রাজপথে সরকারবিরোধী আন্দোলনের পাশাপাশি কূটনীতিকপাড়ায় বিএনপির তৎপরতা এ আর নতুন কি! বিভিন্ন দূতাবাসে গিয়ে বৈঠক করা কিংবা দলীয় চেয়ারপরসনের কার্যালয়ে রাষ্ট্রদূতদের তাদের ডেকে এনে ধরনা দেয়া কিংবা স্থায়ী কমিটির কোনো সদস্যের বাসায় নৈশ্যভোজের আয়োজন করে সেখানে কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক এই ছিল বিএনপির নিয়মিত চিত্র। অর্থাৎ আন্দোলনের পাশাপাশি দফায় দফায় বৈঠক করে কূটনীতিকপাড়ায় বিএনপি এক কর্মচাঞ্চল্য পরিবেশ তৈরি করেছে। ফলশ্রুতিতে দূতাবাসগুলোর ভাষা বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান সহ বিভিন্ন দূতাবাসগুলো বিএনপির ভাষা কথা বলা শুরু করেছে। দূতাবাসগুলো এখন দেশের অভ্যন্তরীন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে তারা এক ধরনের আগ্রহ দেখাচ্ছে। নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর অহেতুক কর্তৃত্ত্ব করার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনে ছুটে গিয়েছেন এবং কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। অন্যান্য রাষ্ট্রদূতরাও অবাধে মিডিয়ায় কথা বলছেন কূটনৈতিক শিষ্টাচার না মেনে বাধাহীন ভাবে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে কূটনীতিকপাড়ায় সরকার এবং আওয়ামী লীগের ভূমিকা নিয়ে। অথচ এই কূটনীতিকপাড়া এক সময় আওয়ামী লীগের দখলে ছিল বলে বিশ্লেষকরা দাবি করেছেন।
কূটনীতিকপাড়ায় এমন কর্মচাঞ্চল্যের মধ্যেই গত সোমবার আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মি আহমেদের বাসায় নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। সেখানে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোর বিষয় নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বৈঠক হয়েছে বলে জানা গেছে। বর্তমান বাস্তবতায় মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে আওয়ামী লীগের এই বৈঠককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি করছেন কূটনীতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন এতোদিন কূটনীতিকপাড়ায় বিএনপির নেতাদের দৌঁড়ঝাপে সেখানে আওয়ামী লীগ এক ধরনের কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল। সুবিধা অবস্থানে ছিল বিএনপি। বিএনপির চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনকে রাজপথে মোকাবিলার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ কূটনীতিতে বিএনপিকে কোণঠাসা করার কৌশল নিয়েছে বলে কোনো কোনো মহল ধারণা করছে। এখন দেখার বিষয় আওয়ামী লীগ এই কৌশলে সফল হয় কিনা।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।