বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে শুরু হওয়া কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে শিক্ষার্থীরা ও চাকরি প্রত্যাশীদের অবরোধ অবশেষে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা ৬টার দিকে তারা নতুন কর্মসূচী ঘোষণার মধ্যদিয়ে শাহবাগ ছাড়েন। এর আগে প্রায় দীর্ঘ ৬ ঘন্টা সময় ধরে সড়ক অবরোধের কারণে শাহবাগ এবং আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়। পরে আন্দোলনকারীরা রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হওয়া শুরু করে। বৃহস্পতিবারের সন্ধ্যা ৬টায় শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিয়ে মিছিলসহ রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে তারা কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
গত চার দিন ধরে চলা শাহবাগসহ দেশের বিভিন্ন স্থান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন শেষে সারা দেশের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণার মতো নতুন কর্মসূচী দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন।
আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কারী হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এই কোটা পদ্ধতির ফলে চাষার ছেলে চাষা, রাজমিস্ত্রির ছেলে রাজমিস্ত্রি, মজুরের ছেলে মজুর থেকে যাবে। তারা কোটা সুবিধার কারণে একাই সুবিধা পাবে সেটা মেনে নেওয়া যায় না। এই অদৃশ্য শক্তির হাত গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য তারা আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের দাবি আদায় করেছে।
এদিকে সন্ধ্যা ৬টায় নতুন কর্মসূচি ঘোষণার সময় আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আগামীকাল শুক্রবার অনলাইন ও অফলাইনে জনসংযোগ কর্মসূচি চলবে এবং শনিবার বিক্ষোভ মিছিল ও রোববার ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি পালন করা হবে।
এসময় আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে নিজেদের দাবির পক্ষে বক্তব্য রাখেন। তারা উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালে শিক্ষার্থীরা ৫৬ শতাংশ কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করেছিল, যা পরবর্তীতে সফল হয়। কিন্তু সম্প্রতি হাইকোর্ট ওই পরিপত্রকে বাতিল করে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহাল করার রায় দিয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
তাদের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে: ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল রাখা, সব গ্রেডে অযৌক্তিক কোটার অবসান ঘটানো, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম কোটার ব্যবস্থা, কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার না করা এবং দুর্নীতিমুক্ত, মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিতের ব্যবস্থা করা।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় আপাতত বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। এ রায় ঘোষণার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা।
এসময় দেখা যায়, রায় ঘোষণার পরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশিরা রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করতে জড়ো হতে শুরু করেন। এদিন বেলা ১১ টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে থেকে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে টিএসসিতে অবস্থান নেন। পরে বেলা ১২ টা ১৮ মিনিটে তারা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিলে এ অঞ্চলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য অবস্থান নেন। তবে পুলিশ সদস্যরা আন্দোলনকারীদের কোন বাঁধা দেয়নি।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে থাকা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অযুহাতে কোটা আন্দোলনে অংশগ্রহণে ছাত্রলীগ বাঁধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রসঙ্গত, একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ জুন ২০১৮ সালের কোটা ব্যবস্থা বাতিলসংক্রান্ত পরিপত্র বাতিল করে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল করা হয়।
এদিকে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠে সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রাবি, জাবি, ইবি ও জবি শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এছাড়াও গতকাল বাকৃবি শিক্ষার্থীরা ট্রেন অবরোধ করে আন্দোলনে নামেন।
রাজশাহী
কোটা বাতিলের দাবিতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি দেখ গেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)-তেও। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে এ দাবি জানানো হয়। এসময় আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়েরি বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেন।
আন্দোলনকারীরা বলেন, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ তৎপর ছিল, আছে এবং থাকবে। একটি দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য সরকারি চাকুরিতে মেধাবীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে, রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের সমান সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করার কোনো বিকল্প নেই। বৈষম্যমূলক কোটাপদ্ধতির সংস্কারের লক্ষ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সর্বদা সোচ্চার রয়েছে।
কুমিল্লা
ঢাকা-চট্টগ্রাম অবরোধ করে আন্দোলনে নামেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে অন্তত ১২ কিলোমিটার যানজটের সৃস্টি হয়। এর আগে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে বুধবার বিকেল ৩টা থেকে ৪টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে জাবি শিক্ষার্থীরা। এসময় মহাসড়কের দুই পাশে তীব্র যানজট লক্ষ্য করা যায়।
কুষ্টিয়া
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সকাল ১১টার দিকে কুষ্টিয়া ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা শহিদ মিনারে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকের সামনে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এর আগে গত ২রা জুলাই একই দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ও ছাত্র সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা,১০ শতাংশ জেলা কোটা এবং ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটা ও ১ শতাংশ পদ প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের দিয়ে পূরণের নিয়ম চালু হয়।
তবে সেই বছর কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর চাকরিতে পুরো কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে। এবং এনিয়ে একই বছর ৪ অক্টোবর কোটা বাতিল বিষয়ক একটি পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
২০২১ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। গত ৫ জুন এই রিটের রায়ে পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। যার প্রেক্ষিতে ১ জুলাই থেকে টানা আন্দোলন করছে শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশিরা।
মন্তব্য করুন
সিলেটের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ এনামুল হককে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার (৮ জুলাই) ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
দুদকের পক্ষে মীর আহাম্মদ আলী সালাম এ তথ্য জানান। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক ফারজানা ইয়াসমিন।
এর আগে, গত ৪ জুলাই এনামুলের ৮ কোটি ৯৫ লাখ ৪ হাজার ৫০০ টাকার জমি ও ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশ দেন আদালত।
ক্রোক করা সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে, গুলশানের জোয়ার সাহারায় ৬১ হাজার টাকার তিন কাঠা জমি, খিলক্ষেতে ৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকার ৩৩ শতাংশ জমি, কাকরাইলের আইরিশ নূরজাহান টাওয়ারে কমন স্পেসসহ ১১৭০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, যার মূল্য ২৮ লাখ ৩০ হাজার ৫০০ টাকা, একই ভবনে কারপার্কিং স্পেসসহ ১৮৩৫ বর্গফুটের ফ্ল্যাট যার মূল্য ৫১ লাখ ২৯০০ হাজার টাকা।
কাকরাইলে ১৯০০ বর্গফুট ও ৩৮০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটসহ কারপার্কিং, যার মূল্য ২ কোটি ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। গাজীপুরে ৬২ লাখ ৪০ হাজার টাকার পাঁচ কাঠা জমি। মোহাম্মদপুরে তিনটি বাণিজ্যিক ভবনে চার হাজার বর্গফুটের তিনটি স্পেস, যার প্রতিটির মূল্য ৭১ লাখ ৩৫ হাজার করে।
এ ছাড়া মোহাম্মদপুরে ১০ হাজার ৯৬৫ বর্গফুটের স্পেস রয়েছে, যার মূল্য দুই কোটি ৩৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। গুলশানের ৭২ লাখ টাকার ২৪২৮ বর্গফুটের ফ্ল্যাট এবং বাড্ডায় চার কাঠা নাল জমি যার মূল্য ১৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফারজান ইয়াসমিন আবেদনে উল্লেখ করেন, ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে ৯ কোটি ৭৬ লাখ ৯৭ হাজার টাকা মূল্যের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার (আসামি) বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
কাস্টমস কমিশনার এনামুল দেশত্যাগ নিষেধাজ্ঞা ক্রোক
মন্তব্য করুন
গোপালগঞ্জের
মুকসুদপুরে সাপ ও সর্পদংশন
বিষয়ক সচেতনতা মূলক আলোচনা সভা
অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৮ জুলাই) দুপুরে
মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়োজনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সভা কক্ষে এই
আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠিত
আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন
মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা
অফিসার ডা. রায়হান ইসলাম
শোভন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. দ্বীপ সাহার
সঞ্চলনায় সভায় বক্তব্য রাখেন
বাংলার নয়ন সম্পাদক শহীদুল
ইসলাম বেলায়েত, মুকসুদপুর সংবাদ সম্পাদক হায়দার হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক কাজী ওহিদুল ইসলাম
প্রমুখ। এসয়ম মুকসুদপুরে কর্মরত
প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার
সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
মুকসুদপুর
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা
অফিসার ডা. রায়হান ইসলাম
শোভন জানান, সর্পদংশনে আতঙ্কিত না হয়ে দ্রুততার
সাথে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার আহবান
জানান। সাপে কাটলে উঝার
কাছে নিয়ে ভূল চিকিৎসা
না দিয়ে হাসপাতালে আনতে
হবে। মুকসুদপুর হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম মজুদ রয়েছে।
তিনি আরও জানান, গত ২ মাসে মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১ জন সাপে কাটা রোগী ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে ১০ জন রোগী সুস্থ্য হয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন। বাকী ১ জন রোগী এখোনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সাপে কাটা কোন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়নি। সুতরাং সাপে কাটলে ওঝার কাছে না নিয়ে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিলে সুস্থ্য হয়ে বাড়িতে ফিরে যাবে।
মন্তব্য করুন
চলমান
বন্যায় গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি
কমতে শুরু করলেও মানুষের
দুর্ভোগ কমেনি। এ জেলায় অবস্থিত
ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৬৩
সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর
পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর
দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে বন্যার কারণে চার উপজেলার প্রায়
এক লাখ মানুষ পানিবন্দি
জীবনযাপন করছেন।
বন্যাকবলিত
এ অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন
শিশু ও বৃদ্ধরা। স্বাস্থ্য,
পুষ্টি ও শিক্ষা ছাড়াও
গবাদি পশুপাখি রাখার স্থান ও গো-খাদ্য,
স্যানিটেশনসহ পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
জেলা
শিক্ষা কর্মকর্তা রোকসানা বেগম ও জেলা
প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, বন্যার প্রভাবে এ পর্যন্ত জেলার
১৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ করে দেওয়া
হয়েছে। এরমধ্যে মাদ্রাসাসহ ২২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়
ও একটি কলেজ এবং
১১৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।
এছাড়াও
ফুলছড়ি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষাকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করে
পরীক্ষার্থীদের ভরতখালি উচ্চবিদ্যালয়ে স্থানান্তর করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
ক্ষতিগ্রস্ত
এসব পরিবারের মাঝে জরুরি নিরাপত্তা,
শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য, ভিটামিন
ট্যাবলেট, পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট
ও নিরাপদ পানি বিতরণ কার্যক্রম
শুরু করেছে প্রশাসন ও দুর্যোগ সংশ্লিষ্ট
কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি ডিএফপির (ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম) অর্থায়নে
২০ হাজার পরিবারকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৫ হাজার করে
টাকা দেওয়া হয়েছে।
বন্যা
পরিস্থিতির বিষয়ে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের
নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানান, ব্রহ্মপুত্র
ও ঘাঘট নদীর পানি
কমতে শুরু করেছে। আজ
সকাল ৯টায় ব্রহ্মপুত্র নদের
পানি ফুলছড়ি উপজেলার ফুলছড়ি স্টেশন পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটিার কমে
বিপৎসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার ওপর
দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া ঘাঘট
নদীর পানি জেলা শহরের
নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটিার কমে
বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর
দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা
প্রশাসনের বরাত দিয়ে পাওয়া
তথ্যে দেখা যায়, গাইবান্ধার
সদর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন, সুন্দরগঞ্জের
৯টি, সাঘাটার ৮টি ও ফুলছড়ি
উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন বন্যায়
প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি মানুষের জন্য স্থায়ী ও
অস্থায়ী মিলে মোট ১৮১টি
আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
গাইবান্ধা
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, বন্যায়
চার উপজেলায় ২ হাজার ৫৪৫
হেক্টর জমির আউশ ধান,
পাট ও ভুট্টাসহ বিভিন্ন
ধরনের শাকসবজি ডুবে গেছে। পানি
দ্রুত নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতি
কম হবে। অন্যথায় ফসল
পচে নষ্ট হয়ে যাবে
গাইবান্ধা
জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল
বলেন, এ পর্যন্ত গাইবান্ধার
৪টি উপজেলার বন্যার্ত মানুষের মাঝে ৩ হাজার
৫০ প্যাকেট শুকনা খাবার, ১৬৫ টন জিআর
চাল এবং ১০ লাখ
টাকা নগদ বরাদ্দ দেওয়া
হয়েছে। আরও ২৬৫ টন
চাল মজুত রয়েছে। ত্রাণ
বিতরণ ও উদ্ধার কার্যক্রমের
জন্য নৌকা, স্পিডবোট প্রস্তুত রয়েছে। এ ছাড়া বন্যা
পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা এবং উপজেলায়
নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতি অবনতি স্কুল বন্ধ
মন্তব্য করুন
সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সালের
পরিপত্র বহাল ও কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার (৮ জুলাই) রংপুর নগরের মডার্ন মোড়ে তাঁরা দুপুর ১২টা থেকে দেড় ঘণ্টা এই কর্মসূচি পালন করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘কোটা
না মেধা, মেধা মেধা’, ‘চাকরিতে কোটা, মানি না, মানব না’, ‘কোটাপ্রথা, বাতিল চাই বাতিল
চাই’, ‘মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
এদিন দুপুর ১২টা থেকে বেলা
১টা ৩০ পর্যন্ত এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা
কোটাপদ্ধতি সংস্কার করা না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দেন।
এদিকে অবরোধের ফলে মহাসড়কে
সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে সড়কে দেখা যায় তীব্র যানজট।
এর আগে সকাল
সাড়ে ১০টা থেকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে কারমাইকেল কলেজ, রংপুর সরকারি কলজেসহ
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেখান থেকে
বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে নগরের মডার্ন মোড়ে এসে রংপুর-ঢাকা
মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত,
২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ
মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা,১০ শতাংশ জেলা কোটা এবং ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটা ও ১ শতাংশ পদ প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের দিয়ে পূরণের নিয়ম
চালু হয়।
তবে
সেই বছর কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর চাকরিতে পুরো কোটা
ব্যবস্থা বাতিল করে। এবং এনিয়ে একই বছর ৪ অক্টোবর কোটা বাতিল বিষয়ক একটি পরিপত্র জারি
করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
২০২১
সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ
করে রিট করেন কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। গত ৫ জুন এই রিটের রায়ে পরিপত্রের ওই অংশ
অবৈধ ঘোষণা করা হয়। যার প্রেক্ষিতে ১ জুলাই থেকে টানা আন্দোলন করছে শিক্ষার্থী ও চাকরি
প্রত্যাশিরা।
কোটা আন্দোলন বেরোবি মহাসড়ক অবরোধ
মন্তব্য করুন
চলমান কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে সারাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো এবার বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেছে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের সাথে রুয়েট শিক্ষার্থীরাও তাদের যোগদানের কথা জানান।
সোমবার (৮ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে বিভিন্ন প্লেকার্ড হাতে নিয়ে জড়ো হতে দেখা যায় তাদের। পরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের তালাইমারি এলাকা হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফলকে অবস্থান নেন তারা।
এসময় 'দফা এক দাবি এক, কোটা নট কাম-ব্যাক', 'জেগেছে রে জেগেছে রূয়েটবাসী জেগেছে', 'সংবিধান পরিপন্থী কোটা ব্যবস্থা নিপাত যাক', 'স্বাধীন বাংলায় বৈষম্যের ঠাই নাই' , 'হয় যদি কোটার চাষ পড়বো কেন বারো মাস', 'আঠারোর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার' , 'সারা বাংলায় খরব দে কোটা প্রথার কবর দে' এমনসব স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
আন্দোলনে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ ইমন গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা মূলত কোটা সংস্কারের দাবিতে এখানে এসেছি। বিভিন্ন রকম কোটার কারণে আমাদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে কোটার প্রভাব অনেক বেশি।
তিনি বলেন, আমরা কোটা বাতিল চায় না কিন্তু চাই এটা সংস্কার করা হোক। ১০% মুক্তিযোদ্ধা আর বাকি ১০% অন্যান্য কোটা থাকলে ভালো হয়। যাদের আসলেই প্রয়োজন শুধুমাত্র তাদেরকেই কোটার আওতায় আনা উচিত। প্রতিবন্ধী বা উপজাতিদের কোটা দেওয়া যায়।
এর আগে একই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রেললাইন অবরোধের দিনের কর্মসূচী করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরাও। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ফ্লাইওভারসহ বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে এ কর্মসূচি করে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না। বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্য মানি না। দাবি মানা না হলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।
কোটা পদ্ধতি সংস্কার আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয় পরিষদের সদস্য মেহেদী সজীব বলেন, আজকে আমরা রেললাইন অপরাধ করেছি। আমাদের লাগাতারে কর্মসূচি চলবে। যতদিন পর্যন্ত আমাদের দাবি আদায় না হবে।
সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিক ভোগের সুযোগ এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে৷ আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারও শিক্ষার্থী অংশ নেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রুয়েট আন্দোলন ছাত্র আন্দোলন
মন্তব্য করুন
চলমান কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে সারাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো এবার বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেছে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের সাথে রুয়েট শিক্ষার্থীরাও তাদের যোগদানের কথা জানান।