ইনসাইড বাংলাদেশ

মডেল মসজিদ নির্মাণে স্বামীর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ স্ত্রীর

প্রকাশ: ০৮:৫৭ পিএম, ০৩ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

ইসলামিক জ্ঞান ও সংস্কৃতি প্রচারের উদ্দেশ্যে সরকার ২০১৭ সালে দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৬৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়। এই প্রকল্পটি দুবার সময়সীমা বাড়ানোর পরও শেষ না হওয়ায়, আরও দু বছরের জন্য মেয়াদ বাড়ানো হয়। শুরুতে ৮৪২ কোটি টাকা বাজেট ছিল, তবে পরবর্তীতে এটি বেড়ে ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকায় পৌঁছায়।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অধীনে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় প্রকল্পটির নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠে এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে, যা এটিকে বিতর্কিত করে তোলে। নীলফামারী গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ ও নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। তার স্ত্রী রেজওয়ান আহমেদ খুশবু প্রমাণসহ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।

জানা যায়, দিনাজপুর গণপূর্ত বিভাগ থেকে ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আশরাফুজ্জামান নীলফামারীতে যোগদান করেন। তিনি তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশে নীলফামারী সদর ও জলঢাকা উপজেলায় নির্মিতব্য মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের তদারকির দায়িত্ব পান। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে নীলফামারী সদর উপজেলার মডেল মসজিদের নির্মাণকাজ শেষ হয়। সদর উপজেলার মডেল মসজিদের নির্মাণকাজের চুক্তিমূল্য ছিল ১৩ কোটি ৫ লাখ টাকা, যা ১৬ কোটি ৯২ লাখ ৩৫ হাজার টাকায় শেষ হয়। জলঢাকা উপজেলার মডেল মসজিদের নির্মাণকাজ এখনও চলমান রয়েছে। এ দুই মসজিদ নির্মাণকাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৪৫ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে।

খুশবু অভিযোগ করে বলেন, ‘২০২১ সালের জুলাই অথবা আগস্ট মাসে মোবাইল ফোনে আমার স্বামী মডেল মসজিদ নির্মাণকাজ হতে ঘুষ গ্রহণের বিষয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির সঙ্গে আলাপচারিতার করতে শুনি। ফোনালাপ শেষে আমি তাকে বলি, মসজিদ আল্লাহর ঘর। এখান থেকে তুমি ঘুষ নেবে?’ এতে সে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয় এবং আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। এ সময় গর্ভে সন্তান থাকায় প্রচণ্ড রকম অপমানিত বোধ করলেও কাউকে কিছু বলিনি। কিন্তু এরপর থেকেই সামান্য ব্যাপারেও কথাকাটাকাটি হতে শুরু হয়। এভাবে ধীরে ধীরে শুরু হয় শারীরিক নির্যাতন। খুশবু আরও বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণকাজে স্বামীর ঘুষ নেওয়ার তথ্য পেয়ে বারবার অনুরোধ করেও তাকে দুর্নীতি থেকে সরাতে ব্যর্থ হয়েছি। এমনকি দুর্নীতিতে বাধা দেওয়ায় আমাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। বলে, তুই ও তোর পরিবার আমার কিছুই করতে পারবি না। আমার ক্ষমতা ও টাকার কাছে তোরা ভেসে যাবি। এভাবে বলতে বলতে অনেক মারধর করে। তার ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি মেনে নিলে চুপচাপ থাকলে সব স্বাভাবিক থাকত। নির্যাতন করত না। যখন সে সৎ ছিল তখন কোনো সমস্যা হয়নি।

তিনি আরও জানান, তার স্বামী তাকে বলে যে সে এরকম থাকতে চায় না, বড়লোক হতে হবে। যদি মডেল মসজিদ থেকে ঘুষ নিতে না দিস তাহলে বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আয়। সংসারের সুখ-শান্তির কথা বিবেচনা করে নানা অজুহাতে তাকে ৭ লাখ টাকা এনে দেন। এছাড়া বিয়ের সময় তার বাবার কাছ থেকে সাড়ে ১২ লাখ টাকা যৌতুক নেওয়া হয়। বিয়ের পর বাড়ি সংস্কারের কথা বলে আরও আট লাখ টাকা নেওয়া হয়।

সন্তান জন্মের পর খুশবু একদিন মেসার্স আব্দুর রাফি ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র দেখতে পান। তিনি জিজ্ঞেস করলে আশরাফুজ্জামান উত্তর দেন যে নানা কাজে টাকা-পয়সা লেনদেন করতে হয়, তাই এই প্রতিষ্ঠান। যদিও প্রতিষ্ঠানের লেনদেন হয়েছে মূলত অন্য উৎস থেকে।

তিনি আরও বলেন, নীলফামারী সদর উপজেলার রূপালী ব্যাংকে তার নামে একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয় এবং তার স্বামী জোরপূর্বক ব্ল্যাংক চেকে স্বাক্ষর নেন। খুশবু সচিবের কাছে অভিযোগ করেন, এবং সচিব সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দেন।

আশরাফুজ্জামানের বাবা আব্দুল মান্নান একজন পল্লী চিকিৎসক ছিলেন। পাঁচ বছরে তাদের বাড়ির চেহারা বদলেছে; দুই কক্ষের ঘর থেকে পাঁচ কক্ষের আলিশান বাড়ি হয়েছে। বাড়ির একপাশে মেসার্স আব্দুর রাফি ট্রেডার্সের নামে একটি গুদাম ঘর তৈরি করা হয়েছে। ২০২২ সালে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া হয় এবং ২০২৩ সালের মে মাসে প্রায় ১১০০ মণ ভুট্টা ক্রয় করে সেই গুদামে রাখা হয়। যদিও প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো ভুট্টা বিক্রি হয়নি। ব্যাংক স্টেটমেন্টে দেখা যায় জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ৩৪ লাখ ৮৭ হাজার টাকা জমা হয়েছে এবং ৩৩ লাখ ৪৬ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ ১৯ লাখ ৯৭ হাজার টাকা এফডিআর ক্লোজড বাবদ জমা হয়েছে।

মডেল মসজিদ প্রকল্পের পরিচালক নজিবুর রহমান জানান, ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নীলফামারী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদুজ্জামান জানান, উপসহকারী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামানের সঙ্গে তার স্ত্রীর পারিবারিক কলহ ছিল এবং তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। এরপর মেয়েপক্ষ তার বিরুদ্ধে মামলা করে, যার কারণে আশরাফুজ্জামান জামিনে আছেন।

আশরাফুজ্জামান তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার সাবেক স্ত্রী তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে এবং তাকে হয়রানি করার জন্য এই সমস্ত অভিযোগ উত্থাপন করেছে।


মডেল মসজিদ   দুর্নীতি   তদন্ত  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধায় তিন শতাধিক স্কুল-কলেজে বন্যার পানি

প্রকাশ: ০৯:৪৪ এএম, ০৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

পাহাড়ি ঢল আর কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় অনেক পরিবার বিপাকে পড়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র উঁচু স্থানে ছুটছে মানুষ। পানি উঠে যাওয়ায় কুড়িগ্রাম গাইবান্ধায় তিন শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলাসহ সব নদ-নদীর পানি আরও বেড়েছে। এতে জেলার ২৫৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এগুলোর মধ্যে ১৪০টিতে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ।

জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখা এবং জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে ১৪৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিবন্দী হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৩৭টিতে শ্রেণি পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। দুটি বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মাধ্যমিক পর্যায়ের ১০৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। এসবের মধ্যে বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল ৭১টি এবং মাদ্রাসা ৩২টি। চিলমারী রাজিবপুরে তিনটি বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ছাড়া রৌমারী রাজিবপুর এলাকায় ছয়টি কলেজে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

গাইবান্ধার ৪টি উপজেলার ২৭টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার পরিবার। নদীতীরবর্তী ৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

গতকাল দুপুরে জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ব্রহ্মপুত্র যমুনার চরাঞ্চলের ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। অনেক টিনশেড ঘর বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। অনেকে নৌকায় করে ঘরের জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। জমিতে পানি আটকে বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলায় পাঠদান বন্ধ থাকা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাদ্রাসা।


কুড়িগ্রাম   গাইবান্ধা   স্কুল   কলেজে   বন্যা   পানি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ওসির ‘খাম’ আদান–প্রদানের ভিডিও ফাঁস

প্রকাশ: ০৯:১৪ এএম, ০৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

রাজশাহী মহানগরের চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলমের দপ্তরে বসে এক ব্যক্তির সঙ্গে খাম লেনদেনের ভিডিও ফাঁস হয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে জনমনে নানা আলোচনা চলছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, ওসির কাছ থেকে খাম নিয়ে আবার ওসিকে ফেরত দিচ্ছেন এক ব্যক্তি। তবে সেই ব্যক্তির পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ভিডিও সম্পর্কে জানতে চাইলে ওসি মাহবুব আলম বলেন,

‘আপনারা আমাকে চেনেন। আমি জনসাধারণের কাছ থেকে টাকা নেই না। কার সাথে এমন লেনদেন হয়েছে, সেটা মনে করতে পারছি না। তবে সম্ভবত ছিনতাইকারীদের তালিকা নেওয়ার জন্যই খামে কিছু নিয়েছিলাম। সেটাই ভিডিওতে দেখা গেছে।’

তিনি খামে টাকা নেওয়ার অভিযোগকে মিথ্যা দাবি করে জানান, এ নিয়ে তিনি সমস্যায় পড়েছেন।

ফাঁস হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, ওসি মাহবুব আলম তাঁর চেয়ারে বসে আছেন এবং টেবিলের অপর পাশে বসা এক ব্যক্তি বলছেন, ‘মাহবুব ভাই, ভাই উঠব ভাই।’ জবাবে ওসি বলেন, ‘আচ্ছা।’ এরপর ওই ব্যক্তি বলেন, ‘একটু কথা বলে যাই।’ ওসি তাঁর দিকে মনোযোগ দিয়ে বলেন, ‘হুম।’ ওই ব্যক্তি বলেন, ‘ভাই, একটা ছোট খাম দেন।’ ওসি তখন মুচকি হাসেন। ওই ব্যক্তি বলেন, ‘মাহবুব ভাই, আপনি আমাকে চেনেন, জানেন, বোঝেন। আমি বিপদে পড়েছি বলেই আপনার কাছে এসেছি। আমি বিপদেই আছি।’ তখন তৃতীয় একজন কণ্ঠে বলেন, ‘দাও।’ ভিডিও ধারণকারী ওই তৃতীয় ব্যক্তি ছিলেন।

এরপর ওসি মুচকি হাসতে হাসতে টেবিলের ড্রয়ার খুলে একটি খাম বের করেন। তারপর ওসি তৃতীয় ওই ব্যক্তির দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘দিলাম ভাই, বুইঝেন। তাঁকে আগের বারও আমি সাহায্য করেছিলাম।’ ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আমি জানি, আমি মাহবুব ভাইয়ের কাছে আসলে কাজ হবে।’ ওসি বলেন, ‘না, যথেষ্ট সাহায্য করেছি।’ কথা বলার সময় সামনে থাকা ওই ব্যক্তি একটি ভরা খাম টেবিলে এগিয়ে দিলে ওসি সেটি নিয়ে ড্রয়ারে রেখে দেন। ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আমি না পারতে এখানে এসেছি। বিশ্বাস করুন! আমি আরেক দিন এসে বিস্তারিত বলব, তখন বুঝবেন ও আমাকে কী পর্যায়ে বিপদে ফেলেছে। না হলে আমি আপনার কাছে আসতাম না যদি অফিসিয়ালভাবে সমাধান করতে পারতাম। সে জিএম স্যারের কাছে ৪০ জন লোক নিয়ে গেছে রিমুভ ফরম সার্ভিস করার জন্য আমার বোনের। আমি কী বোঝাব বলেন!’ ওসি বলেন, ‘দুজনেই শাস্তি পেতে পারে।’ জবাবে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘ভাই, আমার বোনের যদি শাস্তি হয়, হোক, কিন্তু অপরাধ যে করে, আর যে সহে—দুজনেই সমান অপরাধী।’ ১ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের এই ভিডিও এখানেই শেষ হয়।

ভিডিও সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘এ রকম কোনো বিষয়ে আমি অবগত নই। যদি এমন কিছু ঘটে থাকে, তাহলে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।’


ওসি   ঘুষ   পুলিশ   খাম  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাছ ডিবির হাতে গ্রেফতার

প্রকাশ: ০৯:০৯ এএম, ০৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

রাজশাহীর বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাঘা পৌরসভার মেয়র মো. আক্কাছ আলীকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ২২টি মামলা ১৭টি সাধারণ ডায়েরি রয়েছে।

শুক্রবার ( জুলাই) রাতে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বাঘা থানার একটি হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরবর্তীতে তাকে বাঘা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

গত ২২ জুন বাঘা উপজেলা পরিষদ চত্বরের সামনে পৌর মেয়র আক্কাছের অনিয়ম, দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগ। সময় পৌর মেয়রের নেতৃত্বে ওই মানববন্ধনে হামলা চালানো হয়। এতে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল গুরুতর আহত হন। পরে ২৬ জুন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর থেকে আক্কাছ আলী ঢাকায় এসে আত্মগোপন করেন।

বাঘা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, বাবুল হত্যায় পৌর মেয়রকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা করা হয়। এই মামলায় মেয়রের ভাগিনা ইউপি চেয়ারম্যান জেলা যুবলীগ নেতা মেরাজুর ইসলাম মেরাজসহ এরই মধ্যে আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


বাঘা   পৌরসভা   মেয়র   আক্কাছ   ডিবি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

প্রত্যয় স্কিম: সরকার বনাম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের লড়াই

প্রকাশ: ০৯:০০ এএম, ০৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সর্বজনীন পেনশনেরপ্রত্যয়কর্মসূচি বাস্তবায়নের বিরোধিতা করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার।  জুলাই চালু হওয়া প্রত্যয়ের বিরুদ্ধে ওঠা শিক্ষকদের আপত্তিগুলো খণ্ডন করে পাল্টা যুক্তি দেওয়া হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের মন গলছে না এসব যুক্তিতে।

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জুলাই আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন। শিক্ষকদের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। তবে সপ্তাহে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ, বুয়েটসহ দেশের ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা প্রত্যয় বাতিলসহ মোটাদাগে তিন দাবিতে ক্লাস, পরীক্ষা প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জন করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আন্দোলনে শরিক হয়েছেন এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাকর্মচারীরাও।

প্রতিবাদ সমাবেশ অবস্থান কর্মসূচি করছেন তাঁরা। ছুটি থাকায় গতকাল শুক্রবার নিয়মিত কোনো কর্মসূচি ছিল না, আজ শনিবারও নেই। কাল রোববার থেকে কর্মসূচি চলবে। শিক্ষকেরা বলছেন, সপ্তাহের যেকোনো দিন প্রত্যাশিত বৈঠকটি হবে।

অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন , ‘প্রত্যয় শুধু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, ৪০৩টি সংস্থায় নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের ওপর কার্যকর হবে। শিক্ষকেরা শ্রদ্ধেয় মানুষ। গণতান্ত্রিক দেশে আন্দোলন তাঁরা করতেই পারেন। তবে বেশির ভাগ সংস্থায় যেহেতু পেনশন ব্যবস্থাই ছিল না, ফলে তাঁদের জন্য এটা একটা ভালো উদ্যোগ।

সাবেক সচিব কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার গণমাধ্যমকে  বলেন, ‘পুরো বিষয়টি নিয়ে দায়িত্বশীল মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখতে পাচ্ছি। আমি মনে করি, লম্বা সময় নিয়ে ব্যাপারে মতবিনিময় পর্যালোচনা করার দরকার ছিল। সে সুযোগ এখনো আছে।


প্রত্যয়   স্কিম   সরকার   বনাম   পাবলিক   বিশ্ববিদ্যালয়   শিক্ষক   লড়াই  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মতিউরের দুর্নীতি নিয়ে দুদকের ধীরে চলো নীতি কেন?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৫ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

এনবিআরের সাবেক সদস্য ড. মতিউর রহমানের দুর্নীতি তদন্ত নিয়ে খুব ধীর গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশন এখন পর্যন্ত কেবল তার বিদেশযাত্রার উপর নিষেধাজ্ঞা এবং তার কিছু সম্পত্তি জব্দ করেছে মাত্র। কিন্তু তাকে দুর্নীতি দমন কমিশনে হাজির করা বা তার অন্যান্য সম্পদের উৎস অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে তেমন কোন উদ্যোগ এখনও দৃশ্যমান নয়। বিশেষ করে, বেনজীর আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যদের যেমন তদন্তের শুরুতেই দুদকে তলব করা হয়েছিল। ড. মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে সেটি এখন পর্যন্ত করা হয়নি। এটি কেন করা হয়নি এবং তদন্তে কেন ধীর গতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। 

উল্লেখ্য যে, এর আগেও দুর্নীতি দমন কমিশনের চার বার মতিউরের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হয়েছিল এবং চার বারই দুর্নীতি দমন কমিশন তাকে শ্বেত-শুভ্রতার ক্লিন শিট দিয়েছিল। আর এই কারণেই দুর্নীতি দমন কমিশন সতর্কতার সঙ্গে এই তদন্ত করছে কি না, সেটি নিয়ে কেউ কেউ ভাবছেন। 

তবে অনেকেই মনে করেন যে, ড. মতিউর রহমান অনেক প্রভাবশালী ছিলেন। প্রশাসন এবং সরকারের অন্দরমহলে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তাদের কারণেই মতিউর রহমানের ব্যাপারে একটি স্থবির তদন্ত হচ্ছে কিনা সেটিও ভেবে দেখা প্রয়োজন বলে অনেকে মনে করেন৷ বিশেষ করে, মতিউর রহমানের স্ত্রী লায়লা যেভাবে এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে নানা রকম কথাবার্তা বলছেন, তাতে অনেকেরই সন্দেহ হচ্ছে যে লায়লা এবং মতিউর রহমান হয়তো সরকারের কারও কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। 

বিশেষ করে, মতিউর রহমানের সঙ্গে সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ছবি ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেই সমস্ত ছবিগুলো ব্যাপারে ঐ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও মন্তব্য করেননি। তারা বিব্রত হয়েছেন কি না সেই তথ্যটিও জানা যায়নি। আর তারাই শেষ পর্যন্ত মতিউর রহমানকে বাঁচানোর জন্য কোন গোপন চেষ্টা করছেন কিনা সেটা নিয়েও জনমনে সন্দেহের উদ্রেক হয়েছে। 

বিশেষ করে, দুর্নীতি দমন কমিশনে মতিউর রহমান তার স্ত্রী-পুত্রকে না ডাকার বিষয়টি নিয়ে এক ধরনের ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। মতিউর রহমান কোথায় আছেন সে তা নিয়েও প্রশ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। মতিউর রহমানকে ইতোমধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে সংযুক্ত করা হলেও এখন পর্যন্ত তিনি সেখানে অফিস করেননি। শুধুমাত্র ই-মেইলের মাধ্যমে একটি যোগদানপত্র দিয়েছেন। 

বেনজীর আহমেদের ক্ষেত্রে যেমন দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তের একটি সাজ সাজ রব ছিল। সেরকম অবস্থাটি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না ড. মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে। মতিউর রহমানের স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার পরও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় মতিউর রহমানের স্ত্রীকে উপজেলা পরিষদ থেকে অব্যাহতি দেয়নি বা বরখাস্ত করেনি। 

বিভিন্ন সময় আমরা দেখি যে এই ধরনের অভিযোগ আসার সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত শুরু করার পর জনপ্রতিনিধিদের সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয় এবং তার স্থলে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয় বা ভাইস চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু এখনও লায়লা রায়পুরা উপজেলার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার দায়িত্বে থাকার পিছনে স্থানীয় এমপির ভূমিকার কথা শোনা যাচ্ছে। স্থানীয় এমপির সঙ্গে তার বেশ কিছু ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। 

সাম্প্রতিক সময়ে সরকার যে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করেছে তা ব্যাপক ভাবে প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু মতিউর রহমানের তদন্ত যদি প্রভাবশালীদের প্রভাবের কারণে বিঘ্নিত হয় বা শ্লথ হয়ে যায় তাহলে সাধারণ মানুষের দুর্নীতিবিরোধী অভিযান সম্পর্কে আস্থা নষ্ট হয়ে যাবে। আর এই কারণে দ্রুত মতিউর রহমান এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে সাধারণ মানুষ মনে করেন। 

সাধারণ মানুষ মনে করেন, মতিউর রহমান যেহেতু চাকরি স্থলে উপস্থিত হচ্ছেন না। সেহেতু তাকে অনতিবিলম্বে সাসপেন্ড করা উচিত। মতিউর রহমানের স্ত্রী রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যানকে অনতিবিলম্বে দায়িত্ব থেকে সাময়িক  দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত। আর এই বিষয়গুলো দেরি হলে দুদকের স্বচ্ছতা এবং দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের পক্ষপাতহীনতাকে নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।


মতিউর   দুর্নীতি   লায়লা কানিজ   দুদক   ধীরে চলো নীতি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন