ইনসাইড গ্রাউন্ড

‘হাম নেহি জিতেঙ্গে, হামারা মর্জি’

প্রকাশ: ০৯:০৪ এএম, ২৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

২০০২ সালে শুরু হওয়া পাকিস্তানের এআরআই টিভির জনপ্রিয় একটি শো ‘লুস টক’। পাকিস্তানের বিখ্যাত টিভি স্ক্রিপ্ট রাইটার আনোয়ার মাকছুদের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানটির ৪৬ তম এক এপিসোডে বাংলাদেশের এক প্লেয়ারের ভূমিকায় শো তে উপস্থিত হতে দেখা যায় পাকিস্তানের বিখ্যাত কমেডিয়ান মঈন আকতারকে। সেখানে আনোয়ার মাকছুদের পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের পর পর তিন টেস্ট হারের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে মঈন আকতার উত্তর দিয়েছিলেন ‘হামরা মর্জি হে হাম নেহি জিতেঙ্গে, দিস ইজ আওয়ার টার্গেট’। পুনরায় আনোয়ার মাকছুদ জিজ্ঞেস করলেও তিনি (মঈন আকতার) তার জবাবে অটুট থাকেন। এবার তিনি উত্তর দেন ‘হাম নেহি জিতেঙ্গে মতলব হাম নেহি জিতেঙ্গে’। আজ দীর্ঘ ২৪ পর বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তানের ম্যাচ কিংবা এ পুরো টি-২০ বিশ্বকাপ পূর্ব পর বাংলাদেশের ম্যাচ গুলো দেখলে ‘লুস টক’এর সেই ৪৬ তম এপিসোডটির কথা মনে পড়ে যাবে যেকোন বাংলাদেশি ক্রিকেট ভক্তের।

টি-২০ বিশ্বকাপের নবম আসরে সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। যে ম্যাচে বাংলাদেশকে ২০ ওভারে মাত্র ১১৫ রানের টার্গেট দেয় আফগানিস্তান। তবে সেমিফাইনালে উঠতে বাংলাদেশকে এই রান সংগ্রহ করতে হতো ১২.১ ওভারে। আধুনিক টি-২০-তে এটি খুব একটা কঠিন না হলেও বাংলাদেশ এ রান ১২.১ ওভারে জেতা তো দূরের কথা উল্টো নির্ধারিত ওভার শেষেও এ রান তুলতে পারেনি। ১৭.৫ ওভারে বাংলাদেশ সংগ্রহ করেছে ১০৫ রান। এতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৮ রানে হেরেছে টাইগাররা। যার ফল টি-২০ বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে বাংলাদেশকে।  এই ম্যাচের ফলাফলে বাংলাদেশি ক্রিকেট ভক্তদের মাঝে দেখা গেছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে ব্যাপক সমালোচনা। 

একটি দেশ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মর্যাদা পাওয়ার ২৭ বছর পরও আন্তর্জাতিক বৈশ্বিক কোন টুর্নামেন্টে সফলতার মুখ দেখেনি, নেই জয়ের তীব্র ক্ষুধা, আত্মবিশ্বাস নেই, এমনকি নেই কোন সঠিক গেমপ্ল্যান। যার উপর ভর করে দলটি সফলতার মুখ দেখবে। অথচ ২০০৯ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মর্যাদা পাওয়া আফগানিস্তান পুরো বিশ্বকে চোখে আঙুল তুলে দেখিয়ে দিয়েছে ম্যাচ জিততে বা আন্তর্জাতিক বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে ভালো কিছু করতে মনের জোড় আর আত্মবিশ্বাসই যথেষ্ট। 

বাংলাদেশ আইসিসি থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মর্যাদা পায় ১৯৯৭ সালে। আর টেস্ট ক্রিকেটের মর্যাদা পায় ২০০০ সালের ২৬ জুন। এরপর থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেটে অর্জন কতটুকু? এই প্রশ্নের উত্তর কি হবে তা আমরা সবাই জানি। অন্যদিকে ২০০৯ সালে ওডিআই-এ স্বীকৃতি পাওয়ার পর থেকে আস্তে আস্তে আফগানিস্তান তাদের সক্ষমতা জানান দিয়ে গেছে পুরো ক্রিকেট বিশ্বকে। বিশ্বের বাঘা বাঘা দল নাকানি চুবানি খেয়েছে তাদের স্পিন ঘূর্ণিতে। এসব প্রসঙ্গ তুললে অনেকে হয়তো বলবেন, অন্যের ১০ তলা ভবন দেখে কি নিজের টিনের চালা ঘর ভেঙ্গে ফেলা উচিত? কিন্তু আসলেই একবার ভেবে দেখা উচিত ক্রিকেটে এই ২৭ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশের অর্জন কতটুকু? দেশের ক্রিকেট কি আদৌ উন্নতি করেছে? নাকি ক্রমাগত ব্যর্থতার ধাক্কায় গর্তে পড়ে যাচ্ছে? এটি বিচার করার দায়িত্ব দেশের কোটি ক্রিকেট প্রেমীর, বিসিবির। 

আসুন একনজরে দেখে নেয়া যাক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মর্যাদা লাভের পর বাংলাদেশের অংশগ্রহণকৃত প্রত্যেকটি আন্তর্জাতিক বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের অর্জনসমূহ। 

১৯৯৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ: 

বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মর্যাদা লাভের পর প্রথম অংশগ্রহণকৃত কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট এটি। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ শক্তিশালী পাকিস্তান ও স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে নিজেদের আগমনী বার্তা দেয়। টুর্নামেন্টে ৫ ম্যাচে ২টি জয় তুলে নেয় টাইগাররা। তবে এই টুর্নামেন্টে প্রত্যাশিতভাবেই পয়েন্ট টেবিলের ৫ নম্বরে থেকে বিদায় নেয় তারা। 

২০০৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপ:

এ বিশ্বকাপটি ছিলো বাংলাদেশের জন্য এক দুঃস্বপ্ন। আগের বিশ্বকাপের ধারাবাহিকতা এই আসরে ধরে রাখতে অক্ষম হয় বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে গ্রুপ-বি-তে থাকা দলটি ৬ ম্যাচ খেলে একটি ম্যাচও জিততে পারেনি। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে সেখান থেকে ২ পয়েন্ট নিয়ে বিদায় নিতে হয় বাংলাদেশকে। 

২০০৭ ক্রিকেট বিশ্বকাপ: 

আগের বিশ্বকাপের আসরগুলো থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে শুরু হয় ২০০৭ ক্রিকেট বিশ্বকাপ। এ বিশ্বকাপে গ্রুপ বি’ তে বাংলাদেশের সঙ্গী ছিলো ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বারমুডা। গ্রুপ পর্বে ভারত ও বারমুডাকে হারিয়ে শ্রীলঙ্কার সঙ্গী হয়ে প্রথমবারের মতো সুপার এইটে ওঠে বাংলাদেশ। তবে সুপার এইটে আবার যথারীতি হতাশা। সুপার এইটে ৭ ম্যাচ খেলে মাত্র ১ টি জয় তুলতে সক্ষম হয় দলটি। এই একমাত্র জয়টি আসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। অন্যদিকে তুলনামূলক দুর্বল দল আয়ারল্যান্ডের সাথে ম্যাচ হেরে যায় বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে শেষ পর্যন্ত সুপার এইট থেকে বিদায় নিতে হয় বাংলাদেশকে। 

২০০৭ টি-২০ বিশ্বকাপ:

ক্রিকেটের সম্পূর্ণ নতুন এই সংস্করণে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বকাপ। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত এ বিশ্বকাপে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে গ্রুপ পর্বে দুটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। এ দুই ম্যাচ থেকে ১ জয় ও ১ হার দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শেষ করে বাংলাদেশ। 

২০০৯ ও ২০১০ টি-২০ বিশ্বকাপ: 

যথারীতিভাবে এই দুই বিশ্বকাপেও ব্যর্থ টাইগাররা। ক্রিকেটের বৈশ্বিক এই দুই আসরে হতশ্রী পারফর্মমেন্স করে বাংলাদেশ। দুই বিশ্বকাপেই গ্রুপ-এ তে পড়ে বাংলাদেশ। উভয় আসরে কোন ম্যাচ না জিতে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থেকে প্লেনের টিকেট কেটেছে বাংলাদেশ। 

২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপ:

২০১১ সালের বিশ্বকাপকে ঘিরে দেশের কোটি ক্রিকেট প্রেমীর মধ্যে ছিলো অন্যরকম উন্মাদনা। কেননা প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে নিজ দেশে। কিন্তু এ বিশ্বকাপেও ক্রিকেট ভক্তদের হতাশ করেছে টাইগাররা। ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে মাত্র ৫৮ রানে অলআউট হয়ে লজ্জায় ডুবতে হয় টাইগারদের। তবে এর পরের ম্যাচগুলোতে ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডকে হারালেও শেষ পর্যন্ত পরের রাউন্ডে উঠতে যথারীতি ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। 

২০১২ টি-২০ বিশ্বকাপ: 

আরেকটি নতুন বছর আরেকটি নতুন টুর্নামেন্ট। দেশ তখন টু-জি থেকে থ্রি-জিতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। অনেক কিছুই পাল্টেছে। শুধু পাল্টেনি একটি জিনিস সেটি হলো বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ব্যর্থতা। এ বিশ্বকাপেও ব্যর্থ বাংলাদেশ। ২ ম্যাচের দুইটিতেই হার। ফলাফল কোন পয়েন্ট না নিয়ে শ্রীলঙ্কা থেকে দেশে ফেরত আসে বাংলাদেশের টাইগাররা। 

২০১৪ টি-২০ বিশ্বকাপ: 

২০১২ সালের ব্যর্থতা ভুলে যেতে বাংলাদেশের কাছে আবারও সুযোগ আসে ২০১৪ সালে। কারণ এবার নিজেদের ঘরের মাঠে একক ভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু হায় সেলুকাস! ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বাংলাদেশকে বের করবে কে? গ্রুপ পর্বের ৪ ম্যাচের সব ক’টিতে হেবে বাদ বাংলাদেশ। সব ছাপিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৭১ রানের বিশাল হার লজ্জায় ফেলে বাংলাদেশকে পুরো বিশ্ববাসীর কাছে। তাও আশার কথা এবার নিজেদের ঘরের মাঠে খেলা হওয়ায় বিমানের টিকেট কাটতে হয়নি টাইগারদের। 

২০১৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপ: 

বিশ্বকাপের এই আসরে গ্রুপ পর্বে গ্রুপ-তে খেলে বাংলাদেশ। এ গ্রুপ থেকে ৬ ম্যাচে ৩ জয়, ২ হার ও ১ ড্র নিয়ে শেষ পর্যন্ত স্বপ্নের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। তবে শেষ পর্যন্ত ভারতের কাছে ১০৯ রানে হেরে দেশে ফিরতে হয় বাংলাদেশকে।  

২০১৬ টি-২০ বিশ্বকাপ: 

ভারতে অনুষ্ঠিত এ বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ডে ভালোই করে বাংলাদেশ। ৩ ম্যাচের ২ ম্যাচ জিতে মূল পর্বে জায়গা করে নেয় দলটি। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা থেকে বেরোতে নারাজ। টাইগাররা যেনো ‘লুস টক’এর সেই মঈন আকতারের কথাটি খুবই গুরুত্বের সাথে নিয়ে নিয়েছে। এবারও তারা ‘হাম নেহি জিতেঙ্গে মাতলাব হাম জিতেঙ্গে’ এমন বিশ্বাসে অনঢ়। এই বিশ্বকাপের মূল পর্বে যেন ২০১৪ সালের পুনরাবৃত্তি। ৪ ম্যাচের ৪টিতেই হার!

২০১৭ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি: 

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বৈশ্বিক কোন আসরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন এই টুর্নামেন্টে। ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ। আর এই টুর্নামেন্টে গ্রুপ-এ রানার্স আপ হয়ে সেমি ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। যদিও বৃষ্টিতে অস্ট্রেলিয়ার দুইটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে ১ জয় এবং ১ ড্র মিলিয়ে ৩ পয়েন্ট নিয়ে সেমি নিশ্চিত করে তৎকালীন মাশরাফি বাহিনী। এতে আশায় বুক বাধে দেশের হাজারও ক্রিকেট প্রেমী। তবে সেমি ফাইনালে ভারত বাধা আর পার করতে পারেনি টাইগাররা। ভারতের কাছে ৯ উইকেটে হেরে বিদায় নিতে হয় টুর্নামেন্ট থেকে। 

২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ: 

এর আগে ২০১৫ বিশ্বকাপ ও ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সুখস্মৃতি নিয়ে বাংলাদেশ ইংল্যান্ডে যায় ২০১৯ বিশ্বকাপ খেলতে। সম্পূর্ণ নতুন সংস্করণের এই বিশ্বকাপে শুরুতেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এক নয়া সূর্য উদিত করে টাইগাররা। কিন্তু এরপর শুরু হয় আবার হারের বৃত্তে আটকে পড়া। ১০ দলের এই বিশ্বকাপে ৯ ম্যাচের মাত্র ৩টিতে জিততে পেরেছিল বাংলাদেশ। যা ছিল ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে এক হতাশার গল্প। 

২০২১ টি-২০ বিশ্বকাপ: 

টি-২০ বিশ্বকাপের এই আসরে আবারো পুনরাবৃত্তি ২০১৪ ও ২০১৬ আসরের। এ আসরেও যথারীতি প্রথম পর্ব থেকে মূল পর্বে কোন যদি কিন্তু ছাড়া উত্তীর্ণ হয় বাংলাদেশ। কিন্তু মূল পর্বের ৫ ম্যাচে ৫ হার। আবার কোন অর্জন ছাড়া দেশে ফেরে টাইগার বাহিনী। 

২০২২ টি-২০ বিশ্বকাপ: 

টি-২০ বিশ্বকাপের সব ব্যর্থতা ভুলে নতুন রূপে বাংলাদেশ। এবার বিশ্বকাপে সরাসরি মূল পর্বে জায়গা করে নিল টিম টাইগার্স। এ বিশ্বকাপে তেমন আশানুরূপ ফল অর্জন করতে না পারলেও অস্ট্রেলিয়ার বাউন্সি উইকেটে গ্রুপ পর্বের ২ টি ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ এবং টুর্নামেন্টে গ্রুপ-ডি তে ৫ নম্বরে থেকে শেষ করে টুর্নামেন্ট।

২০২৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপ: 

সবশেষ ২০২৩ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত হওয়া আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের এ আসরে ৯ ম্যাচে মাত্র দুই জয় থেকে ৪ পয়েন্ট তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। এরপর ফল পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে ৮ নম্বর স্থান এবং বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার আগেই বিমানের টিকেটে দেশের পথ ধরেছে বাংলাদেশ।


বাংলাদেশ   ক্রিকেট   বিশ্বকাপ   হার   জিত   লুস টক   হমরা মর্জি   নেহি জিতেঙ্গে  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড গ্রাউন্ড

শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে শেষ মিনিটের গোলে জার্মানিকে বিদায় করে সেমিতে স্পেন

প্রকাশ: ০১:২৯ এএম, ০৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

দুই হেভিওয়েট দলের লড়াই।  গ্রুপ পর্ব থেকেই খেলে আসছে দাপুটে ফুটবল।  ২০২২ বিশ্বকাপে দুই দলের সবশেষ সাক্ষাৎটাও ১-১ সমতায় ছিল।  কিন্তু এবার আর অমীমাংসিত থাকলো না।  ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনের কাছে হেরে শিরোপার লড়াই থেমে গেল স্বাগতিক জার্মানির।

স্পেন ও জার্মানি তিনবার করে ইউরোর চ্যাম্পিয়নের মুকুট পরেছে।  ইউরোর ইতিহাসে সবচেয়ে সফল দল দুটো চলমান আসরের কোয়ার্টার ফাইনালে নামবে আর উত্তেজনা থাকবে না সেটা কি হয়? ফাইনালের আগেই যেন দেখা গেলো আরেক ফাইনাল।  যেখানে হেরে যাওয়া দলটার নাম জার্মানি।

তবে জার্মানি হেরে যাওয়ার আগে ম্যাচে অনেক নাটকীয় মুহুর্ত এসেছে।  তবে যত নাটকীয় মুহুর্তই আসুক না কেন।  শেষ পর্যন্ত জার্মানির বিদায় নিশ্চিত হল ইউরো থেকে।  ম্যাচের একদম অন্তিম মুহুর্তে জার্মানির মিডফিল্ডার ফ্লোরিয়ান উইর্টজের গোলে সমতায় ফেরার পর জার্মানরা এরপর ম্যাচে ছিল শুধুই অতিরিক্ত সময়ের ৩০মিনিট।  শেষ পর্যন্ত নাটকীয় ম্যাচটার রেজাল্ট গেছে স্পেনের পক্ষে।  ২-১ গোলের জয়ে ইউরোর সেমিফাইনালে প্রথম দল হিসেবে নাম লেখালো স্পেন।

এদিন ঘরের মাঠে ম্যাচ বিধায় বাড়তি সুবিধা পায় জার্মানরা।  কিন্তু সাম্প্রতিক ফর্ম এগিয়ে রাখে স্প্যানিয়ার্ডদের।  আর সেই ফর্ম ম্যাচের ৫১ মিনিটে কাজেও লাগায় লুইস ফুয়েন্তের দল।  স্পেনকে ১-০ গোলের লিড এনে দেন দানি অলমো।

এরপর ম্যাচের প্রায় পুরোটা সময় লিড ধরে রেখে স্পেন যখন জয়ের স্বপ্ন দেখছে তখনই ম্যাচের একদম অন্তিম মুহুর্তে সমতায় ফেরে স্বাগতিক জার্মানি।  ৮৯ মিনিটে মিডফিল্ডার ফ্লোরিয়ান উইর্টজের গোলের দেখা পায় হুলিয়ান নাগেলসম্যান শিষ্যরা।  ম্যাচ তখন ১-১ সমতায়।

এরপর ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।  সেখানেও একদম শেষ বাশি বাজার আগে গোলের দেখা পায় স্পেন।  মিকেল মেরিনোর গোলে ২-১ গোলে এগিয়ে যায় স্পেন।

এর আগে কোয়ার্টার ফাইনালে আসার পথে দুই দলই আধিপত্য দেখিয়েই এসেছে।  এবারের আসরের একমাত্র দল হিসেবে চার ম্যাচের সবকটিতেই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে  প্রাধান্য বিস্তার করে এসেছে স্পেন।  জার্মানি চার ম্যাচের তিনটি জিতেছে।  অন্যটি ড্র করেছে।
 
শেষবার দুই দলের বড় কোনো শিরোপা জয়েরও পেরিয়েছে এক দশক।  ২০১৪ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন জার্মানি।  আর শেষবার স্পেন বড় সাফল্য পেয়েছে ২০১২ সালে।  সেটি ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে।

এর আগে দুই দলের মুখোমুখিতে ২৬ ম্যাচের নয়টিতে জয় ছিল জার্মানদের আর আটটিতে জয় স্পেনের।  বাকি আটটি ম্যাচ অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়।

এমন পরিসংখ্যানকে সামনে রেখে দুই দলের লড়াইয়ে এদিন ম্যাচ শুরুর আগে থেকে লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গিয়েছিল।  যেখানে শুরু থেকেই জমে উঠতে থাকে দুই দলের মাঠের লড়াই।

ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজার ৫৩ সেকেন্ডেই স্পেনের সুযোগ এসেছিল এগিয়ে যাওয়ার।  কিন্তু পেদ্রির দূরপাল্লার শট ঠেকিয়ে দেন জার্মান গোলরক্ষক নয়্যার।  মুহুর্মুহু আক্রমণের পসরা সাজাতে থাকে দুই দল।  চলে আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণের লড়াই।  এরমাঝেই আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন স্প্যানিশ ফরওয়ার্ড পেদ্রি।

এদিকে বল দখলের লড়াইয়ে প্রথমার্ধে আধিপত্য দেখায় জার্মানরা।  এই সময়ে বল পাসেও এগিয়ে ছিল দলটি।  অপরদিকে বেশ কয়েকটি আক্রমণ করলেও সফল হতে পারেনি।
বলের দখল আর পাসিংয়ে জার্মানদের আধিপত্য থাকলেও গোলপোস্টে শট বেশি নিয়েছে স্পেন।  জার্মানি যেখানে স্পেনের গোলপোস্টে ৫ টি শট নিয়েছে, সেখানে স্পেন গোলপোস্টে শট নিতে পেরেছে ১২ টি।  

এভাবে দুই দলের এগিয়ে যাওয়ার আক্রমণ যেন আরও বেড়ে যায়।  কিন্ত জোরালো আক্রমণ করতে না পারায় বারবার ব্যার্থ হতে থাকে স্পেন ও জার্মানি।  শেষ পর্যন্ত গোলের মুখ খুলতে পারেনি কোনোদল।  যার ফলে প্রথমার্ধ ০-০ তে শেষ করে দুই হেভিওয়েট স্পেন ও ইতালি।

এরপর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আবারও এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ স্পেন।  এবার ডি-বক্সের ভিতরে সহজ সুযোগ মিস করেন মোরাতা।  বারের উপর দিয়ে বল চলে যাওয়ায় লিড নেয়া হয়নি স্পেনের।

এরইমধ্যে দুই দল আবারও প্রথমার্ধের মতই খেলা শুরু করে সমানতালে।  যেখানে আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বসে দুই দল।  এরপর আসে ম্যাচের কাঙ্খিত সেই মুহুর্ত।  গোলের দেখা পেয়ে যায় স্পেন।  ম্যাচের বয়স ৫১ মিনিট, ঠিক তখন সম্মিলিত আক্রমণে স্পেনকে লিড এনে দেন ফরওয়ার্ড দানি অলমো।

স্পেন এগিয়ে যাওয়ার পর আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণে ম্যাচের উত্তেজনা আরও বাড়তে থাকে।  ম্যাচের বয়স যত বাড়তে থাকে পিছিয়ে পড়া জার্মানদের আক্রমণ যেন ততই বেড়ে যায়।  

এদিকে ম্যাচের ৬৯ মিনিটে ডি বক্সের খুব কাছে থেকে সুযোগ পায় জার্মানি।  কিন্তু স্পেন গোলকিপার বাধা হয়ে দাঁড়ালে সমতায় ফেরার অপেক্ষা আরও বেড়ে যায় হুলিয়ান নাগেলসম্যান শিষ্যদের।

এরপর ম্যাচের ৭৬ মিনিটে জার্মানদের সমতা ফেরার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় গোলবার।  তবে ৮২ মিনিটে স্প্যানিশ গোলকিপারের ভুলে সহজ সুযোগ কাইল হার্ভাটেজ কাজে লাগাতে না পারায় আরও একবার সমতায় ফিরতে ব্যার্থ হয় জার্মানি।

এদিকে ম্যাচের বয়স বাড়তে থাকায় স্পেন লিড ধরে রেখে খেলতে থাকে আর জার্মানরা একের পর এক আক্রমণের ধার বাড়াতে থাকে।

কিন্তু ঠিকএরপরই আসে জার্মানদের ম্যাজিকাল মোমেন্ট।  ম্যাচের এক মিনিট বাকি থাকতে মিডফিল্ডার ফ্লোরিয়ান উইর্টজের গোলে সমতায় ফেরে জার্মানি।  এরপর নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ১-১ সমতা থাকায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধেও এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে মাঠে নামে দুই দল।  যেখানে ম্যাচের একদম অন্তিম মুহূর্তে শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগে গোলের দেখা পায় স্পেন।  মিকেল মেরিনোর গোলে ২-১ গোলে এগিয়ে যায় স্পেন।  শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলের জয় নিয়ে ইউরোর সেমিফাইনালে চলে যায় তারা।


ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ   জার্মানি   স্পেন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড গ্রাউন্ড

বাবর-রিজওয়ানকে যে আলটিমেটাম দিলেন সাবেক তারকা

প্রকাশ: ১০:০৬ পিএম, ০৫ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর যেন অস্তিত্ব সংকটে পড়ে গেছে পাকিস্তানের ক্রিকেট। সামনের দিনে কীভাবে এগোবে দেশটির ক্রিকেট, তা নিয়ে নানা মুনি নানা মত দিচ্ছেন।

বিশ্বকাপের পর পাকিস্তান দলের খোলনলচে বদলে ফেলার কথা বলেছেন দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সভাপতি মহসিন নকভি। বাবর আজমের অধিনায়ত্ব নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। নজর এড়ায়নি তার স্লো ব্যাটিংয়ের বিষয়টিও।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভালো করেননি মোহাম্মদ রিজওয়ানও। কানাডার বিপক্ষে ম্যাচে ফিফটি করলে বল নষ্ট করেছেন অনেকগুলো। এমন বাজে পারফরম্যান্সের কারণে বাবর ও রিজওয়ানকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন সাবেক পাকিস্তান অধিনায়ক রশিদ লতিফ।

দলের এই দুই তারকাকে নিজেদের খেলায় পরিবর্তন আনার পরামর্শ দিয়েছেন লতিফ। তাদেরকে বদলে ফেলতে হবে ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ। যেমনটি করেছেন ভারতের রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। আর যদি পরিবর্তন করতে না পারে, তাহলে যেন তারা দল থেকে বেরিয়ে যায়, এমন আল্টিমেটাম দিয়েছেন লতিফ।

লতিফ বলেন, ‘আমি রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলির উদাহরণ দেবো। তারা কীভাবে নিজেদের বদলেছে তা দেখানোর জন্য। রোহিত নিজেকে ১৯০ ডিগ্রি পরিবর্তন করেছে; পরিবর্তন সম্ভব। কারণ সে একজন আদর্শ ক্রিকেটার হয়ে উঠেছে। তার আইপিএল স্ট্রাইক রেট আগে ছিল ১৩০-১৪০। কিন্তু এই বছর তা ১৬০ এ গিয়ে ঠেকেছে। বিরাট কোহলিও তাই করেছে।’

‘এই দুই ব্যাটসম্যান যদি বদলাতে পারে, তাহলে যে কেউ পারবে। আমি বাবর আজম এবং মোহাম্মদ রিজওয়ানকে টি-টোয়েন্টিতে তাদের ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ পরিবর্তন করার জন্য ৫টি ম্যাচ সুযোগ দেবো। এবং যদি তারা তা না করে, তবে তাদের জন্য দলে কোনো জায়গা থাকা উচিত নয়’-যোগ করেন লতিফ।


বাবর   রিজওয়ান   আলটিমেটাম   রশিদ লতিফ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড গ্রাউন্ড

২ ম্যাচ নিষিদ্ধ হলেন তুরস্কের শেষ ষোলোর নায়ক

প্রকাশ: ০৯:৪১ পিএম, ০৫ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

চলমান ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াইয়ে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে বড় ধাক্কা খেয়েছে তুরস্ক। অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে তুরস্কের জয়ের নায়ক মেরিহ ডেমিরালকে ২ ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে উগ্র জাতীয়বাদী কায়দায় গোল উদযাপনের অভিযোগ এনে এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে উয়েফা।

ইউরোপিয়ান চাম্পিয়নশিপের শেষ ষোলোর ম্যাচে গত মঙ্গলবার (২ জুলাই) অস্ট্রিয়াকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে শেষ আটের টিকিট নিশ্চিত করে তুরস্ক। ঐ ম্যাচে একাই জোড়া গোল করে দলকে জেতান ডিফেন্ডার দেমিরাল।
 
ম্যাচটিতে দ্বিতীয় গোলটি করার সময় তার করা উদযাপনকে ভালোভাবে নেয়নি উয়েফা কর্তৃপক্ষ। উদযাপনের সময় দুই হাত দিয়ে তিনি যে প্রতীক তৈরি করেছিলেন সেটা তুরস্কের উগ্র-জাতীয়তাবাদী সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্কিত। যারা ‘গ্রে উলভস’ নামে বেশি পরিচিত।
 
‘গ্রে উলভস’ গ্রুপকে ফ্রান্সে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া অস্ট্রিয়ায় ‘গ্রে উলফ স্যালুট’ ব্যবহার নিষিদ্ধ। অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের পর দেমিরালের বিরুদ্ধে ‘অনুপযুক্ত আচরণ’ করার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত শেষে শুক্রবার (৫ জুলাই) দেমিরালের শাস্তি ঘোষণা করে উয়েফা।
 
দেমিরালের শাস্তি ঘোষণার বিবৃতিতে উয়েফা জানিয়েছে, আচরণের সাধারণ নীতিমালা মেনে চলতে ব্যর্থ হওয়া, শালীন আচরণের মৌলিক নিয়ম লঙ্ঘন করা এবং ফুটবলের দুর্নাম করার জন্য দেমিরালকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
 
দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ হওয়ায় নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে দেমিরালকে পাবে না তুরস্ক। দল সেমিফাইনালে উঠলেও খেলতে পারবেন না তিনি।


ইউরো   তুরস্ক   ডেমিরাল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড গ্রাউন্ড

নিষিদ্ধ হলেন ইংল্যান্ডের তারকা খেলোয়াড়

প্রকাশ: ০৯:০৩ পিএম, ০৫ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

শুরু থেকেই জমজমাট লড়াই উপহার দিয়ে আসছে জার্মানিতে চলমান ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ। গ্রুপপর্ব ও শেষ ষোলো পেরিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের আগে সেই রোমাঞ্চ আরও বেড়েছে। টিকে থাকা দলগুলোর এখনকার লড়াই আরও গুরুত্বপূর্ণ, হারলেই ছিটকে যেতে হবে ইউরো থেকে।

কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম দিনে দু’টি খেলা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী শনিবার হবে আরও দুটি কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ। শনিবারের (৬ জুলাই) দুটি কোয়ার্টারে ইংল্যান্ড মুখোমুখি হবে সুইজারল্যান্ডের এবং নেদারল্যান্ডস মুখোমুখি হবে তুরস্কের।

এ ম্যাচের আগে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে ইংল্যান্ড ও তুরস্ক। রিয়াল মাদ্রিদের তরুণ ইংলিশ তারকা জুড বেলিংহ্যাম এক ম্যাচ ও তুরস্কের ডিফেন্ডার মেরিহ দেমিরাল দুই ম্যাচের জন্য নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন। শুক্রবার (৫ জুলাই) ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা (উয়েফা) তাদের এ শাস্তির কথা এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করে।

শেষ ষোলোর ম্যাচে স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে গোল করার পর বুনো উদযাপনে মাতেন রিয়াল মাদ্রিদের তরুণ ইংলিশ তারকা জুড বেলিংহ্যাম। তার এই বুনো উদযাপন ভালো চোখে দেখেনি উয়েফা কর্তৃপক্ষ। তাই তদন্ত করার পর দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাকে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি ৩০ হাজার ইউরো জরিমানাও করেছে।

নিজের ওই অঙ্গভঙ্গির ব্যাখ্যাও পরে দিয়েছিলেন বেলিংহাম। ম্যাচের পর জানিয়েছিলেন, মাঠে থাকা তার বন্ধুদের উদ্দেশ্য করে তিনি এটা করেছিলেন। তবে এতে ছাড় মেলেনি। শাস্তি তবুও পেতে হয়েছে তাকে।

তবে স্বস্তির বিষয় হচ্ছে বেলিংহ্যাম নিষিদ্ধ হলেও খেলতে পারবেন কোয়ার্টার ফাইনালে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। কেননা উয়েফা তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, বেলিংহ্যামের শাস্তি এখনই কার্যকর করা হচ্ছে না। এই স্থগিত নিষেধাজ্ঞা আগামী এক বছরের যেকোনো ম্যাচে বাস্তবায়ন করা যাবে। তাই সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে খেলতে পারবেন এই তারকা।  

শুধু বেলিংহ্যামই নন, শাস্তি পেয়েছে ইংল্যান্ড ফুটবল ফেডারেশনও। স্লোভাকিয়া ম্যাচে ইংলিশ দর্শকদের আচরণ ছিল বিশৃঙ্খলাজনিত। তাদের বিশৃঙ্খলাজনিত আচরণের জন্য ১০ হাজার ইউরো এবং গ্যালারিতেই বাজির কাজে আগুন ধরানোয় এক হাজার ইউরো জরিমানা গুনতে হচ্ছে ইংলিশ ফেডারেশনকে।

এদিকে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে জয় পাওয়া ম্যাচে বুনো উদযাপন করায় দুই ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন তুরস্কের ডিফেন্ডার মেরিহ দেমিরাল। ম্যাচের ৫৯তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি করার পর উদযাপনের সময় দুই হাত দিয়ে একটি প্রতীক তৈরি করেন দেমিরাল। যা তুরস্কের উগ্র-জাতীয়তাবাদী সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্কিত। যারা ‘গ্রে উলভস’ নামে বেশি পরিচিত।

ম্যাচের সময় গোল উদযাপনে এমন আচরণ করার অভিযোগ ওঠার পর তদন্ত শুরু করে উয়েফা। তদন্ত শেষে শুক্রবার তার শাস্তির ঘোষণা করে সংস্থাটি।

বেলিংহ্যাম শাস্তি থেকে বেঁচে গেলেও তুরস্কের দেমিরালের মুক্তি মিলছে না। তাই কোয়ার্টার ফাইনালে আগামী শনিবার (৬ জুলাই) নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বার্লিনের ম্যাচটি মিস করবেন তিনি। সেই সঙ্গে তুরস্ক সেমিতে উঠলে সেটিও মিস করবেন দেমিরাল। অর্থাৎ তুরস্ক ফাইনালে গেলেই কেবল খেলতে পারবেন দেমিরাল। তবে তুরস্ক যদি কোয়ার্টার থেকে বাদ পড়ে তাহলে জাতীয় দলের পরবর্তী ম্যাচ নিষিদ্ধ থাকবেন দেমিরাল।


ফুটবল   ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ   ইউরো-২০২৪  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড গ্রাউন্ড

রোনালদোর বিপক্ষে খেলাও সম্মানের: এমবাপ্পে

প্রকাশ: ০৮:৫৮ পিএম, ০৫ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে আজ মুখোমুখি হতে যাচ্ছে দুই পরাশক্তি ফ্রান্স ও পর্তুগাল। হাইভোল্টেজ এই ম্যাচটি ইউরোর দুই সেরা দলের হলেও, অন্য এক দিক থেকে আজকের এই লড়াই যেন ভক্ত-সমর্থকদের কাছে বাড়তি উত্তেজনার খোরাক জোগাচ্ছে। আর তা হচ্ছে, ইতিহাসের সেরাদের অন্যতম ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সাথে তার শিষ্য সময়ের সেরা তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পের লড়াই। আজকের এই দুই দলের মহারণের মহাদ্বৈরথে বিদায়ের সুর বেজে ওঠবে একজনের।   বাংলাদেশ সময় রাত রাত ১টায় শুরু হবে খেলা।

ফুটবলের মাঠে অনেক সিনিয়র তারকা রোনালদোর বিপক্ষে খেলতে পারাকে নিজের জন্য সম্মানের মনে করছেন এমবাপে। এই বিষয়ে ফরাসি তারকা বলেন, ‘ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগালের মুখোমুখি হচ্ছি। মানে মুখোমুখি হতে যাচ্ছি রোনালদোরও। তার মুখোমুখি হওয়াটাও সম্মানের।’

ফ্রান্স ও পর্তুগালের মুখোমুখি হওয়াটা ২০১৬ ইউরোর ফাইনালের পুনরাবৃত্তি। সেই আসরে পর্তুগাল ফাইনালে ১-০ গোলে ফ্রান্সকে হারিয়ে তাদের প্রথম বড় আন্তর্জাতিক ট্রফি জিতেছিল।

রোনালদো ২০০৯ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত রিয়ালের জার্সিতে ৪৩৮ ম্যাচ খেলে ৪৫০ গোল করেছেন। জিতেছেন ২টি লা লিগা ও চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপাা।

অন্যদিকে ২৫ বছর বয়সী ফরাসি সুপারস্টার এমবাপে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে অভিষেকের অপেক্ষায় আছেন। রিয়ালের জার্সিতে রোনালদোর মতো মহিমা অর্জনের আশা নিশ্চয়ই করবেন এমবাপে। তার আগে ৫ বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকার সঙ্গে মাঠে দেখা হয়ে যাচ্ছ তার।

ম্যাচটা উপভোগ করবেন,এমনটি উল্লেখ করে এমবাপে বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমি তাকে (রোনালদো) জানার এবং তার সঙ্গে অনেকবার কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। আমাদের এখনও যোগাযোগ আছে। তিনি সর্বদা আমাকে পরামর্শ দেওয়ার এবং আমার সবকিছু আপ টু ডেট রাখার চেষ্টা করছেন। তাই বলছি, তার বিরুদ্ধে খেলা সম্মানের। আগে যা ঘটেছে বা পরে যা ঘটুক না কেন, তিনি সর্বদা কিংবদন্তি হয়েই থাকবেন। তবে আশা করি, তাকে হারিয়ে অবশ্যই আমরা সেমিফাইনালে উঠবো।’

এমবাপে রোনালদোর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলেছেন, ‘তাকে অনুকরণের কোনো আগ্রহ নেই। কারণ, এটা একটি অসম্ভব কাজ। মাদ্রিদে আমি নিজের গল্প লিখে সামনের বছরগুলো ব্যবহার করতে চাই। আমি যথেষ্ট ভাগ্যবান যে, মাদ্রিদে একজন খেলোয়াড় হিসেবে আমার স্বপ্নের জীবন শুরু করার সুযোগ পেয়েছি। আশা করি, সেখানে একটি দুর্দান্ত গল্প লিখবো। তবে এটা ঠিক, আমি অবশ্যই সেখানে ক্রিশ্চিয়ানোর বাকি গল্প লিখতে যাচ্ছি না। মাদ্রিদে তিনি যা করেছেন তা অনন্য। তিনি কী ছিলেন, তিনি কী- সেটা আপনাকে উপলব্ধি করতে হবে।’


Cristiano Ronaldo   kylian mbappé   Portugal VS France   এমবাপ্পে   রোনালদো   পর্তুগাল   ফ্রান্স  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন