ইনসাইড পলিটিক্স

কর্মীদের প্রশ্ন, বিএনপি নেতাদের মামলা থেমে আছে কেন?

প্রকাশ: ০৭:০১ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২


Thumbnail কর্মীদের প্রশ্ন, বিএনপি নেতাদের মামলা থেমে আছে কেন?

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার বিরুদ্ধে ৭৭টি মামলা রয়েছে। সবগুলো মামলায় তিনি জামিনে রয়েছেন। কোনো মামলার কার্যক্রমে এগোয় না। তিন মাস, ছয় মাসে তিনি একবার কোর্টে যান, হাজিরা দেন। তার জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। তিনি আবার ফিরে আসেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের তিনটি মামলা রয়েছে। দুটি মামলায় চার্জশিট হয়েছে। সবগুলো মামলা ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় করা। কিন্তু একটি মামলায়ও এখন পর্যন্ত রায় হয়নি। মামলাগুলো এখন হিমাগারে রয়েছে। বিএনপির আরেক নেতা মির্জা আব্বাস। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলা চলমান। সেই মামলাগুলোতে তিনি জামিন নিয়ে আছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরও ৩৭টি বিভিন্ন রকম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মামলা রয়েছে। সেই মামলাগুলোর কোনো হদিস নেই। এই যখন বিএনপি নেতাদের অবস্থা তখন কর্মীদের অবস্থান সম্পূর্ণ ভিন্ন। বিএনপির কর্মীরা এখন ঘরে থাকতে পারছেন না। প্রতিদিন কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি হচ্ছে। গত এক মাসে ঢাকা মহানগরীতে বিএনপির অন্তত ৩০০ জন কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণের নেতারা দাবি করেছেন। বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ এবং মিছিল করার প্রেক্ষিতে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ অ্যাকশন নিচ্ছে। বিএনপির একজন কর্মী বলেছেন, বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি করছে, পুরনো মামলা ধরে তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে পুলিশ বিএনপি কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা সচল করেছে, কোথাও কোথাও চার্জশিট দেওয়া হচ্ছে। ঢাকা শহরে বিএনপির অন্তত দুই হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নানারকম গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ঝুলছে এবং তাদেরকে পুলিশ খুঁজছে।

বিএনপি কর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, নেতাদের মামলা থমকে আছে কেন আর কর্মীদের মামলাগুলো কেন চলমান? তাহলে কি নেতারা সরকারের সাথে আপোষ করেছে? বিএনপি যতই সরকারবিরোধী আন্দোলন করছে তাতেই এই প্রশ্নগুলো বিএনপির কর্মীদের সামনে এসে বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে। বিএনপির কর্মীরা বলছেন নেতারা প্রকাশ্যে আন্দোলন করছে বটে কিন্তু গোপনে তারা সরকারের সঙ্গে এক ধরনের আঁতাত করছে। সরকারের সমঝোতার কারণেই বিএনপি নেতাদের কোনো হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে না, তারা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন, গায়ে বাতাস লাগিয়ে চলছেন এবং প্রকাশ্যে সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করছেন। খুব গোপনে সরকারের সঙ্গে দরকষাকষি করছেন। বিএনপিতে এই বিষয়টি ক্রমশ এখন বড় আকার ধারণ করেছে। বিএনপির কর্মীরা মনে করছেন যে, নেতারা যেকোনো সময়ে সরকারের সাথে সমঝোতা করতে পারে, আন্দোলনের পিঠে ছুরিকাঘাত করতে পারে। কর্মীরাই এখন নেতাদেরকে বিশ্বাস করছেন না। একমাত্র বেগম খালেদা জিয়া দুটি মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন। খালেদা জিয়া সরকারের সাথে আপোষ করেননি জন্য মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন বলে মনে করেন প্রায় সব বিএনপির কর্মীরা। অন্যদিকে কর্মীদেরকে ধরপাকড় করা হলেও নেতারা এ ব্যাপারে মুখ খুলছেন। না সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি যে সমস্ত সমাবেশগুলো করছে সেখানে শুধুমাত্র বিভিন্ন ঘটনায় যারা নিহত হয়েছেন তাদের কথা বলা হয়। বিএনপির যে সমস্ত কর্মীরা গ্রেপ্তার হচ্ছেন বা পুলিশের হয়রানির শিকার হচ্ছেন তাদের কথা বলা হচ্ছে না। বিএনপির কর্মীরা প্রশ্ন করছেন যে, নেতারা এত বড় বড় কথা বলেও কিভাবে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন? তাহলে সরকার বিএনপির আন্দোলনে বাধা দিচ্ছে বলে যে বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে তা সত্য নয় অথবা সরকারের সঙ্গে এই সমস্ত নেতাদের এক ধরনের রহস্যময় সম্পর্ক রয়েছে।

বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সরকারের গোপন যোগাযোগের কথা বিএনপিতে খোলামেলাই আলোচনা হয়। একাধিক বিএনপির কর্মীরা মনে করেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবিশ্বস্ত লোক, আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগের একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে তার নিয়মিত কথাবার্তা হয়, আলাপ-আলোচনা হয়। বিএনপির মির্জা আব্বাস একাধিক ব্যবসা পরিচালনা করছেন এবং সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে তার ওঠাবসা রয়েছে, ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আবার বিএনপির আরেক নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু সরকারের অনেক মন্ত্রীর অন্দরমহলে যাতায়াত করেন। সবকিছু মিলিয়ে বিএনপির অন্তত ৫ জন নেতা রয়েছেন যাদের ব্যাপারে ক্রমশ বাড়ছে বিএনপি কর্মীদের। আন্দোলন যত ঘনীভূত হবে ততই সন্দেহ বাড়বে এবং বিএনপি কর্মীরা মনে করছেন, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের মতো এই সমস্ত নেতারাই আবার বিভ্রান্তির চোরাগলিতে নিয়ে যাবে।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

জনপ্রিয় নেতারা কেন বিএনপিতে টিকতে পারেন না

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

কে এম ওবায়দুর রহমান বিএনপির অন্যতম জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। বিএনপির মহাসচিব হিসেবে তিনি চেয়ারপার্সনের মতোই ক্ষমতা ভোগ করতেন এবং দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে তার বিপুল জনপ্রিয়তা ছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত কে এম ওবায়দুর রহমান বিএনপিতে টিকতে পারেননি। তাকে অন্যায় ভাবে এবং অপমানিত করে বিএনপি থেকে বিদায় করা হয়েছে। 

একই অবস্থা হয়েছিল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বেলাতেও। বদরুদ্দোজা চৌধুরী অবশ্য কে এম ওবায়দুর রহমান এর চেয়ে বেশি দিন বিএনপিতে টিকে ছিলেন এবং দেশের রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত হয়েছিলেন বিএনপির মনোনয়নে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর যখন তিনি নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করেছেন, তখন বিএনপির সেটি পছন্দ হয়নি। তাছাড়া রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তার ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন উদ্ভাবনী কর্মকাণ্ড দিয়ে বদরুদ্দোজা চৌধুরী ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। আর এটিই তার জন্য কাল হয়েছে। শেষ পর্যন্ত অভিশংসনের মুখে তাকে পদত্যাগ করতে হয়।

কর্নেল অলি আহমদ বিএনপির আরেকজন জনপ্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। নেতাকর্মীদের মধ্যে তার গ্রহণযোগ্যতা ছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন, সেটাই বলতেন। এ কারণে তার প্রতি কর্মীদের আস্থা ছিল অনেক বেশি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কর্নেল অলি আহমেদের মতো জনপ্রিয় নেতা যিনি জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত বিশ্বস্ত ছিলেন। তিনি বিএনপিতে টিকতে পারেননি। 

বিএনপিতে একই ভাবে টিকতে পারেননি অনেক জনপ্রিয় নেতা। বিএনপিতে যারা জনপ্রিয় হন, যারা দলের মূল নেতাদের মতো জনগণের কাছে পৌঁছে যান এবং জনগণের আস্থা বিশ্বাস অর্জন করেন, তাদেরকেই ছেঁটে ফেলা হয়, কোণঠাসা করা হয় অথবা দলে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। 

আব্দুল মান্নান ভূঁইয়াও বিএনপিতে এক সময় জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। কিন্তু সংস্কার প্রস্তাবের কারণে তাকে শেষ পর্যন্ত দল থেকে বিদায় করে দেওয়া হয় অত্যন্ত অপমানজনকভাবে। এখন বিএনপিতে যারা জনপ্রিয় নেতা হিসেবে আছেন তাদের অবস্থাও টলটলয়মান।

বিএনপিতে অন্যদের চেয়ে জনপ্রিয় হিসেবে পরিচিত মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন বিএনপিতে আছেন আবার নেই। মাঝখানে তাকে স্বাধীনতা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে আর স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচিতে তাকে ডাকা হয়নি। মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন স্পষ্টবাদী, নির্মোহ ভাবে তিনি কথা বলেন, কাজ করেন। এজন্যই তিনি বিএনপিতে অপাঙ্ক্তেয় হয়ে গেছেন। 

বিএনপিতে জনপ্রিয় নেতাদের মধ্যে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এখন ব্যাপক আলোচিত। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হয়েছেন। আর এ কারণেই অনেকেই মনে করছেন যে, এবারের টার্গেট ব্যারিস্টার  মাহবুব উদ্দিন খোকন। 

বিএনপির যারা জনপ্রিয় হয় তারাই বিএনপিতে টিকতে পারেন না। বিএনপিতে কিছু নেতা আছেন যাদের সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা নেই, জনপ্রিয়তাও নেই। যাদের নির্বাচনী এলাকা বলেও কিছু নেই। কিন্তু তারা কাগজে কলমে বিএনপির অনেক বড় নেতা হয়ে গেছেন। এই সমস্ত নেতাদের ভোটের চিন্তা মাথায় নেই। জনগণের কাছে দায়বদ্ধতার কোন হিসেব নিকেশও নেই। তারা বিএনপি এখন বিরোধী দলে আছে জন্যই তারা ক্ষমতাবান। শুধুমাত্র প্রতিদিন একটি করে বিবৃতি বা তথাকথিত সংবাদ সম্মেলন করে তারা আলোচিত নেতা। এ সমস্ত নেতাদের কর্মী নেই, সমর্থক নেই। নেই কোন নির্দিষ্ট জনপ্রিয়তার মাপ কাঠিও। কিন্তু তারাই হলো এখন বিএনপির বড় নেতা। বিএনপিতে যারা জনপ্রিয়, যারা জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত তারা ক্রমশ বিতাড়িত হচ্ছেন এবং সেই বিতাড়িতদের তাদের তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হচ্ছে। 

যাদেরকে বিগত ১৭ বছরে নানা অজুহাতে বিএনপি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে তাদের প্রত্যেকের গ্রহণযোগ্যতা ছিলো এখন যারা বিএনপির শীর্ষ নেতা আছেন তাদের চেয়ে বেশি। বিশেষ করে তৈমুর আলম খন্দকার, নজরুল ইসলাম মঞ্জু মতো নেতারা বিএনপিতে টিকতে পারেননি। প্রশ্ন উঠেছে জনপ্রিয় নেতাদের দ্বারা কি বিএনপির এখনকার নেতারা ঈষানিত। এ কারণেই কি তাদের অস্তিত্ব ভয় পান? এ কারণেই কি তাদেরকে বিএনপিতে রাখতে চান না?

বিএনপি   জনপ্রিয় নেতা   কর্নেল অলি আহমদ   মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের আগাম কাউন্সিলের গুঞ্জন

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হয়েছে। নতুন মন্ত্রিসভা গঠন হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল কমেনি। কোন্দল ক্রমশ বেড়েই চলেছে। সামনে উপজেলা নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে সারা দেশে এখন আওয়ামী লীগ নানা ভাগ উপভাগে বিভক্ত। শুধুমাত্র সংঘাত হানাহানির উপলক্ষ খুঁজছে পরস্পরবিরোধী আওয়ামী লীগের শিবিরগুলো। এরকম বাস্তবতার দলের সঙ্কট নিরসনে এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দল দূর করার জন্য আওয়ামী লীগ আগাম কাউন্সিল অধিবেশনে যেতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্র ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, একাধিক কারণে আওয়ামী লীগ এখন নতুন করে কাউন্সিলের বিষয়টি ভাবছে। চলতি বছরের শেষ দিকে অথবা আগামী বছরের শুরুতে কাউন্সিল করা যায় কিনা এ বিষয়টি নিয়ে দলের নীতি নির্ধারকদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে বলেই একাধিক সূত্র আভাস দিয়েছে। 

আওয়ামী লীগের সর্বশেষ ২২ তম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর। সেই কাউন্সিলটি ছিল একটি রুটিন কাউন্সিল। এই কাউন্সিলে দু-একজনকে পদোন্নতি দেওয়া এবং দু-একজনের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ দেওয়া ছাড়া তেমন কোন পরিবর্তনই হয়নি। সবকিছু আগের মতোই রেখে দেওয়া হয়েছিল। 

অনেকে মনে করেন যে, এটি ছিল নির্বাচনের আগে কমিটিকে নতুন জীবন দেওয়ার একটি সিদ্ধান্ত। আওয়ামী লীগের কাউন্সিল সাধারণত তিন বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয়। ২১ তম কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০ থেকে ২১ ডিসেম্বর, ২০১৯ সালে। তার আগে ২০ তম কাউন্সিলের অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৬ সালের ২৩ এবং ২৩ অক্টোবর। কিন্তু নানা বাস্তবতার বিবেচনায় এবার আওয়ামী লীগ কাউন্সিল এগিয়ে আনতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে। 

কাউন্সিল এগিয়ে আনার পিছনে যে যুক্তিগুলো রয়েছে, তার মধ্যে প্রথমত, অবশ্যই দলের কোন্দল নিরসন এবং দলকে আবার নতুন করে ঢেলে সাজানো এবং দলকে শৃঙ্খলার মধ্যে ফিরিয়ে আনা। 

দ্বিতীয়ত, এবার নির্বাচনের মাধ্যমে অনেক কেন্দ্রীয় নেতা আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। যার ফলে কেন্দ্রীয় নেতাদের এখন সাংগঠনিক তৎপরতা অনেক কমে গেছে। ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দল এবং সরকারকে আলাদা করে নীতি নিয়ে এগোচ্ছেন। সেই নীতির অংশ হিসেবেই তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে যারা থাকেন, তাদেরকে মন্ত্রিসভার অন্তর্ভুক্ত করেন না। কিন্তু এবার অনেক কেন্দ্রীয় নেতা মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এমনকি নারী সংসদ সদস্যদের মধ্যেও অনেক কেন্দ্রীয় নেতা আছেন যারা মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। অন্যদিকে দলের জন্য কাজ করা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নেতা মন্ত্রিসভাতেও নেই, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও নেই। এই সমস্ত নেতৃত্বরা সব কিছু থেকে দূরে যেয়ে হতাশাগ্রস্ত হচ্ছেন। এই কারণে দলের ভিতর নেতৃত্বে পরিবর্তন দরকার বলে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা মনে করছেন।

তাছাড়া সবচেয়ে বড় বিষয় হলো আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে একটি গতি আনা দরকার এবং নতুন রক্ত প্রবাহ সঞ্চালন করা দরকার। যেটির কথা আওয়ামী লীগ সভাপতি বারবার বলছেন। এ সমস্ত কারণে আওয়ামী লীগ একটি নতুন কাউন্সিলের মাধ্যমে দলের ভিতর আবার গতি আনতে চায়, বিভক্তি দূর করতে চায় এবং দলে যারা সংগঠনের জন্য মনোযোগী, সংগঠনের কাজে যাদের আগ্রহ রয়েছে তাদেরকে সামনে আনতে চায়।

উল্লেখ্য, সামনে উপজেলা নির্বাচন এবং এর পর শোকের মাস। সব কিছু মিলিয়ে চলতি বছরের শেষ দিকে একটি কাউন্সিল করার ভাবনা আওয়ামী লীগের মধ্যে আছে। আর সেটি যদি সম্ভব না হয় তাহলে আগামী বছরের শুরুতে আওয়ামী লীগ কাউন্সিল করতে পারে বলে একাধিক সূত্র আভাস দিয়েছে।

আওয়ামী লীগ   আগাম কাউন্সিল   দলীয় কোন্দল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

যে কারণে খাবার নিয়ে দুশ্চিন্তা করছেন না এমভি আবদুল্লাহর নাবিকরা

প্রকাশ: ০৩:১৫ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

সোমালিয়ার উপকূলে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের নাবিকরা আপাতত খাবার নিয়ে খুব একটা দুশ্চিন্তা করছেন। তবে জাহাজে বিশুদ্ধ পানি কমে যাওয়া নিয়ে নাবিকেরা কিছুটা দুশ্চিন্তায় আছেন। 

জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের বরাতে জাহাজটির মালিকপক্ষ ও নাবিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে।

জানা গেছে, খাবার নিয়ে খুব একটা দুশ্চিন্তা নেই। কারণ, জলদস্যুরা জাহাজে দুম্বা ও ছাগল আনছে। তবে বিশুদ্ধ পানি নিয়ে দুশ্চিন্তা আছে। কারণ, জলদস্যুরা জাহাজে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে জাহাজে যা বিশুদ্ধ পানি আছে, তা রেশনিং করে চলতে হচ্ছে। সংকটের কারণে এখন সপ্তাহে দুই দিন এক ঘণ্টা করে জাহাজের বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করছেন নাবিকেরা। অর্থাৎ সপ্তাহে মাত্র দুই ঘণ্টা বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছেন তারা।

এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করার সময় জাহাজটিতে ২০০ টন বিশুদ্ধ পানি ছিল। এই পানি দিয়ে এক মাস পর্যন্ত চালানো যাবে বলে তখন নাবিকেরা জানিয়েছিলেন। 

উল্লেখ্য, ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করে সোমালিয়ার দস্যুরা। পরে তারা জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলের কাছে নিয়ে যায়। চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের মালিকানাধীন জাহাজটি বর্তমানে সোমালিয়ার গদভজিরান জেলার জিফল উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে আছে।

এর আগে প্রায় ১৩ বছর আগে ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর এমভি জাহান মণি নামের একই গ্রুপের মালিকানাধীন একটি জাহাজ জিম্মি করেছিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটি ১০০ দিন পর সব নাবিকসহ উদ্ধার করা হয়েছিল। জিম্মি অবস্থায় জাহাজটির খাবার ফুরিয়ে গেলে জলদস্যুরা সপ্তাহে দুটি দুম্বা নিয়ে আসত।


এমভি আবদুল্লাহ   কবির গ্রুপ   সোমালিয়া উপকূল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

এখনই ভারত বিরোধী কর্মসূচিতে যাবে না বিএনপি

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি ভারতীয় পণ্য বর্জন বা প্রকাশ্য ভারত বিরোধী কর্মসূচিতে এখনই যাবে না। দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে চূড়ান্তভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দলের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। গতকাল লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া স্থায়ী কমিটির সদস্যদের এই বার্তা দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, এখনই ভারত বিরোধী কর্মসূচি প্রয়োজন নেই। তবে বিভিন্ন স্থানে যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভারতের বিরোধিতা করবে ভারতীয় পণ্য বর্জন করবে, তাদের ব্যাপারে বিএনপি নির্লিপ্ত থাকবে। এমনকি ভারতের যে সমস্ত আগ্রাসন বা পক্ষপাতমূলক আচরণ সে ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান সুস্পষ্ট থাকবে। বিএনপি বাংলাদেশের স্বার্থের জন্য যে কোন দেশের সমালোচনা করবে। তবে কোন দেশের পণ্য বর্জনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো কর্মসূচি নেবে না বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য যে, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর থেকেই বিএনপির মধ্যে একধরনের ভারত বিরোধিতার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। বিএনপির অনেক নেতাই প্রকাশ্যে বলেন যে, আওয়ামী লীগকে ভারত ক্ষমতায় রেখেছে এবং ভারত একটি অগণতান্ত্রিক সরকারকে বাংলাদেশে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। এ নিয়ে বিএনপির বেশ কিছু নেতা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখেছিলেন। তবে গত ২০ মার্চ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রকাশ্যে ভারতীয় পণ্য পুড়িয়ে ফেলে আলোচনায় আসেন। 

এর আগে বিদেশে পলাতক সাইবার সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত পিনাকী ভট্টাচার্য তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে যাচ্ছিলেন। তার এই পণ্য বর্জনের ডাকে তেমন কোন সাড়া না পড়লেও পিনাকীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবং পিনাকীর নেতৃত্ব মেনে রুহুল কবির রিজভীর এই ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। বিএনপির মধ্যে এই নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

বিষয়টি নিয়ে বিএনপি নেতাদের অনেকেই বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন। যেদিন রিজভী ভারতীয় পণ্য পুড়ানোর নাটক করেন তার ঠিক চারদিন পর ২৪ মার্চ বিএনপি ওয়েস্টিন হোটেলে বিদেশি কূটনৈতিকদের সম্মানে ইফতার পার্টির আয়োজন করে। সেই ইফতার অনুষ্ঠানে ভারতীয় ডেপুটি হাই কমিশনারও উপস্থিত ছিলেন এবং এটি বিএনপির অনেক জন্য একটি বিব্রতকর পরিস্থিতি বলেই উল্লেখ করা হয়।

বিষয়টি দলের স্থায়ী কমিটির সভা পর্যন্ত গড়ায় এবং এখানে অনেকেই এই সিদ্ধান্ত বিএনপি নিয়েছে কি না সেই প্রশ্ন উত্থাপন করেন। অবশ্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তখন রিজভীর পক্ষেই অবস্থান নেন। তিনি জানান, যে রিজভী যেটা করেছেন সেটি তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে এটি করেছে। এটি দলীয় অবস্থান নয়।

তবে এরপরে বিএনপির মধ্যে অনেক সিনিয়র নেতা প্রশ্ন করেন যে, একজন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ব্যক্তি দলীয় অবস্থানের বাইরে গিয়ে ব্যক্তিগত অবস্থান নিতে পারেন কি না? এই বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে ওই স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জানানো হয়েছিল। পরবর্তীতে গতকাল রাতে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জানিয়ে দেন যে, তারা আপাতত কোন প্রকাশ্য কর্মসূচিতে যাবে না। তবে ব্যক্তিগতভাবে যদি কেউ ভারত বিরোধিতা করে বা ভারতের অবস্থানের সমালোচনা করে সেগুলো নিয়ে বিএনপি নীরব থাকবে। দলগতভাবে ভারতীয় পণ্য বর্জনের কোনো ডাক বিএনপির পক্ষ থেকে দেওয়া হবে না বলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে- সীমান্ত হত্যা, ভারতের ভুল নীতি বা বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতের আগ্রাসন ইত্যাদি ব্যাপারে বিএনপির অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। বিএনপি এই সমস্ত বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী, সার্বভৌমত্ব বিরোধী প্রতিটি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অবস্থান অতীতে নিয়েছে, ভবিষ্যতেও নেবে। তবে ভারতের পণ্য বর্জন বা ইন্ডিয়া আউটের মতো কোনও কর্মসূচিতে বিএনপি আপাতত যাবে না।

তাহলে বিএনপি নেতারা কী ভারতীয় পণ্য পুড়িয়ে ফেলবে এমন প্রশ্নের উত্তরে স্থায়ী কমিটির ওই সদস্য বলেন, আমরা কোন দেশের পণ্য পুড়ানো বা কোন দেশের পণ্য বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করিনি। এ ধরনের কর্মসূচিতে বিএনপি যাচ্ছে না।

ভারত বিরোধী   বিএনপি   রুহুল কবির রিজভী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘বিএনপি নেতাদের কথা শুনলে জিয়াউর রহমানও লজ্জা পেয়ে যেতেন’

প্রকাশ: ০১:৩৯ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি নেতারা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে যেসব কথা বলে তা শুনলে জিয়াউর রহমানও কবরে শুয়ে লজ্জা পেয়ে যেতেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর প্রেসক্লাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কখনো শুনেননি তিনি স্বাধীনতার ঘোষক।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, স্কুল ঘণ্টা যেমন দপ্তরি বাজায়, তেমনি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর পক্ষে। আজকে বিএনপি নেতা আব্দুল মঈন খান অনেক কথা বলেন। মঈন খানের বাবা আব্দুল মোমেন খান ৭৪ সালে খাদ্য সচিব ছিলেন। তিনি ষড়যন্ত্র করে মার্কিন খাদ্যবাহী জাহাজ ফেরত পাঠিয়েছিলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান আব্দুল মোমেন খানকে মন্ত্রী বানিয়েছিল। মঈন খান নিজেও সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিল, দরকার পড়লে দেশ বিক্রি করে দেব।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশ সমৃদ্ধির দিকে যখনই এগিয়ে যাচ্ছিল তখনই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। বিএনপি জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বানানোর জন্য যেভাবে দাবি করে জিয়াও সেভাবে কখনো দাবি করেনি। জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ছত্রছায়া পাকিস্তানিদের পক্ষে কাজ করেছে। জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগের অধীনেই মুক্তিযুদ্ধের সময় বেতন ভুক্ত কর্মচারী ছিলেন।

তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের কথা হাস্যরসের সৃষ্টি করে। বিএনপির নেতা মঈন খানের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, যার বাবার জন্য এদেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছে তার মুখে এসব কথা মানায় না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে ইতিহাস বিকৃতি করে বিএনপি নেতারা বিশদকার বিষোদগার করছে কিন্তু এখন সঠিক ইতিহাস জনগনের সামনে আসার পর তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। বিএনপির ইতিহাস বিকৃতির পাশাপাশি দেশের জনগণকেও বিভ্রান্তি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।


বিএনপি   ড. হাছান মাহমুদ   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন