ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) বাঁধের অভ্যন্তরের জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে ৫৫৮ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ড্রেনেজ ও স্যুয়ারেজ উন্নয়ন প্রকল্প’ অনুমোদন ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে উল্লিখিত প্রকল্প বাস্তবায়নে নির্দেশ প্রদান করায় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুনরায় ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। জলাবদ্ধতা নিরসনে উক্ত এলাকায় ড্রেনসহ রাস্তা নির্মাণ কাজ করায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ডিএনডি বাঁধের মধ্যে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর দুঃখ-দুর্দশার কথা বিবেচনা করে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘ডিএনডি ড্রেনেজ অ্যান্ড স্যুয়ারেজ ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পে’র কাজ প্রাথমিকভাবে খুব জোরেসোরে শুরু হয়েছিল। মৃতপ্রায় খাল পুনরুদ্ধার ও পানি নিষ্কাশনের জন্য পাম্প স্টেশন নির্মাণ কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু করোনা মহামারীকালে কাজ বন্ধ হয়ে আর শুরু হয়নি। বর্ষা আসন্ন। ডিএনডি বাঁধের মধ্যে বসবাসরত মানুষ পুনরায় জলাবদ্ধতার আশংকা করছেন। উল্লেখিত প্রকল্পসহ ডিএনডি বাঁধের মধ্যে বসবাসরত মানুষের বহুমুখী সমস্যা সমাধানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
১৯৬২ সালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি)-এর মধ্যকার ৫৮.২২ বর্গ কিলোমিটার জলাভূমিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ সুবিধা সৃষ্টির মাধ্যমে অতিরিক্ত ধান চাষ করার জন্য চারদিকে বাঁধ নিয়ে ‘ডিএনডি ইরিগেশন প্ল্যান্ট’ তৈরি করা হয়েছিল। পরবর্তীতে এ বাঁধটিই ডেমরা-নারায়ণগঞ্জ-পোস্তগোলা-যাত্রাবাড়ী এলাকার চারদিকে যান চলাচলের রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং বর্তমানে তা আরও প্রসারিত হয়েছে।
প্রকল্প এলাকায় সেচের জন্য ৫৫.২ কিলোমিটার সেচখাল ও ৪৫.৯০ কিলোমিটার নিষ্কাশন খাল খনন করা হয়েছিল। ঢাকা মহানগরীতে ব্যাপক আবাসন সংকটের ফলশ্রুতিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ সুবিধা নিশ্চিত থাকা চাষাবাদের জন্য প্রস্তুতকৃত ওই নিচু এলাকায় ক্রমান্বয়ে অপরিকল্পিত জনপদ গড়ে ওঠে। ঢাকা শহরের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বুড়িগঙ্গা-শীতলক্ষ্যা নদীবেষ্টিত জুরাইন, মুরাদপুর, শ্যামপুর, আলমবাগ, নামা শ্যামপুর, কদমতলী, দনিয়া, পাটেরবাগ, রায়েরবাগ, যাত্রাবাড়ী, মাতুয়াইল, সিদ্ধিরগঞ্জ, পাগলা, ফতুল্লা, কুতুবপুর, মুন্সিবাগ, শহীদবাগ, ভূঁইঘর, মিজমিজি ও পার্শ্ববর্তী বিস্তৃত এলাকা নিয়ে ডিএনডি বাঁধের মধ্যে একটি বিশাল জনবহুল এলাকা গড়ে ওঠেছে। এলাকাটিতে নিম্ন আয় থেকে মধ্য আয়ের প্রায় অর্ধকোটি লোক বসবাস করে। এছাড়াও রয়েছে অসংখ্য উপাসনালয়সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ছোট মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ইত্যাদি।
প্রয়োজনের তাগিদে ধানক্ষেতের আইল দিয়ে পায়ে চলার পথকে ভিত্তি করে অথবা এলাকাবাসীর সুবিধা অনুযায়ী অপরিকল্পিতভাবে রাস্তা গড়ে উঠেছে যা পরবর্তিতে পাকা রাস্তায় পরিনত হয়েছে। ওইসব রাস্তার দুই পাশে সুউচ্চ অট্টালিকা গড়ে উঠেছে। অনেক এলাকায় রাস্তার পাশে ড্রেন আছে কিন্তু ড্রেনের পাশের বাড়িগুলো থেকে অপচনশীল দ্রব্যাদি দীর্ঘদিন ড্রেনে ফেলার কারণে এবং নিয়মিত পরিষ্কার না করায় ড্রেনগুলো ময়লা, বালি ও মাটিতে ভরাট হয়ে গেছে। এলাকায় বসবাসকারী মানুষের পানির চাহিদা মোতাবেক ওয়াসা কর্তৃপক্ষ এ এলাকায় অসংখ্য গভীর নলকূপ স্থাপন করেছে। কিন্তু ওইসব গভীর নলকূপ দিয়ে যে বিপুল পরিমাণ পানি উত্তোলিত হচ্ছে তা দৈনন্দিন কাজে ব্যবহারের পর নিষ্কাশনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা রাখা হয় নাই। এছাড়া বৃষ্টির পানিতো রয়েছেই।
বসতবাড়ি গড়ে ওঠার পর সেচের জন্য খনন করা আঁকাবাঁকা খালগুলোতে পানির প্রবাহ না থাকলেও বসতবাড়ির ড্রেনের পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্যবহৃত হতে থাকে। তবে এলাকাবাসী ওই খালগুলোতে শুধু ড্রেনের পানি নিষ্কাশন করেই ক্ষান্ত হননি, ওই খালে বাড়ির ময়লা-আবর্জনা, ব্যবহৃত পলিথিন ও অপ্রয়োজনীয় অপচনশীল দ্রব্যাদি ফেলে খালগুলো ভরাট করে ফেলেছেন। অনেক জায়গায় খালগুলো সম্পূর্ণভাবে বা এর অংশবিশেষ অবৈধ দখলদারদের হাতে চলে গেছে। ফলে বর্তমানে ওসব সেচখালে ড্রেনের পানি নিষ্কাশনের আর কোনো উপায় নেই। ফলে ওই পানি নিম্নাঞ্চলকে প্লাবিত করে থাকে।
ডিএনডি এলাকাটির চারদিকে উঁচু বাঁধ থাকার ফলে পানি বের হয়ে যাওয়ার কোন উপায় নেই। বাঁধের মধ্যখানের নীচু এলাকায় প্লাবিত পানি নিষ্কাশনের জন্য শিমরাইলে অবস্থিত একটি মাত্র পাম্প ষ্টেশন যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগন্য। এছাড়া খালটির বিভিন্ন স্থানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ায় ড্রেনের পানি পাম্প ষ্টেশন পর্যন্ত পৌছার কোন উপায় না থাকায় ফলে দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে উল্লেখিত প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার পূর্বে, আমার দেখা মতে, কদমতলী থানা এলাকায় অলিগলিগুলোসহ প্রধান রাস্তায় স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছিল। কালো-পচা-দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে চলাচল দুর্বিষহ হয়ে পড়েছিল। সামান্য বৃষ্টি হলেই রিকশা ছাড়া রাস্তায় নামা যেত না। ভারি বৃষ্টি হলে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট সব একাকার হয়ে যেত। নামা শ্যামপুর, কদমতলী, মেরাজনগর, মোহাম্মদবাগ, শহীদবাগ, মদিনাবাগসহ পুরো নিম্নাঞ্চলে হাঁটু থেকে কোমর পরিমাণ পানি জমে যেত। সেসময়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা দুর্দশা লাঘবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করেছে। ডিএনডি বাঁধের মধ্যের জলাবদ্ধতা ও মানুষের দুর্দশা নিয়ে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচারিত সংবাদ, নিবন্ধ ইত্যাদির মাধ্যমে অবহিত হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে ডিএনডি বাঁধের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ২০১০ সালে ডিএনডি এলাকার বাসিন্দাদের দুর্দশার কথা বিবেচনা করে জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ মোতাবেক সরকার কর্তৃক ‘ডিএনডি জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প’ গ্রহণ করা হয়েছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও কিছু অদূরদর্শী জনপ্রতিনিধিদের ভুল ব্যাখ্যার কারণে প্রস্তাবিত প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখেনি। এরই মাঝে জলাবদ্ধতার কারণে সৃষ্ট দুর্দশা লাঘবে বাঁধের মধ্যকার রাস্তা অলিগলি বার বার উঁচু করার ফলে বাড়িগুলো নিচু হতে থাকে। ফলশ্রুতিতে অনেক বাড়ির নিচতলা মাটির নিচ চলে গেছে। অনেকে বাড়ির ওইসব ভূগর্ভস্থ নিচতলা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যবহার করছে। ওইসব ভূগর্ভস্থ নিচতলার পাঁচ ইঞ্চি দেয়াল ধসে যে কোনো সময়ে জীবনঘাতী দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সর্বোপরি গত ২৮ মে ২০১৩ তারিখে ‘আমাদের অর্থনীতি’পত্রিকায় ‘ডিএনডি জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প’ বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী সমীপে খোলা চিঠি ও ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’-এ ‘ডিএনডি বাঁধের জলাবদ্ধতার সমাধানে’ শিরোনামে নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। এ বিষয়ে জাতীয় সংসদে নারায়ণগঞ্জ-৪ এর সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের দৃষ্টি আকর্ষণী বক্তব্যের পর সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ডিএনডি এলাকা পরিদর্শন করেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৫৫৮ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ডিএনডি ড্রেনেজ অ্যান্ড স্যুয়ারেজ ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প’ একনেকে উপস্থাপন করে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ডিএনডি বাঁধের মধ্যে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর দুঃখ-দুর্দশার কথা বিবেচনা করে প্রকল্পটি অনুমোদন করেন। শুধু তাই নয়, উল্লিখিত প্রকল্প এলাকায় দখলকৃত খাল পুনরুদ্ধার করে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব প্রদান করেন। কিন্তু বর্তমানে প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে আছে। সামনে বর্ষাকাল। জলাবদ্ধতা রোধে খাল সংস্কার এবং প্রকল্পে প্রস্তাবিত শক্তিশালী পাম্পিং ষ্টেশনগুলি স্থাপন করা জরুরি। আমাদের বিশ্বাস, দেশপ্রেমিক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পদ্মা সেতুসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পসমূহ যেমনিভাবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করেছে এবং করছে, তেমনিভাবে ডিএনডি বাঁধের মধ্যে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর দুঃখ-দুর্দশার কথা বিবেচনা করে ‘ডিএনডি ড্রেনেজ অ্যান্ড স্যুয়ারেজ ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প’টি যথাসময়ে বাস্তবায়ন করবে।
ডিএনডি বাঁধ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনই শুধু নয়, এ এলাকার মানুষের শিক্ষা, চিকিৎসা, বিনোদন এবং খেলার মাঠসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি
প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর
রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা
করবেন।
প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে
আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা
নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না
কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে
সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার
মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ
আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে
অনেকেরই ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী
লোক।
এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই
ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে
যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের
নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী
পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের
ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।
এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে
এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই
এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা
পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা
কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।
আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম।
সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা
দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের
একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায়
যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে
আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব
দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে
প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক
তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের
ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর
এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।
তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের
মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার
মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের
আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে
বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।
তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে
এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক
হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:০৬ পিএম, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।
বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর