এক
মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফায় গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় ফ্রেডি দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার কয়েকটি দেশে তাণ্ডব চালিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে প্রবল বৃষ্টি ও মাটি ধসে
এখন পর্যন্ত মালউইয়ে ২০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ মোজাম্বিকেও।
মালাউইয়ের বাণিজ্যিক কেন্দ্র ব্লানটায়ারে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। যাদের মধ্যে ডজনখানেক শিশুও রয়েছে।
ত্রাণ সংস্থাগুলো সতর্কবার্তা দিয়ে জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়া এলাকাগুলোতে কলেরার প্রাদুর্ভাব আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। দেশটির সরকার দক্ষিণের ১০টি জেলায় দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির ঘোষণা দিয়েছে।
উদ্ধারকর্মীরা কাদায় চাপা পড়ে থাকা জীবিতদের খুঁজে বের করতে হিমশিম খাচ্ছেন। এ কাজের জন্য তারা বেলচাও ব্যবহার করছেন। রাস্তা ও সেতু ভেঙে পড়ায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে, ভারি বৃষ্টি ও প্রবল বাতাসের কারণে হেলিকপ্টারও ব্যবহার করা যাচ্ছে না উদ্ধার কাজের জন্য।
টানা ভারি বৃষ্টি ও প্রবল বাতাসের জেরে বেশ কিছু এলাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ে বিকল হয়ে পড়েছে মালাউইয়ের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। দেশের বেশিরভাগ অংশে দীর্ঘস্থায়ী ব্ল্যাকআউট হয়েছে।
পুলিশের মুখপাত্র পিটার কালায়া বিবিসিকে বলেন, ‘নদীগুলোর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে। পানিতে ভেসে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, জীব-জন্তুসহ সরঞ্জামাদি। ভবন ধসে পড়ছে।’
মেডিক্যাল দাতব্য সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, হাসপাতালে পৌঁছানোর পর ৪০ জনেরও বেশি শিশুকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
সরকারের দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, ২০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবারের ঘূর্ণিঝড়ে।
দেশটির সরকার হাজার হাজার অসহায় মানুষের জন্য সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসংঘের আবহাওয়াবিষয়ক সংস্থা বলছে, ফ্রেডি ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া থেকে উৎপত্তি হয়। এটি রেকর্ডে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় বলে মনে করা হয়। সমগ্র দক্ষিণ ভারত মহাসাগর অতিক্রম করে এই ঝড়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি মোজাম্বিকে পৌঁছানোর আগে, ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে মাদাগাস্কারে তাণ্ডব চালায় এই ঝড়।
ঘূর্ণিঝড় ফ্রেডির কারণে প্রতিবেশী দেশ মোজাম্বিকেও মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বজুড়ে গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড়কে আরও তীব্র করে তুলছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ইসরায়েল সামরিক অভ্যুত্থান বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু
মন্তব্য করুন
কেনিয়ায় কর বৃদ্ধি সংক্রান্ত আইনে সই করবেন না বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো। মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বুধবার এই বিতর্কিত অর্থ বিলে সই করতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
কেনিয়ায় বিতর্কিত এই কর বৃদ্ধি সংক্রান্ত আইন পাসের বিরোধিতায় বিক্ষোভে এরই মধ্যে পুলিশের গুলিতে অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন। গত কয়েকদিন ধরেই রাজধানী নাইরোবিসহ দেশটির বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ চলে আসছিল। তবে পরিস্থিতি মঙ্গলবার উত্তপ্ত হলে বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে গুলি ছোড়ে পুলিশ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিক্ষোভে অংশ নেওয়া হাজারো মানুষ পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপের পাশাপাশি ব্যারিকেড ভেঙে পার্লামেন্ট ভবনে ঢোকার চেষ্টা করেন। পার্লামেন্ট অধিবেশন চলাকালীন ভবনে হামলার চেষ্টা করেন তাঁরা। জোর করে পার্লামেন্টের ভেতর ঢুকে পড়েন অনেকে।
পুলিশের অভিযোগ, পার্লামেন্টের ভেতরে ভাঙচুর চালায় বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি ছোড়া হয়। পরে বিক্ষোভকারীদের পার্লামেন্ট থেকে সরিয়ে দিতে সমর্থ হয় পুলিশ।
নাইরোবির পাশাপাশি কেনিয়ার বিভিন্ন এলাকায় নতুন আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হচ্ছে। কারণ, এই আইনের মাধ্যমে কর বাড়ানো হয়েছে। আইন পাসের আগে গত সপ্তাহে কর বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রস্তাবটির কিছু বিষয়ে সংশোধন করা হয়। তবে সংশোধন নয়, কেনিয়ার সাধারণ জনগণ আইনটি পুরোপুরি বাতিল চায়।
এদিকে গত সপ্তাহে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ কেনিয়া সরকারের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো সেনাবাহিনীকে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার যেকোনো প্রচেষ্টা ঠেকানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে গত সপ্তাহের শেষ দিকে তিনি বিক্ষোভকারীদের সাথে কথা বলতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছিলেন।
মন্তব্য করুন
তীব্র তাপমাত্রার জেরে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে স্থাপিত সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কনের ছয় ফুট লম্বা মোমের মূর্তিটি গলতে শুরু করেছে।
এদিকে, ওয়াশিংটনের তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
গৃহযুদ্ধ-যুগের শরণার্থী শিবির ক্যাম্প বার্কার, যেখানে পূর্বে ক্রীতদাস এবং মুক্ত আফ্রিকান আমেরিকানদের রাখা হয়েছিল, সেখানে আব্রাহাম লিঙ্কনের মোমের মূর্তিটি স্থাপন করা ছিল।
বিবিসি জানিয়েছে, উচ্চ তাপমাত্রার কারণে তার মোমের মূর্তিটি গলে বিকৃত হয়ে গেছে ।
বিবিসি আরও জানিয়েছে, জ্বলন্ত উত্তাপের কারণে প্রথমে মূর্তির মাথা এবং পরে পা গলতে শুরু করে। কর্তৃপক্ষ এখন ভাস্কর্যটি মেরামত করছে।
উল্লেখ্য, মূর্তিটির দেখভাল করে অলাভজনক সংস্থা কালচারাল ডিসি।
সংস্থাটিও এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, ‘আসন্ন নির্বাচন কিংবা এই রেকর্ড মাত্রার উত্তাপই যাই হোক না কেন, আমরা সবাই শেষ!’
মোম মনুমেন্ট সিরিজের অংশ হিসেবে মূর্তিটি তৈরি করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাষ্কর্যশিল্পী স্যান্ডি উইলিয়ামস।
মন্তব্য করুন
উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ নিজ জন্মভূমি অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছেছেন। তাকে বহনকারী চার্টার্ড বিমানটি আজ বুধবার (২৬ জুন) অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় পৌঁছায়। অ্যাসাঞ্জকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে আসেন তার বাবা এবং স্ত্রী স্টেলা।
অ্যাসাঞ্জের কিছু সমর্থকও তাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত হয়েছে। অ্যাসাঞ্জের আগমনে তারা উল্লাস করেন।
মার্কিন ‘গুপ্তচরবৃত্তি’ আইন লঙ্ঘনের দায় স্বীকার করে নেওয়ার চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের সঙ্গে আপস রফায় পৌঁছানোর পর সোমবার যুক্তরাজ্যের একটি উচ্চ নিরাপত্তার কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জ।
এরপর চুক্তি অনুযায়ী মঙ্গলবার তিনি যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নর্দান মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জে যান। বুধবার মারিয়ানার রাজধানী সাইপ্যানের আদালত ভবন গিয়ে দোষ স্বীকারের পর অ্যাসাঞ্জের মামলা শেষ হয় এবং তিনি পুরোপুরি মুক্ত হন।
সাংবাদিকদেরকে এসময় তার আইনজীবী বলেন, “শেষ পর্যন্ত ১৪ বছরের আইনি লড়াই শেষে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ মুক্ত মানুষ হিসেবে বাড়ি ফিরতে পারছেন।”
তিন ঘণ্টা শুনানি শেষে আদালত থেকে বের হয়ে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরার উদ্দেশে একটি উড়োজাহাজে চেপে সাইপ্যান ছাড়েন অ্যাসাঞ্জ।
উইকিলিকস জানিয়েছে, মাল্টাভিত্তিক ভিস্তাজেটের একটি ভাড়া করা উড়োজাহাজে করে তিনি দেশে ফিরেছেন। অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় সময় ৬টা ৪১ মিনিটের দিকে তিনি ক্যানবেরায় নামেন।
এরমাধ্যমে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাসাঞ্জ বহু বছর পর মুক্ত জীবনে ফিরলেন। ৫ বছর ধরে যুক্তরাজ্যের বেলমার্শ কারাগারে বন্দি ছিলেন তিনি। এর আগে আরও ৭ বছর যুক্তরাজ্যে অবস্থিত ইকুয়েডরের দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে অবস্থান করছিলেন অ্যাসাঞ্জ।
যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে বহু বছর ধরে আইনি লড়াই করেছেন অ্যাসাঞ্জ। যুক্তরাজ্যের পুলিশ ৫২ বছর বয়সী অ্যাসাঞ্জকে ২০১৯ সালের গ্রেপ্তার করেছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিষয়ক গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং প্রকাশের ষড়যন্ত্রে জড়িত।
অ্যাসাঞ্জ কী কী তথ্য ফাঁস করেছিলেন?
অ্যাসাঞ্জের প্রতিষ্ঠিত ওয়েবসাইট উইকিলিকসে অনেক গোপন অথবা বিধিনিষেধ দেওয়া প্রতিবেদন ফাঁস করা হয়েছে। যেগুলোর বেশিরভাগই যুদ্ধ, নজরদারি এবং দুর্নীতি বিষয়ক।
২০১০ সালে উইকিলিকস যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারের ভিডিও প্রকাশ করে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, ইরাকের রাজধানী বাগদাদে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে সাধারণ বেসামরিক মানুষকে হত্যা করছে মার্কিন সেনারা।
এছাড়া উইকিলিকস যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সাবেক বিশ্লেষক চেলসি ম্যানিংয়ের দেওয়া হাজার হাজার গোপন নথি ফাঁস করে। এসব নথি থেকে জানা যায় আফগানিস্তান যুদ্ধে কয়েক হাজার সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে মার্কিন সেনারা।
এগুলো ফাঁস করার পর পুরো বিশ্বে আলোড়ন তৈরি হয়। অন্যান্য দেশগুলোতে যুদ্ধের নামে গিয়ে মার্কিন সেনারা কী কী করছে সেগুলো নিয়ে ভাবা শুরু করে বিশ্বের বাকি দেশগুলো। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে এগুলো ফাঁস করার কারণে মার্কিন সেনাদের জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে তিনি তাদের সেনাবাহিনীর স্পর্শকাতর ডাটাবেজে ঢোকার চেষ্টা করেছেন। বিচারের মুখোমুখি করতে দেশটি তার বিরুদ্ধে ১৮টি অভিযোগ আনে।
তবে অ্যাসাঞ্জ সবসময় দাবি করেছেন মার্কিন সেনারা যেসব অপরাধ করেছে সেগুলো তিনি ফাঁস করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ উইকিলিকস অস্ট্রেলিয়া
মন্তব্য করুন
উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ নিজ জন্মভূমি অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছেছেন। তাকে বহনকারী চার্টার্ড বিমানটি আজ বুধবার (২৬ জুন) অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় পৌঁছায়। অ্যাসাঞ্জকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে আসেন তার বাবা এবং স্ত্রী স্টেলা। অ্যাসাঞ্জের কিছু সমর্থকও তাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত হয়েছে। অ্যাসাঞ্জের আগমনে তারা উল্লাস করেন।