ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

চাকরির নামে ভারতে পাচার, পরে কিডনি বিক্রি

প্রকাশ: ০৮:০৩ পিএম, ১২ মে, ২০২৪


Thumbnail

দরিদ্র মানুষকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ভারতে নিয়ে যেত একটি চক্র। সেখানে নেওয়ার পর চাকরিতো দুরের কথা উল্টো জিম্মি করে কৌশলে কিডনি নেওয়া হতো পাচার হওয়া ব্যক্তিদের। চক্রটি এ পর্যন্ত ১০ জনের কিডনি নিয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

সম্প্রতি রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় এ চক্রের বিরুদ্ধে মামলা করেন রবিন নামের এক ভুক্তভোগী। এর পরিপ্রেক্ষিতে শনি (১১ মে) ও রোববার (১২ মে) ধানমন্ডি এবং বাগেরহাটে অভিযান চালিয়ে চক্রটির তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- মো. রাজু হাওলাদার (৩২), শাহেদ উদ্দীন (২২) ও মো. আতাহার হোসেন বাপ্পী (২৮)। পলাতক রয়েছেন মো. মাছুম (২৭), শাহীন (৩৫), সাগর ওরফে মোস্তফাসহ (৩৭) ১০–১২ জন।

ধানমন্ডি থানা পুলিশ সূত্রে জানায়, ভারতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে প্রথমে দিল্লির ফরিদাবাদ এলাকায় নেওয়া হয় রবিনকে। পরে নানা কৌশলে কিডনি বিক্রির জন্য তাকে রাজি করায় চক্রটি। এ জন্য তার সঙ্গে চক্রটি ৬ লাখ টাকা দেওয়ার একটি চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী ভুক্তভোগীকে ৬ লাখ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও কিডনি নেওয়ার পর দেয় ৩ লাখ টাকা।

রোববার (১২ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মহিদ উদ্দিন বলেন, ২০২৩ সালের এপ্রিলে রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরে শাহ আলী মার্কেটের পেছনে একটি চায়ের দোকানে বন্ধুর সঙ্গে চা পান করছিলেন রবিন। বন্ধুর সঙ্গে আলাপ করছিলেন সংসারের অভাব–অনটন নিয়ে। এ সময় পাশেই চা পান করছিলেন মাছুম। মাছুম রবিনকে বলেন, ভারতে তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখানে তাকে চাকরি দিতে পারবেন। মোবাইল ফোন নম্বর আদান-প্রদান করেন তারা। এরপর মাছুমের সঙ্গে নিয়মিত কথা হতো রবিনের। পরে ভারতে চাকরি করার বিষয়ে রাজি হন।

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, ভারতে যেতে কিছু ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে বলে রবিনকে জানান মাছুম। গত সেপ্টেম্বরে তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে যায় মাছুম। সেখানে রাজু হাওলাদারের (গ্রেপ্তার করা আসামি) সঙ্গে রবিনের পরিচয় করিয়ে দেয় সে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে ভিসার জন্য রবিনের পাসপোর্ট নিয়ে নেয় চক্রটি। ভিসা নিশ্চিত করার পর তাকে চক্রের আরও দুই সদস্য শাহেদ ও আতাহারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। অবশেষে রবিনকে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লিতে। নয়াদিল্লির একটি হাসপাতালে কিডনিসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পরীক্ষা করানো হয়। কিছুদিন পর ভুক্তভোগীকে গুজরাটের মুক্তিনগর এলাকার একটি বাসায় নেয় চক্রটি। এরপর আসামিরা ভয়ভীতি দেখিয়ে এ বছরের ৪ মার্চ গুজরাটের এক হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ভুক্তভোগীর একটি কিডনি নিয়ে নেয়।

হাসপাতাল থেকে চার দিন পর রবিন ছাড়া পান জানিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মহিদ উদ্দিন বলেন, পরে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ১০–১১ দিন তাকে আটক রাখে অভিযুক্ত আসামিরা। হাসপাতালে থাকা অবস্থায় রবিন জানতে পারেন, তার কিডনি আসামিরা দালাল চক্রের কাছে বড় অঙ্কের অর্থে বিক্রি করে দিয়েছে। পরে বাংলাদেশে অবস্থান করা চক্রের কয়েকজন সদস্য রবিনের স্ত্রীকে তিন লাখ টাকা দেন। এরপর দেশে ফেরেন রবিন।

পাচার   কিডনি বিক্রি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

দেশেই আছেন মতি?

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ২৮ জুন, ২০২৪


Thumbnail

এনবিআরের সদ্য সাবেক সদস্য মতিউর রহমান কোথায়- এ নিয়ে এখন ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। তবে একাধিক গোয়ান্দা সূত্র নিশ্চিত করেছেন যে, মতিউর রহমান দেশেই আছেন। তিনি দেশ থেকে পালিয়ে যাননি। গতকাল মতিউর রহমানের স্ত্রী ১৪ দিন পর প্রকাশ্যে এসেছেন এবং উপজেলা পরিষদের দুটি সভায় তিনি অংশগ্রহণ করেন। তবে সে সমস্ত অনুষ্ঠানগুলোতে অংশগ্রহণ করার আগে বা পরে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে কোন কথা বলেননি। তিনি শুধু বলেছেন, আমার আরেকটি মিটিং আছে। আমি সেখানে যাচ্ছি।  

মতিউর রহমানের স্ত্রীর উপস্থিতির কারণে আবার নতুন করে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন যে, লায়লা কানিজ যদি দেশে থাকেন তাহলে নিশ্চিয়ই  মতিউর রহমানও দেশে আছেন। এদিকে মতিউর রহমানকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে সংযুক্ত করার পর তিনি যোগ না দিলেও ই-মেইলের মাধ্যমে যোগদান পত্র দিয়েছেন বলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছ। সংযুক্তির পর তিনি ই-মেইলের মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে যোগদান করেন।


বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, মতি এখন দেশেই অবস্থান করছেন। তবে তার অবস্থানের কথা গণমাধ্যম না জানলেও গোয়েন্দারা ঠিকই জানে। একাধিক সূত্র বলছে, যখনই মতির বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে বিভিন্ন রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে এবং গত রোববার যখন মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আনুষ্ঠানিক তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তখন থেকেই মতিউর রহমান গোয়েন্দা জালে রয়েছেন। তার বিদেশ  যাওয়া সম্ভবপর হয়নি। উল্লেখ্য যেগোয়েন্দা জালে মতি-এ সংক্রান্ত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বাংলা ইনসাডার গত ২১ জুন প্রথম প্রকাশ করেছিল।

সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে মতির আগরতলা দিয়ে মাথা ন্যাড়া করে  পালিয়েছেন বলে মর্মে যে খবর পাওয়া গেছে তার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।  


একজন উর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার পক্ষে এভাবে পালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলেও মনে করছেন বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন উর্ধ্বতন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তা বলেছেন, বেনজীর আহমেদ একজন বেসরকারি ব্যক্তি ছিলেন এবং তার সাধারণ পাসপোর্ট ছিল, এ কারণে তিনি সহজেই চলে যেতে পেরেছেন। সেই সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও অসতর্কতা ছিল। কিন্তু মতিউর রহমানে ক্ষেত্রে বিষয়টি তেমন নয়। মতিউর রহমান সরকারি চাকরিতে আছেন এবং ছাগলকাণ্ডের পর তাকে নিয়ে আলাপ আলোচনা ছিল এবং  গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আগে থেকেই তার ব্যাপারে প্রস্ততি নিয়ে রেখে ছিল। আর একারণেই তার পক্ষে বিদেশ যাওয়া সম্ভব নয় বলে অনেকে ধারণা করছেন। 


তবে মতিউর রহমান যেখানেই থাকুন না কেন দুর্নীতি দমন কমিশন তাকে তলব করলে সেখানে তিনি হাজির হবেন বলেও বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।  

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, মতিউর রহমানের পক্ষেও সরকারের ভেতর বেশ কিছু লোক আছে। তারাই মতিউর রহমানকে চুপচাপ থাকার পরামর্শ দিয়েছে। 

এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, আগামী রোববার মতিউর রহমানকে তলবের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে। আগামী সপ্তাহেই যে কোন সময় মতিউর রহমান, তার দুই স্ত্রী এবং পরিবারের সদস্যদেরকে ধাপে ধাপে দুর্নীতি দমন কমিশনে ডাকা হবে বলেও জানা গেছে। এ তলবের পরেই বুঝা যাবে মতিউর রহমান আসলে দেশে আছেন নাকি পালিয়ে গেছেন।

মতিউর রহমান   ছাগলকাণ্ড   এনবিআর   গোয়েন্দা   দুদক   দুর্নীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

তিন দেশের পাসপোর্টের মালিক বেনজীর

প্রকাশ: ০৬:০২ পিএম, ২৭ জুন, ২০২৪


Thumbnail

বেনজীর আহমেদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছিল সাতটি। মজার ব্যাপার হল, এই সাতটি পাসপোর্টের কোনটিই সরকারি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে করা হয়নি। সবগুলোতেই তিনি বেসরকারি চাকরিজীবী হিসেবে পাসপোর্ট নিয়ে ছিলেন। সর্বশেষ তার যে পাসপোর্ট করা হয়েছিল সেখানে তিনি বেসরকারি চাকরিজীবী হিসেবে পাসপোর্ট নবায়ন করেছিলেন, যেটি তাকে পাসপোর্ট অধিদপ্তর দিয়েছিল, যখন তিনি পুলিশ প্রধানের দায়িত্ব পালন করছিলেন সেই সময়। সেই বেনজীর আহমেদের শুধু দেশেই একাধিক পাসপোর্ট নয়, বিদেশেও অন্তত তিনটি দেশের পাসপোর্ট রয়েছে বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। 

জানা গেছে, বেনজীর আহমেদ তুরস্ক, পর্তুগাল এবং পাপুয়া নিউগিনির পাসপোর্ট গ্রহণ করেছেন এবং তিনটি পাসপোর্ট তার সঙ্গে রয়েছে। শুধু বেনজীর নয়, তার পরিবারের সদস্যদেরও এই তিনটি দেশের পাসপোর্ট রয়েছে বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। 


উল্লেখ্য যে, সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হয়ে এখন পলাতক জীবনযাপন করছেন। তিনি কোথায় অবস্থান করছেন এই সম্পর্কে নানারকম গুঞ্জন থাকলেও এখন মোটামুটি নিশ্চিত হওয়া গেছে তিনি তুরস্কে অবস্থান করছেন। 

গত এপ্রিলে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন। প্রথমে তিনি সিঙ্গাপুর যান। সেখানে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তার স্ত্রীর চিকিত্সা করেন। সেখান থেকে বেনজীর আহমেদ লন্ডনে গিয়েছিলেন। লন্ডনে তিনি কয়েকদিন অবস্থানের পর এখন তুরস্কে অবস্থান করছেন। 


বেনজীর আহমেদ ২০২১ সালে তুরস্কের পাসপোর্ট গ্রহণ করেন। তুরস্কের বিজনেস ক্যাটাগরিতে তিনি মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে বাংলাদেশি মুদ্রায় ২১০ কোটি টাকা দিয়ে তুরস্কের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন এবং ওই দেশের পাসপোর্ট নিয়েছেন। এছাড়াও তিনি বিজনেস ক্যাটাগরিতে পর্তুগালের পাসপোর্টও নিয়েছেন। পর্তুগালেও বিপদ অঙ্কের টাকা দিয়ে সেদেশের পাসপোর্ট গ্রহণ করা যায়। আর ট্যাক্স হেভেন হিসেবে পরিচিত পাপুয়া নিউগিনির পাসপোর্ট গ্রহণ করেছিলেন। তিনি অনেক আগেই। 

জানা গেছে, যখন বেনজীর আহমেদ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ছিলেন, সেই সময়ে তিনি পাপুয়া নিউগিনির  পাসপোর্ট গ্রহণ করেন। বেনজীর আহমেদের এই তিনটি দেশের পাসপোর্ট থাকা নিয়েও এক ধরনের প্রতারণা এবং জালিয়াতি হয়েছে বলে বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে জানা গেছে। বিশেষ করে তিনি তুরস্কের যে পাসপোর্ট গ্রহণ করেছেন সেখানে তিনি নিজেকে ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। তার ব্যবসায়িক আর্থিক যে হিসাবগুলো তিনি দিয়েছেন সেই সব হিসাবগুলো বানোয়াট এবং ভুল ছিল। তবে তিনি তুরস্কে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২১০ কোটি টাকা জমা দিয়েছিলেন এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। 


পর্তুগালের পাসপোর্ট তিনি কিভাবে পেয়েছেন সে সম্পর্কে কোন ধারণা পাওয়া যায়নি। তবে একাধিক সূত্র বলছে, র‌্যাবের মহাপরিচালক থাকা অবস্থাতেই তিনি পাপুয়া নিউগিনির পাসপোর্ট গ্রহণ করেন। এ সময় তিনি দুবার পর্তুগাল সফর করেছিলেন। বেনজীর আহমেদের বিদেশ হিসাব বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, তিনি সরকারি প্রজ্ঞাপনের বাইরে একাধিকবার বিদেশ গেছেন। ডিএমপির কমিশনার, র‌্যাবের মহাপরিচালক এবং পুলিশপ্রধান- এই তিনটি পদে থাকাকালীন তিনি সরকারি পরিচয় গোপন করে এবং সরকারের অনুমোদন না নিয়ে বিদেশে গেছেন। এখন তার তিন দেশের পাসপোর্টের মধ্যে তিনি কোন দেশের পরিচয় ব্যবহার করবেন সেটি দেখার বিষয়। 

বেনজীর আহমেদ   দুদক   পাসপোর্ট   তুরস্ক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

মতিউরকে সোনালী ব্যাংকের পরিচালক বানালো কে?

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৩ জুন, ২০২৪


Thumbnail

দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সোনালী ব্যাংকের আজ বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ব্যাংকটির পরিচালনা পরিষদের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় সকাল ১১ টায়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের পরিচালনা বোর্ডে চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী। আজকের বৈঠকে ব্যাংকের অন্যতম পরিচালক ড. মতিউর রহমান যোগ দেননি। ছাগল কাণ্ডে আলোচিত বিতর্কিত সমালোচিত এই এনবিআর কর্মকর্তা যেন বৈঠকে উপস্থিত না থাকেন সেজন্য তাকে টেলিফোনে জানিয়ে দেওয়া হয়। পরিচালক পরিষদের অধিকাংশ সদস্যই ড. মতিউর রহমানের সঙ্গে পরিচালনা পরিষদে বসতে অস্বীকৃতি জানান। এর পরপরই আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে মতিউর রহমান জানিয়ে দেওয়া হয় যে, সে যেন বৈঠকে উপস্থিত না থাকে। 


উল্লেখ্য, মতিউর রহমান ২০২২ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারি তিন বছরের জন্য সোনালী ব্যাংকের পরিচালক নিযুক্ত হন। তাকে পরিচালক নিযুক্ত করার জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সুপারিশ করে। তখন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ছিলেন শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ। শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ বিএনপি ঘরানার একজন আমলা ছিলেন। ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তিনি জামালপুরের মেলান্দহ মাদারগঞ্জ এলাকার ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করেন। ওইসময় পরিকল্পিত নীল নকশা নির্বাচনে মির্জা আজম যেন নির্বাচন করতে না পারে সেজন্য বিএনপি-জামায়াত জোটের নির্দেশে মির্জা আজমের বিরুদ্ধে।মিথ্যা এবং হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলার জন্য তাকে হাজিরার দিন দেওয়া হয়েছিল মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনের আগের দিন। সেদিন মির্জা আজম যথারীতি হাজির হলে এই শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ তাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত। 


কিন্তু শেষপর্যন্ত জনগণের তীব্র আন্দোলনের মুখে রাত মির্জা আজমকে জামিন দিতে বাধ্য হন অন্য একটি আদালত। কিন্তু শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ বিএনপি-জামায়াত জোটের আশীর্বাদ পুষ্ট হয়ে হয়ে থাকলেও আওয়ামী লীগ সরকার আসলে আবার ভোল পাল্টে যান। নানা কৌশলে তিনি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং তিনি আর্থিক খাত বিভাগের সচিব থাকা অবস্থায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম এবং বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। তার একটি প্রমাণ হল মতিউর রহমানের মতো একজন দুর্বৃত্তকে সোনালী ব্যাংকের পরিচালক করা।

সূত্র জানিয়েছে যে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে মতিউর রহমানকে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে অর্থসচিবের পরামর্শ গ্রহণ করেছিলেন, সেই সময় অর্থসচিব ছিলেন বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। আবদুর রউফের আগ্রহের কারণেই মতিউর রহমানকে সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য করা হয়েছিল বলে অনেকে দাবি করেন।


তবে বাংলা ইনসাইডারের নিরপক্ষে অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, আব্দুর রউফ তালুকদার এ বিষয়ে মোটেও মাথা ঘামাননি। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এবং অর্থ বিভাগ সম্পূর্ণ আলাদা। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে কারা থাকবেন বা থাকবেন না সেটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ নির্ধারণ করেন। কোন অবস্থাতেই সেটা অর্থ বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করে না। আর মতিউর রহমানের ব্যাপারে আব্দুর রউফ তালুকদার কিছু জানতেন না বলেও তার ঘনিষ্ঠরা নিশ্চিত করেছেন। মূলত শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহর সঙ্গে সংখ্যতার কারণেই মতিউর রহমানকে সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে নেওয়া হয়েছিল বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

মতিউর রহমান   এনবিআর   সোনালী ব্যাংক   শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ   আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

গোয়েন্দা জালে মতি

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ২১ জুন, ২০২৪


Thumbnail

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য . মতিউর রহমান এখন গোয়েন্দা জালে। তার বিপুল সম্পদের ফিরিস্তি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তার চেয়েও বড় কথা নিজের সন্তানকে তিনি অর্থের জন্য অস্বীকার করেছেন।

দুর্নীতি দমন কমিশন আগামী রোববার তার বিরুদ্ধে তদন্তের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে বলে দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা প্রাথমকিভাবে গণমাধ্যমে যেসব সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তার সত্যতা পেয়েছে। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, মতি দেশেই আছেন, তিনি যেন বিদেশে যেতে না পারেন সেজন্য সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন তারা। যদিও এখন পর্যন্ত তার বিদেশ ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। কিন্তু একাধিক সূত্র বলছে, মতিউর রহমান যাকে তার সন্তান হিসেবে অস্বীকার করেছেন সেই ইফাত এখন দেশে নেই। তিনি দুইদিন আগেই বিদেশে চলে গেছেন বলে দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।

তবে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলছে, ইফাত তাদের কাছে কোন বড় বিষয় নয়, বিষয় হলো মতিউর রহমান। এনবিআরের এই কর্মকর্তা কীভাবে বিপুল সম্পদের মালিক হলেন সেটি তদন্তের দায়িত্ব দুর্নীতি দমন কমিশনের। কিন্তু মতিউর রহমান যেন বেনজীরের মতো সটকে পড়তে না পারেন বা তিনি যেন তার নামে-বেনামে রাখা সম্পদগুলো বিক্রিবাত্তা করতে না পারেন সেজন্য গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে মতিউর রহমানকে শুধু দেশে নয়, বিদেশেও মতিউর রহমানের বিপুল সম্পদ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সাধারণত ধরনের ঘটনার পরপরই দুর্নীতিবাজরা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে থাকেন। আর কারণেই দুর্নীতি দমন কমিশনের আনুষ্ঠানিক তদন্তের আগে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে মতিউরকে। মতিউরের অবস্থান, তার দুই স্ত্রীর অবস্থান এবং তার সন্তানদের অবস্থান সম্পর্কে সার্বক্ষণিক তথ্য গ্রহণ করা হচ্ছে এবং সেই তথ্যের ভিত্তিতে যখনই দুর্নীতি দমন কমিশন ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করবে, সাথে সাথে যেন তাকে আইনের আওতায় আনা যায় সেলক্ষ্যে এরইমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি সূত্র বলছে যেআগামী রোববার এনবিআরের সদস্য এবং কাস্টমস ভ্যাট আপিল ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মতিউরের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করতে পারে দুদক এবং এক্ষেত্রে  বেনজীরের মতো মতিউর রহমানের সম্পত্তির অনুসন্ধান করে সেই সম্পত্তিগুলো ক্রোক করার জন্য আদালতের শরণাপন্ন হতে পারে কমিশন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন আইনজীবী বলেছেন যে, এখন পর্যন্ত গণমাধ্যমে তার সম্পর্কে যেসব তথ্য প্রকাশিত হয়েছে তার আলোকে তারা তদন্ত শুরু করতে চান এবং একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে আসলেই মতিউর রহমানের অবৈধ সম্পদ রয়েছে কিনা তা উদ্ধার করতে চান।

এর আগেও মতিউর রহমানে বিরুদ্ধে  দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করেছিল, কিন্তু সেসময় তাকে ক্লিনশিট দেওয়া হয়েছিল কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে এই আইনজীবী বলেন, "অতীতে কি হয়েছিল সেটি এখন মুখ্য ব্যাপার নয় , আমরা সামনের দিকে তাকাতে চাই। দুর্নীতি দমন কমিশন দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি নিয়ে এগোচ্ছে। মতিউর রহমানের ব্যাপারেও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে।"

তবে, গোয়েন্দা সূত্রগুলো যাই বলুক না কেন, বিপুল বিত্তের অধিকারী এই প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তা আইনের ফাঁক গলে আবারও বেরিয়ে যেতে পারেন কিনা সেটিই এখন দেখার বিষয়।


দুর্নীতি   গোয়েন্দা   দুদক   জাতীয় রাজস্ব বোর্ড   ড. মতিউর রহমান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

দেশ ছেড়েছেন সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া

প্রকাশ: ০৮:৩৭ পিএম, ১৮ জুন, ২০২৪


Thumbnail

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সস্ত্রীক দেশ ছেড়েছেন। গত সপ্তাহে তারা আমেরিকায় গেছেন। সেখানে তাদের ছোট ছেলে আসিফ মাহাদীন পড়াশোনা করেন। আগামী ২১ জুন তিনি দেশে ফিরবেন বলে জানা গেছে। 

এর আগে গত সপ্তাহে স্ত্রী ও সন্তানের চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে যান আছাদুজ্জামান মিয়া।

সম্প্রতি আছাদুজ্জামান ও তার পরিবারের বিপুল সম্পদের খবর প্রকাশ পায়। এরপরই দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঈদুল আজহার ছুটি শেষে তার সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করতে পারে। এরই মধ্যে তিনি দেশ ছাড়লেন।

এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার জহুরুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, আছাদুজ্জামান মিয়ার সম্পদের তথ্য প্রকাশের খবর তার নজরে আসেনি। যদি সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের খোঁজ পাওয়া যায়, তাহলে দুদক ব্যবস্থা নেবে।

সংস্থাটির আরেক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ছুটির পর তারা অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেবেন। আস্থা নিয়ে পুলিশের উচ্চ পদে আসীনদের এমন কর্মকাণ্ডে, বাহিনীটিতে শুদ্ধি অভিযান জরুরি হয়ে পড়েছে বলেও মন্তব্য করেন এ জ্যেষ্ঠ আইনজীবী।

সাবেক ডিএমপি কমিশনার   আছাদুজ্জামান মিয়া  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন