গত এক দশক ধরে হন্যে হয়ে খুঁজেছি এ পৃথিবীতে আমার জন্মের লগ্ন বা তিথিটা ঠিক কখন। পূর্ব পুরুষের রেখে যাওয়া সিন্দুকের তলানিতে কাঠের সাথে আটকে থাকা প্রায় মুছে যাওয়া অক্ষরের দলিলপত্রও নানা সময়ে হাতিয়েছি। কিন্তু কাগজে কলমে কোথাও পাচ্ছিলাম না। যদিও স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা নিশ্চিত করে যে, আমার আগমন আর ষাটের দশকের শুরুটা প্রায় এক সঙ্গেই হয়। মাঝেমধ্যে মনের গহীনে পরিতাপ বোধ করলেও প্রয়াত মা-বাবাকে কখনও দায়ী করি না। কখনো মনে হয়, বাবার সাথে আলোচনা করেই প্রধান শিক্ষক যথার্থ দিনক্ষণ বসিয়ে দিয়েছিলেন। যা পরে ললাট লিখন হয়ে উঠে। কারণ এসব সংরক্ষণের দায়িত্ব বাবার। তবে বাবার ভাষ্য মতে,'৭৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় ভিজে গিয়েছিল তাঁর সংরক্ষিত অসংখ্য পুরনো দলিল দস্তাবেজ। এতে নাকি হাতের লিখা একটা খাতাও ছিল। পরবর্তী কালে জমির দলিলপত্রের নকল জেলার রাজস্ব বিভাগের রেকর্ড রুম থেকে সংগ্রহ করা সম্ভব হলেও আমাদের ভাই বোনদের জন্মক্ষণের নকল পাওয়া যায়নি। কারণ এর নকল হয়না। শুনেছি, বন্যার পানিতে যা নষ্ট হয়েছিল এর মধ্যে সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ ছিল জন্মতারিখের খাতাটা। আজ এত দিন পরে যা পেয়েছি তা দিয়ে আমার মন ভরে না। তথাপি মৌখিক সাক্ষ্য থেকে একটা মাহেন্দ্রক্ষণের কথা জেনে অপরিমেয় সান্ত্বনা অনুভব করে থাকি।
২) আমাদের এক অশীতিপর ফুফা সেই কৈশোর সময় থেকেই আমাকে দেখলে জড়িয়ে ধরেন। কখনো গায়ে হাত বুলিয়ে বলেন, "তিথিটা আমার স্পষ্ট জানা আছে। সেদিন জুম্মাবার ছিল। বাড়ির মুরুব্বিজন সকলই মসজিদে গেছেন। আমি সদ্য বিবাহিত জামাই। তখনও বাড়ির লোকজনকে চিনে উঠতে পারিনি। তাই সেসময় তোমাদের বাড়িতেই ছিলাম। পৃথিবীতে তোমার আগমনী গানটা আমার কানে দিব্যি বেজেছিল। আজো যেন সেই চিৎকার শুনতে পাই। আমি উঠােনে দাঁড়িয়ে নিশ্চিত হয়েছিলাম তুমি এসেছ"।
আমি ইতোমধ্যে ষাটোর্ধ হয়েছি। বিস্ময়কর! সেই ফুফাও মোটামুটি সক্ষমতার সঙ্গে জীবিত। মনে হয় মানুষের স্মৃতির কোনো বয়স হয়না। স্মৃতিই নাকি মানুষের সবচেয়ে শক্তিশালী গুণ। তাঁর আর্থিক সচ্ছলতা নেই, উপযুক্ত একাধিক সন্তান নেই। বয়সের কারনে অনেকটা ন্যুজ ভঙ্গিতে হাঁটেন, এদিক ওদিক তাকান। তবু শ্বশুরালয়ে আসতে অনেক বেশি সাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। বলেন, মনে রেখো শ্বশুরবাড়িতে জামাই কখনো পুরানো হয়না। ইদানিং আমার খবর পেলেই বাড়িতে চলে আসেন। আমার সাথে দেখা হয়, গল্প করেন। গর্বভরে বলেন, 'এটা আমার শ্বশুর বাড়ি, আমি এ বাড়ির বড় জামাই'। তখন তাঁর চোখের কোণে টলমল করে ওঠে অশ্রু। আমি তাঁর ত্রিকালদর্শী তামাটে মলিন মুখশ্রীর দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করি। কথা শুনি, মনোনিবেশ করি তাঁর প্রতি। শোনাও যে বক্তার কষ্ট লাঘবের একটি বড় মাধ্যম। মানুষ জন্মগত ভাবেই নিজের কথা অন্যকে শোনাতে চায়। তিনিও বলে যাচ্ছেন, শ্রোতা আমি একা এবং একজন।
৩) এখন আপনার বাড়িতে কারা আছে?
না বাবা, কেউ নেই। ছেলেটা বিয়ে করে দূরে থাকে। ভৈরব বাজারে ব্যবসা করে। আসে খুঁজ-খবর নেয়। নিজের পৈতৃক নিবাস ফেলে আমরা বুড়োবুড়ি সরকারি প্রকল্পে থাকি।
এটা সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্প?
জী বাজান, ছেলে আবেদন করে পাইছে।
ছেলের বউও সাথে থাকে। ঘরটা বেশ ভালো।
সেখানে কোনো সমস্যা হয়না?
সমস্যা তো আছেই। তবে আশেপাশে অন্য লোকজন থাকায় কথাবার্তা বলতে পারি। সেখানে আমার সমান বয়সী দু'চার জন মানুষও আছে। এই আর কি বাবা। কয়দিন আর থাকবো।
ইউ এন ও সাহেবরা দেখতে আসেন?
হ্যাঁ, কিছু দিন আগে একবার আসছিল। দেখে গেছে। আমাদের কোন অসুবিধা নাই বলে গেছেন। কপালে ছিল, নিজের বাড়ি ছাইড়া গেলাম। আমার জন্য দোয়া করো বাবা।
এবার আমি বললাম, আমাকে এই নম্বরে ফোন দিবেন। ছেলের সাথে কথা হয়েছে, সমস্যা হলেই জানাবেন। আমি উপজেলার বড়ো অফিসারকে বলে দিলে আপনার কাজ করে দিবেন। আল্লাহ আপনার সহায় হোন।
৪) ভাবছিলাম, গত কয়েক বছরের নিরন্তর প্রচেষ্ঠা ও লাগাতার নজরদারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশব্যাপী জমিহীন, গৃহহীন মানুষের জন্য এমন উদ্যোগ না নিলে এ মানুষগুলোর ঠিকানা কোথায় হত? আশ্রয়ণ এখন দেশের হাজার হাজার অসহায় ছিন্নমূল, বাস্তুচ্যুত ও সম্বলহীন মানুষের একটা আশার আলো হয়েছে। মাথার উপরের আচ্ছাদন এমনকি সমাজবদ্ধতার মিলনক্ষেত্রও সরকার করে দিয়েছে। এর মানবিক তাৎপর্য এর সামাজিক গুরুত্ব এবং পারিবারিক জীবনাচার নিয়ে আমরা ক'জন নিবিড় সংবেদনশীলতার সঙ্গে চিন্তা করি? চারপাশে আমরা যা দেখি বাঁচার জন্য তা কী যথেষ্ট? অবশ্যই নয়। সত্যিকারের জীবনবোধ পাঠ করার জন্য আরও বেশি কিছু দেখা প্রয়োজন। উল্লেখ করা যায়, আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় দারিদ্র্য বিমোচনকে টার্গেট করে কেবল মুজিব বর্ষেই ২০২১ সালের শুরুতে ৬৩ হাজার ৯৯৯টি পরিবারকে জমির মালিকানাসহ ঘর দেয়া হয়েছে। একই বছর দ্বিতীয় পর্যায়েও প্রদান করা হয় ৫৩ হাজার ৩৩০টি গৃহহীন, জমিহীন পরিবারকে। যা এখনো পুরোদমে চলমান আছে। গ্রামীণ পথের ধারে বা নদীর তীরে গুচ্ছগুচ্ছ সারিসারি বর্ণিল ঘরগুলোর নান্দনিকতাও পথচারীদের চোখে পড়ার মতন।
৫) কখনো কখনো ভাবি, শুক্রবার জুম্মার বেলায় আমার জন্ম হয়েছে বলেই বোধহয়,
জুম্মার নামাজের প্রতি বরাবরই আমার প্রবল আকর্ষণ। আমি সচরাচর এ নামাজ মিস করি না। ঢাকায় শুক্রবারে নানাস্থানে গিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মসজিদে এ নামাজ আদায় করি। এতে আমি আনন্দ পাই। ইমামগনের বয়ানের তারতম্য বুঝতে চাই। আমার ঢাকার চল্লিশ বছরের জীবনে (যখন থাকছি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে সর্বাধিক সময় হলেও পুরান ঢাকা, ধানমন্ডি, ইস্কাটন, শাহবাগ,এলিফ্যান্ট রোড থেকে পান্থপথের অসংখ্য মসজিদে নামাজ পড়েছি। বলা যায়,এটা আমার এক ধরনের শখ। স্রেফ একজন সাধারণ মুসল্লীর মতন করে দাঁড়িয়ে যাই। উপভোগ করি মানুষের ধর্মাচার এবং সৃষ্টি কর্তার প্রতি আত্মসমর্পণ কৌশল। নিজের উদ্যোগে আমি দুটো মসজিদও নির্মান করেছি। একটি জেলা প্রশাসক হিসেবে নিজ কর্মস্হলে অপরটি নিজের বাড়িতে, পৈতৃক ভিটায়। সকল ধর্মেই আছে, উপসনালয়গুলো সভ্যতা বিকাশের পথে পরিপূরক হিসেবে কাজ করে। এগুলো প্রগতির জন্য অন্তরায় নয়।
৬) এমনও ভাবি, জন্মদিন! কিসের জন্মদিন, কার জন্মদিন? কেন উদযাপন? নিজের জন্মদিন নিজে কেন করতে হবে? প্রয়োজন পড়লে অন্যরা করবে। গবেষণার নিমিত্ত খুঁজে বের করবে। পৃথিবীতে অনেক দিন বেঁচে থাকার অর্থ হলো সবসময় সৃষ্টিশীল কর্মযোগে থাকা। অন্যথায় কিসের থাকা? মনীষীরা বলেন, Write something worth reading or do something worth writing. মানে ভালো কিছু একটা করতে হবে। তা না হলে, থাকা বা নাথাকার মধ্যে কোনো প্রভেদ নেই। অন্নদাশঙ্কর রায় বলেছেন, 'তুমি যে দীর্ঘদিন বেঁচে আছ এর জন্য লজ্জিত হওয়া উচিৎ, কেননা তোমার চেয়ে অনেক কম বয়সে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন অসংখ্য প্রতিভাবান। অথচ নবতিপর হয়েও তুমি পৃথিবীর কোনো কাজেই লাগােনি'। মাত্র একুশ বছর বয়সে কবি সুকান্ত আর উনচল্লিশ বছরে ওপারে চলে গিয়েছেন স্বামী বিবেকানন্দ। দীর্ঘায়ু না পেলেই কী? মানুষ তাঁদের জন্ম-মৃত্যু পালন করেই যাবে। কাজেই খামোকাই জন্মদিন খোঁজে বের করা। সবই নিরর্থক এবং বৃথা। ভাবতে হবে, পৃথিবীর সব গান আকাশ কি মনে রাখে? কাজেই তৈলাক্ত কেকের গায়ে হযবরল করে আঁকা বর্ণমালার এসব জন্মদিন কেবলই যেন মনে করিয়ে দেয় মৃত্যুদিনের কথা।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১১:৫৯ এএম, ২৬ মার্চ, ২০২৪
যার গন্তব্য স্থান কোথায় সেটা ঠিক নাই, তিনি রাস্তায় গাড়ি বা রিক্সা যেভাবেই যান না কেন সে শুধু উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরে বেড়াবেন। কারণ তার তো গন্তব্য ঠিক নাই। সে গুলশান যাবে, না নিউ মার্কেট যাবে কোথায় যাবে জানে না। বিএনপির অবস্থা এখন ঠিক তাই। তারা জানেই না তাদের আন্দোলনের গন্তব্য কোথায়। জানে না বলেই তারা একের পর এক ভুল করে রাজনীতির কানাগলিতে ঢুকে যাচ্ছে। এর একটি উৎকৃষ্ট প্রমাণ হলো হঠাৎ করে তারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে। কিন্তু আমাদের বাস্তবতা বুঝতে হবে যে, ভারতীয় পণ্য বর্জন সম্ভব কিনা? এখানে একটা কথা উল্লেখ্য করতে চাই যে, এদেশের জনগণ কার কথায় বিশ্বাস করেন? জনগণ বিশ্বাস করেন একমাত্র দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার কথা। কারণ তিনি যেটা বলেন সেটা করেন। তিনি যদি কোন প্রশ্নবোধক ডাকও দেন তাহলেও বহু লোক সেটাকে গ্রহণ করবে। কারণ তার প্রতি তাদের বিশ্বাস আছে। আর যে দলের নেতারা প্রায় সবাই হয় সাজাপ্রাপ্ত অথবা জামিনে আছে তাদের কথায় কোন লোক কানে দিবে না।
দ্বিতীয়ত হচ্ছে যারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের কথা বলছেন তারা তো ভোরে উঠেই আগে ভারতীয় টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করেন। দৈনন্দিন জীবনে যা ব্যবহার করি সবই তো ভারতীয় পণ্য। আমাদের বাজারে কোন জিনিস কিনতে গেলে তো ভারতীয় পণ্যটিই বেশি খুঁজি। তাহলে এখন কি আপনারা পেস্ট দিয়ে ব্রাশ না করে কয়লা ব্যবহার করতে চান? সেটা আপনারা করতে পারেন। কয়লার আজকাল দামও অনেক। আবার ঝামেলা হলো সহজে যাওয়া যায় না। সুতরাং সেটাও আপনাদের জন্য অসুবিধা।
কথায় আছে পাগলে কি না বলে ছাগলে কিনা খায়। সে ধরনের একটা রাজনৈতিক কর্মসূচি আপনারা দিয়ে দিলেন কোন কিছু না ভেবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এর মধ্য দিয়ে আপনারা আরও রাজনৈতিক গহ্বরে ঢুকে গেলেন। এখন ভাবে ঢুকছেন সেখান থেকে আর কোন দিন বের হতে পারবেন কিনা সেটা একটা প্রশ্ন।
আমরা এখন বিশ্বায়নের যুগে বাস করি। এখন বিশ্বের কোন দেশেরই নিজস্ব পণ্য বলে কিছু নেই। আমাদের সবাইকে সবার ওপর নির্ভর করতে হয়। সেখানে আপনারা ভারতকে বর্জন করবেন কি করে। ভারত তো সবচেয়ে নিকটতম প্রতিবেশি দেশ। তার আগে আমাদের মনে রাখতে হবে ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা যুদ্ধ করেছি। সে সময় আমাদের ৩০ লাখ সহযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন। এর সাথে আরও ১০ থেকে ১৫ হাজজার ভারতীয় সৈন্য বাংলাদেশের জন্য বাংলাদেশের মাটিতে তাদের রক্ত ঝড়িয়েছেন। আামরা না হয় আমাদের দেশের জন্য রক্ত দিয়েছি। কিন্তু ভারতীয়রা তো জীবন দিয়েছে প্রতিবেশির জন্য। সুতরাং ভারতের সাথে আমাদের কন্ধনটা হলো রক্তের। রক্ত দিয়ে ভারতের জনগণের সাথে বাংলাদেশের জনগণের বন্ধুত্ব। সেই বন্ধুত্ব আপনি পণ্য বর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ করবেন কি করে? বাসায় আপনার বউ থেকে শুরু করে বাসার কাজের মেয়ে সবাই ভারতের শাড়ি ব্যবহার করেন। তাহলে আগে তাকে বলবেন যে, আপনারা ভারতীয় পণ্য বর্জন করুন।
রিজভী সাহেব বঙ্গবাজার থেকে একটি চাদর কিনে এনে আগুনে পুড়িয়ে দিয়ে একটা নাটক করেছেন মাত্র। বঙ্গবাজারে আরও অনেক কিছু পাওয়া যায় যেগুলো ভারতের নামে চলে। এটা আমরা জানি। রমজান মাসে ইফতারে আপনি পিয়াজু রাখছেন। এটা বাঙালিদের ইফতারের একটা ঐতিহ্য বলতে পারেন। এটা আমরা খাবই। কিন্তু পেঁয়াজ তো আসে ভারত থেকে। তাহলে এখন তো আপনাকে ইফতারে পিয়াজুও বাদ দিতে হবে। এভাবে আপনি কত বাদ দিবেন। অনেক সময় ভারত থেকে ঝড় আসে। সে সময় তাহলে বাতাসও আপনি নিবেন না। এটা বর্জন করবেন। এটা কি সম্ভব? যদি সম্ভবই না হয় তাহলে পাগলের প্রলাপ বলে কি আর আন্দোলন হয়। পাগল তো তার নিজের ভালোটা বুঝে। আপনাদের ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান দিন শেষে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকেই লাভবান করবে। কারণ আপনাদের আন্দোলনের কোন গন্তব্যই নেই। কোন রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আন্দোলন করলে জনগণের কাছে যেতে পারবেন সেটাও আপনারা বুঝেন না। আপনারা পড়ে আছেন ভারতরে পণ্য বর্জনের ডাক নিয়ে। ফলে জনগণের আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু এদিকে চাপা পড়ে যাবে। আর সরকারও মহা আরাশ আয়েশে চলবে। আমি জানি না, কোন উৎস থেকে টাকা পয়সা পেয়ে আপনারা নতুন করে এই স্লোগান শুরু করেছেন। কিন্তু আপনাদের এই ডাকে বেনিফিশিয়ারি আওয়ামী লীগই। কারণ আপনারা এবার বিএনপিকে দলগতভাবে কবরে নামানোর জন্য প্রচেষ্টায় নেমেছেন।
মন্তব্য করুন
একাত্তরের ২৫ মার্চের ভয়ালরাত্রি মর্মদাহিক চেতনা প্রবাহের কালখণ্ড।
২০১৭ সালের ১১ মার্চ জাতীয় সংসদে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালোরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর
বর্বরোচিত ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের এবং আন্তর্জাতিকভাবে
এ দিবসের স্বীকৃতি আদায়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত
হয়েছে। এর আগে ২৫ মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের দাবি ওঠে বাংলাদেশের
সর্বস্তরের মানুষের কাছ থেকে।
এ কথা সকলের কাছে পরিষ্কার যে, নয়মাসে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হওয়া নিয়ে
কোনো বিতর্ক চলতে পারে না। কারণ রবার্ট পেইন তার Massacre, The Tragedy of
Bangladesh গ্রন্থে ইয়াহিয়া খানের উদ্ধৃতি দিয়েছেন এভাবে- Kill three million of
them and the rest will eat out of our hands. পাকিস্তানি শাসকদের এই সিদ্ধান্তের কারণে
দৈনিক গড়ে ছয় হাজারের বেশি মানুষ খুন হয় সারা বাংলাদেশে। এজন্য ১৯৭১ সালে মার্কিন সিনেটর
এডওয়ার্ড কেনেডি ভারতের শরণার্থী শিবিরগুলো পরিদর্শন করে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে
সরাসরি গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনেন। ‘গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস’-এ বাংলাদেশের
হত্যাযজ্ঞকে বিশ শতকের ৫টি ভয়ঙ্কর গণহত্যার অন্যতম বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০০২ সালে
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘নিরাপত্তা বিষয়ক আর্কাইভ’ তাদের অবমুক্তকৃত
দলিল প্রকাশ করে। সেখানে বাংলাদেশের নারকীয় হত্যালীলাকে ‘জেনোসাইড’ হিসেবে চিহ্নিত
করা হয়। ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন কূটনৈতিকরা সেসময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ব্যাপক গণহত্যার
বর্ণনা দিয়ে ওয়াশিংটনে বার্তা প্রেরণ করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা
একাধিক লেখায় এবং বিশ্বখ্যাত পত্রিকা টাইম, নিউইয়র্ক টাইমস প্রভৃতির সম্পাদকীয়তে পাকিস্তানিদের
গণহত্যা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়। উপরন্তু ১৯৭২ সালে পাকিস্তানে গঠিত
‘হামাদুর রহমান কমিশন’ তাদের পরাজয় অনুসন্ধান করতে গিয়ে প্রমাণ পায় বাংলাদেশে পাকিস্তানি
সেনাদের ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ ও নারী নির্যাতনে ঘটনার। আর এই ভয়ঙ্কর গণহত্যায় কেঁপে উঠেছিল
বিশ্ববিবেক। জর্জ হ্যারিসন ও পণ্ডিত রবিশংকর ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ আয়োজন করেন। দার্শনিক
আঁদ্রে মালরোর নেতৃত্বে গঠিত হয় ‘আন্তর্জাতিক ব্রিগেড’। প্যারিস ও লন্ডনে সরব হয়ে ওঠেন
মানবতাবাদী নেতৃবৃন্দ। বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যা ব্যাপক এবং নিষ্ঠুরতার
দলিল হিসেবে আজও বিশ্বকে নাড়া দেয়।
আসলে বিংশ শতাব্দীতেই ঘটেছে কোটি মানুষের প্রাণসংহার। বিশ্বযুদ্ধ
ও জাতিনিধনের সেই পরিকল্পিত ও ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ ‘জেনোসাইড’ অভিধা পেয়েছে। হিটলারের কনসেনট্রেশন
ক্যাম্প থেকে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিদের বন্দিশিবির সেই জেনোসাইডের নির্মম ইতিহাসের কথা
বলে। অ্যান্থনী মাসকারেনহাস তাঁর ‘দ্যা রেপ অব বাংলাদেশ’ গ্রন্থের ‘গণহত্যা’ অধ্যায়ে
লিখেছেন ‘সারা প্রদেশ জুড়ে হত্যাকাণ্ডের সুব্যবস্থার নমুনার সঙ্গে জেনোসাইড বা গণহত্যা
শব্দটির আভিধানিক সংজ্ঞার হুবহু মিল রয়েছে।’ তিনি প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা এবং পাকিস্তানি
সেনা কর্মকর্তার মুখ থেকে জেনেছিলেন গণহত্যার লক্ষবস্তু ছিল- ক) বাঙালি সৈনিক, পুলিশ,
আনসার প্রভৃতি খ) হিন্দু সম্প্রদায় গ) আওয়ামী লীগের লোক ঘ) কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
ঙ) অধ্যাপক ও শিক্ষক যাঁরা বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। তবে তিনি এটাও লক্ষ
করেছিলেন যে সেনাবাহিনীর নৃশংসতা ছিল নির্বিচার। নিরপরাধ, সাধারণ মানুষকেও শত্রু হিসেবে
গণ্য করেছিল তারা। তাছাড়া তাদের গণহত্যা ছিল ‘শোধন প্রক্রিয়া’ যাকে শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক
সমস্যার সমাধান বলে মনে করত। সেই সঙ্গে এই বর্বরোচিত উপায়ে প্রদেশটিকে উপনিবেশে পরিণত
করাও ছিল এর অন্যতম উদ্দেশ্য। পাকিস্তানিদের ভাষ্য ছিল- ‘বিচ্ছিন্নতার হুমকি থেকে রক্ষা
করার উদ্দেশ্যে পূর্ব পাকিস্তানকে চিরদিনের জন্য পবিত্র করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সেজন্য
যদি বিশ লাখ লোককে হত্যা করতে হয় এবং প্রদেশটিকে তিরিশ বছরের জন্য উপনিবেশ হিসেবে শাসন
করতে হয়, তবুও।’ শাসকদের এ ধরনের মানসিকতার সঙ্গে পশ্চিমাংশের মানুষের ঐক্য ছিল। আর
এজন্যই ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ বলেছিলেন, ‘পশ্চিম পাকিস্তানের
জনগণ হলেন গণহত্যার নীরব দর্শক।’
বাংলাদেশে ১৯৭১-এ পাকিস্তানি শাসক ও তাদের দোসর আলবদর, আলশামস ও রাজাকার বাহিনী পরিকল্পিতভাবে হত্যাযজ্ঞ, ব্যাপক ধ্বংসলীলা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, হিন্দু জনগোষ্ঠী নিধন ও বিতাড়ন, রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের নির্যাতন, মুক্তিযোদ্ধাদের নির্বিচারে হত্যা করেছিল। বাঙালি জাতির প্রতি বিদ্বেষ ও ঘৃণা থেকে তাদের ২৫ মার্চের ‘অপারেশন সার্চলাইট’ শুরু হয়েছিল। সুপরিকল্পিত গণহত্যা ও জাতিগত নিধনযজ্ঞ জেনোসাইড হিসেবে গণ্য হয়েছে। হিটলারের নাজি বাহিনী ইহুদি ও রাশিয়ার যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে যে বর্বরতা দেখিয়েছিল ঠিক একইরকম আচরণ ছিল পাকিস্তানিদের। নিষ্ঠুরতা, পাশবিকতা এবং সাম্প্রদায়িক দৃষ্টি ছিল ঠিক ইহুদিদের প্রতি নাজিদের মতো। নাজিরা ইহুদিদের নিচুজাতের মানুষ হিসেবে বিবেচনা করত এবং তাদের নিধনযজ্ঞের মধ্য দিয়ে ইউরোপের সমস্যা সমাধান করতে চেয়েছিল। অনুরূপভাবে পাকিস্তানি সেনা অফিসারদের মনোভাব ছিল Bengalees have been cleansed and selected properly for at least one generation. নাজিরা প্রথমে তরুণ, যুবক এবং সমর্থ পুরুষদের হত্যা দিয়ে নিধনযজ্ঞ শুরু করলেও শিশু, বৃদ্ধ, নারীদের নির্বিচারে নিধন করতে থাকে ১৯৪১ সালে বলকান অঞ্চল থেকে। যুদ্ধবন্দি হত্যাসহ অন্যান্য নিষ্ঠুরতায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছায় তারা। তাদের অত্যাচারের সঙ্গে পাকিস্তানের সেনাদের আরো মিল রয়েছে হিন্দু নিধনের ঘটনায়। একাত্তরে হিন্দুদের প্রতি শাসকদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সুচিন্তিত ও নির্মম।
কারণ তারা ধর্মভিত্তিক হত্যাকাণ্ডকে বৈধ করে তুলেছিল। তারা মনে করত পাকিস্তানের জন্ম হয়েছে এই উপমহাদেশের হিন্দু আধিপত্যের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র আবাসভূমির জন্য মুসলমানদের বিদ্রোহের কারণে। এই হিন্দু বিদ্বেষ মনোভাব বছরের পর বছর লালিত হয়ে এসেছে। এজন্য জেনোসাইডে হিন্দু নিশ্চিহ্ন অনিবার্য হয়ে উঠেছিল। জনৈক গবেষকের ভাষায়- ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমণের পর গোটা দেশে কেবল একটি উদীয়মান ও অস্তগামী রাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধ হয়নি একাধিক জাতিগত দ্বন্দ্বও শুরু হয়ে যায়। এতে উভয়পক্ষের নির্যাতন শুরু হয় তবে এর সূত্রপাত ঘটে ২৫শে মার্চের আক্রমণের পর। পাকিস্তানি সরকারের পরিকল্পনার শিকার হয় দুই জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি। এর প্রথম শিকার হয় হিন্দু সম্প্রদায়, যাদের কেবল নির্যাতন করা হয়নি বরং তাকে সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও পারিবারিক ভিত্তি ক্ষতিগ্রস্ত এমনকি ধ্বংসও করা হয়। হিন্দুরা তাদের হৃত অবস্থান কোনদিন উদ্ধার করতে পারেনি বাংলাদেশেও। সম্প্রদায়গতভাবে তারাই ১৯৭১ সালের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠী।’ এমনকি ধর্ষণকেও তারা বৈধ বলে মনে করত। চীনের নানকিং-এ জাপানি সেনা কর্তৃক ধর্ষণ, রাশিয়াতে নাৎসিদের বলাৎকার এবং আর্মেনিয়া ও বসনিয়ার নারী নির্যাতনের সাযুজ্য রয়েছে বাঙালি নারী ধর্ষণের ঘটনায়। পাকিস্তানিদের বাঙালি নারী ধর্ষণের লক্ষ ছিল পরিবার, সম্প্রদায় ও জাতিকে মানসিকভাবে আহত ও পঙ্গু করা। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে গেরিলা যুদ্ধে পরাজিত ও বাঙালি জাতিকে বশীভূত করতে না পারার যাতনা তারা মিটাত নারী ধর্ষণ করে। এটা ছিল ভয়ঙ্কর মনোবিকারজাত। সার্বরা মুসলিম নারীদের ধর্ষণ করেছিল ইথনিক ক্লিনজিং-এর উপায় হিসেবে। দেশ-বিদেশী গবেষক ও সাংবাদিকদের রচনায় যুদ্ধকালীন এসব নির্মম বাস্তবতাই উন্মোচিত হয়েছে।
বিশ শতকের জেনোসাইডের তালিকায় পাকিস্তান একটি অপরাধী রাষ্ট্রের
নাম। কারণ লাখো বাঙালির প্রাণের বিনিময়ে তারা সেদিন তাদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে
চেয়েছিল। অথচ বাঙালি জাতিগোষ্ঠী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের আগে পশ্চিম পাকিস্তানের ওপর
কোনোরূপ অন্যায় পীড়ন করেনি। তবু বাঙালির প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকদের বর্বর ও
নৃশংস আচরণ বিশ্বের কাছে তাদের ঘৃণ্য মানসিকতাকে প্রকাশ করে দিয়েছিল। পাকিস্তানিদের
আক্রমণ ও হত্যাকাণ্ড ছিল ফ্যাসিস্টদের মতো। তাই তারা পোষণ করেছিল জাতি বা ধর্ম সম্প্রদায়
বিদ্বেষ; হত্যা করেছিল নিরীহ নিরপরাধ জনসাধারণকে। সেই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড আমাদের
২৫ মার্চের দাবিকে আরো বেশি তাৎপর্যবহ করে তুলেছে। ২৫ মার্চ ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’
হবে পৃথিবীর মানব জনগোষ্ঠীকে নির্মম নিধনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য উচ্চকণ্ঠ এবং
হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের একমাত্র ভরসার দিন। আশা করা যায় এই
দিবসের চেতনা গণহত্যার বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যার গন্তব্য স্থান কোথায় সেটা ঠিক নাই, তিনি রাস্তায় গাড়ি বা রিক্সা যেভাবেই যান না কেন সে শুধু উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরে বেড়াবেন। কারণ তার তো গন্তব্য ঠিক নাই। সে গুলশান যাবে, না নিউ মার্কেট যাবে কোথায় যাবে জানে না। বিএনপির অবস্থা এখন ঠিক তাই। তারা জানেই না তাদের আন্দোলনের গন্তব্য কোথায়। জানে না বলেই তারা একের পর এক ভুল করে রাজনীতির কানাগলিতে ঢুকে যাচ্ছে। এর একটি উৎকৃষ্ট প্রমাণ হলো হঠাৎ করে তারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে। কিন্তু আমাদের বাস্তবতা বুঝতে হবে যে, ভারতীয় পণ্য বর্জন সম্ভব কিনা? এখানে একটা কথা উল্লেখ্য করতে চাই যে, এদেশের জনগণ কার কথায় বিশ্বাস করেন? জনগণ বিশ্বাস করেন একমাত্র দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার কথা। কারণ তিনি যেটা বলেন সেটা করেন। তিনি যদি কোন প্রশ্নবোধক ডাকও দেন তাহলেও বহু লোক সেটাকে গ্রহণ করবে। কারণ তার প্রতি তাদের বিশ্বাস আছে। আর যে দলের নেতারা প্রায় সবাই হয় সাজাপ্রাপ্ত অথবা জামিনে আছে তাদের কথায় কোন লোক কানে দিবে না।
একাত্তরের ২৫ মার্চের ভয়ালরাত্রি মর্মদাহিক চেতনা প্রবাহের কালখণ্ড। ২০১৭ সালের ১১ মার্চ জাতীয় সংসদে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালোরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বরোচিত ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের এবং আন্তর্জাতিকভাবে এ দিবসের স্বীকৃতি আদায়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। এর আগে ২৫ মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের দাবি ওঠে বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছ থেকে।
বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করেছিলেন যে, দেশের উন্নয়নের জন্য চিকিৎসা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি সবচেয়ে জরুরি। চিকিৎসার যদি উন্নতি না হয়, চিকিৎসা ব্যবস্থার যদি উন্নতি না হয়, মানুষ যদি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী না হন তাহলে দেশ গড়া সম্ভব নয়। সেজন্য বঙ্গবন্ধু একটা সুন্দর নীতিমালা পরিকল্পনা গড়ে তোলেন। ওই সময়ই সেটা ছিল আধুনিক যুগোপযোগী এবং বিজ্ঞানসম্মত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল বঙ্গবন্ধু যে নীতিমালা তখন চালু করে গিয়েছেন সেই পদ্ধতিতে আজকের দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা একে এক করে বাস্তবায়ন করে চলেছেন। যার মূল ভিত্তি বঙ্গবন্ধু স্থাপন করেছেন।
সাম্প্রতি ‘স্বাধীনতা সুফল পেতে চাই চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণা জাতির পিতার হাতে সূচনা, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা দিলেন দিক নির্দেশনা’ শীর্ষক এক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিপ্রেক্ষিতের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীর। বৈঠকে আলোচক হিসেবে অধ্যাপক ডা. শাহ মনির হোসেন যে আলোচনা করেছেন তার চুম্বক অংশ প্রকাশ করা হলো।