ইনসাইড বাংলাদেশ

উপকূলীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের নির্দেশ

প্রকাশ: ০৭:২১ পিএম, ২৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। ইতোমধ্যেই যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে উপকূলীয় অঞ্চলে। এছাড়া ঝড়টি রোববার মধ্যরাতে চূড়ান্ত দেশের উপকূলের প্রায় সব জেলায় চূড়ান্ত আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান।

আর এই ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষতি থেকে উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের রক্ষায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণিকার্যক্রম বন্ধ রাখতে হলে স্থানীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে সেটিও করতে বলা হয়েছে।

রোববার (২৬ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় রেমালের পরিস্থিতিতে জেলাগুলোর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি পরিস্থিতি বিবেচনা করে ওই সব এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো ব্যবহার এবং শ্রেণিকার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশ অনুযায়ী তারা এ ব্যবস্থা নেবেন।

এতে বলা হয়েছে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমাল দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় উল্লিখিত নির্দেশনা দেওয়া হলো।

অন্যদিকে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আক্তারুন্নাহার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমাল সন্ধ্যার পর দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে।

এ অবস্থায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি পরিস্থিতি বিবেচনা করে ওই সব এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো ব্যবহার ও শ্রেণিকার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এছাড়া ইতোপূর্বে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ডিসেম্বর-২০২১ এ জারি করা স্ট্যান্ডিং অপারেটিং প্রসিডিওরের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যথাযথ দায়িত্ব পালন করবেন।

এছাড়া রেমাল আঘাত আনতে পারে এমন এলাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করে রাখা হয়েছে। তাই এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলা থাকবে, তবে ক্লাস হবে না।


শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান   আশ্রয়কেন্দ্র   ঘূর্ণিঝড়   রেমাল   দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বেনজীর আহমেদের গুলশানের সেই ৪ ফ্ল্যাট জব্দ

প্রকাশ: ০৯:৫০ পিএম, ০৮ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জিশান মীর্জা ও তার ছোট মেয়ের নামে গুলশানের র‍্যাংকন আইকন টাওয়ারের ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটটি ক্রোক করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর আগে গতকাল রোববার তাঁর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বাংলো বাড়ি ক্রোক করা হয়। সোমবার (৮ জুলাই) দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

দুদক সচিব বলেন, বেনজীর আহমেদের গুলশানের চারটি ফ্ল্যাটের সমন্বয়ে যে ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট রয়েছে, সেটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আমাদের একজন কর্মকর্তাকে রিসিভার নিয়োগ করা হয়েছে। আজ ঢাকা জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ও দুদকের একজন পরিচালকসহ একটি টিম বাড়িটির সবকিছুর ইনভেনটরি (তালিকা) করে ডুপ্লেক্সটি সিলগালা করে। পরে সেগুলো তাঁরা কমিশনে জমা দেবেন।

দুদকের সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক ও গুলশানে বেনজীরের ফ্ল্যাটের রিসিভার মঞ্জুর মোর্শেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আদালত আমাদের রিসিভার নিয়োগ দিয়েছেন, সেই অনুযায়ী ফ্ল্যাটের সব মালামাল বুঝে নিয়েছি। ফ্ল্যাটে যা যা পাওয়া গেছে সব জিনিসপত্রের ইভেনটরি করেছি, সেই তালিকা কমিশনে উপস্থাপন করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ক্রোক করা এসব সম্পত্তির সঠিক ব্যবস্থাপনা জন্য আমাদের নিয়োগ করা হয়েছে। যদি ফ্ল্যাটগুলো ভাড়া দেওয়া যায় তাহলে অর্জিত অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হবে।’

গত ৩০ জুন বেনজীর আহমেদের স্ত্রী–কন্যাদের নামে থাকা গুলশানের ৪টি ফ্ল্যাটের তালা খুলতে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের আবেদন করে দুদক। সংস্থাটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন। এর আগে ৬ জুন ফ্ল্যাট চারটি ক্রোক করার আদেশ দেন মহানগর বিশেষ জজ আদালত।

তবে দুদকের দুই দফা তলবে বেনজীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা সাড়া দেয়নি। তৃতীয়বার তলবের আইনি সুযোগ না থাকায় গত ২ জুলাই বেনজীর আহমেদ, তাঁর স্ত্রী জিশান মীর্জা, বড় কন্যা ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর ও মেজো কন্যা তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে থাকা স্থাবর–অস্থাবর সম্পদের তথ্য চেয়ে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ দেয় সংস্থাটি।

দুদকের তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য দুই দফা সুযোগ থাকে অভিযুক্তদের কাছে। প্রথম দফায় ২১ কর্মদিবস। এই সময়ে সম্পদ বিবরণী দাখিলে ব্যর্থ হলে আরও ১৫ দিন সময় দেওয়ার বিধান রয়েছে। তবে দ্বিতীয় দফা সম্পদ বিবরণী দাখিলে ব্যর্থ হলে অভিযুক্তদের ‘নন সাবমিশন’ ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলা করতে পারবে।

বেনজীর আহমেদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি গণমাধ্যমে এলে গত ১৮ এপ্রিল দুদক তাঁর অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। একই সঙ্গে তাঁর অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে তিন সদস্যের একটি টিম গঠন করে। টিমে নেতৃত্বে রয়েছেন দুদকের উপপরিচালক হাফিজুল ইসলাম।

ইতিমধ্যে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বেনজীর আহমেদ, স্ত্রী জিশান মীর্জা ও তিন মেয়ের নামে থাকা গোপালগঞ্জের সাভানা ইকো রিসোর্ট, বান্দরবান ও সেন্টমার্টিনসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ১১৩টি দলিলে তাঁদের নামে থাকা ৭০২ বিঘা জমি, ৩৩টি ব্যাংক হিসাব ও ২৫টি কোম্পানির বিনিয়োগ ক্রোক ও জব্দ করেছে দুদক।


দুদক   দুর্নীতি দমন কমিশন   বেনজীর আহমেদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কোটা আন্দোলন: অবরোধ থাকছে না কাল, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন চলবে

প্রকাশ: ০৯:২২ পিএম, ০৮ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সরকারি চাকরিতেকোটা বাতিলের দাবিতে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে দুদিন ধরে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। তাদের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ দ্বিতীয় দিনের মতো ‘বাংলা ব্লকেড’ পালন করেছে তারা।

তবে এরই মধ্যেই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তারা। আগামীকাল সড়ক অবরোধ থাকছে না, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও ছাত্র ধর্মঘট চলবে বলে আজকের কর্মসূচি থেকে জানানো হয়েছে।

সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় শাহবাগ মোড় থেকে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে'র অন্যতম সংগঠক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম।

তিনি বলেন, 'আগামীকাল সারাদেশে, সারা ঢাকা শহরে যত শিক্ষার্থী প্রতিনিধি রয়েছে তাদের সাথে গণসংযোগ করব। বুধবার কঠোর কর্মসূচি দিবো।'

আগামীকাল বিকেলে একটি প্রেস ব্রিফিং করে বুধবারের কর্মসূচি জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, 'আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, এই যে অর্ধবেলা করে অবরোধ দিচ্ছি এখানেই আমরা থেমে থাকব না। আমরা সর্বাত্মক ব্লকেডের পরিকল্পনা করছি। আগামীকাল আমাদের চলমান কর্মসূচি ছাত্র ধর্মঘট ও ক্লাস পরীক্ষা বর্জন চলবে। আমরা ব্লকেড উইথ্রো করি নাই। সর্বাত্মক ব্লকেডের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।'

সারাদেশে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্লকেডের পরিকল্পনার প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে, বিকেল ৪টার দিকে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সায়েন্সল্যাব ও শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা।

পরে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা শহরের প্রধান সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল রোববারও শাহবাগসহ ঢাকার বিভিন্ন মোড় অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা।


শাহবাগ   কোটা আন্দোলন   ছাত্র আন্দোলন   কোটাবিরোধী আন্দোলন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

আন্দোলন নয়, আইনি পথে সমাধান খুঁজুন: আইনমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৯:১৭ পিএম, ০৮ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, চাকরি প্রত্যাশী ও শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নেমে আন্দোলন করা উচিত নয়। আন্দোলনকারীরা যদি একজন আইনজীবী নিয়োগ দিয়ে আদালতে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন, তাহলে আদালত তাদের ন্যায্য রায় দেবেন। সোমবার (৮ জুলাই) বিকেলে গণমাধ্যমে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ পাঁচজন মন্ত্রী রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, তথ্যপ্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ আরাফাত ও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন্নাহার চাপা। বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী জানান, কোটাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ হয়েছে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, "কোটা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ বিষয়ে বলেছেন। আমার বক্তব্য হচ্ছে, আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি, হাইকোর্টে এই মামলার শুনানির সময় কোটার বিপক্ষে যারা ছিলেন তাদের কোনো আইনজীবী ছিলেন না। তারা আদালতে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেননি। এখন মামলাটি আপিল বিভাগে গেছে। আমি বিশ্বাস করি, যদি আপিল বিভাগে একজন আইনজীবী রেখে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়, তাহলে আদালত একটি ন্যায্য রায় দেবেন।"

তিনি আরও বলেন, "যারা এই আন্দোলন করছেন এটি কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়, এটি আদালতের বিষয়। অবরোধ করে বা চিৎকার করে কোনো লাভ নেই। বক্তব্য দিতে হবে আদালতে গিয়ে। আমার মনে হয়, আদালতে যদি এটি উপস্থাপন করা হয়, তাহলে নিশ্চয়ই একটি যৌক্তিক রায় পাওয়া যাবে।"


কোটা আন্দোলন   আইনমন্ত্রি   আদালত  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কোটা বাতিলের দাবিতে উত্তাল দেশ, দিনভর সড়ক অবরোধে জনদুর্ভোগ চরমে

প্রকাশ: ০৮:১৫ পিএম, ০৮ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে পূর্ব ঘোষিত ‘বাংলা ব্লকেড’ এর আওতায় টানা দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার পর শাহবাগ, নীলক্ষেত, বাংলামোটর, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেট, সায়েন্স ল্যাব মোড়, গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট, চানখাঁরপুলসহ বিভিন্ন এলাকায় যান চলাচল বন্ধ করে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা।

আর এতে করে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া আর কোনও পরিবহন চলতে না দেয়ায় কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে ঢাকা। পরে প্রায় ৪ ঘন্টা অবরোধের পর অবশেষে রাত ৮টার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক ছাড়লে আবারও যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এক নজরে সারাদেশব্যাপী দ্বিতীয় দিনের কোটাবিরোধী আন্দোলনের আদ্যোপান্ত-

ঢাবি
বিকেল পৌনে ৫টার দিকে একদল শিক্ষার্থী কারওয়ান বাজার হয়ে মিছিল নিয়ে ফার্মগেট অভিমুখে গেলে কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় অবরোধে আটকে পড়া অনেককে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। এতে রাজধানী ঢাকার বড় এক অংশ কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে প্রায় তিন ঘন্টা পর শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে মিছিল বের করেন তার। পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শাহবাগ মোড়ে আসে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে। মিছিলের সামনের অংশটি সড়ক অবরোধ করতে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ও বাংলামোটর মোড়ের দিকে চলে যায়। পেছনের অংশটি শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয়। এসময় শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনকারীদের তাদের উত্থাপিত দাবির পক্ষে নানা স্লোগান ও বক্তব্য দিতে দেখা যায়।

এদিকে অবরোধের কারণে শাহবাগ মোড় দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যানজট তৈরি হয়েছে। সড়কের এক পাশে পুলিশ অবস্থান করছে। তবে তারা আন্দোলনকারীদের বাধা দেয়নি।

ঢাকা কলেজ ও ইডেন কলেজ
বেলা ৩টা ২০ মিনিটের দিকে ঢাকা কলেজের মূল ফটক থেকে মিছিল শুরু করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। প্রথমে তারা মিছিল নিয়ে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় পর্যন্ত যান। পরে মিছিলটি নীলক্ষেত মোড় হয়ে ইডেন কলেজের সামনে পৌঁছালে মিছিলে ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন।

এরপর বিকেল পৌনে ৪টার দিকে মিছিলটি আবার ঢাকা কলেজের দিকে চলে আসে। বিকেল ৪টার দিকে মিছিলটি সায়েন্স ল্যাব মোড়ে পৌঁছলে সড়ক অবরোধ করে বসেন শিক্ষার্থীরা।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
আগারগাঁওয়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিকেল সোয়া ৪টার দিকে সড়ক অবরোধ করে। এ তথ্যটি শেরেবাংলা থানা পুলিশ জানিয়েছে। অন্যদিকে, রামপুরা ও বাড্ডায়ও সড়ক অবরোধ শুরু হয়েছে বলে শাহবাগের সমাবেশ থেকে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন। এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সড়ক আটকে দিলে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সড়কে থাকা গাড়িগুলোকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দফা দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলন করেন। এর আগে গতকাল রোববার থেকে ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে আজও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও ছাত্র ধর্মঘট পালন করছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ও শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনে শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ে।

জবি, কবি নজরুল কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজ
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের পর এবার কোটা আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে সকল ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। গতকাল রবিবার (৭ জুলাই) 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন' জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেইসবুক গ্রুপ থেকে এতথ্য জানা গেছে।

এছাড়া আজ তারা জিরো পয়েন্ট, চানখাঁরপুলসহ গুলিস্তান হয়ে বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঁঠালতলা চত্বর থেকে বিকেল ৩.১৫ মিনিটে এ সমাবেশ শুরু করেন জবি শিক্ষার্থীরা। আজকের আন্দোলনে জবির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কবি নজরুল কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা।

এদিন, দুপুর ২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অনেকে হাতে জাতীয় পতাকা এবং গায়ে সাদা কাপড় জড়িয়ে সমাবেশে অংশ নেন। এসময় শিক্ষার্থীরা ‘কোটা না মেধা? মেধা মেধা, সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে, মেধাবীরা আসছে রাজপথ কাঁপছে, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই, মেধাবীরা ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই, আপস না সংগ্রাম? সংগ্রাম সংগ্রাম’- সহ নানা কোটাবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকেই বিভিন্ন ব্যাচের শ্রেণি প্রতিনিধিরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬ বিভাগের মধ্যে ৩৩ বিভাগ ও দুটি ইনস্টিটিউটের ১২৯টি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষকরা তাদের আন্দোলন শেষ করে ক্লাসে ফিরলেও আজ থেকে আমরা কেউ ক্লাসে ফিরবে না এবং কোনোরকম একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নিবে না । জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইংরেজি, বাংলা, প্রাণিবিদ্যা, রসায়ন, গনিত, ইসলামিক স্টাডিজ ও ইতিহাস বিভাগের চলমান সকল ব্যাচ কোটা আন্দোনের সাথে একাত্মতা পোষণ করে সকল ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন।

এছাড়া- আইন, চারুকলা, নাট্যকলা, পদার্থবিজ্ঞান, পরিসংখ্যান, কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং,  শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট,  গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, দর্শন, অর্থনীতি, পরিসংখ্যান, লোকপ্রশাসন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা, ফিন্যান্স, মার্কেটিং, সমাজবিজ্ঞান, নৃবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, উদ্ভিদবিজ্ঞান, ফিল্ম ও টেলিভিশন, সমাজকর্ম, প্রাণিবিদ্যা, ফার্মেসী, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান, অনুজীব বিজ্ঞানসহ  একাধিক বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরিক্ষা বর্জনের তথ্য মিলেছে।

জাবি
সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে সকল প্রকার 'কোটা বাতিল' করে আইন পাশের এক দফা এক দাবিতে সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনের মতো ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (৮ জুলাই) বিকাল ৩ টায় 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের' ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে সমবেত হতে শুরু করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা৷ পরে এক দফা দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচী শুরু করেন তারা।

আন্দোলনকারীরা জানান, একই সাথে নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেব সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি চলবে। চার দফা দাবিতে টানা আন্দোলনের পর 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচির পর সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে সকল প্রকার 'কোটা বাতিল' করে আইন পাশের এক দফা দাবিতে মাঠে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।

বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব বলেন, সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরা আমাদের ক্লাস বর্জন কর্মসূচিতে সাড়া দিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা ভালো সাড়া দিয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছেড়ে যাব না।

সাভারের কাঠগড়া এলাকায় ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস মসজিদের ইমাম মুনির মাহমুদ বলেন, সাভারে একটা কাজে এসেছিলাম। ফেরার পথে শিক্ষার্থীদের অবরোধের মধ্যে পড়লাম। পত্রপত্রিকায় জানতে পেরেছি কোটাব্যবস্থার প্রতিবাদে ছাত্ররা মাঠে নেমেছে। মন থেকে এ আন্দোলনের প্রতি আমার সমর্থন রয়েছে৷ চলাচলের কষ্ট হলেও আমি তা মেনে নিয়েছি৷ ছাত্রদের দাবি আদায় হোক।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম ইমন বলেন, আমাদের এ আন্দোলনে সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরা সমর্থন জানিয়েছেন। বৈষম্যমূলক এ কোটা প্রথার অবসান না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন চলমান থাকবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছেড়ে যাব না। আজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত আমাদের এ অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

কুবি
২০১৮ সালে কোটা বাতিল করে দেওয়া প্রজ্ঞাপন হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষণার প্রতিবাদে ও প্রজ্ঞাপন পুনর্বহালের দাবিতে তৃতীয় দিনের মত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এই অবরোধের ফলে সড়কের দুইপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। সোমবার (৮ জুলাই) দুপুর সাড়ে তিনটায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এসে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সড়ক থেকে সরে যায় শিক্ষার্থীরা।

তাদের আজকের আন্দোলনের একাত্মতা পোষণ করে অংশ নিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজ, জেলার বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী সাদা কাপড় গায়ে জড়িয়ে  গাছে ঝুলে থাকার ভঙ্গি করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তার গাঁয়ের সাদা কাপড়ে 'মেধা থাকার পরও কোটা পদ্ধতি আমাকে বাঁচতে দেয়নি', ' তোর ছেলেকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে মা' লেখা রয়েছে। এসব উপস্থিত আন্দোলনকারীরা 'লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই, আমার সোনার বাংলায়, বৈষ্যমের ঠাই নাই, লেগে ছেরে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে, একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার, সারা বাংলা খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে ইত্যাদি বলে স্লোগান দেন।

আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ফরহাদ কাউসার বলেন, 'আমরা সকল জায়গা থেকে অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতির বাতিল চাই। যতক্ষন পর্যন্ত কোটা পদ্ধতি বাতিল হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।'

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল মালেক আকাশ বলেন, 'কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে আমরা ত্রিরিয় দিনের মত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছি। বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি বাতিল করতে হবে। এটাই আমাদের একমাত্র দাবি। বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি বাতিল করে মেধাবীদের মুক্তি দেন। আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন এভাবেই আন্দোলন চালিয়ে যাব।'
 
এই বিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও আন্দোলন সমন্বয়কদের অন্যতম মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন বলেন, "সারা বাংলাদেশের সাথে সমন্বয় করে আজ তৃতীয় দিনের মতো আমাদের কুমিল্লার কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল ও কোটাপদ্ধতি সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। আগামীতে আরও কঠোর কর্মসূচি আসতে পারে।'
 
উল্লেখ্য, এর আগে গত ৪ ও ৭ জুলাই ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক যথাক্রমে তিন ঘন্টা ও চার ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা।

বাকৃবি
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ অবরোধ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। এর ফলে দুপুরের পর থেকে এই রুটে রেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে।

সোমবার (৮ জুলাই) দুপুর দেড়টায় ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাকৃবির জব্বারের মোড় সংলগ্ন এলাকায় শিক্ষার্থীরা ঢাকা থেকে জামালপুরগামী জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি অবরোধ করেন।

এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বাকৃবির কেআর মার্কেটসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও ভবন ঘুরে জব্বারের মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা এক দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

এক দফা কর্মসূচি সম্পর্কে তারা বলেন, সরকারি চাকরির সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে নূন্যতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ দেশের ছাত্র সমাজ দেশব্যাপী ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি চালিয়ে যাবে বলে জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা আরও বলেন, কোটা সংস্কার করে মেধাবীদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

রাবি-রুয়েট
চলমান কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে সারাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো এবার বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের সাথে রুয়েট শিক্ষার্থীরাও তাদের যোগদানের কথা জানান।

সোমবার (৮ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে বিভিন্ন প্লেকার্ড হাতে নিয়ে জড়ো হতে দেখা যায় তাদের। পরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের তালাইমারি এলাকা হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফলকে অবস্থান নেন তারা।

এসময় 'দফা এক দাবি এক, কোটা নট কাম-ব্যাক', 'জেগেছে রে জেগেছে রূয়েটবাসী জেগেছে', 'সংবিধান পরিপন্থী কোটা ব্যবস্থা নিপাত যাক', 'স্বাধীন বাংলায় বৈষম্যের ঠাই নাই' , 'হয় যদি কোটার চাষ পড়বো কেন বারো মাস', 'আঠারোর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার' , 'সারা বাংলায় খরব দে কোটা প্রথার কবর দে' এমনসব স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।

আন্দোলনে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ ইমন গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা মূলত কোটা সংস্কারের দাবিতে এখানে এসেছি। বিভিন্ন রকম কোটার কারণে আমাদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে কোটার প্রভাব অনেক বেশি।

তিনি বলেন, আমরা কোটা বাতিল চায় না কিন্তু চাই এটা সংস্কার করা হোক। ১০% মুক্তিযোদ্ধা আর বাকি ১০% অন্যান্য কোটা থাকলে ভালো হয়। যাদের আসলেই প্রয়োজন শুধুমাত্র তাদেরকেই কোটার আওতায় আনা উচিত। প্রতিবন্ধী বা উপজাতিদের কোটা দেওয়া যায়।

এর আগে একই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রেললাইন অবরোধের দিনের কর্মসূচী করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরাও। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ফ্লাইওভারসহ বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে এ কর্মসূচি করে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না। বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্য মানি না। দাবি মানা না হলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।

কোটা পদ্ধতি সংস্কার আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয় পরিষদের সদস্য মেহেদী সজীব বলেন, আজকে আমরা রেললাইন অপরাধ করেছি। আমাদের লাগাতারে কর্মসূচি চলবে। যতদিন পর্যন্ত আমাদের দাবি আদায় না হবে।

সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিক ভোগের সুযোগ এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে৷ আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারও শিক্ষার্থী অংশ নেন।

বেরোবি
সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল ও কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার (৮ জুলাই) রংপুর নগরের মডার্ন মোড়ে তাঁরা দুপুর ১২টা থেকে দেড় ঘণ্টা এই কর্মসূচি পালন করেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘চাকরিতে কোটা, মানি না, মানব না’, ‘কোটাপ্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’, ‘মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।

এদিন দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টা ৩০ পর্যন্ত এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা কোটাপদ্ধতি সংস্কার করা না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দেন।

এদিকে অবরোধের ফলে মহাসড়কে সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে সড়কে দেখা যায় তীব্র যানজট। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে কারমাইকেল কলেজ, রংপুর সরকারি কলজেসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে নগরের মডার্ন মোড়ে এসে রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা,১০ শতাংশ জেলা কোটা এবং ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটা ও ১ শতাংশ পদ প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের দিয়ে পূরণের নিয়ম চালু হয়।

তবে সেই বছর কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর চাকরিতে পুরো কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে। এবং এনিয়ে একই বছর ৪ অক্টোবর কোটা বাতিল বিষয়ক একটি পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

২০২১ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। গত ৫ জুন এই রিটের রায়ে পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। যার প্রেক্ষিতে ১ জুলাই থেকে টানা আন্দোলন করছে শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশিরা।


কোটা আন্দোলন   অবরোধ   বাংলা ব্লকেড  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

পিএসসির প্রশ্নফাঁস: গাড়িচালক আবেদ আলীসহ ১৭ জন গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৮ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) পরীক্ষাসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে আলোচনায় আসা সরকারী কর্মকমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যানের গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছে– সৈয়দ আবেদ আলীর ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম, পিএসসির দুই উপপরিচালক, একজন সহকারী পরিচালক, দুই অফিস সহায়কও।

রোববার (৭ জুলাই) রাতে বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর সাঁড়াশি অভিযানে নামে সিআইডি। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে তাদের আজ সোমবার (৮ জুলাই) গ্রেপ্তার করা হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।

সৈয়দ আবেদ আলীর গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলায়। আবেদ আলী ও তার ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়ামের ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে দেখা যায়– রাজনৈতিক, সামাজিক কর্মকাণ্ড, দান খয়রাত আর পরহেজগারির নানা খবর।

সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে তার বিপুল বিত্তবৈভবের খবর। ঢাকায় ও গ্রামে একাধিক বাড়ি, গরুর খামার ও সম্পদের তথ্য মিলেছে তারই ব্যক্তিগত সামাজিকমাধ্যমে। যদিও ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে বিত্তবৈভব বানিয়েছেন বলে দাবি তার।

প্রসঙ্গত, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের অনুসন্ধানে উঠে আসে– পিএসসির ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্নফাঁসে জড়িত। অভিযুক্ত কর্মচারীদের একজন পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী। প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য সামনে আসার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় তার বিপুল সম্পদের তথ্য তুলে ধরছেন মানুষ।


আবেদ আলী   বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের   বিসিএস  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন