ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই উল্লাস। ঈদ মানেই চাঁদ রাতে দল বল নিয়ে স্লোগানে বের হয়ে যাওয়া '১, ২, ৩/রাত পোহালেই ঈদের দিন' এরকম আরো কত স্লোগানে পাড়ার ছেলে মেয়েরা ঈদকে আগমণ জানায়। তবে এখনো কি সেই আমেজে ভরপুর আছে এখনকার ঈদ নাকি আমি বড় হয়ে গেছি!
ঈদ মুসলিম ধর্মালম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব। এক বছর প্রতিক্ষার পর পর আসে 'ঈদ'। আর ঘরে ঘরে ছেয়ে যায় আনন্দ উৎসবে। তবে শৈশবের ফেলে আসা ঈদের রঙিন দিনগুলো যেনো আজ বিষাদের রং আর ব্যস্ততায় হারিয়ে শুধুই স্মৃতি। হারিয়ে গিয়েছে আমার ঈদের আনন্দ, শৈশবের দুরন্তপনা। সবই এখন মৃত অতীত।
ছোটবেলা থেকেই বুঝতাম সব থেকে আনন্দের দিন মানে বছর ঘুরে আসা ঈদ। বছর ঘুরে দুইতা ঈদ থাকে এক রোজার ঈদ মানে 'ঈদুল ফিতর' আরেকটা ঈদ হলো কুরবানীর ঈদ। রোজার ঈদ শেষে ২-৩ মাসের মাঝামাঝি সময়ে উটযাপন করা হয় কুরবানীর ঈদ। তবে কুরাবনীর ঈদ থেকে রোজার ঈদই অপেক্ষাকৃত বেশি আনন্দের। কারণ সেখানে আমাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষা, চাঁদ দেখা না দেখার ওপর অনিশ্চয়তা, দুশ্চিন্তা ও আনন্দ মিশে থাকত।
ইফতারের অন্যদিন গুলিতে মূলত অপেক্ষায় থাকতাম মুখরোচক ভাজা-পোড়া খাবারগুলোর প্রতি। তবে ত্রিশ বা ঊনত্রিশ ইফাতারের দিন আর সেই ভাজা-পোড়ায় মন বসতো না। অপেক্ষায় থাকতাম কখন ইফতার শেষ হবে আর টিভির সামনে বসবো। হারিয়ে যাওয়া সেই সময়টাতে এখনকার মত এত সোশ্যাল মিডিয়ার নিয়ে পড়ে থাকতো না কেউই। পাড়ার ছেলেদের সাথে মাঠে ঘাঠে চলে যেতো আমার ছোট ভাই রিফাত। যেখানে গাছপালার ফাঁকে পশ্চিম আকাশের কার্নিশ দেখা যায়। সবাই মিলে একদৃষ্টিতে পশ্চিমে চেয়ে থাকতো। চিকন কাঁচির মতো হলুদাভ একটা চাঁদের অপেক্ষায়! কে কার আগে দেখতে পায়। তাদের সে কী মজার প্রতিযোগিতা ছিলো!
অন্যদিকে বাড়ির সবার ছোট তন্ময়। সেই সময়টাতে ছিলো খুবই ছোট, তাই তাঁকে নিয়েই আমি বসতাম টিভির সামনে সাথে থাকতো চাচতো বোনেরাও। মাঝে মাঝে ভাই এসে জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে বলতো কিরে আপু, খবরে কিছু বলছে চাঁদ উঠছে কিনা ! সে কি আগ্রহ আর উত্তেজনা ছিলো আমাদের চাঁদ রাতের দিন।
চাঁদ দেখা মাত্রই উৎসবের আমেজে মেতে উঠতো সবাই। বাইরে শোনা যেতো ছোট বাচ্চাদের '১,২,৩/ রাত পোহালে ঈদের দিন' এ স্লোগানের মধ্য দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছে ঈদকে। এইদিকে বাবা বাজার নিয়ে চলে আসতো, আর রান্না ঘর থেকে ঠক ঠক শীলনড়ার শব্দ ভেসে আসতো। তাঁর মানে ছিলো ঈদের দিন রান্নার জন্য আম্মু মসলা বাটা শুরু করে দিয়েছে। ঠক ঠক শীলনড়ার শব্দের পাশপাশি ভেসে আসতো আদা, রসুন পেয়াজের কাঁচা মসলার ঘ্রাণ। এই ঘ্রাণ যেনো আরো সতেজ করে তুলতো ঈদ আনন্দকে।
ঈদ আনন্দের আরেকটা বড় অংশ ছিলো পিঠাপুলি। এটা বলা যায় রোজা শুরু থেকে বানানো শুরু হয়। এরপর রোদে শুকিয়ে ঈদের জন্য প্রস্তুত করে রাখেতেন। আর যখনই চাঁদ দেখা যায় , সাথে সাথেই এলাকা জুড়ে ধুম চলতো পিঠাপুলি ভাজার, আর সেই ভাজা পিঠা খেজুড়ের ঘুরের তৈরি করে রাখা শিরায় চুবানো হত। পিঠা ভাজা আর শিরা বানানোর ঘ্রাণ তখনকার ঈদ আনন্দকে নিয়ে যেতো অন্যমাত্রায়!
আর অন্যদিকে ধুম চলতো মেহেদী পড়া নিয়ে। ঈদের আগের দিন মেহেদী দেওয়ার প্রচলন অনেক আগে থেকেই। ছোট বেলা থেকেই আমি মোটামুটি ভালো মেহেদী ডিজাইন পারতাম। তাই চাঁদ উঠার সাথে সাথেই এলাকার পরিচিত বাচ্চারা চলে আসতো আমার কাছে মেহেদী দিয়ে দেওয়ার জন্য। আর নানা নকশায় অঙ্কিত হতো ছোট্টমনিদের হাত।
পিঠাপুলি, মসলা বাটা, মেহেদী দেওয়া এসব আনন্দ আরো দ্বিগুন করে দিতো বিটিভিতে চলা কবি নজরুলের বিখ্যাত গানটি ' রমজানের ঐ রোজার শেষে, এলো খুশির ঈদ'। ফুল সাউন্ডে সেই গান বাজতো আর আম্মু রান্না করতো। আমি বসে বসে বাচ্চাদের হাতে মেহেদী দিতাম। মাঝে মাঝে আম্মু এসে আবার ভেজে রাখা একটা দুইটা পিঠাও দিয়ে যেতো। মেহেদী দেওয়ার পাশাপাশি পিঠায় এক কামড় দিতাম আর মনোযোগ দিয়ে সেই গানটাও শুনতাম এবং গানটা শুনে কেমন একটা ধাক্কায় শিউরে উঠতাম। গানের প্রতিটা লাইন ও সুরের ধাঁচ বুকের ভেতরে ধাক্কা মারত। কী পবিত্র মনে হতো সেই গানের কথা ও সুর। গান শেষে বিভিন্ন ঈদ অনুষ্ঠান হতো টিভিতে সেগুলাও উপভোগ করতাম আর মেহেদীর হাত একের পর এক বদল হয়েই যেতো কোনদিক দিয়ে টেরও পেতাম না। আর বাইরের ঈদের আমেজ তো ছিলো অন্যরকম। ভেসে আসতো নানা ধরনের গান। তখনকার সময়ে সবই ছিলো ঈদ সংশ্লিষ্ট গান। এছাড়াও সেই সময়ে হুমায়ুন আহমেদের নাটক ও হানিফ সংকেতের ইত্যাদি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ছিল সব আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
এর মধ্যে স্টিলের আলমারি থেকে নতুন জামার প্যাকেট আর বাটা স্যান্ডেলের খাকি রঙের বাক্সটা বের করে পুনরায় একবার দেখে নিতাম। সব ঠিক ঠাক আছে তো? ঈদ না আসা পর্যন্ত প্রতিদিনই নতুন জামার গন্ধ ও ভাঁজগুলো দেখে নেওয়া ছিল রুটিন ওয়ার্ক। নতুন বাটা স্যান্ডেলের গন্ধটা তখন অমৃতের মতো লাগত৷ কোথাও কোনো ময়লা বা ধুলা লেগে থাকলে গায়ের জামা দিয়ে মুছে ফেলতাম৷ জামা না পরেই নিজের সামনে মেলে ধরে আয়নার সামনে ঘুরে ঘুরে দাঁড়াতাম। নিজেকে কাল কেমন দেখাবে চোখের আন্দাজ করে ফেলতাম।
আব্বু, দুই ভাই তন্ময় আর রিফাতের ঈদের পাঞ্জাবি বের করে রাখতাম। পাশাপাশি আমারটাও বের করে রাখতাম। তবে সেটা একদমই শেষ রাতে যখন বাসায় একদমই মানুষ থাকতো না। কারণ, তখন এটা বিশ্বাস করতাম ঈদের জামা কেউ দেখে ফেললেই পুরান হয়ে যাবে আর ঈদ মানেই নতুন জামা পড়তে হবে। এইসব চিন্তা ভাবনা মাথায় রেখে কখনোই ঈদের আগে কাউকে জামা দেখাতাম না। বাড়ির সকলের ঈদের জামা বের করে টেবিলের উপরে রাখতাম পর পর। তখন বিষয়টাতে একটা আনন্দ খুঁজে পেতাম। রেখেই নিজের হাতে মেহেদী দিয়ে শুয়ে পরতাম। আম্মু বলা যায় সারারাতই রান্না ঘরে কাজ করতো। আর হারি পাতিলের টুং টাং শব্দ এসে কানে লাগতো। তবে তখন এই শব্দ আর কানে লাগতো না, এই টুংটাং শব্দ যেনো সে কানে কানে বলতো এইতো আর কিছুক্ষন! রাত পোহালেই ঈদ। আনন্দ আর ঘুম আসতো। শেষ রাতে যদিও একটু চোখ লেগে আসতো, তবে ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই আম্মু এসে সব ভাই বোনকে ডেকে তুলতো। আব্বু দুই ভাইকে নিয়ে এলাকার মসজিদে নামাজ পড়তে যেতো তাই তাদের গোসলের সিরিয়াল ছিলো বরাবরই আগে। তারপরেও চাইতাম যে যত আগে ঘুম থেকে উঠে গোসল সেরে নতুন জামা পড়তে পারে।
আম্মু সবসমই রান্নার কাজে ব্যস্ত থাকতেন আর আমি গোসল সেরে নতুন জামা পড়ে ঘর গুছাতাম। ঈদ উপলক্ষে নিজেদের জামা-কাপরের পাশাপাশি আম্মু ঘরের জন্য নতুন বিছানার চাদর কিনতেন, বালিশের কভার, পর্দা ইত্যাদি। ঈদ না আসা আগ পর্যন্ত এই জিনিস গুলা একদমই বের করতাম না। অপেক্ষায় থাকতাম ঈদের জন্য। আর ঈদ আসলেই আমি সেগুলাই ইদের দিন সকালে বের করে গুছাতাম। ভেজা কাপড় দিয়ে সব ফার্নিচার পরিষ্কার করতাম৷ ভেঙে যাওয়া ও রং ঝলসে যাওয়া ফার্নিচারগুলো কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে রাখতাম৷ যাতে কোনো মেহমান দেখতে না পায় যে আমাদের ভাঙাচোরা ফার্নিচার আছে৷ মধ্যবিত্ত সমাজের মধ্যে এই ঠুনকো মানসম্মান বাঁচানোর প্রতিযোগিতা। ঘরে যখন আকর্ষণীয় কিছুই থাকে না তখন ভাঙাচোরা জিনিসগুলোই এদিক সেদিক করে সাজিয়ে রেখে নিছক সম্ভ্রান্ত হওয়ার চেষ্টা।
বাবা-ছোট দুই ভাই রেডি হয়ে যেতো নামাজের জন্য। এইদিকে ওরা রেডি হতে হতে মা রান্না ঘরে চলে যেতেন সেমাই ভাজার জন্য ৷ লম্বা ঝাটার কাঠির মতো মোটা মোটা সেমাইগুলো মা ভেঙে ছোট করে ডালডা ও ঘি দিয়ে ভাজতেন। লাচ্ছা সেমাইগুলো ভাজা লাগত না। তেল চুপচুপে লাচ্ছা সেমাইয়ের প্যাকেটটা থেকে সুন্দর একটা গন্ধ আসত ৷ আগে পরে যাইহোক, ঈদের দিন বাবাসহ ছোত ভাইদের নামাজের জন্য একটা তাড়াহুরো থাকতোই। রি তাড়াহুড়োর মধ্যে দিয়ে আম্মু গরম গরম রান্না করা সেমাই এনে দিতো আর দুই-এক চামচ মুখে দিয়েই ওরা বের হয়ে যেতো। এরপর বাসায় আমি আর মা একা। মা রান্না বান্না করে আর আমি নতুন জামা পড়ে বসে বসে টিভিতে বিভিন্ন ঈদ অনুষ্ঠানগুলো দেখতাম। মাঝে মাঝে চাচাদের বাসা থেকে এরা ওরা আসতো তখন ওদের পিঠা বা সেমাই বের করে দিতাম। হ্যা আর নামাজ শেষ হওয়ার অপেক্ষায় থাকতাম।
বাবা নামাজ শেষে করে এসেই নাশতাটা সেরে প্রতি ঈদে আমাকে নিয়ে বের হতো। ঈদের দিন সকালে নাশতাটা করি সেটা হচ্ছে জীবনে যা খেয়েছি তার মধ্যে সবচেয়ে সেরা খাবার৷ সেটা ছিল মায়ের হাতের ভুনা খিচুড়ি ও গরুর মাংস ভুনা। আমি খুব অবাক হই, মা অন্য দিনেও ভুনা খিচুড়ি করতেন, কিন্তু সেটা মুখরোচক হলেও ঈদের দিনের মতো এমন অমৃত হতো না৷ আজও সেই ভুনা খিচুড়ি ও গরুর মাংসের স্বাদ ভুলতে পারিনি ৷ সাধারণত যেকোনো খাবার যতই মুখরোচক হয়, পেট ভরার সঙ্গে সঙ্গে মুখে স্বাদের আকর্ষণ হারিয়ে ফেলে। কিন্তু মায়ের হাতের খিচুড়ি ও গরুর মাংস ছিল সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম৷ আমার ৫ টা ফুপি ছিলো। এক এক করে সবার বাসায় আমাকে সাথে নিয়ে যেতো। এটা যেনো প্রতি ঈদে একটা নিয়ম হয়ে গিয়েছিলো। তারপর আমাকে নিয়ে সারাদিন ঘুরে বাসায় ফিরতো বাবা। অন্যান্য সময় থেকে ঈদের দিন বাবা আমাকে প্রচুর সময় দিতো। আর আমিও ঈদে অন্য কারো সাথে ঘুরার থেকে বাবার সাথেই ঘুরতে সব থেকে বেশি ভালোবাসতাম। এই জিনিসটাই এখন সব থেকে বেশি মিস করি। এখন আমার সময় নেই, বাবা বয়স বেড়েছে, আমিও বড় হয়ে গিয়েছি, ব্যস্ত হয়ে পড়েছি পড়াশোনা আর কর্মজীবন নিয়ে। এই ব্যস্ততায় ডুবে যাচ্ছে শৈশব, হারিয়ে যাচ্ছে আনন্দ। অতীত হচ্ছে স্মৃতিতে পরিণত।
মন্তব্য করুন
ঈদে সুন্দর ও কোমল ত্বক পেতে কয়েক দিন আগে থেকে যত্ন নিতে হবে।
ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়ে গেছে। উৎসবকে বরণ করে নিতে সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছে। উৎসবের দিন নিজেকে একটু সুন্দর দেখতে কে না চায়। ঈদের আগে বাড়তি কাজের চাপ থাকে।
আর সেই ক্লান্তির ছাপ পড়ে চেহারায়। এক দিন ত্বকের যত্ন নিলে তার সুফল সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যায় না। তাই ঈদের বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই নিয়মিত নিতে হবে ত্বকের যত্ন। তাহলে চোখের নিচে কালো দাগ, ত্বকে কালো ছোপ, মালিন্য কিছুটা হলেও কমে আসবে।
আপনার ত্বকের ধরন কেমন সেটির ওপর নির্ভর করে আপনার পরিচর্যার ধরনটি কেমন হবে।
তৈলাক্ত ত্বকের পরিচর্যা
তৈলাক্ত ত্বকের পরিচর্যায় একটু বাড়তি নজর দিতে হয়। শসা তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেশ ভালো কাজ করে। মুখের বাড়তি তেলতেলে ভাব কমাতে শসার রস বেশ কার্যকর।
শসার রস দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে পারেন। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে বেসন ও টক দই বেশ কার্যকর। এক চা চামচ বেসন, সামান্য টক দই ও সামান্য হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। মুখে লাগিয়ে আধাঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন। শুষ্ক ত্বকের পরিচর্যায় একটু বাড়তি নজর দিতে হয়।
কারণ এ ধরনের ত্বক সহজেই খসখসে হয়ে যায়, ফেটে যায়। শুষ্ক ত্বকে মূলত তেলগ্রন্থি কম থাকে। শুষ্ক ত্বকের জন্য সব সময় খুব ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হয়। শুষ্ক ত্বকে মধু, অ্যালোভেরা দারুণ কাজ করে। অ্যালোভেরা আর মধু একসঙ্গে মিশিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বক উজ্জ্বল ও নরম হয়।
স্বাভাবিক ত্বক
যাঁদের স্বাভাবিক ত্বক, তাঁরা বেশ ভাগ্যবান বলতে হবে। কারণ খুব বেশি বাড়তি যত্নের দরকার পড়ে না এই ত্বক সুন্দর রাখতে। এই ত্বক এমনিতেই মসৃণ ও সুন্দর থাকে। তাই ভালো মানের কোনো ফেসওয়াশ দিয়ে প্রতিদিন মুখ পরিষ্কার করুন। নিয়মমাফিক ত্বক ম্যাসাজ করতে পারেন। এতে ত্বকের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। স্বাভাবিক ত্বকে ঘরোয়া যেকোনো প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। মসুর ডাল আর হলুদ বেটে মুখে লাগিয়ে পরিষ্কার করতে পারেন। পেঁপে, মধু, আলু যেকোনো কিছুর প্যাক বানিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বক সুস্থ ও সুন্দর থাকবে।
ত্বকের যত্নে সাধারণ কিছু টিপস
যেহেতু এখন গরমকাল, তাই বাইরে বের হলে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ভালো মানের সানস্ক্রিন অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। বাইরে বের হলে অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করবেন। অতিরিক্ত ঘেমে গেলে টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলুন। বাইরে থেকে আসার পর সবার আগে মুখ পরিষ্কার করুন। ভালো ময়েশ্চারাইজার লাগান। সামনে যেহেতু ঈদ, তাই আগেভাগেই পেডিকিউর, মেনিকিউর করে রাখুন। শরীরের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ব্লিচ করতে পারেন। ত্বকের মরা কোষ দূর করতে নিয়মিত স্ক্রাব করুন। সর্বোপরি ত্বকের সৌন্দর্য ও সুস্থতার জন্য অনেক পানি খেতে হবে। আর হেলদি একটা ডায়েট প্ল্যান থাকতে হবে। ঈদের আগে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে দুটি প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
হলুদের প্যাক
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য হলুদ বেশ পরিচিত একটি নাম। এর ব্যবহার সেই প্রাচীনকাল থেকেই। হলুদ রোদে পোড়া দাগ দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এক চা চামচ হলুদের গুঁড়া, দুই চা চামচ লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
টমেটো প্যাক
টমেটোতে লাইকোপিন নামে এক ধরনের উপাদান রয়েছে, যা ত্বকের পিগমেনশন কমিয়ে উজ্জ্বলতা বাড়ায়। এটি ত্বকের ডেড সেল, রোদে পোড়া দাগ দূর করতে সাহায্য করে থাকে। টমেটো ও লেবুর রস একসঙ্গে ব্লেন্ড করে মুখে লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিশ্বে নারীদের সন্তান জন্মদানের ক্ষমতার হার কমতে শুরু করেছে।
সামনের দিনগুলোতে এই হার এতোটাই কমবে যে চলতি শতকের শেষ নাগাদ জনসংখ্যার র্নিধারিত
মাত্রা বজায় রাখার কঠিন হবে। অবশ্য বিশ্বের বেশিরভাগ জীবিত শিশুর জন্ম দরিদ্র দেশগুলোতে
হবে। বুধবার (২০ মার্চ) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্সের সিনিয়র গবেষক স্টেইন এমিল ভলসেট
এক বিবৃতিতে বলেন, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার জন্য বেশি সংবেদনশীল নিম্ন আয়ের
দেশগুলোতে কেন্দ্রীভূত হওয়ার সাথে এই প্রবণতাটি সারা বিশ্বে ‘শিশু বুম’ এবং ‘শিশু
হ্রাস’ বিভাজনের দিকে নিয়ে যাবে।
দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত সমীক্ষার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বিশ্বব্যাপী
২০৪টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে ১৫৫টিতে বা ৭৬ শতাংশে ২০৫০ সালের মধ্যে জনসংখ্যা প্রতিস্থাপনের
স্তরের নীচে উর্বরতার হার থাকবে। ২১০০ সালের মধ্যে এটি ১৯৮টি বা ৯৭ শতাংশে উন্নীত হবে।
চলতি শতাব্দি শেষ নাগাদ তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি শিশুর জন্ম নিম্ন
ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ঘটবে, যার অর্ধেকেরও বেশি আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে।
পরিসংখ্যানে বলছে, ১৯৫০ সালে যেখানে প্রতি নারীর শিশু জন্মদান ক্ষমতা
বা উর্বরতার হার ছিল ৫, সেখানে ২০২১ সালে এই সংখ্যা ২ দশমিক ২-এ নেমে এসেছে। ২০২১ সাল
নাগাদ ১১০টি দেশ ও অঞ্চলে প্রতি নারীর জন্য জনসংখ্যা প্রতিস্থাপনের হার ছিল ২ দশমিক
১টি শিশু।
গবেষণা দ্য ল্যানস গর্ভবতী শিশু জন্ম
মন্তব্য করুন
প্রাণিজগতের মধ্যে মানব মস্তিষ্কই সবচেয়ে জটিল। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের
মস্তিষ্কের আয়তন পুরুষের প্রায় ১৫০০ সিসি ও মহিলাদের প্রায় ১৩০০ সিসি এবং মানব ভ্রূণের
প্রাথমিক অবস্থায় মস্তিষ্ক প্রধান তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত থাকে। পূর্ণাঙ্গ মানুষে এটি
আরও জটিল রূপ ধারণ করে এবং বিভিন্ন অংশে বিভক্ত হয়।
কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ২০১৯ এর তথ্য মতে, মানুষের মস্তিষ্কের ধারণ
ক্ষমতা কমপক্ষে ২.৫ পেটাবাইট অথবা ১ মিলিয়ন বা ১০ লক্ষ গিগাবাইট।
দেখা যায়, সাধারণভাবে, মানুষ কিছু মানসিক ঘটনা-যেমন বিষণ্নতা এবং
স্পর্শের মাধ্যমে তাপমাত্রা শনাক্ত করার ক্ষমতা - অন্যদের তুলনায় বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা
করার মতো আরও বেশি কার্যকর..! যেমন গর্ব অনুভব করা বা প্রথম দর্শনে প্রেমের অভিজ্ঞতা।
তবে, দ্য ডেভিলস ডিকশনারি ইন, অ্যামব্রোস বীরস মনকে "মস্তিষ্কের
গোপন বিষয়টির একটি রহস্যময় রূপ" বলে বর্ণনা করেছেন, যা নিজেকে বুঝা "ইহা
নিজেকে চেনা, অর্থাত নিজেকে বুঝা ছাড়া আর কিছু না" বা বোঝার নিরর্থক প্রচেষ্টা
নিয়ে জড়িত।
বায়ার্সের ১৯১১ সালের প্রকাশের পরে দীর্ঘসময় ধরে আত্মবিজ্ঞান
সীমা সম্পর্কে প্রশ্ন উঠেছে। কোন এক কোরা ব্যবহারকারী জিজ্ঞেস করে: "মানব মস্তিষ্ক
কি নিজেকে বুঝতে যথেষ্ট বুদ্ধিমান?"
দ্য অনিয়ানের একটি বিদ্রুপমূলক শিরোনাম রিপোর্ট করেছে যে, মনোবিজ্ঞানটি
স্থগিত হয়েছে কারণ "ক্লান্ত গবেষকরা বলেছিলেন যে মন সম্ভবত নিজেকে অধ্যয়ন করতে
পারে না।"
কিন্তু ক্রমবর্ধমান প্রমাণ দেখায় যে মস্তিষ্কে মন আপনার মস্তিষ্কের
শারীরিক কর্মকাণ্ডের বাইরে চলে গেছে। তাই সতর্ক হোন। নিজেকে বুঝার চেষ্টা করুন। নিজেকে
নিজের আয়েত্বে রাখুন। আপনার জীবনটা আপনারই।
মনোবিজ্ঞানে মস্তিস্কের শনাক্ত করার জন্য অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের
মধ্যে গবেষণা, পর্যবেক্ষণ এবং ইমেজিং স্ক্যানিং সহ কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
MRI (Magnetic Resonance Imaging), CT scan (Computed Tomography), EEG
(Electroencephalogram), PET scan (Positron Emission Tomography) ইত্যাদি পদ্ধতিগুলি
ব্যবহার করা হয় মস্তিস্কের অবস্থান ও কার্যাবলী নির্ধারণে। এই স্ক্যানিং পদ্ধতিগুলি
মস্তিস্কের আনুমানিক অবস্থান এবং কার্যাবলীর উপর আলোকপাত করে এবং মস্তিস্কের বিভিন্ন
অংশের ক্ষমতা এবং সংযোগস্থলের কার্যক্ষমতা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে।
এছাড়াও মানুষ মস্তিস্কের কথা বা মনোবিজ্ঞানিক ধারণা শোনা বা বোঝা
সম্পর্কে সাধারণভাবে, মনোবিজ্ঞানের সম্পর্কে সাক্ষাৎকার করা, সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর
দেখা, মনোবিজ্ঞান নিয়ে পুস্তিকা পড়া, বিভিন্ন মাধ্যমে প্রশ্ন করা এবং মনোবিজ্ঞানে
সম্পর্কিত মাধ্যমের মাধ্যমে তথ্য প্রাপ্ত করা হতে পারে। আরও পেশাদার উপায়ে, যেমন মনোরোগ
বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক বা পরামর্শদাতা মানুষকে মস্তিস্কের বিষয়ে সাথে কাজ করা হতে পারে।
মস্তিস্ক মনোবিজ্ঞানে কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স প্রাণিজগত
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আমার দেখা চমৎকার একটা জুটি ছিল আলো-আকাশ। তাদের প্রেম ছিল সবার প্রেমের উদাহরণ। এত ভালোবাসার পরও তারা থাকতে পারেনি এক সাথে। হঠাৎ একদিন জানা গেল তাদের আর সম্পর্কে নেই। যারা এক সময় সবার প্রেমের উদাহরণ ছিলো, আজ তাদের বিচ্ছেদে দেখে সবাই একটু অবাক। তবে সম্পর্ক শেষ হওয়া নিয়ে কেউ কাউকে দোষারোপ করছে না। কিন্তু জীবন তো একা কাটানো সম্ভব নয়। তাই নতুন সঙ্গী এসে জোটে তাদের জীবনেও।