন্তের সময় এটি রাজনীতিবিদদের একটি বড় বিজয় হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। কারণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় আমলাতন্ত্রের প্রভাব, প্রতিপত্তি এবং ক্ষমতা বেড়েছে। রাজনীতিবিদরা ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন। এর মধ্যে এই ভ্যাট আদায়ের সিদ্ধান্তে যদি এনবিআরের জয় হতো তাহলে সেটি হতো আমলাদের আরেকটি বিজয়। কারণ এনবিআরের চেয়ারম্যান এমন একজন ব্যক্তি, যিনি একাধিকবার চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন। আমলাতন্ত্রের ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে তাকে চিহ্নিত করা হয়। 

তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক সময়ে এনবিআরের নানারকম কেলেঙ্কারি, বিশেষ করে মতিউর কেলেঙ্কারির প্রেক্ষাপটে এখন আমলাতন্ত্রের একটি কোণঠাসা অবস্থা তৈরি হয়েছে। আর একারণেই রাজনীতিবিদদের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হয়েছে। বিশ্লেষকরা আরও মনে করছেন, বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে এসেছে, এবং প্রধানমন্ত্রী সবসময় জনবান্ধব নীতির পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন। জনগণের ভোগান্তি হোক এমন কোন সিদ্ধান্ত তিনি গ্রহণের বিপক্ষে সবসময়। সারাজীবন রাজনীতিতে তিনি জনগণের পক্ষেই ছিলেন। আর একারণেই নতুন ভাবে জনপ্রিয় হতে যাওয়া মেট্রোরেলের ওপর ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্তের পক্ষে তিনি অবস্থান করতে পারেন নি। 

এখন দেখার বিষয়, এনবিআর কবে, কিভাবে ভ্যাট আদায় করে বা মেট্রোরেল পরিবহনের ক্ষেত্রে সরকার কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তবে, ধারণা করা হচ্ছে মেট্রোরেলের উপর ভ্যাট আপাতত আরোপ করা হচ্ছে না। ভবিষ্যতে হয়তো আস্তে আস্তে এ বিষয়টি নিয়ে বিবেচনা করা হবে।


আমলা   রাজনীতিবিদ   দ্বন্দ্ব   মেট্রোরেল   ভাড়া বৃদ্ধি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কোটা আন্দোলনের নেতাকে হলছাড়া করার চেষ্টা

প্রকাশ: ০৪:৩২ পিএম, ০৫ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

কোটাবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলমকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হল থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। তিনি অমর একুশে হলে থাকেন। এই হল শাখা ছাত্রলীগে শীর্ষ পদপ্রত্যাশী কয়েকজন নেতা গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে হল থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন।

পরে একুশে হলসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য হলের শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে তা করতে পারেননি অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা। সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের হস্তক্ষেপে তাঁরা সারজিসের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে সারজিসকে হলছাড়া করার চেষ্টার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এই খবরে অমর একুশে হলের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। এতে একুশে হলের পাশাপাশি অন্যান্য হলের শিক্ষার্থীরা যোগ দেন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে হস্তক্ষেপ করা হয়। তখন একুশে হলের অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা সারজিসের কাছে ক্ষমা চান। বিক্ষোভ চলাকালে দিবাগত রাত একটার দিকে একুশে হলের প্রাধ্যক্ষ ঘটনাস্থলে আসেন। সারজিস হলে থাকবেন বলে তিনি আশ্বস্ত করলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শান্ত হন। কোটাবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা সারজিসের সহযোগীরা তাঁকে তাঁর হলের কক্ষে পৌঁছে দিয়ে আসেন।

ঘটনার বিষয়ে গতকাল মধ্যরাতে সারজিস সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর রুমমেটকে হল শাখা ছাত্রলীগে শীর্ষ পদপ্রত্যাশী একাধিক নেতা বলেন, সংগঠনের শীর্ষ পর্যায় থেকে নির্দেশনা এসেছে, তিনি যেন বৃহস্পতিবারের মধ্যে হল ছেড়ে যান। কারণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক তিনি। পরে তিনি সংশ্লিষ্ট শীর্ষ পদপ্রত্যাশীদের কাছে জানতে চান, এমন কিছু বলা হয়েছে কি না। তাঁরা ‘হ্যাঁ’ সূচক জবাব দেন। এই উত্তর পেয়ে তিনি কক্ষে এসে ব্যাগ গুছিয়ে চলে যাচ্ছিলেন। কারণ, তিনি চাননি কোনো ঝামেলা হোক। হল ফটকে এসে দেখেন, পাঁচ থেকে সাত শ শিক্ষার্থী দাঁড়ানো। তাঁরা তাঁকে যেতে দিচ্ছিলেন না। কারণ, তিনি ছাত্রসমাজের একটা যৌক্তিক দাবির পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করছেন। খবর পেয়ে আশপাশের হল থেকে শিক্ষার্থীরা আসেন।

সারজিসের ভাষ্য, একপর্যায়ে ছাত্রলীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। জানতে চাওয়া হয়, হল শাখার কোন শীর্ষ পদপ্রত্যাশীরা তাঁর সঙ্গে এই কাজ করেছেন। তাঁকে বলা হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়নি। এরপর অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাঁর সঙ্গে দেখা করে ক্ষমা চান। তাঁরা স্বীকার করেন, ছাত্রলীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে এমন কোনো নির্দেশনা ছিল না। তাঁরা তাঁকে হল থেকে বের করে দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চেয়েছিলেন।

ক্ষমা চাওয়ায় একুশে হলের অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের নাম সাংবাদিকদের কাছে বলতে চাননি সারজিস। ছাত্রলীগের শীর্য পর্যায় থেকে কে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, তা-ও তিনি বলেননি।

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের একাধিক শিক্ষার্থী মধ্যরাতে এই প্রতিবেদককে ফোন করে অভিযোগ করেন, তাঁরা একুশে হলের দিকে যেতে চাইলে বাধা দেওয়া হয়। হল শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদপ্রত্যাশী কিছু নেতা এ কাজ করেছেন।

যোগাযোগ করা হলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, কোনো শিক্ষার্থীর আবাসিক হলে থাকা না-থাকাটা হল প্রশাসনের বিষয়। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সহনশীল ও দায়িত্বশীল আচরণ করার সাংগঠনিক নির্দেশনা রয়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের যুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই।

একুশে হলের প্রাধ্যক্ষ ইসতিয়াক মঈন সৈয়দ বলেন, ‘একটা ভুল-বোঝাবুঝিকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়েছিলেন। পরে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি সমাধান করেছি। সারজিসকে হলের কক্ষে তুলে দিয়ে এসেছি।’


কোটা আন্দোলন   নেতা   ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

পদ্মা সেতুর সমাপনী অনুষ্ঠান: সুধী সমাবেশে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৪:১৪ পিএম, ০৫ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশের অহংকার, গর্বের অর্জন পদ্মা বহুমুখী সেতুর সমাপনী অনুষ্ঠানের সুধী সমাবেশে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শুক্রবার (৫ জুলাই) মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শুক্রবার  বিকেল পৌনে ৪টার দিকে মাওয়া পৌঁছেন তিনি।

২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতুতে যান চলাচলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর পর থেকে গত দুই বছর সেতুর ওপর দিয়ে এক কোটি ২৭ লাখ যানবাহন পারাপার হয়েছে। গত ২৯ জুন পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে এক হাজার ৬৬১ কোটি টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১৯ হাজার যান চলাচল করেছে এই সেতুতে। দৈনিক গড়ে দুই কোটি ৩০ লাখ টাকার টোল আদায় হয়েছে বলেও মন্ত্রিপরিষদের সমন্বয় ও সংস্কার বিভাগের সচিব মাহমুদুল হোসাইন খান জানিয়েছেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করতে মোট বরাদ্দ থেকে ১ হাজার ৮৩৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা কম খরচ হয়েছে। আমরা ওই টাকা নিয়ম অনুযায়ী সরকারি কোষাগারে জমা দেব।

সমাবেশ ও প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে পুরো এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখা হয়েছে। সুধী সমাবেশে অংশ নিয়েছেন কূটনীতিক, রাজনীতিবিদ ও আমলাসহ দেড় হাজারের বেশি মানুষ।


পদ্মা   সেতু   সমাপনী   শেখ হাসিনা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন