ইনসাইড বাংলাদেশ

আমলাদের বিরুদ্ধে রাজনীতিবিদদের একটি বিজয়

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ০৫ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

আপাতত মেট্রোরেলের ভাড়া বাড়ছে না। মেট্রোরেলের ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে এনবিআরের চেয়ারম্যান রহমাতুল মুনিমের একটি প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছিলো। সেই দ্বন্দ্বে আপাতত রাজনীতিবিদদের জয় হলো। আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতা ওবায়দুল কাদেরের কাছে শেষ পর্যন্ত এনবিআরের চেয়ারম্যানকে আপাতত বশ মানতে হয়েছে। 

১ জুলাই থেকে মেট্রোরেলের ভাড়ার উপরে ১৫% ভ্যাট বসানোর প্রস্তাব করেছিলো এনবিআর। কিন্তু সেই প্রস্তাব গৃহীত হয়নি। এখন পর্যন্ত ভ্যাট আদায় হয়নি। ভ্যাট আদায় করা হবে কি হবে না এটি নিয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে। সেই কমিটিতে এনবিআরের প্রতিনিধিরাও আছে। আগামী এক মাসের মধ্যে উভয়পক্ষ আলাপ-আলোচনা করে এব্যাপারে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে। 

তবে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যেহেতু এটি একটি নতুন পরিবহণ ব্যবস্থা এবং মানুষ এর সুবিধা ভোগ করছে। তাই এখানে ভ্যাট আরোপের জন্য আরেকটু সময় প্রয়োজন। তাছাড়া কারিগরি এবং প্রযুক্তিগত কিছু বিষয় রয়েছে। কারিগরি ব্যবস্থাপনার কিছু সংশোধন করা ছাড়া এখানে ভ্যাট আদায় করলে জটিলতা হতে পারে। সেকারণেই মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ এর আগে এনবিআরকে জানিয়েছিলো যে,আপাতত মেট্রোরেলের উপর যাতে ভ্যাট বসানো না হয়। 

কিন্তু মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের এই দাবি প্রত্যাখান করে এনবিআর জানিয়ে দেয়, মেট্রোরেলের ভাড়ার উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হবে। পরে বিষয়টি প্রকাশ্য বিতর্কে রূপ নেয়। এনবিআরের বক্তব্যের বিপরীতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অন্তত দু’টি অনুষ্ঠানে এনবিআরের সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এবিষয়টি নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন, এভাবে এর ওপর ভ্যাট আরোপ করা যাবে না। এরকম বাস্তবতায় শেষ পর্যন্ত এবারের বাজেটে মেট্রোরেলের ওপর ভ্যাট আদায়ের সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়। এখন উভয় পক্ষ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে ভ্যাট আদায় করা হবে কি হবে না। 

বাংলাদেশে আমলাতন্ত্রের বাড়-বাড়ন্তের সময় এটি রাজনীতিবিদদের একটি বড় বিজয় হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। কারণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় আমলাতন্ত্রের প্রভাব, প্রতিপত্তি এবং ক্ষমতা বেড়েছে। রাজনীতিবিদরা ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন। এর মধ্যে এই ভ্যাট আদায়ের সিদ্ধান্তে যদি এনবিআরের জয় হতো তাহলে সেটি হতো আমলাদের আরেকটি বিজয়। কারণ এনবিআরের চেয়ারম্যান এমন একজন ব্যক্তি, যিনি একাধিকবার চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন। আমলাতন্ত্রের ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে তাকে চিহ্নিত করা হয়। 

তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক সময়ে এনবিআরের নানারকম কেলেঙ্কারি, বিশেষ করে মতিউর কেলেঙ্কারির প্রেক্ষাপটে এখন আমলাতন্ত্রের একটি কোণঠাসা অবস্থা তৈরি হয়েছে। আর একারণেই রাজনীতিবিদদের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হয়েছে। বিশ্লেষকরা আরও মনে করছেন, বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে এসেছে, এবং প্রধানমন্ত্রী সবসময় জনবান্ধব নীতির পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন। জনগণের ভোগান্তি হোক এমন কোন সিদ্ধান্ত তিনি গ্রহণের বিপক্ষে সবসময়। সারাজীবন রাজনীতিতে তিনি জনগণের পক্ষেই ছিলেন। আর একারণেই নতুন ভাবে জনপ্রিয় হতে যাওয়া মেট্রোরেলের ওপর ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্তের পক্ষে তিনি অবস্থান করতে পারেন নি। 

এখন দেখার বিষয়, এনবিআর কবে, কিভাবে ভ্যাট আদায় করে বা মেট্রোরেল পরিবহনের ক্ষেত্রে সরকার কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তবে, ধারণা করা হচ্ছে মেট্রোরেলের উপর ভ্যাট আপাতত আরোপ করা হচ্ছে না। ভবিষ্যতে হয়তো আস্তে আস্তে এ বিষয়টি নিয়ে বিবেচনা করা হবে।


আমলা   রাজনীতিবিদ   দ্বন্দ্ব   মেট্রোরেল   ভাড়া বৃদ্ধি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

শেখ হাসিনার বিদেশ সফর: বাংলাদেশের কাছে কি চায় চীন?

প্রকাশ: ০৪:২৪ পিএম, ০৮ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

৪ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সোমবার (৮ জুলাই) চীনে গেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটা তার দ্বিতীয় বিদেশ সফর। এবারের সফরে অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক বিষয়ে বড় ধরনের চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা রয়েছে।

৯ জুলাই চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং এই সফরে চীনের সঙ্গে ৭০০ কোটি ডলার সমপরিমাণ বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক চুক্তি হতে পারে। এর মধ্যে বাণিজ্য সহায়তা পাওয়া যেতে পারে পাঁচশ কোটি ডলারের, বাজেট সহায়তা পাওয়া যাবে দুইশ কোটি ডলারের।

শেখ হাসিনার এবারের চীন সফরকে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক, উভয়দিক থেকেই বাংলাদেশের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। জানা গেছে, এই সফরের মাধ্যমে নতুন বাজেটের ঘাটতি পূরণসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে চীনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ পাওয়ার আশা করছে বাংলাদেশ।

গত ১৫ বছরে চীন বাংলাদেশের বেশকিছু মেগা-প্রকল্পে ঋণ দেওয়ার পাশাপাশি বাস্তবায়নকারীর ভূমিকাও রেখেছে। এরগুলোর মধ্যে বহুল আলোচিত পদ্মা সেতুর অবকাঠামো নির্মাণ ও কর্ণফুলি টানেল তৈরি। এরপর দেশটি এখন বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পেও যুক্ত হতে চাচ্ছে।

বিগত নির্বাচন থেকেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিষয়েও চীনের আগ্ৰহ সবার চোখে পড়ার মত। আর সাম্প্রতিক সময়ে নতুন সরকার গঠিত হবার পর বাংলাদেশে চীনের তৎপরতা অনেক গুন বেড়েছে।

যেকারণে খুব স্বাভাবিকভাবেই জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে চীন এত আগ্রহ দেখাচ্ছে কেন? এতে তাদের লাভ কি? বাংলাদেশে চীনের ঠিক কি কি স্বার্থ রয়েছে? তারা আসলে কি অর্জন করতে চাচ্ছে বাংলাদেশ থেকে?

চীন এখন বাংলাদেশে শীর্ষ ঋণদাতা দেশগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্যমতে, গত চার অর্থবছরে চীন এককভাবে বাংলাদেশকে প্রায় তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে।

আর ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটে’র (এইআই) ২০২৩ সালের এক হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ রয়েছে সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি।

আফ্রিকা থেকে শুরু করে এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশকেও ঋণ দিচ্ছে চীন। কিন্তু সার্বিক বিবেচনায় অন্যদেশের তুলনায় বাংলাদেশকে ঋণ দেওয়াটা তাদের জন্য বেশি লাভজনক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

গত দেড় দশকে ১২টিরও বেশি বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ। এসব প্রকল্পের মধ্যে পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ, কর্ণফুলি নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল, ঢাকায় বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্পসহ বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থঋণ দিয়েছে চীন।

বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশকে ঋণ দেওয়া বেশি লাভজনক হিসেবে দেখার কারণ হলো- ঋণ দিয়ে একদিকে তারা সুদের টাকা পাচ্ছে, অন্যদিকে দেখা যাচ্ছে চীনা ঠিকাদাররাই ওইসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। সেইসঙ্গে, বাংলাদেশের উপরেও চীনের প্রভাব বজায় থাকছে। এছাড়াও, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার ফলে চীনা নাগরিকদেরও কর্মসংস্থানের সুযোগ হচ্ছে। যেসব প্রকল্পে চীন ঋণ দিচ্ছে, চীনা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলোই সেখানে কাজ করছে।

করোনা মহামারির পর ২০২৩ সালে বেকারত্বের হার রেকর্ড সংখ্যায় বেড়েছে চীনে। চীনের সরকারি হিসেব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে দেশটিতে ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে বেকারত্বের হার ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। যেকারণে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে অর্থ বিনিয়োগ করার মাধ্যমে চীনের সরকার তাদের বেকার নাগরিকদের কাজের সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এ দেশে কর্মরত বিদেশিদের মধ্যে চীনা নাগরিকরাই সবচেয়ে বেশি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে অনুমতি নিয়ে কাজ করতে আসা চীনা নাগরিকের সংখ্যা ছয় হাজারের কিছু বেশি। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা আরও কয়েক গুণ বেশি বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

শুধু প্রকল্প বাস্তবায়নে ঋণ ও কর্মসংস্থানেই থেমে নেই চীন। এ দেশে চীনের বাণিজ্যিক ও ভূ- রাজনৈতিক স্বার্থ ও চোখে পরার মত।

এইআই’র হিসাবে, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাৎসরিক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার। আর বিশাল এই অঙ্কের প্রায় সবটাই আমদানি করে বাংলাদেশ।

একক দেশ হিসেবে চীনের কাছ থেকেই বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি করে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেবে দেখা যাচ্ছে, গত ১০ বছরে চীন থেকে পণ্য আমদানি প্রায় তিন গুণ বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্থবছরে চীন থেকে বছরে আগে সাড়ে ছয়শ কোটি মার্কিন ডলারের মতো পণ্য আমদানি করা হতো। আর এখন সেটি বেড়ে প্রায় দুই হাজার কোটি ডলারে পৌঁছেছে।

এছাড়াও, বিভিন্ন পণ্যের পাশাপাশি চীনের কাছ থেকে সামরিক সরঞ্জামসহ ২০১৬ সালে চীন থেকে দুটি সাবমেরিনও কিনেছে বাংলাদেশ। ফলে চীনের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ বেশ তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থের পাশাপাশি ভূ-রাজনীতির কৌশলগত দিক থেকেও চীনের কাছে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, এই গুরুত্বের প্রধান কারণ হলো বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান। কারণ, সুপার পাওয়ার হতে চাওয়া চীন মূলত এ অঞ্চলে একটা আধিপত্য রাখতে চায়। বিশেষ করে বঙ্গোপসাগরকে চীন নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। যদিও এটার প্রধান কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজি’।

২০২১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই স্ট্রাটেজি ঘোষণা করে। যেখানে চীনকে বাদ দিয়ে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, ফিলিপাইন, বাংলাদেশসহ অন্য দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে একটি নিরাপদ ‘ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল’ গড়ে তোলার ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

আর এই ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বসবাস করে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ । ফলে যেকোনো পণ্যের বাজার হিসেবে এই অঞ্চলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া, সমুদ্র বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও এ অঞ্চলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেকারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে এই অঞ্চলের জন্য আলাদা কৌশল ঘোষণা করেছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

যদিও, যুক্তরাষ্ট্রের আগেই ২০১৩ সালে ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ নামে একটি উন্নয়ন কৌশল ও কাঠামো উপস্থাপন করেছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে এশিয়া, ইউরোপসহ বিশ্বের ৬০টি দেশের সঙ্গে সড়ক ও রেলপথে সরাসরি সংযুক্ত হতে চায় চীন।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরই) নামের যে মহাপরিকল্পনা নিয়ে চীন বিভিন্ন দেশে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

কিন্তু বাংলাদেশের ওপর চীনের এই আধিপত্য এভাবেই সামঞ্জস্যতার সাথে চলবে নাকি চীন বাংলাদেশের রাজনীতি সহ অন্য সব কিছুতেও নিজেরদের প্রভাব বিস্তার করার প্রচেষ্টা চালাবে সেটিই এখন ভাবার বিষয়।


বাংলাদেশ   ভারত   চীন   রাজনীতি   শিন জিনপিং   প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলা ব্লকেড: সাইন্সল্যাব অবরোধ শিক্ষার্থীদের, যান চলাচল বন্ধ

প্রকাশ: ০৪:০৭ পিএম, ০৮ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল এবং মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহালের  দাবিতে চলমান ‘বাংলা ব্লকেড’ আন্দোলনের অংশ হিসেবে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় জড়ো হয়েছে ঢাকা কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (৮ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা কলেজ’ ব্যানারে ঢাকা কলেজ গেট এলাকায় শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে দেখা যায়। এসময় শিক্ষার্থীরা সায়েন্সল্যাব, নিউমার্কেট ও নীলক্ষেত মোড়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে আবারও সায়েন্সল্যাব মোড়ে এসে অবস্থান করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশিরা 

দেখা গেছে, দুপুর আড়াইটার দিকে আলাদাভাবে বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুনসহ ঢাকা কলেজ গেটের সামনে আসতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

এ সময় বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর মাথায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার বাধাঁর পাশপাশি ‘কোটা মুক্ত দেশ চাই’ লেখা সম্বলিত ফিতাও বেঁধে রাখেন।

এদিকে আন্দোলনে অংশ নিতে আসা এক শিক্ষার্থী এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে গেলেও পরিস্থিতি বাধ্য হলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।


কোটা আন্দোলন   ঢাকা কলেজ   সাইন্সল্যাব   অবরোধ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ছাত্র-শিক্ষক আন্দোলনে বিএনপির ইন্ধন নেই তবে সমর্থন আছে: ফখরুল

প্রকাশ: ০৪:০৫ পিএম, ০৮ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি এবং শিক্ষকদের পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে যে আন্দোলন চলছে তা যৌক্তিক। এই আন্দোলনে বিএনপির সমর্থন আছে। তবে এই আন্দোলনে বিএনপির বিপক্ষে যে ইন্ধনের অভিযোগ উঠেছে তা ভিত্তিহীন।

সোমবার (৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকারের সকলেই দুর্নীতিবাজ। সরকার ব্যর্থ হওয়ায় বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ নিচ্ছে। এতে জনগণের ঋণের বোঝা দিন দিন বাড়ছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবস্থা সংকটজনক উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় খালেদা জিয়াকে আটকে রাখা হয়েছে। ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ নেতারা নিজেদের মামলা প্রত্যাহার করে নেয়। তবে খালেদা জিয়ার মামলা ঝুলিয়ে রাখা হয়। পরে সেই মামলায় তাকে সাজা দেয়া হয়েছে। এদিকে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশী বিদেশি সব চিকিৎসক সুপারিশ করলেও সরকার জামিন দিচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার এক ব্রিফিংয়ে মির্জা ফখরুল জানান, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি এবং শিক্ষকদের পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলনে সমর্থন রয়েছে বিএনপির। সরকারকে এ সংক্রান্ত দাবি দ্রুত মেনে নেয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

অপরদিকে, এসব আন্দোলনে বিএনপি ইন্ধন জোগাচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন।


তারেক জিয়া   বেগম খালেদা জিয়া   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   বিএনপি   রাজনীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কোটা বাতিলের দাবিতে ফের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ জাবি শিক্ষার্থীদের

প্রকাশ: ০৪:০৪ পিএম, ০৮ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল ও ২০১৮ সালের পরিপত্র পূনর্বহালের দাবিতে আজ সোমবারও (৮ জুলাই) ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। এতে সড়কের উভয় লেনে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজট।

সোমবার ( জুলাই) বিকাল তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক (ডেইরি গেইট) সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকেবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে শেষ হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটাপ্রথা বাতিল সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি। আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তবে একটি কুচক্রীমহল বারবার বলার চেষ্টা করছে বা অপপ্রচার চালাচ্ছে, আন্দোলনকারীদের মধ্যে নাকি জামায়াত-বিএনপি ভর করেছে।

শিক্ষার্থীদের ৪ দফা দাবিসমূহ:

১)  ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধা ভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা।

২) পরিপত্র বহার সাপেক্ষে কমিশন গঠনপূর্বক দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সমস্ত গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেয়া (সুবিধা বঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ব্যতীত)।

৩) সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না। কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলো মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেয়া।

৪) দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা,১০ শতাংশ জেলা কোটা এবং ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটা ও ১ শতাংশ পদ প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের দিয়ে পূরণের নিয়ম চালু হয়।

তবে সেই বছর কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর চাকরিতে পুরো কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে। এবং এনিয়ে একই বছর ৪ অক্টোবর কোটা বাতিল বিষয়ক একটি পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

২০২১ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। গত ৫ জুন এই রিটের রায়ে পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। যার প্রেক্ষিতে ১ জুলাই থেকে টানা আন্দোলন করছে শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশিরা। 


কোটা আন্দোলন   জাবি   ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কাস্টমস কমিশনার এনামুলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশ: ০৩:৩৭ পিএম, ০৮ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সিলেটের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ এনামুল হককে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার (৮ জুলাই) ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।

দুদকের পক্ষে মীর আহাম্মদ আলী সালাম এ তথ্য জানান। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক ফারজানা ইয়াসমিন।

এর আগে, গত ৪ জুলাই এনামুলের ৮ কোটি ৯৫ লাখ ৪ হাজার ৫০০ টাকার জমি ও ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশ দেন আদালত।

ক্রোক করা সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে, গুলশানের জোয়ার সাহারায় ৬১ হাজার টাকার তিন কাঠা জমি, খিলক্ষেতে ৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকার ৩৩ শতাংশ জমি, কাকরাইলের আইরিশ নূরজাহান টাওয়ারে কমন স্পেসসহ ১১৭০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, যার মূল্য ২৮ লাখ ৩০ হাজার ৫০০ টাকা, একই ভবনে কারপার্কিং স্পেসসহ ১৮৩৫ বর্গফুটের ফ্ল্যাট যার মূল্য ৫১ লাখ ২৯০০ হাজার টাকা।

কাকরাইলে ১৯০০ বর্গফুট ও ৩৮০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটসহ কারপার্কিং, যার মূল্য ২ কোটি ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। গাজীপুরে ৬২ লাখ ৪০ হাজার টাকার পাঁচ কাঠা জমি। মোহাম্মদপুরে তিনটি বাণিজ্যিক ভবনে চার হাজার বর্গফুটের তিনটি স্পেস, যার প্রতিটির মূল্য ৭১ লাখ ৩৫ হাজার করে।

এ ছাড়া মোহাম্মদপুরে ১০ হাজার ৯৬৫ বর্গফুটের স্পেস রয়েছে, যার মূল্য দুই কোটি ৩৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। গুলশানের ৭২ লাখ টাকার ২৪২৮ বর্গফুটের ফ্ল্যাট এবং বাড্ডায় চার কাঠা নাল জমি যার মূল্য ১৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফারজান ইয়াসমিন আবেদনে উল্লেখ করেন, ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে ৯ কোটি ৭৬ লাখ ৯৭ হাজার টাকা মূল্যের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার (আসামি) বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।


কাস্টমস কমিশনার   এনামুল   দেশত্যাগ   নিষেধাজ্ঞা   ক্রোক  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন