দীর্ঘ প্রায় এক মাসের লড়াইয়ের পর অবশেষে গত ২৯ জুন পর্দা নেমেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরের। ৫৫ ম্যাচের এই মেগা ইভেন্টের শেষ হাসি হেসেছে ভারত। ২০০৭ সালের পর দ্বিতীয়বার এবং তৃতীয় দেশ হিসেবে দুইটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে রোহিত শর্মার দল।
তবে তিনদিন পূর্বে বিশ্বকাপ মিশন শেষ হলেও এখন পর্যন্ত চ্যাম্পিয়নরা নিজ দেশে ফিরতে পারেনি। এমনকি নির্ধারিত রুট ধরে দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রাটাই শুরু করা হয়নি তাদের। ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে এখনও রওনাই দিতে পারেনি ভারত ক্রিকেট দল। আটলান্টিক মহাসাগরে হারিকেন ‘বেরিল’-এর কারণে বার্বাডোজেই আটকে রয়েছে রোহিত-কোহলিরা।
তবে সর্বশেষ খবর পাওয়া অনুযায়ী অবশেষে আজ বুধবার দেশের উদ্দেশে রওনা দিতে পারছে ভারত দল। আজ বিসিসিআইয়ের তত্ত্বাবধানে জয় শাহ’র নেতৃত্বে এক বিশেষ চার্টার ফ্লাইটে কোচিং স্টাফ, খেলোয়াড় ও সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে বার্বাডোজ ছাড়ার কথা রয়েছে রোহিতদের। খবর এনডিটিভির।
উল্লেখ্য, গত শনিবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফাইনাল জেতার পর রোববার এমনিতেও বার্বাডোজ থাকার কথা ছিল ভারতের। কারণ, ওই দিন ছিল ফাইনালের আনুষ্ঠানিক রিজার্ভ ডে। তবে এরই মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘বেরিল’ ধেয়ে আসায় ভ্রমণসংক্রান্ত পরিকল্পনা বদলাতে হয় দলটির।
প্রাথমিকভাবে বাণিজ্যিক ফ্লাইটে বার্বাডোজ থেকে নিউইয়র্ক, এরপর দুবাই হয়ে ভারতে ফেরার কথা ছিল রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিদের। তবে এখন চার্টার ফ্লাইটে সরাসরি দেশে ফিরবেন তারা।
বিশ্বকাপজয়ী দল, তাদের পরিবার, কোচিং স্টাফ, বিসিসিআইয়ের কর্মকর্তাসহ প্রায় ৭০ জনের বহর আটকে পড়েছিল ‘ক্যাটাগরি ফোর’ বা চতুর্থ শ্রেণির ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ ওই ঘূর্ণিঝড়ে। বার্বাডোজের বিমানবন্দরও অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
বার্বাডোজের প্রধানমন্ত্রী মিয়া মটলি বলেন, শিগগির বিমানবন্দরটি খুলে দেওয়ার আশা প্রকাশ করছেন তারা। পিটিআইকে তিনি বলেন, ‘আগবাড়িয়ে কিছু বলতে চাই না। কিন্তু আমি বিমানবন্দর কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং তারা তাদের শেষ মুহূর্তের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। জরুরি ভিত্তিতে আমরা স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা শুরু করে দিতে চাই।’
মটলি বলেন, ‘গতকাল রাতে বা আজ বা আগামীকাল বেশ কয়েকজনের (বার্বাডোজ) ছাড়ার কথা ছিল। আমরা তাদের সেই সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টা করে দিতে চাই। ফলে অনুমান করছি, আগামী ৬ থেকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে বিমানবন্দর খুলে যাবে।’
টি-২০ বিশ্বকাপ ফাইনাল ভারত ঘুর্ণিঝড় বেরিল হারিকেন
মন্তব্য করুন
মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই চলমান কোপা আমেরিকার দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে আজ মুখোমুখি হয়েছিল কানাডা ও ভেনেজুয়েলা। যেখানে টাইব্রেকারে ভেনেজুয়েলাকে হারিয়ে সেমিতে জায়গা করে নিয়েছে কানাডা।
এদিন নির্ধারিত সময়ে ১-১ সমতায় খেলা শেষ হলে ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে ভেনেজুয়েলাকে (৪-৩) কাঁদিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে দ্য রেডসরা।
শনিবার টেক্সাসের এটি অ্যান্ড টি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় দুদল। যেখানে নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষ হয় ১-১ সমতায়। কানাডার হয়ে একটি করে গোল করেন জ্যাকব শ্যাফেলবার্গ। অন্যদিকে ভেনেজুয়েলার হয়ে সমতাসূচক গোল করেছিলেন স্যালমন রোন্দন। তবে টাইব্রেকারে গড়ানো ম্যাচটিতে ভেনেজুয়েলাকে হারিয়ে শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে জেসি মার্শের শিষ্যরা।
আগামী বুধবার (১০ জুলাই) আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মাঠে নামবে কানাডা। ম্যাচটি হবে মেটলাইফ স্টেডিয়ামে। খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায়।
ম্যাচটিতে ৫৬ শতাংশ বল দখলে রেখে ১৬টি শট নেয় ভেনেজুয়েলা। যার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল ৩টি। অন্যদিকে ৪৪ শতাংশ বল নিয়ন্ত্রণে রেখে ১৬টি শট নেয় কানাডাও। তার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল ৭টি।
কানাডা ভেনেজুয়েলা কোপা আমেরিকা
মন্তব্য করুন
বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে সফল দল কোনটি? এমন প্রশ্নের জবাবে যে কেউ অনায়াসে বলে দিবে যে কেউ বলে দিবে সজজেই ব্রাজিলের নাম। শুধু তাই নয়, বরাবরই ফুটবলার রপ্তানিতে শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে থাকে ব্রাজিল। রেকর্ড পাঁচবারের বিশ্বকাপজয়ীদের বলা হয় ফুটবলার তৈরির কারখানা।
কিন্তু ফুটবল জগতে ব্রাজিল আর্জেন্টিনার চেয়ে ট্রফি, ফুটবলার তৈরি সবখানে এগিয়ে থাকলেও আর্জেন্টিনার দাপট ও কম নয়। কারণ ব্রাজিল যদি ফুটবলার তৈরির কারখানা হয়ে থাকে তবে আর্জেন্টিনা কোচ তৈরির। যার প্রমাণ মিলে চলমান কোপা আমেরিকার দলগুলোর কোচিং প্যানেলের দিকে তাকালে। যেখানে অংশ নেওয়া ১৬টি দলের মধ্যে ৭টি দলের প্রধান কোচের ভূমিকাতেই আছে আর্জেন্টাইন কোচ। বিপরীতে ব্রাজিলের কোচের সংখ্যা মাত্র দু’জন।
শুধু যে সংখ্যায় আর্জেন্টাইনদের দাপট তা নয়। পারফরম্যান্সও কথা বলছে আর্জেন্টাইনদের পক্ষেই। গ্রুপপর্ব যেই চার দল গ্রুপসেরা হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পা রেখেছে তার প্রতিটি দলের কোচই আর্জেন্টাইন। সেই দলগুলো হলো আর্জেন্টিনা, ভেনেজুয়েলা, উরুগুয়ে ও কলম্বিয়া।
আর্জেন্টিনা দলে কাজ করছে লিওনেল স্কালোনি। যার অধীনে সবশেষ কাতার বিশ্বকাপ জিতেছে মেসিরা। কোপায় খেলতে নেমেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে। এবারও স্কালোনির দল কোপার অন্যতম দাবিদার। গ্রুপপর্বে তিন ম্যাচের তিনটিতেই জয় তুলে সে পথেই হাঁটছে দলটি। কোয়ার্টারে তাদের প্রতিপক্ষ ইকুয়েডর।
ভেনেজুয়েলায় প্রধান কোচের ভূমিকায় আছেন আর্জেন্টাইন কোচ ফার্নান্দো বাতিস্তা। তার অধীনে নতুন রূপে ধরা দিয়েছে ভেনেজুয়েলা। ফুটবলাররা খেলছেন আক্রমণাত্মক ফুটবল। গ্রুপ ‘বি’ তে টানা তিন ম্যাচে জয় তুলে কোয়ার্টার ফাইনালে পা রেখেছে দলটি। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ কানাডা।
উরুগুয়ের প্রধান কোচের ভূমিকায় আছেন আর্জেন্টাইন কোচ মার্সেলো বিয়েলসা। যাকে বলা হয় কোচদের কোচ। সেই তিনি এবার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন উরুগুয়েকে কোপা জয়ের। তার অধীনে দারুণ ফুটবলও খেলছে দলটি। প্রতিপক্ষকে ধসিয়ে দিচ্ছে দলটির ফুটবলাররা। ‘সি’ গ্রুপে তিন ম্যাচই জয় তুলে কোয়ার্টারে পা রেখেছে উরুগুয়ে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ব্রাজিল।
কলম্বিয়ার প্রধান কোচের ভূমিকায় আছেন আর্জেন্টাইন কোচ নেস্তর লরেনজো। তার অধীনে বদলে গেছে কলম্বিয়া। টানা ২৬ ম্যাচ অপরাজিত দলটি। সবশেষ ম্যাচে ব্রাজিলকে রুখে দিয়েছে ১-১ গোলে। কোয়ার্টারে পা রেখেছে গ্রুপসেরা হয়ে। এখন কোয়ার্টারে তাদের প্রতিপক্ষ পানামা।
বলা হয়ে থাকে, আর্জেন্টাইন কোচরা ট্যাকটিক্যালি ও দল ব্যবস্থাপনা—দুই দিক ভালো পারদর্শী। ফুটবলীয় সাফল্য ও দক্ষতায় আর্জেন্টিনার সঙ্গে সব সময়ই প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলে প্রতিবেশী ব্রাজিলের। পাঁচবার বিশ্বকাপ জেতা ব্রাজিল আন্তর্জাতিক ফুটবলে অনেক দুর্দান্ত খেলোয়াড় উপহার দিলেও কোচ সরবরাহের দিক থেকে বেশ পিছিয়ে। বিপরীতে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের সেরা কোচদের অনেকেই আর্জেন্টিনা থেকে উঠে আসা।
লুইস সিজার মেনোত্তির (’৭৮–এর বিশ্বকাপজয়ী কোচ) উত্তরসূরিরা উত্তরাধিকার বহন করে চলেছেন নিজেদের বৈচিত্র্যের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সক্ষমতায়ও। ২০২৪ সালেই যেমন ব্রাজিলের শীর্ষ ক্লাবগুলোতে কোচিং করাচ্ছেন আর্জেন্টিনারই গ্যাব্রিয়েল মিলিতো (অ্যাটলেটিকো মিনেইরো), র্যামন ডিয়াজ (ভাস্কো দা গামা), এদুয়ার্দো কোদেত (ইন্টারন্যাশিওনাল), নিকোলাস লারকামন (ক্রুজেইরো) ও হুয়ান পাবলো ভোবোদারা (ফোর্তালেজা)। অথচ আর্জেন্টিনার লিগে ব্রাজিলিয়ান কোচ দেখাই যায় না। যেমন বুয়েনস এইরেসের ক্লাব কোবা জুনিয়র্স ১৯০৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত ব্রাজিল থেকে কোচ নিয়েছে মাত্র দুবার।
আর্জেন্টাইন কোচদের চাহিদা বাড়ার অন্যতম কারণ স্কালোনিও। ২০১৮ সালে জাতীয় দল চালানোর অভিজ্ঞতা ছাড়াই লিওনেল মেসিদের দল দেখভালের দায়িত্ব ছিলেন তিনি। সেই অনভিজ্ঞ স্কালোনির অধীনই সর্বশেষ তিন বছরের মধ্যে বৈশ্বিক, মহাদেশীয়সহ তিনটি ট্রফি জিতেছে আর্জেন্টিনা।
যে দেশের কোচ অনভিজ্ঞ হলেও সফলতা এনে দিতে পারেন, বহন করেন সফল কোচদের উত্তরাধিকার, মানিয়ে নিতে পারেন বৈচিত্র্যের সঙ্গে—এমন নানামুখী গুণের কোচের দ্বারস্থ অন্যরা হবে না কেন!
এবার কোপায় ১৬ প্রায় অর্ধেক কোচই ছিলেন আর্জেন্টাইন, চারজনের দল গ্রুপ–সেরা হয়ে শেষ আটে। কে জানে, ভবিষ্যতে কলম্বিয়ানদের মতো আরও কোনো দেশের ঈর্ষাকাতরদের বলতে হয় কি না—‘আর্জেন্টাইন পাসপোর্ট আছে বলেই ...’!
বিশ্ব ফুটবল কোচ আঁতুড় ঘর আর্জেন্টিনা
মন্তব্য করুন
ফ্রান্স কিংবা পর্তুগাল কোনোদলই প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভাংতে পারেনি ১২০ মিনিটেও। ফলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে পর্তুগালকে ৫-৩ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় দল হিসেবে ইউরোর সেমিফাইনালে নাম লেখাল ফ্রান্স।
এর আগে ম্যাচের নির্ধারিত ৯০ মিনিট ও অতিরিক্ত সময়ের ৩০ মিনিট গোলশুন্য থাকায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে পাচটি শট থেকে পাচটিই গোল করেন ফরাসীরা। আগের ম্যাচে তিনটি পেনাল্টি বাঁচিয়ে নায়ক বনে যাওয়া পর্তুগীজ গোল কিপার দিয়োগো কস্তা এ দিন পাঁচটি শটের একটিও বাঁচাতে পারলেন না।
ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ২০১৬ সংস্করণের চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল। সেবার তারা এই ফ্রান্সকে হারিয়েই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। আজ ফ্রান্স সে প্রতিশোধ নিল।
দ্বিতীয়বার ইউরো জয়ের মিশনে আসা পর্তুগালকে বিদায় করে দিল সাথে বিদায় করে ক্রিষ্টিয়ানো রোনালদোকেও। এই রোনালদোকে হয়তো এই ইউরোর পর আর দেখা যাবে না। আর নিজের সম্ভাব্য ইউরো শেষ করলেন কোনো গোল না করেই।
আজ ফ্রান্স-পর্তুগালের লড়াইয়ে সবাই তাকিয়ে ছিল দুই দলের দুই সেরা তারকার দিকে।। যেখানে এর আগেও একে অপরের প্রতিপক্ষ হয়েছেন রোনালদো ও এমবাপ্পে। কিন্তু সবগুলোতেই ব্যর্থ ছিলেন কিলিয়ান। হোক সেটা পিএসজি কিংবা ফ্রান্সের জার্সিতে। কিন্তু আজ এমবাপ্পে আর ব্যার্থ হলেন না ব্যার্থ হতে দিলেন ফ্রান্সকে। রোনালদোর সাথে মুখোমুখি লড়াইয়ে এই প্রথম জয় পেলেন কিলিয়ান।
এর আগে পর্তুগাল-ফ্রান্স মুখোমুখি হয়েছে ২৫ বার। যেখানে দাপটের সাথে জয়ের পাল্লা ভারী ছিল ফ্রান্সের। তারা জিতেছে ১৬ ম্যাচ, পর্তুগালের জয় মাত্র ৬টি।
কিন্তু অতীতে ফরাসীদের দাপট থাকলেও আজ ম্যাচে বেশ দাপট দেখিয়েছে পর্তুগাল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
এদিন ম্যাচের শুরু আগে লড়াইয়ের আভাস থাকলেও ম্যাচ হওয়ার পর থেকেই দেখা যায় ঢিলেঢালা ভাব। দুই দলই ছন্নছাড়া ফুটবল খেলতে থাকে।
আক্রমণ পাল্টা আক্রমণের কোনো চেহারাই ভেসে ওঠেনি ম্যাচের প্রথম হাফে। এরপর ম্যাচের ২০ মিনিটে এসে প্রথম শট নেয় ফ্রান্স। বক্সের বাইরে থেকে থিও হার্নান্দেজের শট ঠেকিয়ে দেন পর্তুগিজ গোলরক্ষক।
এরপর ২৮ মিনিটে ফ্রান্সের এদোয়ার্দো কামাভিঙ্গার বক্সের বাইরে থেকে শট পোস্টের বেশ ওপর দিয়ে চলে যায়। ফলে গোল বঞ্চিত হয় দিদিয়ের দেশমের দল।
এদিকে ম্যাচের ৪২ মিনিটে বক্সের কাছে ফ্রি কিক পায় পর্তুগাল। ব্রুনো ফার্নান্দেজের ডানপায়ের শট পোস্টের নাগাল না পাওয়ায় এগিয়ে যাওয়া হয়নি রোনালদোদের।
তবে প্রথামার্ধে বল দখলের আধিপত্য দেখায় পর্তুগাল। কিন্তু গোল পোস্টে শট নিতে পেরেছে মাত্র দুটি। অপরদিকে এই সময়ে ফ্রান্স গোলপোস্ট বরাবর শট নেয় ৭টি যারমধ্যে দুটিই অন টার্গেটে।
শেষ পর্যন্ত গোলের মুখ খুলতে পারেনি কোনোদল। যার ফলে প্রথমার্ধ ০-০ তে শেষ করে দুই হেভিওয়েট ফ্রান্স ও পর্তুগাল।
এরপর দ্বিতীয়ার্ধে দুইদলই খেলা শুরু করে সমানতালে। যেখানে আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বসে দুই দল।
ফলে ম্যাচের উত্তেজনা আরও বাড়তে থাকে।
তবে ম্যচের উত্তেজনা বাড়তে থাকলেও স্কোরের দেখা যেন কোনোভাবেই মিলছিল না। স্কোর না হলে আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণে ম্যাচ জমে ওঠে।
ম্যাচের প্রথমার্ধের মত দ্বিতীয়ার্ধ ছিল না। এবার দুই দল গোলের জন্য সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েছে। এদিকে ম্যাচের বয়স যত বাড়তে থাকে দুই দলের আক্রমণ যেন ততই বেড়ে যায়। কিন্তু সফলতা মিলছিল না কোনোভাবেই।
এরপর ম্যাচের পুরো ৯০ মিনিট পর্যন্ত দুই দলই বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করলেও গোলের দেখা পায়নি কোনো দল। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের নির্ধারিত সময় গোলশুন্য থাকায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক সময়ে।
নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধও ০-০ সমতায় শেষ হয়। তবে এই সময়ে দুই দলই বেশ কয়েকটা সুযোগ তৈরি করলেও কাজে লাগাতে পারেনি।
এরপর অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধের খেলায়ও গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে দুই দল। শেষ পর্যন্ত কোনো দলই গোল না পাওয়া এইখানেও ০-০ সমতায় শেষ হয়।
এরপর ফলাফল নির্ধারণের জন্য টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ। যেখানে পর্তুগালকে ৫-৩ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় দল হিসেবে ইউরোর সেমিফাইনালে নাম লেখাল ফ্রান্স।
টাইব্রেকার রোনালদো সেমিফাইনাল ফ্রান্স
মন্তব্য করুন
দুই হেভিওয়েট দলের লড়াই। গ্রুপ পর্ব থেকেই খেলে আসছে দাপুটে ফুটবল। ২০২২ বিশ্বকাপে দুই দলের সবশেষ সাক্ষাৎটাও ১-১ সমতায় ছিল। কিন্তু এবার আর অমীমাংসিত থাকলো না। ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনের কাছে হেরে শিরোপার লড়াই থেমে গেল স্বাগতিক জার্মানির।
স্পেন ও জার্মানি তিনবার করে ইউরোর চ্যাম্পিয়নের মুকুট পরেছে। ইউরোর ইতিহাসে সবচেয়ে সফল দল দুটো চলমান আসরের কোয়ার্টার ফাইনালে নামবে আর উত্তেজনা থাকবে না সেটা কি হয়? ফাইনালের আগেই যেন দেখা গেলো আরেক ফাইনাল। যেখানে হেরে যাওয়া দলটার নাম জার্মানি।
তবে জার্মানি হেরে যাওয়ার আগে ম্যাচে অনেক নাটকীয় মুহুর্ত এসেছে। তবে যত নাটকীয় মুহুর্তই আসুক না কেন। শেষ পর্যন্ত জার্মানির বিদায় নিশ্চিত হল ইউরো থেকে। ম্যাচের একদম অন্তিম মুহুর্তে জার্মানির মিডফিল্ডার ফ্লোরিয়ান উইর্টজের গোলে সমতায় ফেরার পর জার্মানরা এরপর ম্যাচে ছিল শুধুই অতিরিক্ত সময়ের ৩০মিনিট। শেষ পর্যন্ত নাটকীয় ম্যাচটার রেজাল্ট গেছে স্পেনের পক্ষে। ২-১ গোলের জয়ে ইউরোর সেমিফাইনালে প্রথম দল হিসেবে নাম লেখালো স্পেন।
এদিন ঘরের মাঠে ম্যাচ বিধায় বাড়তি সুবিধা পায় জার্মানরা। কিন্তু সাম্প্রতিক ফর্ম এগিয়ে রাখে স্প্যানিয়ার্ডদের। আর সেই ফর্ম ম্যাচের ৫১ মিনিটে কাজেও লাগায় লুইস ফুয়েন্তের দল। স্পেনকে ১-০ গোলের লিড এনে দেন দানি অলমো।
এরপর ম্যাচের প্রায় পুরোটা সময় লিড ধরে রেখে স্পেন যখন জয়ের স্বপ্ন দেখছে তখনই ম্যাচের একদম অন্তিম মুহুর্তে সমতায় ফেরে স্বাগতিক জার্মানি। ৮৯ মিনিটে মিডফিল্ডার ফ্লোরিয়ান উইর্টজের গোলের দেখা পায় হুলিয়ান নাগেলসম্যান শিষ্যরা। ম্যাচ তখন ১-১ সমতায়।
এরপর ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও একদম শেষ বাশি বাজার আগে গোলের দেখা পায় স্পেন। মিকেল মেরিনোর গোলে ২-১ গোলে এগিয়ে যায় স্পেন।
এর আগে কোয়ার্টার ফাইনালে আসার পথে দুই দলই আধিপত্য দেখিয়েই এসেছে। এবারের আসরের একমাত্র দল হিসেবে চার ম্যাচের সবকটিতেই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রাধান্য বিস্তার করে এসেছে স্পেন। জার্মানি চার ম্যাচের তিনটি জিতেছে। অন্যটি ড্র করেছে।
শেষবার দুই দলের বড় কোনো শিরোপা জয়েরও পেরিয়েছে এক দশক। ২০১৪ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন জার্মানি। আর শেষবার স্পেন বড় সাফল্য পেয়েছে ২০১২ সালে। সেটি ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে।
এর আগে দুই দলের মুখোমুখিতে ২৬ ম্যাচের নয়টিতে জয় ছিল জার্মানদের আর আটটিতে জয় স্পেনের। বাকি আটটি ম্যাচ অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়।
এমন পরিসংখ্যানকে সামনে রেখে দুই দলের লড়াইয়ে এদিন ম্যাচ শুরুর আগে থেকে লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গিয়েছিল। যেখানে শুরু থেকেই জমে উঠতে থাকে দুই দলের মাঠের লড়াই।
ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজার ৫৩ সেকেন্ডেই স্পেনের সুযোগ এসেছিল এগিয়ে যাওয়ার। কিন্তু পেদ্রির দূরপাল্লার শট ঠেকিয়ে দেন জার্মান গোলরক্ষক নয়্যার। মুহুর্মুহু আক্রমণের পসরা সাজাতে থাকে দুই দল। চলে আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণের লড়াই। এরমাঝেই আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন স্প্যানিশ ফরওয়ার্ড পেদ্রি।
এদিকে বল দখলের লড়াইয়ে প্রথমার্ধে আধিপত্য দেখায় জার্মানরা। এই সময়ে বল পাসেও এগিয়ে ছিল দলটি। অপরদিকে বেশ কয়েকটি আক্রমণ করলেও সফল হতে পারেনি।
বলের দখল আর পাসিংয়ে জার্মানদের আধিপত্য থাকলেও গোলপোস্টে শট বেশি নিয়েছে স্পেন। জার্মানি যেখানে স্পেনের গোলপোস্টে ৫ টি শট নিয়েছে, সেখানে স্পেন গোলপোস্টে শট নিতে পেরেছে ১২ টি।
এভাবে দুই দলের এগিয়ে যাওয়ার আক্রমণ যেন আরও বেড়ে যায়। কিন্ত জোরালো আক্রমণ করতে না পারায় বারবার ব্যার্থ হতে থাকে স্পেন ও জার্মানি। শেষ পর্যন্ত গোলের মুখ খুলতে পারেনি কোনোদল। যার ফলে প্রথমার্ধ ০-০ তে শেষ করে দুই হেভিওয়েট স্পেন ও ইতালি।
এরপর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আবারও এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ স্পেন। এবার ডি-বক্সের ভিতরে সহজ সুযোগ মিস করেন মোরাতা। বারের উপর দিয়ে বল চলে যাওয়ায় লিড নেয়া হয়নি স্পেনের।
এরইমধ্যে দুই দল আবারও প্রথমার্ধের মতই খেলা শুরু করে সমানতালে। যেখানে আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বসে দুই দল। এরপর আসে ম্যাচের কাঙ্খিত সেই মুহুর্ত। গোলের দেখা পেয়ে যায় স্পেন। ম্যাচের বয়স ৫১ মিনিট, ঠিক তখন সম্মিলিত আক্রমণে স্পেনকে লিড এনে দেন ফরওয়ার্ড দানি অলমো।
স্পেন এগিয়ে যাওয়ার পর আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণে ম্যাচের উত্তেজনা আরও বাড়তে থাকে। ম্যাচের বয়স যত বাড়তে থাকে পিছিয়ে পড়া জার্মানদের আক্রমণ যেন ততই বেড়ে যায়।
এদিকে ম্যাচের ৬৯ মিনিটে ডি বক্সের খুব কাছে থেকে সুযোগ পায় জার্মানি। কিন্তু স্পেন গোলকিপার বাধা হয়ে দাঁড়ালে সমতায় ফেরার অপেক্ষা আরও বেড়ে যায় হুলিয়ান নাগেলসম্যান শিষ্যদের।
এরপর ম্যাচের ৭৬ মিনিটে জার্মানদের সমতা ফেরার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় গোলবার। তবে ৮২ মিনিটে স্প্যানিশ গোলকিপারের ভুলে সহজ সুযোগ কাইল হার্ভাটেজ কাজে লাগাতে না পারায় আরও একবার সমতায় ফিরতে ব্যার্থ হয় জার্মানি।
এদিকে ম্যাচের বয়স বাড়তে থাকায় স্পেন লিড ধরে রেখে খেলতে থাকে আর জার্মানরা একের পর এক আক্রমণের ধার বাড়াতে থাকে।
কিন্তু ঠিকএরপরই আসে জার্মানদের ম্যাজিকাল মোমেন্ট। ম্যাচের এক মিনিট বাকি থাকতে মিডফিল্ডার ফ্লোরিয়ান উইর্টজের গোলে সমতায় ফেরে জার্মানি। এরপর নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ১-১ সমতা থাকায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধেও এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে মাঠে নামে দুই দল। যেখানে ম্যাচের একদম অন্তিম মুহূর্তে শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগে গোলের দেখা পায় স্পেন। মিকেল মেরিনোর গোলে ২-১ গোলে এগিয়ে যায় স্পেন। শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলের জয় নিয়ে ইউরোর সেমিফাইনালে চলে যায় তারা।
ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ জার্মানি স্পেন
মন্তব্য করুন
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর যেন অস্তিত্ব সংকটে পড়ে গেছে পাকিস্তানের
ক্রিকেট। সামনের দিনে কীভাবে এগোবে দেশটির ক্রিকেট, তা নিয়ে নানা মুনি নানা মত দিচ্ছেন।
বিশ্বকাপের
পর পাকিস্তান দলের খোলনলচে বদলে ফেলার কথা বলেছেন দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সভাপতি মহসিন নকভি। বাবর আজমের অধিনায়ত্ব নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। নজর এড়ায়নি তার স্লো ব্যাটিংয়ের বিষয়টিও।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে
ভালো করেননি মোহাম্মদ রিজওয়ানও। কানাডার বিপক্ষে ম্যাচে ফিফটি করলে বল নষ্ট করেছেন অনেকগুলো।
এমন বাজে পারফরম্যান্সের কারণে বাবর ও রিজওয়ানকে আল্টিমেটাম
দিয়েছেন সাবেক পাকিস্তান
অধিনায়ক রশিদ লতিফ।
দলের এই দুই তারকাকে নিজেদের খেলায় পরিবর্তন আনার পরামর্শ দিয়েছেন লতিফ। তাদেরকে বদলে ফেলতে হবে ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ।
যেমনটি করেছেন ভারতের রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। আর যদি পরিবর্তন করতে না পারে, তাহলে যেন তারা দল থেকে বেরিয়ে যায়, এমন আল্টিমেটাম
দিয়েছেন লতিফ।
লতিফ বলেন, ‘আমি রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলির উদাহরণ দেবো। তারা কীভাবে নিজেদের বদলেছে তা দেখানোর জন্য। রোহিত নিজেকে ১৯০ ডিগ্রি পরিবর্তন করেছে; পরিবর্তন সম্ভব। কারণ সে একজন আদর্শ ক্রিকেটার হয়ে উঠেছে। তার আইপিএল স্ট্রাইক রেট আগে ছিল ১৩০-১৪০। কিন্তু এই বছর তা ১৬০ এ গিয়ে ঠেকেছে। বিরাট কোহলিও তাই করেছে।’
‘এই দুই ব্যাটসম্যান যদি বদলাতে পারে, তাহলে যে কেউ পারবে। আমি বাবর আজম এবং মোহাম্মদ রিজওয়ানকে
টি-টোয়েন্টিতে তাদের ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ
পরিবর্তন করার জন্য ৫টি ম্যাচ সুযোগ দেবো। এবং যদি তারা তা না করে, তবে তাদের জন্য দলে কোনো জায়গা থাকা উচিত নয়’-যোগ করেন লতিফ।
বাবর রিজওয়ান আলটিমেটাম রশিদ লতিফ
মন্তব্য করুন
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর যেন অস্তিত্ব সংকটে পড়ে গেছে পাকিস্তানের ক্রিকেট। সামনের দিনে কীভাবে এগোবে দেশটির ক্রিকেট, তা নিয়ে নানা মুনি নানা মত দিচ্ছেন। বিশ্বকাপের পর পাকিস্তান দলের খোলনলচে বদলে ফেলার কথা বলেছেন দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সভাপতি মহসিন নকভি। বাবর আজমের অধিনায়ত্ব নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। নজর এড়ায়নি তার স্লো ব্যাটিংয়ের বিষয়টিও।