প্রকাশ: ১২:০০ পিএম, ৩০ নভেম্বর, ২০২২
রাজনীতির
ময়দানে সংলাপ, সমাবেশ ও নির্বাচন খুবই
প্রাসঙ্গিক ও প্রাচীন আলোচনা।
দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে শব্দ তিনটির উত্তাপ
বরাবরই বেশি। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর হাতে একটি স্মার্ট
রাজনীতির প্রেক্ষাপট রচিত হলেও ১৯৭৫
এর আগস্ট পরবর্তী সময়ে সেই রাজনীতির
ধারাবাহিকতা মুখ থুবড়ে পড়ে।
জন্ম নেয় বিশৃঙ্খল একটি
নয়া রাজনৈতিক ব্যবস্থা। যার ফলশ্রুতিতে দেশের
পরবর্তী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া জাতীয় নির্বাচনগুলোর ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় অধিকাংশ
ক্ষেত্রেই ছিলোনা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড। রাজনৈতিক দলগুলো শুধুমাত্র ক্ষমতার নিমিত্তে মাঠের লড়াই চালিয়ে গেছে,
গণতন্ত্র অর্জনের জন্য নয়। উদাহরণস্বরূপ
১৯৭৭ সালের হ্যাঁ / না ভোট, ৮৬
সালের জাতীয় নির্বাচন কিংবা ২০০১ সালের প্রহসনমূলক
নির্বাচনকে উল্লেখ করা যায়। ১৯৭৭
সালের ৩০ মে জিয়াউর
রহমান দেশের সংবিধান এবং সেনা বিধান
লঙ্ঘন করে এই কাজ
করেন। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ক্যু, পাল্টা
ক্যুতে গণতন্ত্র ছিলো নির্বাসিত। হুসেইন
মুহাম্মদ এরশাদের সময়ে ৮৬ ও
'৮৮ সালে দুটি বিতর্কিত
জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছিল।
এই দুই নির্বাচনেও গণতন্ত্র
ছিলো উপেক্ষিত। ৯০’র আগ
পর্যন্ত তো স্বৈরশাসকরাই চালিয়েছে
দেশ। দেশের মহামান্য আদালতও সেসব শাসনকালকে অবৈধ
হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
আমরা
যদি ২০০৮ সালের ২৯শে
ডিসেম্বরের নির্বাচনের দিকে তাকাই তাহলে
দেখা যাবে, এই নির্বাচনের মাধ্যমে
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার একটি বাক বদল
হয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, বাংলাদেশের সাধারণ
নির্বাচনের ইতিহাসে ২০০৮ সালের নির্বাচনটি
ছিল অবাধ ও সুষ্ঠু
নির্বাচন। যদিও গণতন্ত্রের শত্রুরা
সেবারও নানা টালবাহানায় নির্বাচন
বানচাল করতে চেয়েছিলো। বার্তা
সংস্থা রয়টার্সের তথ্যমতে, খালেদা জিয়ার দাবির প্রেক্ষিতে নির্বাচন ১১ দিন পিছিয়ে
১৮ ডিসেম্বরের নির্বাচনের তারিখকে ২৯শে ডিসেম্বর নির্ধারণ
করা হয়। সেই শুরু
এর পর কোনো নির্বাচনেই
আর স্বাধীনতা, গণতন্ত্রের শত্রুরা মাথা তুলে দাঁড়াতে
পারেনি।
দ্বাদশ
সংসদ নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হবে ২০২৩
সালের নভেম্বর মাস থেকে। আইন
অনুযায়ী ২০২৪ সালের ২৯
জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন
করতে হবে বাংলাদেশ নির্বাচন
কমিশনকে (ইসি)। দিন
যতই ঘনিয়ে আসছে এ নিয়ে
উত্তাপ ততই বাড়ছে রাজনৈতিক
অঙ্গনে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো গণতান্ত্রিক সভা সমাবেশ করে
যাচ্ছে। নির্বাচনকে ঘিরে জনসমাবেশে বিগত
শাসকদের মত কোনো ধরনের
বাধা সৃষ্টি না করে সরকার
দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গণতন্ত্রের নতুন ভিত রচনা
করেছে। যার একক কৃতিত্ব
বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার। সরকার
চাইছে একটি সুষ্ঠু, অবাধ
ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের। আন্তর্জাতিক মহলও একটি গ্রহণযোগ্য
নির্বাচন দেখতে চায়।
নির্বাচন
পূর্ববর্তী রাজনৈতিক সংলাপের ইঙ্গিত দিচ্ছেন কতিপয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক তবে সংলাপ প্রসঙ্গে
আওয়ামী লীগের অবস্থান বলা যায় অনেকটা
স্পষ্ট করেছেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি
সদ্য অনুষ্ঠিত হওয়া মহিলা আওয়ামী
লীগের সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে আলোচনা
করে বলেন, অনেকেই বলেন সংলাপ করতে
হবে,আলোচনা করতে হবে।কিন্তু কাদের
সঙ্গে? ওই বিএনপি খালেদা
জিয়া,তারেক জিয়া! সাজাপ্রাপ্ত আসামি!যারা গ্রেনেড হামলা
করে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। যে খালেদা জিয়া
বক্তৃতা দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী
তো দূরের কথা বিরোধী দলের
নেতাও কোনদিন হবে না,হতে
পারবে না।আর আওয়ামী লীগ,একশ বছরেও
ক্ষমতায় যাবে না।আল্লাহতাআলা এই
ধরনের গর্বভরা কথা পছন্দ করে
না বলে মন্তব্য করেন
শেখ হাসিনা।তিনি বলেন, এই ধরনের গর্বভরা
কথা বাংলাদেশের মানুষ তো একেবারেই পছন্দ
করে না। সেজন্য খালেদা
জিয়ার মুখের কথা তার বেলায়ই
লেগে গেছে। ’ সুতরাং শেখ হাসিনার বক্তব্য
স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে নতুন করে নির্বাচন
পূর্ববর্তী রাজনৈতিক সংলাপের কোন সম্ভবনা নেই।
ভোট
গ্রহণের ক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার নিয়ে দেশের বৃহৎ
দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ
ও বিএনপি এখন মুখোমুখি। সঠিক
ও সুষ্ঠ নির্বাচনে যাদের বিশ্বাস নেই তারা ইভিএম
এর মত প্রযুক্তির বিরোধীতা
করবে এটাই স্বাভাবিক। অন্যদিকে,
নির্বাচনে যত এগিয়ে আসছে
ততোই বিএনপি বা অপশক্তির দোসরদের
বড় আস্তানা নির্মাণকারীরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দৌড়াদৌড়ি বাড়াচ্ছে। জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থাকে
তথ্যগত ভুল বুঝিয়ে নির্বাচন
কে প্রভাবিত করার পুরাতন কূটকৌশল
শুরু করে দিয়েছে ।
এদিকে অপকৌশল ও অপরাজনীতিকে বুড়ো
আঙুল দেখিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠন
গুলোকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা
হাতে নিয়েছেন। তার সবগুলো জনসম্মেলনই
জনসমুদ্রে পরিণত হচ্ছে। বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন দল তবুও বিভিন্ন
পর্যায়ে সমাবেশের নামে অপ-রাজনৈতিক
টোটকা ব্যবহার করে যাচ্ছে। আজকাল
নতুন রূপে উন্থান হওয়া
কিছু নব্য বিএনপি বা
নালিশ পার্টির সদস্য নিজেরাই হামলা করে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ
করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
তবে
যেকোনো মূল্যেই দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে এবং গণতন্ত্রের স্বার্থে
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সফল
করতে হবে। একটি গণতান্ত্রিক
রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি জনগণ
আর সেই জনগণ তাদের
ভোটিং পাওয়ারের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে এমনটাই স্বাভাবিক।
স্বাধীনতা বিরোধী কোনো পক্ষ যেন
জনগণের সেই অধিকারকে বানচাল
করতে না পারে সেজন্য
কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী
নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ।
চতুর্থ শিল্প বিল্পবের যুগে এখন বিশ্ব।
চারিদিকে প্রযুক্তির জয়জয়কার। অথচ একটি পক্ষ
চাচ্ছে ভোট হবে প্রাচীন
পদ্ধতিতে। যারা এখনও এধরনের
অবৈজ্ঞানিক চিন্তা-চেতনা লালন করে তাদের
হাতে দেশ কতটা ভালো
থাকবে তা সহজেই অনুমেয়।
নির্বাচনকে সুষ্ঠু এবং পক্ষপাতহীন করতে
ইভিএম অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বিশেষজ্ঞরাও এ বিষয়ে একমত।
বিএনপির
মত অগনতান্ত্রিক দলগুলোর জন্য পরামর্শ থাকবে
আপনারা জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করুন প্রথমে। রাজনীতি
অর্থই জনগণের সেবা করা। সেই
কাজ বাদ দিয়ে আন্তর্জাতিক
ষড়যন্ত্রের অংশ হয়ে নির্বাচনে
জয়লাভ করা যাবেনা। মনে
রাখবেন দেশের মানুষ তখনই আপনাদেরকে বেছে
নিবে যখন আপনারা তাদের
কল্যাণে কাজ করবেন। আপনাদের
বিগত আন্দোলনের জ্বালাও পোড়াও কর্মসূচী দেশের সাধারণ মানুষকে ভূগিয়েছে, তাদের স্বাভাবিক জীবনকে ব্যহত করেছে। তাই তারা আপনাদের
সাথে নেই।
মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সবচেয়ে
বড় অর্জন এদেশের কোটি কোটি জনতার
ভালোবাসা। সেই ভালোবাসাকে শক্তিতে
পরিণত করে তিনি বিগত
দুই দশকে দোর্দণ্ডপ্রতাপে দেশকে
এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। দেশের
প্রতিটি আনাচে কানাচে তার উন্নয়নের ছোঁয়ায়
পাল্টে গেছে। বিগত সময়ে আওয়ামী
লীগের উন্নয়ন কর্ম লিখে শেষ
করার মত নয়। নিজস্ব
স্যাটেলাইট থেকে বাংলাদেশের মানুষের
গর্বের প্রতীক হয়ে ওঠা পদ্মা
সেতু। তরুন প্রজন্মের মেট্রোরেল
থেকে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরসহ
বঙ্গবন্ধু টানেলের মাধ্যমে দক্ষিণ
এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে টানেল
যুগে প্রবেশ। এক্সপ্রেস ওয়ে, শত শত
ফ্লাইওভার, সেতু, শতভাগ বিদ্যুৎ, লাখ
লাখ মানুষকে গৃহনির্মানে করে দেয়া, পুরো
বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল। করোনাকালীণ
সমেয় তা দেখিয়েছে চোখে
আঙুল দিয়ে। কি করেনি আওয়ামী
লীগ সরকার! তাই দ্বাদশ জাতীয়
সংসদ নির্বাচনেও দেশের আপামর জনসাধারণ জননেত্রী শেখ হাসিনাকেই বেছে
নেবে এব্যাপারে আমরা শতভাগ নিশ্চিত।
তবে দেশের প্রতিটি নির্বাচন কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধুর সৈনিকদের সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে। কেননা পূর্বের
ন্যায় স্বাধীনতার শত্রুরা সর্বদা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের সকল ষড়যন্ত্রকে ধুলিস্যাৎ
করে দেশের মানুষের নির্বাচনী অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
জননেত্রী
শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন বরাবরই উৎসবের আমেজ বয়ে আনে
এদেশের মানুষের হৃদয়ে। দেশদ্রোহী অপশক্তিরা সবসময়ই নির্বাচন ও জননেত্রী শেখ
হাসিনার ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালায়।
শেষ সময় পর্যম্ত জনগণের
ভালোবাসায় পরাস্ত হয় অস্ত্রের রাজনীতি
ও মাফিয়াদের হুংকার। জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকলে পরিশ্রম বিফলে যায় না জননেত্রী
শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ আআওয়ামী
লীগ সেটার প্রমাণ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অব্যাহত
থাকুক সে ধারাবাহিকতা। জয়বাংলার
নৌকা ছড়িয়ে যাক লাল-সবুজের
প্রতিটি প্রান্তরে। জয়বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।