ইনসাইড ইকোনমি

এস আলমের দুই প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট ফাঁকি, সরকারের পাওনা ৭ হাজার ৬৯ কোটি টাকা

প্রকাশ: ০৯:১০ পিএম, ৩০ জুন, ২০২৪


Thumbnail

গত ৩ বছরে এস আলমের ২ প্রতিষ্ঠানের ৩ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে বলে জানা গেছে। যার জন্য  তাদের আরও তিন হাজার ৫৩১ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অর্থাৎ এস আলম গ্রুপের ২ প্রতিষ্ঠানের কাছে বর্তমানে সরকারের পাওনা ৭ হাজার ৬৯ কোটি টাকা।

জানা গেছে, ভ্যাট রিটার্নে কম ক্রয়-বিক্রয় দেখানোসহ বিভিন্ন উপায়ে ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে কোম্পানি দুটি।

এনবিআরের ভ্যাট শাখার অডিট প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গেছে, চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের ফিল্ড অফিস থেকে একটি অডিট করা হয় এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনারের নেতৃত্বে গঠিত ৫ সদস্যের একটি কমিটি এটি পর্যালোচনা করে ভ্যাট ফাঁকির এ অভিযোগের সত্যতা পায়।

২০২৩ সালের অক্টোবরে জমা দেওয়া অডিট প্রতিবেদন এবং প্রতিবেদন তৈরির প্রায় ৮ মাস পর ২০২৪ সালের মে মাসে জমা দেওয়া পর্যালোচনা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৯-২০ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরের মধ্যে তিন বছরে এস আলম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডের বিরুদ্ধে ১ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা এবং এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডের বিরুদ্ধে ১ হাজার ৬২১ কোটি টাকা ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

কোন ধরনের অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে দুই কোম্পানিই। ভ্যাট রিটার্ন এবং তাদের সিএ ফার্মের অডিটকৃত আর্থিক বিবরণী ও পর্যালোচনা কমিটির কাছে তাদের লিখিত জবাব বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পেয়েছে এনবিআর।

কোম্পানি দুটির বিষয়ে গত বছরের ২ অক্টোবর প্রতিবেদন জমা দেয় অডিট টিম। পরে অডিট প্রতিবেদনটি পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করে মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়। গত ২১ মে জমা দেওয়া পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোম্পানি দুটির বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

গত ৯ জুন চট্টগ্রাম কাস্টমস, ভ্যাট ও এক্সাইজ কমিশনারেট ঐ দুই কোম্পানিকে পরবর্তী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ফাঁকি দেওয়া ৩ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা ভ্যাট, ৩ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা জরিমানা এবং এর ওপর প্রযোজ্য সুদের টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে পরিশোধের নির্দেশ দেয়। অপরিশোধিত ভ্যাট ও জরিমানার মোট পরিমাণ ৭ হাজার ৬৯ কোটি টাকা।

এনবিআর কর্মকর্তারা জানান, এই টাকা পরিশোধের জন্য দেওয়া নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হবে আগামী ৩ জুলাই। এর মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে বা আদেশের বিরুদ্ধে আপিল না করলে মাঠ পর্যায়ের অফিস ঐ দুই কোম্পানির বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ভ্যাট, জরিমানা ও সুদের টাকা আদায়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে এস আলম গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক (অর্থ) সুব্রত কুমার ভৌমিক বলেন, তারা ভ্যাটের একটি টাকাও ফাঁকি দেননি এবং এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।

ব্যবসায়ীক গ্রুপটির এই দুই অঙ্গ সংগঠন ভ্যাট দাবির ২০ শতাংশ (৭০০ কোটি টাকার বেশি) পরিশোধ করে ৯০ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবে। এস আলম গ্রুপের কোম্পানি আইনজীবী মো. মুস্তাফিজুর রহমান জানান, তারা আপিল করার আগে ভ্যাট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ব্যক্তিগত শুনানির মাধ্যমে তাদের পূর্ণ প্রতিক্রিয়া জানাতে এবং অডিট ও পর্যালোচনার সময় কর্তৃপক্ষের চাওয়া নথি উপস্থাপন করতে চায়।

ভ্যাট কর্তৃপক্ষ অনাদায়ী ভ্যাট পরিশোধ করতে বলার তিনদিন আগে (৬ জুন পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য আবেদন করলেও তাদের সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে এ আইনজীবী বলেন, তারা যদি পূর্ণাঙ্গ শুনানি করে এবং আমাদের পর্যাপ্ত সময় দেয় তাহলে বোঝাতে পারবো, তারা যে ভ্যাট দাবি করছে তা বাস্তব সম্মত নয়।

কি মিললো অডিটে?
চট্টগ্রাম আয়কর অফিসে কোম্পানি দুটির দাখিল করা ভ্যাট রিটার্নের বিক্রি সংক্রান্ত তথ্য এবং ২০১৯-২০ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কর অফিস তাদের ভ্যাট ফাঁকির তথ্য পায়।

এস আলম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডের ওপর তৈরি প্রতিবেদনে ভ্যাট কমিশনারেট বলেছেন, কোম্পানিটি তাদের চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি (সিএ) ফার্মের নিরীক্ষিত বার্ষিক প্রতিবেদনের চেয়ে ভ্যাট রিটার্নে বিক্রি কম দেখিয়েছে। বার্ষিক প্রতিবেদনটি কোম্পানিই কর কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯-২০ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরের অডিটকৃত প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানিটির মোট বিক্রির পরিমাণ ১২ হাজার ৭২৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। অন্যদিকে ভ্যাট রিটার্ন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির বিক্রির পরিমাণ ২ হাজার ৪০১ কোটি ৯২ লাখ টাকা।



ঐ সময় ভোজ্যতেল বিক্রির ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রযোজ্য ছিল উল্লেখ করে এতে বলা হয়, অর্থাৎ ভ্যাট রিটার্নে ১০ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা বিক্রির কথা উল্লেখ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। ভ্যাট রিটার্নে প্রকৃত বিক্রির বিষয়টি গোপন করে প্রতিষ্ঠানটি আদায়যোগ্য এক হাজার ৩৪৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা পরিশোধ করেনি।

অডিট প্রতিবেদন অনুযায়ী, অপর কোম্পানি এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডও একই ধরনের কাজ করেছে। পার্থক্য শুধু টাকার পরিমাণে।

অডিট প্রতিবেদন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, একই সময়ে কোম্পানিটির অডিটকৃত আর্থিক বিবরণীতে বিক্রির পরিমাণ ১২ হাজার ৮৫০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। তবে ভ্যাট রিটার্নে এর পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৩ হাজার ৬২০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, যা অডিটকৃত আর্থিক প্রতিবেদনে উপস্থাপিত অর্থের চেয়ে ৯ হাজার ২২৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা কম।

এছাড়া তিন অর্থবছরের অডিটকৃত বার্ষিক প্রতিবেদনের চেয়ে ভ্যাট রিটার্নে কাঁচামাল ক্রয়ের মূল্য কম দেখিয়ে রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে প্রতিষ্ঠান দুটি।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, এস আলম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেড তাদের অডিটকৃত আর্থিক বিবরণীতে দেখিয়েছে, এই তিন বছরে তারা ১১ হাজার ২৪৫ কোটি টাকার কাঁচামাল কিনেছে। কিন্তু কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করা ভ্যাট রিটার্ন ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাগজপত্রে দেখা যায়, কাঁচামাল ক্রয় করেছে ৩ হাজার ১৪৫ কোটি টাকার। সিএ ফার্মের অডিটকৃত কোম্পানির নিজস্ব আর্থিক বিবরণীতে প্রদর্শিত অর্থের চেয়ে যা ৮ হাজার ১০০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা কম।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অডিট প্রতিবেদন ও ভ্যাট রিটার্নের তুলনামূলক বিশ্লেষণে এটা স্পষ্ট যে ভ্যাট ফাঁকি দিতে স্থানীয় উৎস থেকে কেনা বা অন্য কোনো উপায়ে সংগ্রহ করা উপাদান দিয়ে উৎপাদন করে সয়াবিন ও পাম তেল বিক্রি করা হয়েছে।

সিএ ফার্মের অডিটকৃত কোম্পানির প্রতিবেদনে প্রক্রিয়াজাতকরণ উপকরণ (সিডিএসও—ক্রুড ডিগামড সয়াবিন তেল ও আরবিডি পাম অলিন) ছাড়াই বিক্রির তথ্যও রয়েছে। আমদানি তথ্য থেকে প্রতিবেদনে এটা স্পষ্ট যে, স্থানীয়ভাবে ৮ হাজার ১০০ কোটি ৩৯ লাখ টাকার কাঁচামাল সংগ্রহ করলেও এর বিপরীতে কোম্পানিটি কোনো ভ্যাট চালান বা বিল অব এন্ট্রি জমা দিতে পারেনি। ঐ সময়ে এ ধরনের ক্রয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রযোজ্য ছিল এবং সেই কারণে, মোট অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমাণ ৬০৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা, যা প্রতিষ্ঠানটি থেকে আদায়যোগ্য। এই ৩ বছরে অপর কোম্পানি এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডের কাঁচামালের ক্রয়মূল্য ১১ হাজার ১৭১ কোটি ৪২ লাখ টাকা দেখানো হলেও শুল্ক কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করা ভ্যাট রিটার্ন ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য কাগজপত্রে এর পরিমাণ ৫ হাজার ২০৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে।

এক্ষেত্রে অপরিশোধিত করের পরিমাণ ৪৪৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, আমদানির তথ্য থেকে এটা স্পষ্ট যে, স্থানীয়ভাবে ৫ হাজার ৯৬৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকার কাঁচামাল সংগ্রহ করা হয়েছে, যার বিপরীতে কোম্পানিটি কোনো ভ্যাট চালান বা বিল অব এন্ট্রি জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমাণ ৪৪৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।

চট্টগ্রাম কাস্টমস, ভ্যাট কমিশনারেট ২০১৯-২০ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরের অডিটকৃত বার্ষিক প্রতিবেদন ও ভ্যাট রিটার্নে প্রদত্ত পণ্য ও সেবার ক্রয় সংক্রান্ত তথ্য তুলনা করে দেখেছে, এই সময়ে এস আলম ভেজিটেবল অয়েল ক্রয়ের সময় প্রযোজ্য হারের চেয়ে কম পরিমাণে উৎসে ভ্যাট (ভিডিএস) পরিশোধ করেছে। ঐ ৩ বছরে পণ্য ও সেবার ওপর ৫ থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রযোজ্য। সেই হিসাবে কোম্পানিটির অপরিশোধিত করের পরিমাণ ৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

একই সময়ে এস আলম সুপার এডিবল অয়েলের ভিডিএস হিসেবে ১ কোটি ৭৮ লাখ টাকার রাজস্ব বকেয়া।



প্রতিষ্ঠান দুটির বিষয়ে কমিশনারেটের প্রতিবেদনে বলা হয়, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ১০টি ধারা এবং মূল্য সংযোজন ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা ২০১৬ এর ছয়টি ধারার 'সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হয়েছে তাদের এই ধরনের কাজে। এছাড়া ভ্যাট আইন না মানায় এস আলম সুপার এডিবল অয়েলকে ১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা এবং এস আলম ভেজিটেবল অয়েলকে ১ হাজার ৯১২ কোটি টাকা জরিমানা করেছে কর কর্তৃপক্ষ।

কোম্পানি দুটি সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ৮৫ ও ১১১ ধারা অনুযায়ী কোম্পানির বিরুদ্ধে ফাঁকি দেওয়া ভ্যাট আদায়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।

অডিট চলাকালে চট্টগ্রাম কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কোম্পানি দুটির কাছে এর ব্যাখ্যা চায় এবং ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর শুনানির জন্য হাজির হতে বলে। শুনানির দিন উভয় কোম্পানি একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া জমা দেয় এবং লিখিত আকারে বিস্তারিত জবাব দেওয়ার জন্য আরো সময় চায়। এরপর কমিশনারেট অফিস থেকে ৩ দফায় কোম্পানি দুটিকে বাড়তি সময় দেওয়া হয় এবং গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর জমা দেওয়া লিখিত জবাবে কোম্পানি তাদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানো নোটিশে উল্লিখিত পরিহারকৃত মূসক দাবিটি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানায়।

সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত
প্রতিষ্ঠান দুটির লিখিত জবাব এবং অপরিশোধিত ভ্যাট দাবি পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে, যা মাঠ অফিসের অডিট প্রতিবেদন ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক নথিপত্র পর্যালোচনা করে গত ২১ মে প্রতিবেদন জমা দেয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সবকিছু বিবেচনা ও বিশ্লেষণ করে এটা স্পষ্ট যে এস আলম ভেজিটেবল অয়েলের ১ হাজার ৯১৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এস আলম সুপার এডিবল ওয়েলের মোট অপরিশোধিত ভ্যাট ১ হাজার ৬২১ কোটি ৯২ লাখ টাকা সম্পর্কেও একই উপসংহার টানা হয়।

কোম্পানি দুটি যা বলছে
কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত জবাবে প্রতিষ্ঠান দুটি বলেছে, ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার নোটিশ সম্পূর্ণ বেআইনি ও ভিত্তিহীন এবং মনগড়া ও তথ্য-উপাত্ত বিহীন। আমাদের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আইন ও বিধি সম্মতভাবেই প্রযোজ্য সমুদয় মূসক পরিশোধপূর্বক ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি।

কোম্পানি দুটির চিঠিতে বলা হয়, আমরা প্রতি অর্থবছরে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে থাকি। কিন্তু আমাদের বৃহৎ প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার জন্য ব্যাংক ঋণের প্রয়োজন এবং আমরা ব্যাংক ঋণ গ্রহণ করেই প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। সেক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের জন্য আমাদের অতিরিক্ত লেনদেন সিএ ফার্ম কর্তৃক সম্পাদিত অডিট রিপের্টে দেখাতে হয়। ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের জন্য উল্লেখিত অডিট রিপোর্টে অতিরিক্ত বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করা হয়েছে। কিন্তু সঠিক বিক্রয় অনুযায়ী দাখিলপত্র দাখিল করা হইয়েছে এবং সেই মোতাবেক মূসক পরিশোধ করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠান দুটি আরো জানায়, ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত সময়ে যে পরিমাণ কাঁচামাল আমদানি করা হয়েছে সেই পরিমাণ আমদানিকৃত কাঁচামাল দ্বারা সিএ রিপোর্টে উল্লেখিত বিক্রয়মূল্যে প্রদর্শিত পণ্য উৎপাদন করে বিকরি করা সম্ভব নয়। অডিট প্রতিবেদনে দেখানো বিপুল পরিমাণ পণ্য উৎপাদনের জন্য তাদের কাছে প্রয়োজনীয় মেশিনারিজ ও শ্রমিক কর্মচারী নেই এবং স্থানীয় বাজারেও সিএ রিপোর্টে উল্লেখিত বিকরির চাহিদা নেই। কাঁচামাল আমদানির তথ্য এবং উপকরণ-উৎপাদনের তথ্য সঠিকভাবে পর্যালোচনা করলেই এর সত্যতা প্রমাণিত হবে।

তারা আরো দাবি করেছে, স্থানীয় উৎস থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করার যে তথ্য কাস্টমস তাদের প্রতিবেদনে বলেছে তা সঠিক নয়। কারণ, আমাদের প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত ভোজ্যতেলের বিপরীতে যাবতীয়/সমুদয় কাঁচামাল আমদানিনির্ভর। অর্থাৎ স্থানীয়ভাবে কোনো কাঁচামাল সংগ্রহ করা হয় না বিধায় কাঁচামাল স্থানীয়ভাবে সংগ্রহের বিপরীতে যোগানদার খাতের আওতায় উৎসে মূসকের দাবি সঠিক নয়।

ফৌজদারি অপরাধ
পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়, নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক এবং আয়কর ও ভ্যাট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া সব বাণিজ্যিক নথিতে যেকোনো প্রতিষ্ঠানের ক্রয় ও বিক্রয় তথ্য একই হতে হবে। এর অর্থ হলো, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের জন্য এটি একটি আইনি বাধ্যবাধকতা যে, ভ্যাট অফিস, আয়কর অফিস, ব্যাংক এবং সিএ ফার্মের মাধ্যমে অডিটকৃত আর্থিক প্রতিবেদনে উপস্থাপন করা ক্রয় ও বিক্রয়ের তথ্য অভিন্ন হতে হবে।

উভয় কোম্পানির ক্ষেত্রে পর্যালোচনা কমিটি বলেছে, প্রতিষ্ঠানের লিখিত জবাব, মূসক এবং আয়কর দফতরে সংরক্ষিত বাণিজ্যিক দলিলাদি পর্যালোচনায় এটা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে আলোচ্য প্রতিষ্ঠানটি মূসক পরিহারের অভিপ্রায়েই মূসক দফতরে দাখিলকৃত দাখিলপত্রে প্রকৃত বিক্রয়/ক্রয় এবং উৎসে প্রদেয় মূসকের তথ্য গোপন করেছে। এছাড়া কোম্পানি কর্তৃপক্ষ লিখিত জবাবের স্বপক্ষে প্রয়োজনীয় প্রমাণক/দলিলাদি উপস্থাপনের জন্য একাধিকবার অনুরোধ জানিয়ে পত্র প্রেরণ করা হলেও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের প্রমাণক/দলিলাদি এ দফতরে প্রেরণ করেননি।

পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়, অডিট কমিটি কোম্পানিগুলোর কাছে লিখিতভাবে অনুরোধ করলেও কোম্পানিগুলো অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমাণ পুনরায় পরীক্ষা করার জন্য কোনো প্রতিনিধিকে মনোনীত করেনি। তারা ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার জন্য এ ধরনের একটি অতিরঞ্জিত ক্রয়-বিক্রয়ের তথ্য সন্নিবেশ করে রিপোর্টটি তৈরি করেছেন মর্মে দাবি করেন। এটা যদি সত্য হয় সেক্ষেত্রে তারা সুস্পষ্টভাবে একটি ফৌজদারি অপরাধ করেছেন।

এতে আরো বলা হয়, অপরদিকে যে অডিট ফার্ম এ প্রতিবেদন প্রণয়ন করেছে, তারা পেশাগত অসততা প্রদর্শন করেছে এবং প্রকারান্তে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটিকে একটি ফৌজদারি অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করেছেন। কাল্পনিক ও অসত্য অডিট প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ঋণ মঞ্জুর করে থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকও খুবই অপেশাদার কাজ করেছে। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটির এ দাবি মেনে নেয়ার অর্থ হবে এ ধরনের অপরাধমূলক কাজকে প্রশ্রয় দেওয়া, যা সরকারের কোনো সংস্থা করতে পারে না।

আলোচ্য সিএ ফার্ম সম্পাদিত অডিট রিপোর্টটি মূল্য সংযোজন কর দফতর কর্তৃক সংগ্রহ করা হয়েছে আয়কর সার্কেল থেকে, যা অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সেখানে দাখিলকৃত। সংশ্লিষ্ট আয়কর সার্কেল এ অডিট রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের কর-দায়িতা নির্ধারণ করে তা নিষ্পত্তি করেছে। সেখানে কোনো ব্যাংক ঋণের সংশ্লেষণ নেই। তাই ব্যাংক ঋণ গ্রহণের জন্য এ প্রতিবেদনটি প্রণয়ন করা হয়েছে- এমন দাবি গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

এই তিন অর্থবছরের মধ্যে দুটি অর্থবছরে এস আলমের প্রতিষ্ঠান দুটির অডিট প্রতিবেদন তৈরি করেছে হাওলাদার ইউনুস অ্যান্ড কোং। অভিযোগের বিষয়ে অডিট ফার্মটি বলেছে, তারা কোম্পানির অডিটর, হিসাব প্রস্তুতকারী নয়।

তাদের ভাষ্য, আমাদের কাজ ছিল প্রতিষ্ঠানটি যে হিসাব প্রস্তুত করেছে সেটি নোটসহ অডিট করা। আমরা অডিট পরিচালনা ও অডিট মতামতের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অডিট মান অনুসরণ করেছি। কাজেই, কোনো বিষয়ে কাউকে সহযোগিতা করার প্রশ্নই ওঠে না।

অগ্রহণযোগ্য যুক্তি
চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ এবং ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান জানিয়েছেন, তারা দুটি কোম্পানিকে শুনানির একাধিক সুযোগ দিয়েছেন। কোম্পানি দুটি ৬ জুন নতুন করে শুনানির জন্য আপিল করেছিল- এ বিষয়ে তিনি বলেন, তারা এরই মধ্যে শুনানিতে উপস্থিত হয়েছে এবং অডিট চলাকালীন তাদের বক্তব্য জমা দিয়েছে। পরে আমরা তাদের বক্তব্য পর্যবেক্ষণের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছি। কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাদের দুইবার শুনানিতে হাজির হতে বলেছি, কিন্তু তারা আসেনি। এরপর যখন আমরা ভ্যাট দাবির আদেশ জারি করি, তখন শুনানির জন্য আরেকটি চিঠি পাঠায়- যা মেনে নেয়া সম্ভব ছিল না। এসব বিবরণ আমার আদেশে নথিভুক্ত রয়েছে।

বিক্রির হিসাব সম্পর্কে তিনি বলেন, বিক্রির বিষয়ে তাদের নিজস্ব অডিটকৃত বার্ষিক প্রতিবেদনই চূড়ান্ত পরিসংখ্যান। আমরা কোনো পরিসংখ্যান তৈরি করিনি। তাদের অডিটকৃত প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই তারা আয়কর পরিশোধ করেছে, কিন্তু ভ্যাট রিটার্নে তা দেখায়নি। যদি ক্রেতাদের কোনো টাকা ফেরত দেওয়াই হয়, তাহলে সেটা কীভাবে অডিট প্রতিবেদনে দেখানো হয় না? এটা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য যুক্তি।

কাঁচামাল সংগ্রহের বিষয়ে সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, কোম্পানিগুলোর কাঁচামাল আমদানি করার কথা। কিন্তু এগুলো স্থানীয়ভাবে অন্যান্য উৎপাদকদের কাছ থেকেও কিনতে পারে। আর এটাই তাদের নিজস্ব আমদানির তুলনায় নিজস্ব অডিট প্রতিবেদনে উচ্চ বিক্রির পরিমাণের সঙ্গে যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা। সেজন্যই স্থানীয় বিক্রেতাদের কাছ থেকে কাঁচামাল কেনার সময় যে উৎসে ভ্যাট কাটতে হবে, সেটাই এস আলমের দুটি কোম্পানির ওপর ধার্য করেছি।


এস আলম গ্রুপ   এডিবল অয়েল   ভেজিটেবল   এনবিআর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

রেল ও সড়কের ৯ প্রকল্পে চীনা ঋণ পেতে আগ্রহী বাংলাদেশ

প্রকাশ: ০৮:১২ এএম, ০৩ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সড়ক রেল যোগাযোগ খাতের নয়টি প্রকল্পে চীনা ঋণের বিষয়ে আগ্রহী বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফরে নিয়ে আলোচনা হতে পারে। ইতিমধ্যে সড়ক পরিবহন সেতু এবং রেল মন্ত্রণালয় এসব প্রকল্পের তালিকা পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।

সড়ক পরিবহন রেল মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, তালিকায় রেলের প্রকল্প রয়েছে ছয়টি। এর বাইরে ঢাকায় গাবতলী থেকে নারায়ণগঞ্জ পথে মেট্রোরেলের একটি লাইন নির্মাণ, পিরোজপুরের কচা নদীর ওপর নতুন একটি সেতু নির্মাণ এবং মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর সেতুর মেরামত প্রকল্প রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে ১১ জুলাই চীন সফর করতে পারেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ওই সফরে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় রেল সড়ক যোগাযোগের প্রকল্পগুলোতে চীনা ঋণের বিষয়টি প্রাধান্য পেতে পারে।

চীনা ঋণে হলে এই প্রকল্প জিটুজি ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হতে পারে। ক্ষেত্রে চীন সরকার ওই দেশের একটিমাত্র ঠিকাদার নির্বাচন করে দেবে। পদ্ধতিতে ঠিকাদারের পক্ষে নানা শর্ত যুক্ত করা এবং পণ্যের মূল্য বেশি দেখানোর কারণে ব্যয় বাড়ে বলে সমালোচনা আছে।

রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, চীন থেকে কোন কোন প্রকল্পের জন্য ঋণ চাওয়া দরকার, সে বিষয়ে রেল মন্ত্রণালয়ের কাছে তালিকা চেয়েছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি রেল মন্ত্রণালয় ছয়টি প্রকল্পের তালিকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।

বাংলাদেশ চীন সরকারের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে জিটুজিপদ্ধতিতে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে ১৭২ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প শেষ পর্যায়ে। এই প্রকল্পের জন্য চীনের এক্সিম ব্যাংকের ঋণের মেয়াদ শেষ। আগামী নভেম্বর পর্যন্ত তা বাড়াতে চায় বাংলাদেশ রেলওয়ে। জন্য প্রকল্পটি চীনা ঋণের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।

৩৯ হাজার ২৭৬ কোটি টাকায় বাস্তবায়নাধীন পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের মেয়াদ ছিল বছরের জুন মাস পর্যন্ত। এই প্রকল্পে চীনা ঋণের পরিমাণ ২৬৭ কোটি মার্কিন ডলার। ইতিমধ্যে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙা পর্যন্ত নতুন রেলপথ দিয়ে ট্রেন চলাচল করছে। ভাঙা থেকে যশোর পর্যন্ত অংশে দুই-তিন মাসের মধ্যে রেল চালু হতে পারে বলে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

ফরিদপুরের ভাঙা থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা বন্দর এবং কুয়াকাটা পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণে অগ্রাধিকার রয়েছে সরকারের। এই রেলপথ নির্মিত হলে পদ্মা সেতু হয়ে সারা দেশের সঙ্গে পায়রা বন্দরের যোগাযোগ স্থাপিত হবে। নতুন করে দক্ষিণবঙ্গের চার জেলা বরিশাল, ঝালকাঠি, বরগুনা পটুয়াখালী রেল যোগাযোগের আওতায় আসবে।

রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী চীনের রাষ্ট্রীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ (সিআরইসি) পায়রা পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহ দেখিয়ে আসছে। সম্প্রতি প্রকল্পের ধারণা নিতে বরিশালে গিয়েছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। ভাঙা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত নতুন রেলপথের প্রাক্‌-প্রকল্প প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় ৪১ হাজার ৮০ কোটি টাকা।

চীনা ঋণে হলে এই প্রকল্প জিটুজি ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হতে পারে। ক্ষেত্রে চীন সরকার ওই দেশের একটিমাত্র ঠিকাদার নির্বাচন করে দেবে। পদ্ধতিতে ঠিকাদারের পক্ষে নানা শর্ত যুক্ত করা এবং পণ্যের মূল্য বেশি দেখানোর কারণে ব্যয় বাড়ে বলে সমালোচনা আছে।

চীনা ঋণ পেতে রেলের আরও যেসব প্রকল্পের তালিকা করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে আছে গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে জামালপুর পর্যন্ত মিশ্র গেজ রেলপথ নির্মাণ, পাবনার ঢালারচর থেকে ফরিদপুরের পাচুরিয়া পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ, রাজবাড়ীতে একটি রেলওয়ে ওয়ার্কশপ নির্মাণ এবং ভৈরববাজার থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত মিটারগেজ লাইন মিশ্র গেজে রূপান্তর।

রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ভাঙা-কুয়াকাটা রেলপথ নিয়ে অনেকেরই আগ্রহ আছে। প্রকল্পে চীনা ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যান্য প্রকল্প সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সব প্রকল্পের অর্থায়ন তো এক জায়গা থেকে হয় না। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর আলাপ-আলোচনা করে বাংলাদেশের জন্য সুবিধাজনক হয় এমন উৎস থেকে অর্থায়নের ব্যবস্থা করবে।

সড়ক যোগাযোগের প্রকল্প

সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকায় মেট্রোরেলের ছয়টি লাইন নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হয়েছে। গাবতলী থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত মেট্রোরেল লাইন- এর ঋণ এখনো নিশ্চিত হয়নি। প্রকল্পের জন্য চীনা ঋণ পেতে আগ্রহী সড়ক মন্ত্রণালয়। নিয়ে সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

সেতু বিভাগের অধীন পিরোজপুরে কচা নদীর ওপর আরেকটি চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু নির্মাণে চীনা ঋণ পেতে চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। পিরোজপুর ঝালকাঠির মধ্যে কচা নদীতে এরই মধ্যে একটি সেতু চালু হয়েছে। নতুন সেতুটি ভান্ডারিয়া ইন্দুরকানির মধ্যে চরখালী ফেরিপথে নির্মাণ করা হবে। দেড় কিলোমিটারের কিছু বেশি দীর্ঘ হবে সেতুটি। আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার মতো। ছাড়া মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর সেতুর মেরামত দরকার। এটি চীনা ঋণে নির্মাণ করা হয়েছিল। এখন মেরামতেও চীনের সহায়তা চাইছে সরকার।

২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় বেশ কিছু চুক্তি সমঝোতা সই হয়। এরপর থেকে চীন বাংলাদেশের যোগাযোগ অবকাঠামো, বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতে ঋণ দেওয়া বাড়িয়ে দেয়। প্রায় এক দশক পর আগামী সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরে বাংলাদেশের জন্য চীনের ৭০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ প্রায় হাজার ৪০ কোটি ইউয়ানের বেশি ঋণ দেওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে পররাষ্ট্র ইআরডি সূত্রে জানা গেছে।

প্রকল্প বিশেষজ্ঞ ফাওজুল কবীর খান গণমাধ্যমকে বলেন, অর্থনীতি এমনিতেই সংকটে আছে। বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ আছে। ঋণ নিয়ে প্রকল্প করলে কী লাভ হবে, টাকা ফেরত দেওয়া যাবে কি না, এগুলো ভাবা দরকার। তিনি বলেন, চীনা ঋণে করা প্রকল্পের অতীত অভিজ্ঞতা বলে, এগুলো চীনের ঠিকাদার তাদের বাংলাদেশি এজেন্টকেন্দ্রিক। প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে ঠিকাদার নিয়োগ হয় না। জন্য ব্যয় ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ বেশি হয়।

 (তথ্যসূত্র: প্রথমআলো, ৩ জুলাই ২০২৪)


রেল   সড়ক   প্রকল্প   চীন   ঋণ   বাংলাদেশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ এখন ১৬ বিলিয়ন ডলার: কেন্দ্রীয় ব্যাংক

প্রকাশ: ০৪:০১ পিএম, ০২ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

ঋণের তৃতীয় কিস্তি বাবদ দশমিক ১১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (১১১ কোটি ৫০ লাখ ডলার) ছাড় করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহিবল (আইএমএফ) এর সঙ্গে আরও কয়েকটি দাতা সংস্থার ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ। ফলে দীর্ঘদিন কমতে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভে বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ যুক্ত হওয়ায় তা ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে।

২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ সর্বোচ্চ উঠেছিল হাজার ৮০০ কোটি ডলার (৪৮ বিলিয়ন) সদ্য সমাপ্ত ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে, ৩০ জুন রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে হাজার ৬৮২ কোটি মার্কিন ডলারে (২৬ দশমিক ৮২বিলিয়ন) আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম- অনুযায়ী রিজার্ভ এখন দুই হাজার ১৮৪ কোটি ডলার (২১ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন)

এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা শুধু আইএমএফকে দিতো। প্রকাশ করত না। তবে ঋণ সহায়তা পাওয়ার পর হঠাৎ দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রিজার্ভ বেড়ে যাওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে তা জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটির মুখপাত্রের দপ্তর থেকে জানানো হয়, চলতি বছরের ৩০ জুন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ আছে এক হাজার ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার ( ১৬ বিলিয়ন ডলার) প্রতি মাসে সাড়ে বিলিয়ন ডলার হিসেবে রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। সেই মানদণ্ডে বাংলাদেশ এখন শেষ প্রান্তে রয়েছে। একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম সূচক হলো বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ।

এর আগে ২৪ জুন ওয়াশিংটনে আইএমএফের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য ঋণের তৃতীয় কিস্তি দেওয়ার অনুমোদন হয়।

আইএমএফের দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭৬ দশমিক ২৭ মিলিয়ন ডলার এসেছে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। আর দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে প্রায় ৬৮১ মিলিয়ন ডলার আসে গত বছরের ডিসেম্বরে।

চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৬ সাল পর্যন্ত মোট সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির পরবর্তীগুলোতে সমান অর্থ থাকার কথা ছিল। কিন্তু  রিজার্ভ আরও কমে যাওয়ায় তৃতীয় চতুর্থ কিস্তিতে বেশি অর্থ চায় বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে বেশ কিছু কঠিন শর্তের বাস্তবায়ন আগামীতে আরও বড় সংস্কার কার্যক্রমের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় সংস্থাটি তৃতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ডলারের পরিবর্তে ১১১ কোটি ৫০ লাখ ডলার দিতে সম্মত হয়। তবে মোট ঋণের পরিমাণ এবং মেয়াদ একই থাকবে।

বাংলাদেশের অনুরোধে চতুর্থ কিস্তির জন্য আগামী জুন শেষে নিট রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা .৩৪ বিলিয়ন ডলার কমিয়ে ১৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারের অনুরোধে আইএমএফ পরে সংশোধন করে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে দেওয়া হয়।

কীভাবে তৈরি হয় রিজার্ভ

রেমিট্যান্স, রপ্তানি আয়, বিদেশি বিনিয়োগ, বিভিন্ন দেশ আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণ থেকে যে ডলার পাওয়া যায় তা দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তৈরি হয়। আবার আমদানি ব্যয়, ঋণের সুদ বা কিস্তি পরিশোধ, বিদেশিকর্মীদের বেতন-ভাতা, পর্যটক বা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাসহ বিভিন্ন খাতে যে ব্যয় হয়, তার মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রা চলে যায়। এভাবে আয় ব্যয়ের পর যে ডলার থেকে যায় সেটাই রিজার্ভে যোগ হয়। আর বেশি খরচ হলে রিজার্ভ কমে যায়।


রিজার্ভ   বিলিয়ন   ডলার   ব্যাংক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

গত তিন বছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এলো জুনে

প্রকাশ: ০৮:১৭ পিএম, ০১ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সদ্য সমাপ্ত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বৈধপথ ও ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে ২ হাজার ৩৯২ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যার পরিমাণ দেশীয় মুদ্রায় দাঁড়ালো দুই লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। আর এবারের এই রেমিট্যান্সের আয়ের অঙ্ক এ যাবৎকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আহরণ।

এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পরিমাণ রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছিল দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলার। সোমবার (১ জুলাই) কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ তথ্য জানিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, বিগত ২০২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৭ কোটি ডলার। অন্যদিকে আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ, সেপ্টেম্বরে ১৩৩ কোটি, অক্টোবরে ১৯৭ কোটি, নভেম্বর ১৯৩ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ১৯৯ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১০ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে আসে ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার ও মার্চ মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে আসে ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ডলার, এছাড়াও এপ্রিলে ২০৪ কোটি ডলার, মে মাসে ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ ডলার এবং সবশেষ জুন মাসে ২৫৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স দেশে এসেছে।

একক মাসের হিসাবে জুনের প্রবাসী আয়ের অঙ্ক ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ বলে জানা গেছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিবছর ঈদের আগে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় প্রবাসীরা বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়ে থাকেন আর এই ধারাবাহিকতার ব্যতিক্রম এবারেও হয়নি। এমনকি কোরবানির ঈদের আগে জুনে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছে।

অন্যদিকে গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৬১ কোটি ৭ লাখ মার্কিন ডলার। আর ঠিক এর আগের ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স আসে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার ও ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার, যা অর্থবছর হিসাবে সর্বোচ্চ পরিমাণ রেমিট্যান্স হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল।


রেমিট্যান্স   অর্থনীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

১১০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যে নীতিমালার খসড়া অনুমোদন, তিন বিষয়ে গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ: ০৭:০৫ পিএম, ০১ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

২০২৪-২৭ মেয়াদের জন্য ১১০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে খসড়া `রপ্তানি নীতিমালার' অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার (১ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়, যেখানে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১১০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে রপ্তানি নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে, যেখানে নতুনভাবে তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী:

১. ইলেকট্রনিক ডিভাইস তৈরি ও রপ্তানি বাড়াতে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান। ২. উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে কিছু বিশেষ সুবিধা হারাবে বাংলাদেশ, তাই বিশেষ কিছু বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ৩. আন্তর্জাতিক বাজারে শাকসবজি ও ফল রপ্তানির ব্যবস্থা গ্রহণে গুরুত্ব প্রদান, পাশাপাশি দেশীয় পণ্যের গুণগত মান বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ।

এছাড়া পদ্মা সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি কোম্পানি গঠনের প্রস্তাবও মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। ১৪ জন বোর্ড ও ডিরেক্টরের সমন্বয়ে গঠিত এই কোম্পানির প্রাথমিক মূলধন হবে এক হাজার কোটি টাকা। পদ্মা সেতুর ব্যবস্থাপনা পুরোপুরি দেশীয় কোম্পানি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে যত্ন ও স্বচ্ছতার সঙ্গে পাস হওয়া নতুন অর্থবছরের (২০২৪-২৫) বাজেট বাস্তবায়নের বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন।

সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সবাই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নয়, বরং কিছু সরকারি কর্মকর্তা এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এবং কোনো দুর্নীতিবাজকে সহানুভূতি দেখানো হবে না। 


প্রধানমন্ত্রী   রপ্তানি   নীতিমালা   খসড়া   অর্থবছর   ডলার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

কমলো ডিজেলের দাম, অপরিবর্তিত অকটেন-পেট্রোল

প্রকাশ: ০৮:৫৮ এএম, ০১ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করেছে সরকার। তেলের দাম লিটারে ১ টাকা কমিয়ে রোববার (৩০ জুন) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। সোমবার (১ জুলাই) থেকে পুনর্নির্ধারিত এ মূল্য কার্যকর হবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকার গত মার্চ মাস থেকে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্বয়ংক্রিয় ফর্মুলার আলোকে প্রতিমাসে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করছে। তারই ধারাবাহিকতায় ভোক্তা পর্যায়ে ডিজেল ও কেরোসিনের বিদ্যমান বিক্রয়মূল্য ১০৭.৭৫ টাকা লিটার থেকে ১ টাকা কমিয়ে ডিজেল ১০৬.৭৫ টাকা এবং কেরোসিন ১০৬.৭৫ টাকা লিটারে পুনর্নির্ধারণ সমন্বয় করা হয়েছে। তবে পেট্রোলের বিদ্যমান মূল্য ১২৭ টাকা লিটার এবং অকটেনের বিদ্যমান মূল্য ১৩১ টাকা লিটার অপরিবর্তিত রয়েছে। 

এর আগে এপ্রিল ও মে মাসের প্রজ্ঞাপনেও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তবে জুন মাসের প্রজ্ঞাপনে ডিজেল ও কেরোসিনে ১ টাকা করে কমানো হয়। 

উল্লেখ্য, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য কিছুটা কমলেও মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে জ্বালানি তেলের আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে।

মূল্য সমন্বয়ের পরেও ভারতের কলকাতায় বর্তমানে ডিজেল লিটার প্রতি ৯০.৭৬ রুপি বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২৫.৭০ টাকায় এবং পেট্রোল ১০৩.৯৪ রুপি বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৪৩.৯৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা বাংলাদেশ থেকে যথাক্রমে প্রায় ১৮.৯৫ টাকা ও ১৬.৯৬ টাকা বেশি। 


ডিজেল   দাম   অকটেন   পেট্রোল  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন