ইনসাইড ইকোনমি

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা: সরকারকে বেকায়দায় ফেলার ষড়যন্ত্র

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

প্রায় এক মাস হতে চলল বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে গতকাল এ ব্যাপারে আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে সাংবাদিকরা কেন প্রবেশ করবে না বাংলাদেশ ব্যাংকে, তার কোন যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়নি বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে। যখন আর্থিক খাতে নানা রকম বিশৃঙ্খলা, ব্যাংক একীভূত করা নিয়ে তালগোল পাকাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক, ডলার নিয়ে চলছে তেলেসমাতি কারবার; তখন বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা নানা রকম গুজবকে উস্কে দিচ্ছে। এর ফলে সংবাদমাধ্যমগুলোতে আর্থিক খাত নিয়ে নানা রকম নেতিবাচক খবর প্রকাশিত হচ্ছে এবং এই সমস্ত খবরগুলো সরকারের ইমেজ নষ্ট করছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। সরকারের নীতি নির্ধারক মহলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

একলাফে ডলারের মূল্য বাড়িয়ে দেওয়া, সুদের হারের নিয়ন্ত্রণ উঠিয়ে দেওয়া কিংবা ব্যাংক একীভূতকরণ; সবগুলো নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এক লেজেগোবরে অবস্থায় চলে গেছে। এই পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের কাছে প্রকৃত পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করা এবং প্রত্যেকটি কাজের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করাটা জরুরি। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক অদৃশ্য কারণে সে পথে হাঁটছে না। এই না হাঁটার ফলে নানা রকম গুজব এবং নেতিবাচক সংবাদ উস্কে দেওয়া হচ্ছে।

কদিন আগেই রিজার্ভ চুরি নিয়ে এক গুজব ছড়ানো হয়েছিল। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এই তথ্য নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হল, বাংলাদেশ ব্যাংকে যখন গণমাধ্যমের অবাধ প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তখন মানুষ গুজবকে বিশ্বাস করা শুরু করেছে। যেকোন একটি প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সরকার তথ্য অধিকার আইন করেছে। এদেশের প্রধানমন্ত্রী গণমাধ্যমবান্ধব। তিনি যে কোন বিদেশ সফর করে এসে সংবাদ সংবাদ সম্মেলন করেন এবং এই সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের সঙ্গে সব বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যদি গণমাধ্যমের জন্য অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করেন, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক কেন এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে?

বর্তমান সরকার গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে। বিশেষ করে টকশোগুলোতে সরকার বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং ব্যক্তিরা এসে নানা রকম সমালোচনা করছে এবং এই সমস্ত সমালোচনা কোনরকম সেন্সরশিপ ছাড়াই করা হচ্ছে। সরকারের যখন এই অবস্থান তখন বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের অবস্থান সম্পূর্ণ বিপরীত। তাহলে কি বাংলাদেশ ব্যাংকে কোন ভূত আছে? যারা সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট, সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ন করার জন্য কাজ করছে।

কারণ বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রায় এক মাস ধরে এই পদক্ষেপের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সরকার। দেশে অর্থনৈতিক সংকট রয়েছে, এ কথা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক সংকট নিরসনের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। আর এ রকম একটা বাস্তবতায় বাংলাদেশ ব্যাংক গণমাধ্যমকে কোন তথ্য দেবেন না, গণমাধ্যম বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারবে না- এটি এটির পেছনে কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।

অনেকেই মনে করছেন, কেউ কেউ বাংলাদেশ ব্যাংকের ভিতরে থাকা কোন ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে এই সব ঘটনা ঘটাচ্ছে। এতে যেন সরকারের ইমেজ ক্ষুন্ন হয়, গুজব ছড়ানো সহজ হয় এবং অসত্য মিথ্যা তথ্য যারা পরিবেশন করছে তাদেরকে উস্কে দেওয়া হয়। অবাধ তথ্য প্রবাহের যুগে কোন তথ্যই গোপন রাখা যায় না। বাংলাদেশ ব্যাংক সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে কোন তথ্য গোপন করতে পারেনি। তারা ডলারের দাম বৃদ্ধির আগেই সব খবর প্রকাশ করেছে। স্ক্রলনীতির সংবাদ বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষণার আগেই প্রকাশিত হয়েছে। কাজেই বাংলাদেশ ব্যাংক যদি এভাবে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তাহলে সরকারই ক্ষতিগ্রস্থ হবে। সরকারকে ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্যই কী বাংলাদেশ ব্যাংকের কোন কোন মহল সক্রিয়?


বাংলাদেশ ব্যাংক   সাংবাদিক   গণমাধ্যম   অর্থনীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

রেল ও সড়কের ৯ প্রকল্পে চীনা ঋণ পেতে আগ্রহী বাংলাদেশ

প্রকাশ: ০৮:১২ এএম, ০৩ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সড়ক রেল যোগাযোগ খাতের নয়টি প্রকল্পে চীনা ঋণের বিষয়ে আগ্রহী বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফরে নিয়ে আলোচনা হতে পারে। ইতিমধ্যে সড়ক পরিবহন সেতু এবং রেল মন্ত্রণালয় এসব প্রকল্পের তালিকা পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।

সড়ক পরিবহন রেল মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, তালিকায় রেলের প্রকল্প রয়েছে ছয়টি। এর বাইরে ঢাকায় গাবতলী থেকে নারায়ণগঞ্জ পথে মেট্রোরেলের একটি লাইন নির্মাণ, পিরোজপুরের কচা নদীর ওপর নতুন একটি সেতু নির্মাণ এবং মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর সেতুর মেরামত প্রকল্প রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে ১১ জুলাই চীন সফর করতে পারেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ওই সফরে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় রেল সড়ক যোগাযোগের প্রকল্পগুলোতে চীনা ঋণের বিষয়টি প্রাধান্য পেতে পারে।

চীনা ঋণে হলে এই প্রকল্প জিটুজি ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হতে পারে। ক্ষেত্রে চীন সরকার ওই দেশের একটিমাত্র ঠিকাদার নির্বাচন করে দেবে। পদ্ধতিতে ঠিকাদারের পক্ষে নানা শর্ত যুক্ত করা এবং পণ্যের মূল্য বেশি দেখানোর কারণে ব্যয় বাড়ে বলে সমালোচনা আছে।

রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, চীন থেকে কোন কোন প্রকল্পের জন্য ঋণ চাওয়া দরকার, সে বিষয়ে রেল মন্ত্রণালয়ের কাছে তালিকা চেয়েছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি রেল মন্ত্রণালয় ছয়টি প্রকল্পের তালিকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।

বাংলাদেশ চীন সরকারের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে জিটুজিপদ্ধতিতে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে ১৭২ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প শেষ পর্যায়ে। এই প্রকল্পের জন্য চীনের এক্সিম ব্যাংকের ঋণের মেয়াদ শেষ। আগামী নভেম্বর পর্যন্ত তা বাড়াতে চায় বাংলাদেশ রেলওয়ে। জন্য প্রকল্পটি চীনা ঋণের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।

৩৯ হাজার ২৭৬ কোটি টাকায় বাস্তবায়নাধীন পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের মেয়াদ ছিল বছরের জুন মাস পর্যন্ত। এই প্রকল্পে চীনা ঋণের পরিমাণ ২৬৭ কোটি মার্কিন ডলার। ইতিমধ্যে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙা পর্যন্ত নতুন রেলপথ দিয়ে ট্রেন চলাচল করছে। ভাঙা থেকে যশোর পর্যন্ত অংশে দুই-তিন মাসের মধ্যে রেল চালু হতে পারে বলে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

ফরিদপুরের ভাঙা থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা বন্দর এবং কুয়াকাটা পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণে অগ্রাধিকার রয়েছে সরকারের। এই রেলপথ নির্মিত হলে পদ্মা সেতু হয়ে সারা দেশের সঙ্গে পায়রা বন্দরের যোগাযোগ স্থাপিত হবে। নতুন করে দক্ষিণবঙ্গের চার জেলা বরিশাল, ঝালকাঠি, বরগুনা পটুয়াখালী রেল যোগাযোগের আওতায় আসবে।

রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী চীনের রাষ্ট্রীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ (সিআরইসি) পায়রা পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহ দেখিয়ে আসছে। সম্প্রতি প্রকল্পের ধারণা নিতে বরিশালে গিয়েছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। ভাঙা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত নতুন রেলপথের প্রাক্‌-প্রকল্প প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় ৪১ হাজার ৮০ কোটি টাকা।

চীনা ঋণে হলে এই প্রকল্প জিটুজি ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হতে পারে। ক্ষেত্রে চীন সরকার ওই দেশের একটিমাত্র ঠিকাদার নির্বাচন করে দেবে। পদ্ধতিতে ঠিকাদারের পক্ষে নানা শর্ত যুক্ত করা এবং পণ্যের মূল্য বেশি দেখানোর কারণে ব্যয় বাড়ে বলে সমালোচনা আছে।

চীনা ঋণ পেতে রেলের আরও যেসব প্রকল্পের তালিকা করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে আছে গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে জামালপুর পর্যন্ত মিশ্র গেজ রেলপথ নির্মাণ, পাবনার ঢালারচর থেকে ফরিদপুরের পাচুরিয়া পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ, রাজবাড়ীতে একটি রেলওয়ে ওয়ার্কশপ নির্মাণ এবং ভৈরববাজার থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত মিটারগেজ লাইন মিশ্র গেজে রূপান্তর।

রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ভাঙা-কুয়াকাটা রেলপথ নিয়ে অনেকেরই আগ্রহ আছে। প্রকল্পে চীনা ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যান্য প্রকল্প সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সব প্রকল্পের অর্থায়ন তো এক জায়গা থেকে হয় না। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর আলাপ-আলোচনা করে বাংলাদেশের জন্য সুবিধাজনক হয় এমন উৎস থেকে অর্থায়নের ব্যবস্থা করবে।

সড়ক যোগাযোগের প্রকল্প

সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকায় মেট্রোরেলের ছয়টি লাইন নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হয়েছে। গাবতলী থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত মেট্রোরেল লাইন- এর ঋণ এখনো নিশ্চিত হয়নি। প্রকল্পের জন্য চীনা ঋণ পেতে আগ্রহী সড়ক মন্ত্রণালয়। নিয়ে সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

সেতু বিভাগের অধীন পিরোজপুরে কচা নদীর ওপর আরেকটি চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু নির্মাণে চীনা ঋণ পেতে চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। পিরোজপুর ঝালকাঠির মধ্যে কচা নদীতে এরই মধ্যে একটি সেতু চালু হয়েছে। নতুন সেতুটি ভান্ডারিয়া ইন্দুরকানির মধ্যে চরখালী ফেরিপথে নির্মাণ করা হবে। দেড় কিলোমিটারের কিছু বেশি দীর্ঘ হবে সেতুটি। আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার মতো। ছাড়া মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর সেতুর মেরামত দরকার। এটি চীনা ঋণে নির্মাণ করা হয়েছিল। এখন মেরামতেও চীনের সহায়তা চাইছে সরকার।

২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় বেশ কিছু চুক্তি সমঝোতা সই হয়। এরপর থেকে চীন বাংলাদেশের যোগাযোগ অবকাঠামো, বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতে ঋণ দেওয়া বাড়িয়ে দেয়। প্রায় এক দশক পর আগামী সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরে বাংলাদেশের জন্য চীনের ৭০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ প্রায় হাজার ৪০ কোটি ইউয়ানের বেশি ঋণ দেওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে পররাষ্ট্র ইআরডি সূত্রে জানা গেছে।

প্রকল্প বিশেষজ্ঞ ফাওজুল কবীর খান গণমাধ্যমকে বলেন, অর্থনীতি এমনিতেই সংকটে আছে। বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ আছে। ঋণ নিয়ে প্রকল্প করলে কী লাভ হবে, টাকা ফেরত দেওয়া যাবে কি না, এগুলো ভাবা দরকার। তিনি বলেন, চীনা ঋণে করা প্রকল্পের অতীত অভিজ্ঞতা বলে, এগুলো চীনের ঠিকাদার তাদের বাংলাদেশি এজেন্টকেন্দ্রিক। প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে ঠিকাদার নিয়োগ হয় না। জন্য ব্যয় ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ বেশি হয়।

 (তথ্যসূত্র: প্রথমআলো, ৩ জুলাই ২০২৪)


রেল   সড়ক   প্রকল্প   চীন   ঋণ   বাংলাদেশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ এখন ১৬ বিলিয়ন ডলার: কেন্দ্রীয় ব্যাংক

প্রকাশ: ০৪:০১ পিএম, ০২ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

ঋণের তৃতীয় কিস্তি বাবদ দশমিক ১১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (১১১ কোটি ৫০ লাখ ডলার) ছাড় করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহিবল (আইএমএফ) এর সঙ্গে আরও কয়েকটি দাতা সংস্থার ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ। ফলে দীর্ঘদিন কমতে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভে বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ যুক্ত হওয়ায় তা ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে।

২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ সর্বোচ্চ উঠেছিল হাজার ৮০০ কোটি ডলার (৪৮ বিলিয়ন) সদ্য সমাপ্ত ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে, ৩০ জুন রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে হাজার ৬৮২ কোটি মার্কিন ডলারে (২৬ দশমিক ৮২বিলিয়ন) আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম- অনুযায়ী রিজার্ভ এখন দুই হাজার ১৮৪ কোটি ডলার (২১ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন)

এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা শুধু আইএমএফকে দিতো। প্রকাশ করত না। তবে ঋণ সহায়তা পাওয়ার পর হঠাৎ দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রিজার্ভ বেড়ে যাওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে তা জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটির মুখপাত্রের দপ্তর থেকে জানানো হয়, চলতি বছরের ৩০ জুন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ আছে এক হাজার ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার ( ১৬ বিলিয়ন ডলার) প্রতি মাসে সাড়ে বিলিয়ন ডলার হিসেবে রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। সেই মানদণ্ডে বাংলাদেশ এখন শেষ প্রান্তে রয়েছে। একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম সূচক হলো বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ।

এর আগে ২৪ জুন ওয়াশিংটনে আইএমএফের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য ঋণের তৃতীয় কিস্তি দেওয়ার অনুমোদন হয়।

আইএমএফের দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭৬ দশমিক ২৭ মিলিয়ন ডলার এসেছে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। আর দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে প্রায় ৬৮১ মিলিয়ন ডলার আসে গত বছরের ডিসেম্বরে।

চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৬ সাল পর্যন্ত মোট সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির পরবর্তীগুলোতে সমান অর্থ থাকার কথা ছিল। কিন্তু  রিজার্ভ আরও কমে যাওয়ায় তৃতীয় চতুর্থ কিস্তিতে বেশি অর্থ চায় বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে বেশ কিছু কঠিন শর্তের বাস্তবায়ন আগামীতে আরও বড় সংস্কার কার্যক্রমের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় সংস্থাটি তৃতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ডলারের পরিবর্তে ১১১ কোটি ৫০ লাখ ডলার দিতে সম্মত হয়। তবে মোট ঋণের পরিমাণ এবং মেয়াদ একই থাকবে।

বাংলাদেশের অনুরোধে চতুর্থ কিস্তির জন্য আগামী জুন শেষে নিট রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা .৩৪ বিলিয়ন ডলার কমিয়ে ১৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারের অনুরোধে আইএমএফ পরে সংশোধন করে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে দেওয়া হয়।

কীভাবে তৈরি হয় রিজার্ভ

রেমিট্যান্স, রপ্তানি আয়, বিদেশি বিনিয়োগ, বিভিন্ন দেশ আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণ থেকে যে ডলার পাওয়া যায় তা দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তৈরি হয়। আবার আমদানি ব্যয়, ঋণের সুদ বা কিস্তি পরিশোধ, বিদেশিকর্মীদের বেতন-ভাতা, পর্যটক বা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাসহ বিভিন্ন খাতে যে ব্যয় হয়, তার মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রা চলে যায়। এভাবে আয় ব্যয়ের পর যে ডলার থেকে যায় সেটাই রিজার্ভে যোগ হয়। আর বেশি খরচ হলে রিজার্ভ কমে যায়।


রিজার্ভ   বিলিয়ন   ডলার   ব্যাংক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

গত তিন বছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এলো জুনে

প্রকাশ: ০৮:১৭ পিএম, ০১ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সদ্য সমাপ্ত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বৈধপথ ও ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে ২ হাজার ৩৯২ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যার পরিমাণ দেশীয় মুদ্রায় দাঁড়ালো দুই লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। আর এবারের এই রেমিট্যান্সের আয়ের অঙ্ক এ যাবৎকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আহরণ।

এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পরিমাণ রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছিল দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলার। সোমবার (১ জুলাই) কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ তথ্য জানিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, বিগত ২০২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৭ কোটি ডলার। অন্যদিকে আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ, সেপ্টেম্বরে ১৩৩ কোটি, অক্টোবরে ১৯৭ কোটি, নভেম্বর ১৯৩ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ১৯৯ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১০ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে আসে ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার ও মার্চ মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে আসে ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ডলার, এছাড়াও এপ্রিলে ২০৪ কোটি ডলার, মে মাসে ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ ডলার এবং সবশেষ জুন মাসে ২৫৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স দেশে এসেছে।

একক মাসের হিসাবে জুনের প্রবাসী আয়ের অঙ্ক ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ বলে জানা গেছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিবছর ঈদের আগে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় প্রবাসীরা বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়ে থাকেন আর এই ধারাবাহিকতার ব্যতিক্রম এবারেও হয়নি। এমনকি কোরবানির ঈদের আগে জুনে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছে।

অন্যদিকে গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৬১ কোটি ৭ লাখ মার্কিন ডলার। আর ঠিক এর আগের ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স আসে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার ও ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার, যা অর্থবছর হিসাবে সর্বোচ্চ পরিমাণ রেমিট্যান্স হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল।


রেমিট্যান্স   অর্থনীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

১১০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যে নীতিমালার খসড়া অনুমোদন, তিন বিষয়ে গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ: ০৭:০৫ পিএম, ০১ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

২০২৪-২৭ মেয়াদের জন্য ১১০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে খসড়া `রপ্তানি নীতিমালার' অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার (১ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়, যেখানে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১১০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে রপ্তানি নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে, যেখানে নতুনভাবে তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী:

১. ইলেকট্রনিক ডিভাইস তৈরি ও রপ্তানি বাড়াতে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান। ২. উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে কিছু বিশেষ সুবিধা হারাবে বাংলাদেশ, তাই বিশেষ কিছু বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ৩. আন্তর্জাতিক বাজারে শাকসবজি ও ফল রপ্তানির ব্যবস্থা গ্রহণে গুরুত্ব প্রদান, পাশাপাশি দেশীয় পণ্যের গুণগত মান বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ।

এছাড়া পদ্মা সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি কোম্পানি গঠনের প্রস্তাবও মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। ১৪ জন বোর্ড ও ডিরেক্টরের সমন্বয়ে গঠিত এই কোম্পানির প্রাথমিক মূলধন হবে এক হাজার কোটি টাকা। পদ্মা সেতুর ব্যবস্থাপনা পুরোপুরি দেশীয় কোম্পানি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে যত্ন ও স্বচ্ছতার সঙ্গে পাস হওয়া নতুন অর্থবছরের (২০২৪-২৫) বাজেট বাস্তবায়নের বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন।

সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সবাই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নয়, বরং কিছু সরকারি কর্মকর্তা এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এবং কোনো দুর্নীতিবাজকে সহানুভূতি দেখানো হবে না। 


প্রধানমন্ত্রী   রপ্তানি   নীতিমালা   খসড়া   অর্থবছর   ডলার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

কমলো ডিজেলের দাম, অপরিবর্তিত অকটেন-পেট্রোল

প্রকাশ: ০৮:৫৮ এএম, ০১ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করেছে সরকার। তেলের দাম লিটারে ১ টাকা কমিয়ে রোববার (৩০ জুন) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। সোমবার (১ জুলাই) থেকে পুনর্নির্ধারিত এ মূল্য কার্যকর হবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকার গত মার্চ মাস থেকে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্বয়ংক্রিয় ফর্মুলার আলোকে প্রতিমাসে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করছে। তারই ধারাবাহিকতায় ভোক্তা পর্যায়ে ডিজেল ও কেরোসিনের বিদ্যমান বিক্রয়মূল্য ১০৭.৭৫ টাকা লিটার থেকে ১ টাকা কমিয়ে ডিজেল ১০৬.৭৫ টাকা এবং কেরোসিন ১০৬.৭৫ টাকা লিটারে পুনর্নির্ধারণ সমন্বয় করা হয়েছে। তবে পেট্রোলের বিদ্যমান মূল্য ১২৭ টাকা লিটার এবং অকটেনের বিদ্যমান মূল্য ১৩১ টাকা লিটার অপরিবর্তিত রয়েছে। 

এর আগে এপ্রিল ও মে মাসের প্রজ্ঞাপনেও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তবে জুন মাসের প্রজ্ঞাপনে ডিজেল ও কেরোসিনে ১ টাকা করে কমানো হয়। 

উল্লেখ্য, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য কিছুটা কমলেও মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে জ্বালানি তেলের আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে।

মূল্য সমন্বয়ের পরেও ভারতের কলকাতায় বর্তমানে ডিজেল লিটার প্রতি ৯০.৭৬ রুপি বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২৫.৭০ টাকায় এবং পেট্রোল ১০৩.৯৪ রুপি বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৪৩.৯৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা বাংলাদেশ থেকে যথাক্রমে প্রায় ১৮.৯৫ টাকা ও ১৬.৯৬ টাকা বেশি। 


ডিজেল   দাম   অকটেন   পেট্রোল  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন