আগামী
২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই কাউন্সিল নানাভাবেই গুরুত্বপূর্ণ
এবং তাৎপর্যপূর্ণ। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, এবারের কাউন্সিলের প্রধান আকর্ষণ হলো
দলের একজন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা। আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে যে শেখ হাসিনা
থাকছেন এটা নিয়ে কোন বিতর্ক নেই। কিন্তু প্রশ্ন হলো। সাধারণ সম্পাদক কে হবেন।
সাধারণ
সম্পাদক হিসেবে বেশ কয়েকজন আগ্রহী এবং তারা তাদের আগ্রহের কথা খোলামেলাভাবেই বলছেন।
আবার বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও এখন মাঠে নেমেছেন পুরোদস্তুর এবং সাধারণ
সম্পাদক পদে হ্যাট্রিক করার জন্য তিনি বাংলাদেশের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত চুষে বেড়াচ্ছেন।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে তাকে এখন অনেক ব্যস্ত একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে
দেখা যাচ্ছে। তবে শেষপর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক কে হবেন সেটি চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করবেন
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু সাধারণ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা
সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পাঁচটি গুণ সম্পন্ন একজন রাজনৈতিক নেতাকে দেখতে চান। এই পাঁচটি
গুণ যার মধ্যে থাকবে তিনি যদি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন তাহলে তৃণমূল রক্ষা
পাবে এবং সংগঠন উজ্জীবিত হবে বলেই সাধারণ কর্মীরা মনে করছেন। যে পাঁচটি গুণের কথা আওয়ামী
লীগের কর্মীরা বলছেন তার মধ্যে রয়েছে:
১।
তৃণমূল থেকে উঠে আসা নেতা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এমন একজন ব্যক্তিকে
তারা দেখতে চান যিনি তৃণমূল থেকে বেড়ে উঠেছেন। ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন, তার পর ছাত্রলীগের
নেতৃত্বে এসেছেন, অন্যকোন সহযোগী সংগঠন করেছেন এবং এরপর আওয়ামী লীগে এসে ধাপে ধাপে
নেতা হয়েছেন, এরকম ব্যক্তিকেই আওয়ামী লীগের কর্মীরা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দেখতে চান।
উড়ে এসে জুড়ে বসা কোন নেতাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তারা পেতে চান না।
২।
তৃণমূলের সঙ্গে সখ্যতা এবং গভীর সম্পর্ক: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এমন
একজন ব্যক্তিকে তারা দেখতে চান যার সঙ্গে তৃণমূলের সখ্যতা রয়েছে। তৃণমূলের কর্মীরা
সহজেই তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, টেলিফোন করলে টেলিফোন ধরতে পারেন, ফোন করলে তিনি
কথা বলেন, তাদেরকে যেকোন সমস্যার কথা বললে সমাধানের চেষ্টা করেন। অন্তত তাদের সমস্যার
কথাটা শুনেন এরকম তৃণমূল বান্ধব একজন নেতাকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দেখতে
চান সাধারন মাঠের কর্মীরা।
৩।
স্বচ্ছ রাজনৈতিক ইতিহাস: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এমন একজন ব্যক্তিকে কর্মীরা
দেখতে চান যার রাজনৈতিক ইতিহাস স্বচ্ছ। যিনি কখনো বিভ্রান্ত হননি, কখনো দল ত্যাগ করেননি,
দলের বিরুদ্ধে শব্দ উচ্চারণ করেননি, কোনোরকম বিভ্রান্তিতে পড়েননি, আদর্শচ্যুত হননি।
এরকম একজন নেতাকে তারা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দেখতে চান। ৭৫ এর ভূমিকা ৯২ এর ভূমিকা
এবং ২০০১ সালের ভূমিকা এবং এক এগারো ভূমিকা, এই ৩ ভূমিকায় যারা একনিষ্ঠভাবে শেখ হাসিনার
পক্ষে ছিলেন এরকম কাউকেই কর্মীরা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দেখতে চান।
৪।
ব্যক্তিগত ইমেজ: এমন একজন ব্যাক্তিকে তৃণমূল সাধারন সম্পাদক দেখতে চান যার ব্যক্তিগত
ইমেজ অত্যন্ত উজ্জ্বল। যার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নেই, যিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায়
অনিয়ম, আর্থিক কেলেঙ্কারি বা অন্য কোন কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েননি, এরকম একজন ব্যক্তিকেই
আওয়ামী লীগের কর্মীরা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দেখতে চান।
৫।
জাতীয়ভাবে গ্রহণযোগ্যতা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কেবল দলের গ্রহণযোগ্যতা নয়,
জাতীয়ভাবে যার ইমেজ অত্যন্ত ভালো, সাধারন মানুষ যাকে শ্রদ্ধা করে, যার বক্তব্যের উপর
আস্থা এবং বিশ্বাস রাখেন, যিনি কখনো খেলো হাস্যকর বক্তব্য দেননি এবং জাতীয়ভাবে যার
একটি গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তিকে সাধারণ কর্মীরা দলের দ্বিতীয় প্রধান
নেতা হিসেবে দেখতে চান।
আওয়ামী
লীগে একাধিক কর্মীরা বলছেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে এরকম বেশ কয়েকজন ব্যক্তি আছেন। আওয়ামী
লীগ সভাপতির চূড়ান্তভাবে বাছাই করবেন কাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নেয়া উচিত।
মন্তব্য করুন
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার
মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে ফোরামের সিদ্ধান্তের
বাইরে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র
সহ-সভাপতির পদ থেকে খোকনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে ফোরামে দেখা দেয় বিভক্তি।
উদ্ভূদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট জটিলতা আপাতত নিষ্পত্তি করেছে বিএনপি।
তবে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি
পদে খোকন দায়িত্ব পালন করবেন কিনা সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার দলটির
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে বিএনপি
চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের
উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের বৈঠক হয়। ওই বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন নেতা বলেন, একটি
সুষ্ঠু সমাধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে, এ ইস্যুতে এখন থেকে গণমাধ্যমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের
কথা বলতে বারণ করা হয়েছে।
সূত্রমতে, বৈঠকে ব্যারিস্টার মাহবুব
উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল (বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব) নিজ নিজ অবস্থান থেকে যুক্তি-পাল্টা যুক্তি তুলে ধরেন। বৈঠকের
শেষ পর্যায়ে মাহবুব উদ্দিন খোকন ও কায়সার কামাল একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ
প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ করেন। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে আপাতত কোন্দ্বল নিরসন হয়েছে
বলে মনে করছেন বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা। পরে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বৈঠকের
সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
বৈঠকে উপস্থিত একজন আইনজীবী নেতা আরও বলেন, এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক
ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি-না এবং তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে দায়িত্ব
পালন করবেন কি-না সে সিদ্ধান্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেবেন।
এদিন বিকাল ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত বৈঠকে মহাসচিব ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু
মাহমুদ চৌধুরী, ড. আবদুল মঈন খান এবং আইনজীবীদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই
রায় চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন, আহমেদ আযম খান উপস্থিত ছিলেন।
মাহবুব উদ্দিন খোকন ইস্যুতে বিএনপির
উচ্চপর্যায়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। গত সোমবার দলের স্থায়ী কমিটিতেও দুই ধরনের ভাষ্য
পাওয়া গেছে। বিএনপির সিনিয়র নেতা ও সিনিয়র আইনজীবীদের একাংশ খোকনকে জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরাম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনায় বিব্রত।
তারা মনে করেন, খোকনের মতো জনপ্রিয়
আইনজীবী নেতা এখন আর দলে নেই। তাকে অব্যাহতি দেওয়ার মাধ্যমে যাদের উৎসাহিত করা হয়েছে
তাদের আইন অঙ্গণে গ্রহণযোগ্যতা কম। আবার কারো কারো মত ছিল, দলের কেউ দলীয় স্বার্থের
ঊর্ধ্বে নয়। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনসহ যেকোনো বিষয়ে দলের সিদ্ধান্ত যারা
অমান্য করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। খোকনের বিরুদ্ধে কেনো
ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের একটি অংশ খোকনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
নিতে জনমত গঠনে আদালত পাড়ায় কাজ করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে গত বুধবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান
তারেক রহমান আইনজীবী নেতাদের সঙ্গে ওয়ান টু কথা বলেন। আইনজীবী নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে
বৃহস্পতিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে মহাসচিব সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক
করেন। এ বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বিষয়টি এতোদিন ছিল জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরামের, এখন তা বিএনপি টেকওভার করেছে। এই ইস্যুতে এখন সিদ্ধান্ত দেবেন দলের
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার
মাহবুব উদ্দিন বলেন, ‘ফোরামের তো গঠনতন্ত্রই নেই। সে (কায়সার কামাল) কীভাবে বহিষ্কার
করে? তার ক্ষমতা আছে বহিষ্কার করার? যে পর্যন্ত গঠনতন্ত্র না হবে, সে পর্যন্ত কাউকে
বহিষ্কার করা যাবে না। যত বহিষ্কার করা হয়েছে, তা আইনত কার্যকর নয়।’
এ সময় তিনি কায়সার কামালের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেও কথা বলেন। এর আগে গত শনিবার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে অব্যাহতি দেয় সংগঠনটি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি
চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার
সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকে তিনি দলের সার্বিক বিষয়ে দলীয় প্রধানকে অবগত করেছেন।
বৃহস্পতিবার
(২৫ এপ্রিল) রাতে চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রাত ৮টা
২০ মিনিটে খালেদা জিয়ার বাসভবনে প্রবেশ করেন বিএনপির মহাসচিব। রাত সোয়া ৯টার দিকে
তিনি বের হয়ে আসেন।
বিএনপির
মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ
তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতেই মির্জা ফখরুল ফিরোজায় গিয়েছিলেন। তবে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে সে বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে ফোরামের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে খোকনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে ফোরামে দেখা দেয় বিভক্তি। উদ্ভূদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট জটিলতা আপাতত নিষ্পত্তি করেছে বিএনপি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।