ইনসাইড পলিটিক্স

৭৫ এর পরে কেমন ছিলো আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ১১:৫৯ এএম, ১৫ অগাস্ট, ২০২২


Thumbnail ৭৫ এর পরে কেমন ছিলো আওয়ামী লীগ

৭৫ এর ১৫ আগস্টে জাতির পিতাকে হত্যা করার পর আওয়ামী লীগ বিভ্রান্ত হয়ে যায়, বিভক্ত হয়, নেতৃত্বশূন্য হয়। অনেকে মনে করেছিলো আওয়ামী লীগ নামের দলটির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। হয়তো হতো যদি না ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের হাল ধরতেন এবং স্বদেশ প্রত্যাবর্তন না করতেন। ৭৫ থেকে ৮১ পর্যন্ত সময়কে মনে করা হয় আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় দুঃসময়, কঠিনতম সময়। এ সময় আওয়ামী লীগ এক কাণ্ডারীবিহীন নৌকার মত এদিক সেদিক দিগভ্রান্তের মত ছোটাছুটি করছে। পঁচাত্তরের আগস্টে রাজনৈতিক নেতাদের অনেকের প্রকৃত চেহারা উন্মোচিত হয়। সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও এইচ এম কামরুজ্জামান যেমন মাথা নত করেননি তিনি তাজউদ্দীন আহমেদ, এম মনসুরের মতো নেতারা খুনি মোশতাকের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। পক্ষান্তরে, ভীরু কিছু নেতা খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়ে চরম বিশ্বাসঘাতকতা এবং কাপুরুষতার পরিচয় দেন। এমনকি সে সময় স্পিকার এবং পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের সভাপতি মালেক উকিল লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নিন্দা বা প্রতিবাদ জানাননি। বরং নেতিবাচক মন্তব্য করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং ১৯৭৬ সালে যিনি ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন সেই মহিউদ্দিন আহমেদ খন্দকার মোশতাকের বিশেষ দূত হিসেবে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন সফর করেছিলেন। একদা ছাত্রলীগের ডাকসাইটে নেতা এবং আওয়ামী লীগের নেতা কেএম ওবায়দুর রহমান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আব্দুর রউফ, রাখি আক্তার ডলি প্রমুখ মোশতাকের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। মালেক উকিল, মহিউদ্দিন আহমেদ পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ফিরে এলেও শেষোক্তগণ আব্দুর রউফ ছাড়া চিরদিনের জন্য আওয়ামী লীগ ছেড়ে চলে যান।

জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে সংবিধান পরিবর্তন এবং পাকিস্তান পুনঃপ্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদকে উপড়ে দিয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা ইত্যাদি সংবিধান থেকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশকে একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রদায়ের রাষ্ট্র বানানোর চেষ্টা করেন। এরকম একটি পরিস্থিতির মধ্যেই ১৯৭৬ সালের ২৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সীমিত রাজনৈতিক চর্চার সুযোগ গ্রহণ করে দল পুনরুজ্জীবনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং রাজনৈতিক দল পুনরুজ্জীবনের লক্ষে ২৫ আগস্ট ঢাকায় দলের সাবেক কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্যদের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। বর্ধিত সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, ৩১ আগস্টের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নামে দল পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলের বিধি অনুসারে দলের ম্যানিফেস্টো অনুসারে গঠনতন্ত্র অনুমোদনের জন্য জমা দেয়া হবে হাজার। ১৯৭৬ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধন লাভ করে। ৩১ আগস্টের বর্ধিত সভায় আরও কিছু সিদ্ধান্ত হয় দলের পূর্ণাঙ্গ কাউন্সিল সাপেক্ষে। পঁচাত্তরের ৬ জুন যে কার্যনির্বাহী সংসদ ছিলো, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে মহিউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে সেই সংসদ ও মিজানুর রহমান চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে গঠিত প্রস্তুত কমিটি একযোগে কাজ চালিয়ে যাবে। জিয়াউর রহমান ১৯৭৬ সালের ২৯ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি সায়েমের হাত থেকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব কেড়ে নেন। বিচারপতি সায়েম তখন নামমাত্র রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল জিয়া অস্ত্রের মুখে সায়েমকে পদচ্যুত করেন এবং রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৯৭৭ সালের ৩০ মে জিয়াউর রহমান প্রহসনের গণভোটের ব্যবস্থা করেন এবং সেই গণভোট একটি প্রহসনে পরিণত হয়েছিলো। এরকম একটি রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই আওয়ামী লীগ পুনরায় নিজেদেরকে সংগঠিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং ১৯৭৭ সালের ৩ ও ৪ এপ্রিল ঢাকার হোটেল ইডেন প্রাঙ্গণে দলীয় কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু কাউন্সিলের আগে দলের নেতৃত্ব নির্বাচন নিয়ে ঐক্যমতের অভাবে প্রকাশ্য দলাদলি শুরু হয়। কাউন্সিল প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক মিজানুর রহমান চৌধুরী দলের সভাপতি হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন কিন্তু মূল ধারার নেতাকর্মীরা মিজান চৌধুরীর নেতৃত্ব মেনে নিতে প্রস্তুত ছিলোনা। এই পরিস্থিতিতে ৩ ও ৪ এপ্রিল হাজার ১৯৭৭ সালে হোটেল ইডেনে কাউন্সিলে ঐক্যমতের ভিত্তিতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। এই সময় দলের বহু সিনিয়র নেতা কারারুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন। ওই কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত হয় আপাতত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন না করে একটি সাংগঠনিক কমিটি গঠন করার। এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিনকে আহ্বায়ক করে তাকে নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ১০ দিনের মধ্যে ৪৪ সদস্যের একটি সাংগঠনিক কমিটির নাম ঘোষণার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নেয় ৪৪ জন ছাড়াও কারারুদ্ধ নেতারা মুক্তি লাভের পর কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হবেন।

সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিন ১৫ এপ্রিল ৪৪ সদস্যের সাংগঠনিক কমিটির নাম ঘোষণা করেন। কিন্তু এই সাংগঠনিক কমিটির নাম ঘোষণার পরে আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভক্তি আরো দানা বাঁধতে থাকে। ১৯৭৮ সালের ৩, ৪, ৫ এপ্রিল তিন দিনব্যাপী আওয়ামী লীগের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। ৫ এপ্রিল কাউন্সিলের শেষ দিনে আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিতে আব্দুল মালেক উকিলকে সভাপতি করা হয় এবং আব্দুর রাজ্জাককে দলের সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এই কমিটি গঠিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভক্তি প্রকাশ্য হয়। মিজানুর রহমান চৌধুরী এই কমিটিকে অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দেন এবং ১৯৭৮ সালের ১ আগস্ট মিজানুর রহমান চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি নতুন করে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন। এর ফলে আওয়ামী লীগ দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এরকম বাস্তবতায় দলের পক্ষে সাংগঠনিক তৎপরতা চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগে মোজাফফর হোসেন পল্টুর নেতৃত্বে আরেকটি ভগ্নাংশ বেরিয়ে যায় এবং সেটিও আওয়ামী লীগ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিলো না বললেই চলে এবং এরকম একটি পরিস্থিতি ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করে এবং এই নির্বাচন প্রমাণ করে যে, এত বিভক্তির পরও আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণের আস্থা আছে। ওই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির এবং নজিরবিহীন জালিয়াতির পরও আওয়ামী লীগ ৩৯টি আসন পায় এবং প্রায় ২৫ শতাংশ ভোট পায়। এ রকম অবস্থায় ১৯৮১ সালের ১৩ এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের তিন দিনব্যাপী কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় হোটেল ইডেনে। এই কাউন্সিল অধিবেশনের সর্বসম্মতভাবে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনাকে নির্বাচিত করা হয় আর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আব্দুর রাজ্জাককে নির্বাচিত করা হয়। এরপর শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করলে আওয়ামী লীগের নবযাত্রার সূচনা হয়।

আওয়ামী লীগ   ১৫ আগস্ট  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় থানায় জিডি

প্রকাশ: ০৮:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ ওরফে খোকন এ জিডি করেন।

জিডিতে বলা হয়েছে, গত ২০ এপ্রিল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঈদ যাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এই সংবাদ সম্মেলনে সাংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ২০ বছর যাবৎ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনি পরিবহন সেক্টরে কোনো কাজ করেন নাই।’ 

একপর্যায়ে মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, ‘যেহেতু আমাদের দেশে পদত্যাগের সংস্কৃতি নেই। সেহেতু মন্ত্রী ইচ্ছা করলে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে পারেন।’

জিডিতে শ্রমিক লীগের ওই নেতা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি যাত্রীদের কল্যাণ করবে এটাই তাদের কাজ। কিন্তু সুপরিকল্পিতভাবে মোজাম্মেল হক চৌধুরী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এতে মন্ত্রীর সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। কারণ বর্তমান সরকার টানা চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন। এখন সরকারের ক্ষমতা থাকার বয়স ১৫ বছর ৩ মাস। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী সেখানে ২০ বছর মন্ত্রী থাকেন কীভাবে? মোজাম্মেল হক চৌধুরী সুপরিকল্পিতভাবে মন্ত্রী ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন। এই মিথ্যাচারের বক্তব্যগুলো দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। তার এই মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ন ও মন্ত্রীর মানহানি হয়েছে। তাই বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য জিডি করে রাখা একান্ত প্রয়োজন।’

ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না, এটা ঠিক না’

প্রকাশ: ০৭:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের। 

গতকাল সন্ধ্যার পর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করতে তার কক্ষে যান শাজাহান খান। এ সময় তার উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনি তো কথা শুনলেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তও মানলেন না।’

এ সময় সেখানে উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতারা তিরস্কার করেন শাজাহান খানকে।

জানা গেছে, শাজাহান খান এক পর্যায়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে বলেন, রাজনীতির ধারাবাহিকতায় ছেলে আসিবুর রাজনীতিতে এসেছে। এ জন্যই সে প্রার্থী হয়েছে। জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী ও এমপির স্বজনের নির্বাচন না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। প্রতিউত্তরে শাজাহান খান বলেন, অনেকেরই নিকটাত্মীয় রাজনীতিতে আছেন।

ওবায়দুল কাদের এ সময় শাজাহান খানকে বলেন, ‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না। এটা ঠিক না।’ এর জবাবে শাজাহান খান বলেন, ‘আপনার সিদ্ধান্ত দেরিতে জানিয়েছেন। আগে জানালে ভালো হতো।’ তখন ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সিদ্ধান্তটি আমার নয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কোন সিদ্ধান্ত কখন দেবেন, সেটা কি আমাদের জিজ্ঞাসা করে দেবেন?’

শাজাহান খানের উচ্চস্বরে কথা বলা নিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। এ নিয়ে বিরক্ত হন ওবায়দুল কাদেরও। তিনি শাজাহান খানের উদ্দেশে বলেন, ‘এখানে দলের অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন। এর পরও আপনি সবার সামনে এসব অপ্রিয় কথা কেন বলছেন?

এ সময় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুই সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, কার্যনির্বাহী সংসদের দুই সদস্য আনিসুর রহমান ও সাহাবুদ্দিন ফরাজী, মশিউর রহমান হুমায়ুন, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী লোটন, বলরাম পোদ্দার এবং শাহজাদা মহিউদ্দিন।

ওবায়দুল কাদের   শাজাহান খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভিডিও ভাইরাল হওয়া সেই চামেলীকে অব্যাহতি

প্রকাশ: ০৭:৩১ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ একটি সুসংগঠিত ও সুশৃঙ্খল সংগঠন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির গঠনতন্ত্রের ৪৭(৯) ধারা মোতাবেক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে সংগঠনের শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
 
এর আগে ওই নারী কাউন্সিলরের একটি নগ্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। কয়েকদিন ধরে নগর আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ঘুরপাক খায়। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

আওয়ামী লীগ   ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন   রাজনীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভুল কৌশলের মাশুল গুনছে আওয়ামী লীগ?

প্রকাশ: ০৬:২৬ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের অতীতে নেয়া কিছু সিদ্ধান্ত বা ঘটনা এর জন্য দায়ী হতে পারে। উদাহরণ দিয়ে কেউ কেউ বলছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু পরে আবার তাকে দলে ফিরিয়ে আনা হয়। জাহাঙ্গীর আলমকে প্রথমবার বহিষ্কার করার পর যখন দলে ফিরিয়ে আনা হয় পরে দ্বিতীয়বার তিনি আবার একই ভুল করলেও তাকে সাধারণ ক্ষমা দিয়ে দলে ফেরত আনা হয়। বিষয়টি সে সময় আওয়ামী লীগের অনেক তৃণমূল নেতাকর্মীই ভালো ভাবে নেয়নি। 

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মেয়র জাহাঙ্গীরের মতো একাধিক ঘটনা অতীতে আওয়ামী লীগে ঘটেছে। ফলে নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের ধারণা তৈরি হয়েছে যে, প্রথমে দল তাদেরকে বহিষ্কার করলেও পরে তারা সাধারণ ক্ষমা পেয়ে আবার দলে ফেরত আসার সুযোগ পাবেন। আর সে কারণেই দলের নির্দেশনা থাকলেও সেটা অমান্য করে তারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি বলে মনে করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাছাড়া স্থানীয় রাজনীতিও নিয়ন্ত্রণ করে এমপিরা। সেখানে এমপিরাই যখন তাদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের মনোনয়ন দিচ্ছেন তাহলে তো কোন কথাই নাই। অতীতে আওয়ামী লীগ শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিলে দলের চেইন অব কমান্ড এভাবে ভেঙে পড়ত না। আওয়ামী লীগকে এখন ভুল কৌশলের মাশুল গুনছে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, দলীয় নির্দেশনার পরও যেসব এমপি-মন্ত্রীর আত্মীয়স্বজনরা নিজেদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি, তাদের নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সময় কিন্তু এখনো শেষ হয়ে যায়নি। আমরা বিশ্বাস করি, দলীয় নির্দেশনা মেনে তারা নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেবেন। তবে কেউ যদি শেষ পর্যন্ত দলীয় নির্দেশনা না মানেন তাহলে অবশ্যই দল তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। দলের নিয়মনীতি ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের (এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়দের) বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটাই আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত।

তিনি আরও বলেন, কেউ যদি জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়টি থেকে অনুপ্রাণিত হন তাহলে তিনি ভুল করছেন। এরা অচিরেই রাজনীতিতে হারিয়ে যাবে। দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে বা গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে কেউই এখন পর্যন্ত রাজনীতির চরম শিখরে পৌঁছাতে পারেনি। বরং যিনি দলের প্রতি অবিচল থেকেছেন, দলের সিদ্ধান্তকে মান্য করেছেন, দলের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি তারা ধাপের ধাপে রাজনীতিতে উন্নতি করেছেন দেশের জন্য অবদান রাখতে পেরেছেন, জনগণের নেতাতে পরিণত হয়েছেন, রাজনীতিতে অমরত্ব লাভ করেছেন। 

আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে ব্যবস্থা: কাদের

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের মধ্যে যারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেনি তাদের বিষয়ে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয় নির্দেশনা অমান্য করলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের ব্যাপারে চিন্তা করা হবে। সময়মতো অবশ্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, পার্টির যারা মন্ত্রী-এমপি এমন পর্যায়ে আছেন তাদের জন্য নির্দেশনা রয়েছে, তাদের সন্তান ও স্বজনরা যেন উপজেলা নির্বাচনে না আসে। প্রথম পর্যায়ের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় চলে গেছে। কেউ কেউ বলেছেন আমরা বিষয়টি আরও আগে অবহিত হলে সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের সুবিধা হতো। তারপরেও কেউ কেউ প্রত্যাহার করেছেন, কেউ কেউ করেননি। আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন কমিশনের যে সময়সীমা তারপরেও ইচ্ছা করলে করতে পারবেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দলীয় সিদ্ধান্ত যারা অমান্য করেছে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনেও কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় আছে। দল যার যার কর্মকাণ্ড বিচার করবে। চূড়ান্ত পর্যায় পর্যন্ত যারা প্রত্যাহার করবে না সময়মতো দল ব্যবস্থা নেবে’।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি একতরফা কোনো সমাবেশ করতে গেলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়টি এসে যায়। আওয়ামী লীগও একই সময়ে সমাবেশের ডাক দেয়। তবে এটা পাল্টাপাল্টি নয়।

ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে হওয়া  উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।


মন্ত্রী-এমপি   প্রার্থিতা প্রত্যাহার   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন