লিট ইনসাইড

এ কে আব্দুল মোমেনের গ্রন্থে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৭ অক্টোবর, ২০২২


Thumbnail এ কে আব্দুল মোমেনের গ্রন্থে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ

‘বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি নয়’ গ্রন্থটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের মননশীলতার অনবদ্য উপহার। এ গ্রন্থে ১৯টি প্রবন্ধ সন্নিবেশিত। গ্রন্থের উল্লেখযোগ্য দিক হলো ভূমিকাংশ, যেখানে লেখক ড. এ কে আব্দুল মোমেনের লেখনিতে প্রকাশ পেয়েছে প্রবন্ধসমূহের বিষয়বস্তু।তিনি লিখেছেন-‘নিজেদের স্বতন্ত্র পরিচয় ধরে রাখার স্বার্থেই বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার গল্প জানতে হবে, সগৌরবে বলতে হবে, ‘বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি নয়’। বর্তমানে বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় অর্থনীতি, a land of opportunity.’

এ গ্রন্থে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রয়েছে ৫টি প্রবন্ধ। এগুলো হলো-‘বঙ্গবন্ধুকে অনন্য সম্মান ইউনেস্কোর’, ‘সমৃদ্ধ বাংলাদেশ : বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা’, ‘বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ : ছোটো ছোটো ঘটনা’, ‘রাউন্ড টেবিল বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে স্মৃতি’, ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও তাঁর মানবিক দিকসমূহ আলোকিত করা হয়েছে যথাক্রমে- ‘দুস্থদের জন্য বিনামূল্যে ঘর : মানুষের প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন’, ‘ফ্লোরিডায় প্রধানমন্ত্রীর সাদামাটা দিনগুলো’, ‘শেখ হাসিনার উন্নয়নের পররাষ্ট্রনীতি’, ‘শেখ হাসিনার বৈশ্বিক নেতৃত্ব’, ‘জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান’ প্রভৃতি প্রবন্ধে।এছাড়াও বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে একটি এবং রূপপুরের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সমুদ্রবন্দর, উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি ও দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় অর্থনীতির তাত্ত্বিক কথা বিবৃতি হয়েছে আরো ৮টি প্রবন্ধে। ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণ রয়েছে একটি প্রবন্ধে।সূচিপত্রের দিকে দৃষ্টি দিলে পাঠকসমাজ সহজেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের লেখালেখিতে বৈচিত্র্য খুঁজে পাবেন।

আলোচ্য গ্রন্থের একাধিক প্রবন্ধে তথ্য-উপাত্তসহ ড. এ কে আব্দুল মোমেন বাংলাদেশের এগিয়ে চলার ইতিহাস তুলে ধরেছেন। বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার নেতৃত্ব, পরিকল্পনা ও সাধারণ মানুষের প্রচেষ্টায় অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ ঘটেছে বাংলাদেশের। মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, বেড়েছে ক্রয় ক্ষমতা। জীবনযাত্রার মান বেড়েছে আগের তুলনায় বহুগুণ।করোনা মহামারির সময়কে স্মরণে রেখে বলা চলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের দিক থেকে গত কয়েক বছরের বৃত্ত ভেঙে ৮ শতাংশের মাইলফলক অতিক্রম করেছে বাংলাদেশ।মাথাপিছু আয় ৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় তিন হাজার ডলারে।অর্থনৈতিক এই অগ্রগতি চমকে দিয়েছে বিশ্বকে।অনেক দেশের কাছে এ এক অনুকরণীয় মডেল। বিশ্ব নেতারাও উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে।বাংলাদেশের অর্থনীতির উদীয়মান এই অগ্রযাত্রাকে ‘স্টার অব ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্ট’বলেছেন বিশ্বের অনেক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা। নারীদের উন্নয়নে বাংলাদেশ যা করেছে, তা অন্য মুসলমান দেশের জন্য অকল্পনীয়; অবিশ্বাস্য।পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে বাংলাদেশকে টেনে সামনে নেওয়ার যে দুঃসাধ্য অভিযাত্রা, তার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা।তবে বাংলাদেশের আজকের অর্থনীতির ভিত পরিকল্পনা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।বঙ্গবন্ধুর যেমন তেমনি শেখ হাসিনারও মূল লক্ষ্য-গণমানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী এ কে আব্দুল মোমেন ‘বঙ্গবন্ধুকে অনন্য সম্মান ইউনেস্কোর’ প্রবন্ধে ‘দূরদর্শী চিন্তক’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর মহিমান্বিত রূপ তুলে ধরেছেন।বিশেষত ইউনেস্কো ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর নামে পুরস্কার প্রবর্তনে সম্মতি প্রদান করেছে যা শেখ হাসিনা সরকারের অনেক বড় সাফল্য।এছাড়া ইউনেস্কোর ৪০তম সাধারণ সভায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন ইউনেস্কোর ‘শতবার্ষিকী কর্মসূচি তালিকা’য় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আর তার আগে ২০১৭ সালে ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড আন্তর্জাতিক রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভুক্ত করে। ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ প্রবন্ধে ব্যক্তিগত স্মৃতিরেখা ধরে ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে এই লেখক বলেছেন- ‘সে ভাষণ ছিল সংগ্রামের প্রারম্ভিকা। ছিল মুক্তির সূচনা। জনযুদ্ধের নির্দেশক এ ভাষণ একটি জাতির উন্মুখ চেতনাকে স্বাধীনতার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছিল।এ কণ্ঠ কাঁপিয়ে দিয়েছিল সমগ্র দুনিয়ার মুক্তিকামী মানুষকেও। তাই বিশ্বের বড়ো বড়ো জননেতাকেও ছাড়িয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধু।’ একাত্তরে সমগ্র দেশবাসী এই ভাষণ শুনে শিহরিত হয়েছেন। সিদ্ধান্তে পৌঁছে গেছেন, বাংলাদেশ আর পাকিস্তানে গণ্ডিবদ্ধ নেই। আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতাপ্রাপ্তি ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র।

বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা লেখক যথার্থই লিখেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন ব্যাপক অগ্রগতির জন্য দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক পরিকল্পনার প্রবর্তক। তাঁর অর্থনৈতিক আদর্শ ও কৌশল ছিল-নিজস্ব সম্পদের ওপর দেশকে দাঁড় করানো। এক ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে তিনি ঘোষণা দিলেন, সোনার বাংলা গড়ে তোলার।’ সংবিধান প্রণয়ন থেকে শুরু করে প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা এবং দুঃখী ও নির্যাতিত শ্রেণির উন্নয়নে উদ্যোগ গ্রহণ সদ্য স্বাধীন দেশের জন্য আশির্বাদ হয়ে উঠেছিল।‘শ্মশান বাংলা’কে ‘সোনার বাংলা’ করে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন বলেই তিনি ‘বাকশাল’ গঠন করেন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন দূরদর্শী শাসক। তাঁর অল্প কদিনের শাসনামালেই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ।কিন্তু পঁচাত্তরের আগস্টের মর্মান্তিক করুণ ঘটনা আমাদের অগ্রগতিকে থামিয়ে দেয়।

বিভিন্ন প্রবন্ধে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত বক্তব্যের পরই কলামিস্ট ড. এ কে আব্দুল মোমেন রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার কাহিনি ও পররাষ্ট্রনীতিতে সরকারের অবদানের কথা লিখেছেন অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণে। বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে হেঁটে বাস্তব প্রয়োজনে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে উপরন্তু নানা প্রতিবন্ধকতা জয় করে জননেত্রী শেখ হাসিনা মানুষের মঙ্গলে কাজ করছেন নিরলসভাবে।তাঁর সরকারের সফল কূটনৈতিক তৎপরতায় ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত স্থলসীমানা ও সমুদ্রসীমা শান্তিপূর্ণভাবে মীমাংসা হয়েছে।‘বাংলাদেশে-ভারত সম্পর্ক সৌহার্দ্যপূর্ণ’ প্রবন্ধে লেখক বিস্তৃতভাবে পররাষ্ট্রনীতির সাফল্যের কথা লিখেছেন।তাঁর মতে, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশ্নটিকে গুরুত্ব দিয়ে অনুসরণ করছে দেশের পররাষ্ট্রনীতি। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য সুনির্দিষ্ট ভিশন নির্ধারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বিশ্বের কাতারে উন্নীত করার লক্ষ্যে রূপকল্প ২০৪১ ঘোষণা করেছেন তিনি। এর আলোকে কার্যকর ও যুগোপযোগী নীতি গ্রহণ ও কার্যক্রম পরিচালনা করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। লেখকের ভাষায়-‘সরকারের নীতি ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপসমূহ বিদেশি কূটনৈতিক মিশনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরাম, সভা ও সেমিনারে তুলে ধরছে। বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি অর্জন করেছে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্য। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মন্দা থাকা সত্ত্বেও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদারের কারণে বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বর্তমান সরকারের দক্ষ নেতৃত্বে বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগ, রপ্তানি ও বিদেশে কর্মসংস্থানের ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে চলেছে দিন দিন।’

‘শেখ হাসিনার উন্নয়নের পররাষ্ট্রনীতি’, ‘আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ’, ‘শেখ হাসিনার বৈশ্বিক নেতৃত্ব’ প্রভৃতি প্রবন্ধে লেখক এসব প্রসঙ্গ বিশদভাবে আলোচনা করেছেন।তিনি জানিয়েছেন, দেশ-বিদেশে বাংলাদেশি নাগরিকদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছে এদেশ।এজন্য জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনে এবং বিভিন্ন কমিটিসমূহের নির্বাচনে জয়লাভ করে নির্বাচিত হয়েছে। ‘আন্তর্জাতিক নির্বাচনে বাংলাদেশ সব সময়ই জয়লাভ করে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্রসমূহ বাংলাদেশের কথা ভেবে, বাংলাদেশ নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখে ওইসব নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারও করে নিয়েছে। বাংলাদেশের নেতা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহ তথা বিশ্ব নেতৃত্বের আস্থা এবং প্রগাঢ় ভরসারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে এসব আন্তর্জাতিক পর্যায়ের নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে।’

‘জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান’ প্রবন্ধে বিস্তৃত পরিসরে জাতিসংঘের সঙ্গে বাংলাদেশের কাজ করার অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন এ কে আব্দুল মোমেন।শেখ হাসিনা সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতিসংঘে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করে চলেছে।জাতিসংঘের বিভিন্ন ফান্ড যেমন ইউনিসেফ, ইউএনডিপি, ইউএন উইমেন, জাতিসংঘ জনসংখ্যা কমিশন ইত্যাদির চেয়ার হিসেবে অঙ্গ সংগঠনের কর্মপরিকল্পনায় ইস্তাম্বুল কর্মপরিকল্পনা অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অন্যতম ভূমিকা পালন করে।অন্যদিকে সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ সংক্রান্ত জাতিসংঘ কমিটির ফ্যাসিলিটেটর হিসেবে ২০১০ সালে বাংলাদেশ উক্ত কমিটির প্রস্তাব সদস্য রাষ্ট্রসমূহের মতৈক্যের অর্জনে সফল হয়।‘মানবপাচার প্রতিরোধ সংক্রান্ত জাতিসংঘের বন্ধু’রাষ্ট্রসমূহের সদস্য হিসেবে জাতিসংঘের প্রস্তাব পাসের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।প্রাবন্ধিকের ভাষায়-‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতিসংঘের ‘ফ্রেন্ডস অব মিডিয়েশন’, ‘ফ্রেন্ডস অব ইনএ্যলিনেবল্ রাইটস অব প্যালেস্টাইন’, ‘ফ্রেন্ডস অব নো ফুড ওয়েস্ট, নো ফুড লস’ ইত্যাদি ভূমিকায় মানবতার মর্যাদা রক্ষা এবং জাতিসংঘ সদনের লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতিসংঘে একটি অত্যন্ত সম্মানজনক সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে এবং বর্তমানে ‘উন্নয়নের রোল মডেল’ হিসেবে জাতিসংঘ কর্তৃক বাংলাদেশকেই চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।সর্বোচ্চ সৈন্য প্রেরণকারী দেশ হিসেবে যেমন তেমনি সক্ষমতার সঙ্গে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাকারী দেশ হিসেবেও বাংলাদেশের সুনাম আজ জাতিসংঘে ব্যাপক।জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার ক্ষেত্রে জাতিসংঘে অত্যন্ত সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রকৃতপক্ষে ‘বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি নয়’ গ্রন্থের ১৯টি প্রবন্ধে লেখক ড. এ কে আব্দুল মোমেন ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, ব্যাপক পাঠ ও নিবিড় পর্যবেক্ষণ দিয়ে সমৃদ্ধির বাংলাদেশের চিত্র অঙ্কন করেছেন। এখানে আছে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত স্মৃতির উদ্ভাস, আছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজের দেশের জন্য কাজ করার অভিজ্ঞতা, আছে শেখ হাসিনা সরকারের একজন মন্ত্রী হিসেবে নানা বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে এগিয়ে চলার গল্প। তাঁর বিশ্লেষণ ও বিবরণ সহজ-সরল, সাধারণ পাঠকের পক্ষে বোধগম্য। তিনি যখন বলেন, ‘শেখ হাসিনা কথা নয়, কাজে বিশ্বাসী’ তখন নিজেকেও যেন বলেন- ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী কথা নয়, কাজে বিশ্বাসী’। লেখাবাহুল্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব পরিমণ্ডলে শান্তি ও ন্যায্যতার মূর্ত প্রতীক হিসেবে নিজের দেশ ও জনগণকে তুলে ধরেছেন সবার ওপরে।তেমনি ড. এ কে আব্দুল মোমেন তাঁর লেখনির মাধ্যমে আমাদের কাছে এদেশ যে তলাবিহীন ঝুড়ি নয়-বরং পৃথিবীর কাছে উন্নয়নের রোল মডেল- শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও দূরদর্শিতা এবং অপরিসীম আত্মত্যাগ যার কেন্দ্রে সমুজ্জ্বল-তারই যৌক্তিক ভাষ্য সাবলীল গদ্যে তুলে ধরেছেন। গ্রন্থটির বহুল প্রচার প্রত্যাশা করছি।

(বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি নয়, এ কে আব্দুল মোমেন, বাংলাপ্রকাশ, ঢাকা, ২০২১, প্রচ্ছদ : ধ্রুব এষ, মূল্য : ৫৫০ টাকা।)


মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

কবিতা

প্রকাশ: ০২:০৩ পিএম, ২৩ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

বিশ্বের সেরা এবং আকর্ষণীয় পাচ মসজিদ

প্রকাশ: ১১:০২ এএম, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্বের এমন পাঁচটি মসজিদ সম্পর্কে জেনে নিন:


১. মসজিদুল হারাম, মক্কা, সৌদি আরব:

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষ দেখতে যায়, এমন মসজিদের তালিকায় সবার প্রথমে আছে পবিত্র নগরী মক্কার মসজিদুল হারাম। প্রতিবছর প্রায় ৮০ লাখ মানুষ এই মসজিদে যান। এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় মসজিদ। একসঙ্গে ১৫ লাখ মানুষ এখানে প্রবেশ করে ঘুরে দেখতে পারেন। মুসলমানদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র তিন স্থানের একটি এই মসজিদুল হারাম। মুসলমানদের কিবলা পবিত্র কাবাশরিফ এখানেই অবস্থিত।

তবে যে কেউ চাইলেই মসজিদুল হারামে প্রবেশ করতে পারেন না। অমুসলিমদের জন্য মক্কা নগরীতে প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ।


২. শেখ জায়েদ মসজিদ, আবুধাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাত:

২০০৭ সালে স্থাপিত এই মসজিদ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মসজিদগুলোর একটি। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ঝাড়বাতি ও সবচেয়ে বড় গালিচাও আছে এই মসজিদে।

আরব আমিরাতে বসবাসকারীদের বেশির ভাগই প্রবাসী, যাঁরা মূলত শ্রমজীবী হিসেবে বিভিন্ন দেশ থেকে সেখানে যান। এই বৈচিত্র্যময়তাই মসজিদটির নকশার মূল ভিত্তি। ব্রিটিশ, ইতালীয় ও আমিরাতি স্থপতিরা মিসর, মরক্কো, তুরস্ক, পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের মসজিদের নকশা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে শেখ জায়েদ মসজিদের নকশা এঁকেছেন।

প্রতিবছর মসজিদটি দেখতে প্রচুর দর্শনার্থী আসেন। শুধু ২০১৭ সালেই এসেছেন প্রায় ৫৮ লাখ দর্শনার্থী। নামাজের সময় ছাড়া অন্য সময় অমুসলিম দর্শনার্থীরাও মসজিদ ঘুরে দেখতে পারেন। তবে শুক্রবার অমুসলিম দর্শনার্থীদের এই মসজিদে প্রবেশ নিষেধ।


৩. আয়া সোফিয়া, ইস্তাম্বুল, তুরস্ক:

ইউরোপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় শহরগুলোর একটি তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুল। আর ইস্তাম্বুল বা গোটা ইউরোপের অন্যতম সুন্দর মসজিদ আয়া সোফিয়া। ৩৬০ খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দে স্থাপিত এ স্থাপনা শুরুতে মসজিদ ছিল না। ১৪৬৩ সালে সুলতান মেহমেদ এটিকে মসজিদ হিসেবে স্বীকৃতি দেন।

১৯৩৪ সালে এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে তৎকালীন তুরস্ক সরকার। কিন্তু ২০২০ সালে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এটিকে আবার নামাজ আদায়ের জন্য মুসল্লিদের কাছে উন্মুক্ত করে দেন। ১৯৮৫ সালে আয়া সোফিয়াকে বিশ্ব ঐতিহ্যর স্বীকৃতি দেয় ইউনেসকো।


৪. আল–আকসা মসজিদ, পূর্ব জেরুজালেম, ইসরায়েল:

মুসলিম স্থাপত্যশৈলীর শুরুর দিককার অন্যতম নিদর্শন জেরুজালেমের আল–আকসা মসজিদ।

বলা হয়ে থাকে, খোলাফায়ে রাশিদিনের অন্যতম খলিফা হজরত উমর (রা.)–র শাসনামলে ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হয় মসজিদটির নির্মাণকাজ। তবে বর্তমানে আল-আকসা বলতে পুরো চত্বরটাকেই বোঝানো হয়। ‘হারাম আল শরিফ’ নামে পরিচিত এই চত্বরের চার দেয়ালের মধ্যে আছে কিবলি মসজিদ, কুব্বাতুস সাখরা (ডোম অব দ্য রক) ও বুরাক মসজিদ। মূল আল–আকসা বা কিবলি মসজিদ হলো ধূসর সীসার পাতে আচ্ছাদিত গম্বুজওয়ালা একটি স্থাপনা। তবে পর্যটকের কাছে আল–আকসা নামে বেশি প্রসিদ্ধ সোনালি গম্বুজের স্থাপনা কুব্বাতুস সাখরা।

জেরুজালেমের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় উঠে আসে ১৯৮১ সালে। এখানে প্রায় চার লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন । তবে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত আল-আকসা মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। কোনো মুসল্লিকে তারা মসজিদ প্রাঙ্গণে ঢুকতে দিচ্ছে না। পবিত্র স্থানটির দায়িত্বে থাকা ইসলামিক ওয়াক্‌ফ বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।


৫. দ্বিতীয় হাসান মসজিদ, কাসাব্লাঙ্কা, মরক্কো:

আলজেরিয়ার জামা এল জাযের মসজিদের মিনার সবচেয়ে উঁচু, ৮৭০ ফুট। তারপরেই কাসাব্লাঙ্কার দ্বিতীয় হাসান মসজিদের মিনার, উচ্চতা ৬৮৯ ফুট। মরক্কোর বাদশাহ দ্বিতীয় হাসানের তত্ত্বাবধানে নির্মিত মসজিদটির নকশাকার ফরাসি স্থপতি মিশেল পিনসু।

আটলান্টিক মহাসাগরের একটি শৈলান্তরীপের মাথায় মসজিদটির অবস্থান। মেঝের একটা অংশ স্বচ্ছ কাচের বলে আটলান্টিকের নীল পানি দেখতে পান নামাজে যাওয়া মুসল্লিরা। দেয়ালে মার্বেলের চোখধাঁধানো কারুকাজ। ছাদ অপসারণযোগ্য বলে নামাজ পড়তে যাওয়া মুসল্লিরা রাতের আকাশও দেখতে পান।

দ্বিতীয় হাসান মসজিদের মিনার থেকে একটি লেজাররশ্মি মুসলমানদের কিবলা কাবাঘরের দিকে তাক করা। অনন্য স্থাপত্যশৈলীর জন্য জগৎ–খ্যাত এই মসজিদে একসঙ্গে ১ লাখ ৫ হাজার মুসল্লির নামাজ আদায় করার সুবিধা আছে।


মসজিদ   সেরা  


মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

মুখের ঠিকানা

প্রকাশ: ১২:১৬ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

স্পর্শে তুমি

প্রকাশ: ০৪:৪৫ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন