ইনসাইড বাংলাদেশ

মডেল মসজিদ নির্মাণে স্বামীর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ স্ত্রীর

প্রকাশ: ০৮:৫৭ পিএম, ০৩ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

ইসলামিক জ্ঞান ও সংস্কৃতি প্রচারের উদ্দেশ্যে সরকার ২০১৭ সালে দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৬৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়। এই প্রকল্পটি দুবার সময়সীমা বাড়ানোর পরও শেষ না হওয়ায়, আরও দু বছরের জন্য মেয়াদ বাড়ানো হয়। শুরুতে ৮৪২ কোটি টাকা বাজেট ছিল, তবে পরবর্তীতে এটি বেড়ে ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকায় পৌঁছায়।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অধীনে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় প্রকল্পটির নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠে এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে, যা এটিকে বিতর্কিত করে তোলে। নীলফামারী গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ ও নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। তার স্ত্রী রেজওয়ান আহমেদ খুশবু প্রমাণসহ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।

জানা যায়, দিনাজপুর গণপূর্ত বিভাগ থেকে ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আশরাফুজ্জামান নীলফামারীতে যোগদান করেন। তিনি তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশে নীলফামারী সদর ও জলঢাকা উপজেলায় নির্মিতব্য মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের তদারকির দায়িত্ব পান। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে নীলফামারী সদর উপজেলার মডেল মসজিদের নির্মাণকাজ শেষ হয়। সদর উপজেলার মডেল মসজিদের নির্মাণকাজের চুক্তিমূল্য ছিল ১৩ কোটি ৫ লাখ টাকা, যা ১৬ কোটি ৯২ লাখ ৩৫ হাজার টাকায় শেষ হয়। জলঢাকা উপজেলার মডেল মসজিদের নির্মাণকাজ এখনও চলমান রয়েছে। এ দুই মসজিদ নির্মাণকাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৪৫ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে।

খুশবু অভিযোগ করে বলেন, ‘২০২১ সালের জুলাই অথবা আগস্ট মাসে মোবাইল ফোনে আমার স্বামী মডেল মসজিদ নির্মাণকাজ হতে ঘুষ গ্রহণের বিষয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির সঙ্গে আলাপচারিতার করতে শুনি। ফোনালাপ শেষে আমি তাকে বলি, মসজিদ আল্লাহর ঘর। এখান থেকে তুমি ঘুষ নেবে?’ এতে সে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয় এবং আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। এ সময় গর্ভে সন্তান থাকায় প্রচণ্ড রকম অপমানিত বোধ করলেও কাউকে কিছু বলিনি। কিন্তু এরপর থেকেই সামান্য ব্যাপারেও কথাকাটাকাটি হতে শুরু হয়। এভাবে ধীরে ধীরে শুরু হয় শারীরিক নির্যাতন। খুশবু আরও বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণকাজে স্বামীর ঘুষ নেওয়ার তথ্য পেয়ে বারবার অনুরোধ করেও তাকে দুর্নীতি থেকে সরাতে ব্যর্থ হয়েছি। এমনকি দুর্নীতিতে বাধা দেওয়ায় আমাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। বলে, তুই ও তোর পরিবার আমার কিছুই করতে পারবি না। আমার ক্ষমতা ও টাকার কাছে তোরা ভেসে যাবি। এভাবে বলতে বলতে অনেক মারধর করে। তার ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি মেনে নিলে চুপচাপ থাকলে সব স্বাভাবিক থাকত। নির্যাতন করত না। যখন সে সৎ ছিল তখন কোনো সমস্যা হয়নি।

তিনি আরও জানান, তার স্বামী তাকে বলে যে সে এরকম থাকতে চায় না, বড়লোক হতে হবে। যদি মডেল মসজিদ থেকে ঘুষ নিতে না দিস তাহলে বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আয়। সংসারের সুখ-শান্তির কথা বিবেচনা করে নানা অজুহাতে তাকে ৭ লাখ টাকা এনে দেন। এছাড়া বিয়ের সময় তার বাবার কাছ থেকে সাড়ে ১২ লাখ টাকা যৌতুক নেওয়া হয়। বিয়ের পর বাড়ি সংস্কারের কথা বলে আরও আট লাখ টাকা নেওয়া হয়।

সন্তান জন্মের পর খুশবু একদিন মেসার্স আব্দুর রাফি ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র দেখতে পান। তিনি জিজ্ঞেস করলে আশরাফুজ্জামান উত্তর দেন যে নানা কাজে টাকা-পয়সা লেনদেন করতে হয়, তাই এই প্রতিষ্ঠান। যদিও প্রতিষ্ঠানের লেনদেন হয়েছে মূলত অন্য উৎস থেকে।

তিনি আরও বলেন, নীলফামারী সদর উপজেলার রূপালী ব্যাংকে তার নামে একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয় এবং তার স্বামী জোরপূর্বক ব্ল্যাংক চেকে স্বাক্ষর নেন। খুশবু সচিবের কাছে অভিযোগ করেন, এবং সচিব সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দেন।

আশরাফুজ্জামানের বাবা আব্দুল মান্নান একজন পল্লী চিকিৎসক ছিলেন। পাঁচ বছরে তাদের বাড়ির চেহারা বদলেছে; দুই কক্ষের ঘর থেকে পাঁচ কক্ষের আলিশান বাড়ি হয়েছে। বাড়ির একপাশে মেসার্স আব্দুর রাফি ট্রেডার্সের নামে একটি গুদাম ঘর তৈরি করা হয়েছে। ২০২২ সালে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া হয় এবং ২০২৩ সালের মে মাসে প্রায় ১১০০ মণ ভুট্টা ক্রয় করে সেই গুদামে রাখা হয়। যদিও প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো ভুট্টা বিক্রি হয়নি। ব্যাংক স্টেটমেন্টে দেখা যায় জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ৩৪ লাখ ৮৭ হাজার টাকা জমা হয়েছে এবং ৩৩ লাখ ৪৬ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ ১৯ লাখ ৯৭ হাজার টাকা এফডিআর ক্লোজড বাবদ জমা হয়েছে।

মডেল মসজিদ প্রকল্পের পরিচালক নজিবুর রহমান জানান, ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নীলফামারী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদুজ্জামান জানান, উপসহকারী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামানের সঙ্গে তার স্ত্রীর পারিবারিক কলহ ছিল এবং তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। এরপর মেয়েপক্ষ তার বিরুদ্ধে মামলা করে, যার কারণে আশরাফুজ্জামান জামিনে আছেন।

আশরাফুজ্জামান তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার সাবেক স্ত্রী তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে এবং তাকে হয়রানি করার জন্য এই সমস্ত অভিযোগ উত্থাপন করেছে।


মডেল মসজিদ   দুর্নীতি   তদন্ত  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মতিউরের দুর্নীতি নিয়ে দুদকের ধীরে চলো নীতি কেন?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৫ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

এনবিআরের সাবেক সদস্য ড. মতিউর রহমানের দুর্নীতি তদন্ত নিয়ে খুব ধীর গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশন এখন পর্যন্ত কেবল তার বিদেশযাত্রার উপর নিষেধাজ্ঞা এবং তার কিছু সম্পত্তি জব্দ করেছে মাত্র। কিন্তু তাকে দুর্নীতি দমন কমিশনে হাজির করা বা তার অন্যান্য সম্পদের উৎস অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে তেমন কোন উদ্যোগ এখনও দৃশ্যমান নয়। বিশেষ করে, বেনজীর আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যদের যেমন তদন্তের শুরুতেই দুদকে তলব করা হয়েছিল। ড. মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে সেটি এখন পর্যন্ত করা হয়নি। এটি কেন করা হয়নি এবং তদন্তে কেন ধীর গতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। 

উল্লেখ্য যে, এর আগেও দুর্নীতি দমন কমিশনের চার বার মতিউরের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হয়েছিল এবং চার বারই দুর্নীতি দমন কমিশন তাকে শ্বেত-শুভ্রতার ক্লিন শিট দিয়েছিল। আর এই কারণেই দুর্নীতি দমন কমিশন সতর্কতার সঙ্গে এই তদন্ত করছে কি না, সেটি নিয়ে কেউ কেউ ভাবছেন। 

তবে অনেকেই মনে করেন যে, ড. মতিউর রহমান অনেক প্রভাবশালী ছিলেন। প্রশাসন এবং সরকারের অন্দরমহলে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তাদের কারণেই মতিউর রহমানের ব্যাপারে একটি স্থবির তদন্ত হচ্ছে কিনা সেটিও ভেবে দেখা প্রয়োজন বলে অনেকে মনে করেন৷ বিশেষ করে, মতিউর রহমানের স্ত্রী লায়লা যেভাবে এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে নানা রকম কথাবার্তা বলছেন, তাতে অনেকেরই সন্দেহ হচ্ছে যে লায়লা এবং মতিউর রহমান হয়তো সরকারের কারও কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। 

বিশেষ করে, মতিউর রহমানের সঙ্গে সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ছবি ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেই সমস্ত ছবিগুলো ব্যাপারে ঐ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও মন্তব্য করেননি। তারা বিব্রত হয়েছেন কি না সেই তথ্যটিও জানা যায়নি। আর তারাই শেষ পর্যন্ত মতিউর রহমানকে বাঁচানোর জন্য কোন গোপন চেষ্টা করছেন কিনা সেটা নিয়েও জনমনে সন্দেহের উদ্রেক হয়েছে। 

বিশেষ করে, দুর্নীতি দমন কমিশনে মতিউর রহমান তার স্ত্রী-পুত্রকে না ডাকার বিষয়টি নিয়ে এক ধরনের ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। মতিউর রহমান কোথায় আছেন সে তা নিয়েও প্রশ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। মতিউর রহমানকে ইতোমধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে সংযুক্ত করা হলেও এখন পর্যন্ত তিনি সেখানে অফিস করেননি। শুধুমাত্র ই-মেইলের মাধ্যমে একটি যোগদানপত্র দিয়েছেন। 

বেনজীর আহমেদের ক্ষেত্রে যেমন দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তের একটি সাজ সাজ রব ছিল। সেরকম অবস্থাটি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না ড. মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে। মতিউর রহমানের স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার পরও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় মতিউর রহমানের স্ত্রীকে উপজেলা পরিষদ থেকে অব্যাহতি দেয়নি বা বরখাস্ত করেনি। 

বিভিন্ন সময় আমরা দেখি যে এই ধরনের অভিযোগ আসার সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত শুরু করার পর জনপ্রতিনিধিদের সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয় এবং তার স্থলে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয় বা ভাইস চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু এখনও লায়লা রায়পুরা উপজেলার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার দায়িত্বে থাকার পিছনে স্থানীয় এমপির ভূমিকার কথা শোনা যাচ্ছে। স্থানীয় এমপির সঙ্গে তার বেশ কিছু ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। 

সাম্প্রতিক সময়ে সরকার যে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করেছে তা ব্যাপক ভাবে প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু মতিউর রহমানের তদন্ত যদি প্রভাবশালীদের প্রভাবের কারণে বিঘ্নিত হয় বা শ্লথ হয়ে যায় তাহলে সাধারণ মানুষের দুর্নীতিবিরোধী অভিযান সম্পর্কে আস্থা নষ্ট হয়ে যাবে। আর এই কারণে দ্রুত মতিউর রহমান এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে সাধারণ মানুষ মনে করেন। 

সাধারণ মানুষ মনে করেন, মতিউর রহমান যেহেতু চাকরি স্থলে উপস্থিত হচ্ছেন না। সেহেতু তাকে অনতিবিলম্বে সাসপেন্ড করা উচিত। মতিউর রহমানের স্ত্রী রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যানকে অনতিবিলম্বে দায়িত্ব থেকে সাময়িক  দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত। আর এই বিষয়গুলো দেরি হলে দুদকের স্বচ্ছতা এবং দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের পক্ষপাতহীনতাকে নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।


মতিউর   দুর্নীতি   লায়লা কানিজ   দুদক   ধীরে চলো নীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়ার মৃত্যু দেশের ক্রীড়াঙ্গনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি: পাপন

প্রকাশ: ০৯:৫২ পিএম, ০৫ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশের বিখ্যাত দাবাড়ু গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমানের আকস্মিক মৃত্যুতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।  

শোকবার্তায় মন্ত্রী মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

শোকবার্তায় মন্ত্রী বলেন, ‘বিখ্যাত দাবাড়ু গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান দেশের একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন দাবাড়ু ছিলেন। দেশের দাবার উন্নয়ন তথা গোটা ক্রীড়াঙ্গনে তার অনবদ্য অবদানের জন্য তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তার মৃত্যু দেশের ক্রীড়াঙ্গনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। ’ 

উল্লেখ্য, ২০০২ সালে গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব অর্জন করা জিয়াউর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের দ্বিতীয় গ্র্যান্ড মাস্টার।


গ্র্যান্ডমাস্টার   জিয়া   পাপন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সৌদিতে নিহত প্রবাসীর মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি স্বজনদের

প্রকাশ: ০৯:৪৪ পিএম, ০৫ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সৌদি আরবের রিয়াদের মুসাসানাইয়া এলাকায় একটি সোফা তৈরির কারখানায় আগুনে পুড়ে চার বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার রয়েছেন তিনজন। বুধবার (৩ জুলাই) সৌদির স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা নাগাদ আগুনের এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন নিহতদের স্বজনরা। নিহতদের তিন পরিবার থেকেই দ্রুত মরদেহ দেশে আনতে সরকারের সহযোগিতা চাচ্ছেন।

 

নিহতদের মধ্যে আত্রাই উপজেলার তেজনন্দি গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে ফারুক হোসেন (৪০), শিকারপুর গ্রামের সাহাদ আলীর ছেলে এনামুল হোসেন (২৫) ও দিঘা স্কুলপাড়া গ্রামের কবেজ আলীর ছেলে শুকবর রহমান 

(৪০) ।

 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিকেলে তেজনন্দি গ্রামের ফারুক হোসেনের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের লোকজন,পাড়া প্রতিবেশি এবং আত্মীয় স্বজন ও শুভাকাংখিরা ভিড় করে আছেন। গ্রাম জুড়েই যেন কান্না আর শোকের রোল পরে গেছে। ফারুকের স্ত্রী-দুই সন্তানকে যেন কেউ থামাতেই পারছেননা। বার বার কান্নায় ভেঙ্গে পরছেন। 

 

ফারুকের ভাতিজা পিন্টু আলী জানান, চাচা ফারুক হোসেন গার্মেন্টেসে কাজ করতেন। গত প্রায় ৬বছর আগে ধার-দেনা করে সৌদি আরবে যান। কিন্তু যাবার পর থেকেই সেখানে নানা সমস্যার মধ্যে পরে যায়। গত প্রায় ৮মাস হচ্ছে স্থায়ীভাবে সোফা তৈরির কারখানায় কাজে যোগদান করেছেন। এরই মধ্যে বুধবার রাত ১০টা নাগাদ মোবাইল ফোনে জানতে পারেন কারখানায় আগুনে ফারুক নিহত হয়েছেন।

 

উপজেলার দিঘা গ্রামের নিহত শুকবর আলীর জামাই বিদ্যুৎ হোসেন বলেন, তার শ্বশুড় কৃষি শ্রমিক ছিলেন। গত আড়াই বছর আগে একমাত্র সম্বল ১১শতক জায়গা বিক্রি করে তার সাথে ধার-দেনার টাকায় সৌদি আরবে যান। এখন পর্যন্ত ধার-দেনার টাকা শোধ করতে পারেননি। শুকবরের দুই ছেলে এক মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে বড় ছেলে শামীম হোসেন প্রতিবন্ধি। তার মাথা গোঁজার একমাত্র বাড়ীর তিন শতক জায়গা ছাড়া আর কোন জমি নেই। কিভাবে শাশুড়ি,শ্যালকদের নিয়ে চলবেন তা নিয়ে ঘোর বিপাকে পরেছেন। শশুড় শুকবর আলীই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি।

 

শিকারপুর গ্রামের নিহত যুবক এনামুলের চাচা জাহিদুল ইসলাম জানান, এনামুল গার্মেন্টস শ্রমিক ছিলেন। অনেকটা সুখের আসায় ঘর বাঁধতে ধার-দেনা করে সৌদি আরবে যান। সেখান থেকে কেবলমাত্র রোজগারের টাকায় ধার-দেনা শোধ করে ইটের বাড়ী নির্মান করছেন। বাড়ীর কাজ শেষ হলে আগামী বছর নাগাদ দেশে এসে বিয়ে করার কথা ছিলো। কিন্তু সেটা তার ভাগ্যে সইলো না ।

বুধবার রাত অনুমান সাড়ে ১০টা নাগাদ আগুনে পুরে মারা যাবার খবর আসে। তখন থেকেই একমাত্র ছেলেকে হারানোর শোকে বাবা-মা পাথর হয়ে গেছেন। কিছুতেই যেন তাদেরকে বুঝ দিয়ে থামানো যাচ্ছেনা। 

সৌদি আরবে আগুনে পুরে তিনজন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন, ‘একজন পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। বাকি দুইজনেরও তথ্য পেয়েছি। জেলা প্রশাসক স্যারের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়কে জানানো হবে। সেখান থেকে দুই দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে কাগজ পেলে নিহতদের মরদেহ দেশে ফেরাতে এবং সরকারী কোন সুযোগ সুবিধা থাকলে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।’


প্রবাসী   মৃত্যু   সরকারের হস্তক্ষেপ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউরের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক

প্রকাশ: ০৯:৪২ পিএম, ০৫ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (৫ জুলাই) জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের ১২তম রাউন্ডের খেলা চলাকালীন লুটিয়ে পড়েছিলেন গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান। হাসপাতালে নেয়া হলেও আর ফেরানো যায়নি তাকে। ৪৯ বছর বয়সে ঢলে পড়েন মৃত্যুর কোলে।

দেশের দাবাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারিগর জিয়া। ২০০২ সালে নিয়াজ মোর্শেদের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব অর্জন করেন তিনি। ২০০৫ সালে বাংলাদেশি দাবাড়ুদের মধ্যে সর্বোচ্চ ফিদে রেটিং অর্জন করেছিলেন। এছাড়া দেশে-বিদেশে অসংখ্য প্রতিযোগিতায় সাফল্য পেয়েছেন জিয়া।

শুক্রবার (৫ জুলাই) গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীবের বিপক্ষে জাতীয় দাবা প্রতিযোগিতার ১২তম রাউন্ডে ম্যাচ ছিল গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমানের। নির্ধারিত সময়েই শুরু হয় খেলা। তবে খেলার প্রায় ৩ ঘণ্টা পার হওয়ার পর হুট করেই অসুস্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন জিয়া। এরপর দ্রুতই শাহবাগের ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। চিকিৎসকরাও দ্রুতই চিকিৎসা শুরু করেন। তবে অনেকক্ষণ ধরেই তার কোনো পালসই খুঁজে পান না তারা। কিছুক্ষণ বাদে এই গ্র্যান্ডমাস্টারকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন জিয়া।

জিয়ার ম্যাচের সময় তার স্ত্রী লাবণ্যও ফেডারেশনে ছিলেন। তার ছেলে তাহসিন তাজওয়ারও এবার জাতীয় দাবা খেলছেন। হুট করে এই দাবাড়ুর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশের দাবা অঙ্গনে।

পারিবারিকভাবে জিয়া দাবাড়ু। তার বাবা পয়গাম উদ্দিন আহমেদও ছিলেন একজন দাবাড়ু। তার পথ ধরেই স্কুল জীবন থেকে দাবার সঙ্গে সম্পৃক্ত হন জিয়া। তার ছেলে তাহসিন তাজওয়ারও পেশাগতভাবে দাবাড়ু। ২০২২ সালে ৪৪তম দাবা অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন তাজওয়ার।


গ্র্যান্ডমাস্টার   জিয়াউর   প্রধানমন্ত্রী   শোক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

নাম পরিবর্তন হচ্ছে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের

প্রকাশ: ০৯:২৩ পিএম, ০৫ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের নতুন নাম হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে বন্দর, নৌপথ ও সমুদ্র পরিবহণ মন্ত্রণালয় করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর সম্মেলন কক্ষে ভোমরা ই-পোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান।

নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা আগে স্থলবন্দর দেখতাম কিন্তু মন্ত্রণালয়ের নাম নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়। তাই আমাদের স্মার্ট প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট একটি নাম ঠিক করে দিয়েছেন। তিনি এর নামকরণ করেছেন বন্দর, নৌপথ ও সমুদ্র পরিবহণ মন্ত্রণালয়; যা সবকিছু কাভার করে। এটা এখন আইন মন্ত্রণালয়ে আছে। খুব দ্রুতই বাস্তবায়ন হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক, সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য আশরাফুজ্জামান আশু, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য লায়লা পারভীন সেঁজুতি, সুইস কন্ট্রাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর মুজিবুল হাসান, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, পুলিশ সুপার মতিউর রহমান সিদ্দিকী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বাবু, ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী নওশাদ, সহ-সভাপতি এজাজ আহমেদ স্বপন, সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ হোসেন প্রমুখ।


নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়   নাম পরিবর্তন   প্রতিমন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন