বিংশ শতাব্দীর ত্রিশের দশকটি বাংলা সংস্কৃতির ভবিষ্যত ধারক-বাহকদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই দশকেই জন্মগ্রহণ করেন বাংলা চলচ্চিত্রের তিন মহারথী।
১৯২১ সালে জন্মগ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়, ১৯২৩ সালে মৃণাল সেন এবং ১৯২৫ সালে ঋত্বিক ঘটক।
বাংলা চলচ্চিত্রের এই তিন মহারথীর একজন বিশ্ববরেণ্য পরিচালক মৃণাল সেনের জীবনী অবলম্বনে নির্মিত সিনেমা ‘পদাতিক’ অবশেষে বড়পর্দায় মুক্তি পেতে চলেছে।
মৃণাল সেন পরিচালিত ‘পদাতিক’ মুক্তি পেয়েছিল ১৯৭৩ সালে। একই নামে এবার খোদ মৃণাল সেনের জীবন ও সময় নিয়ে সৃজিত মুখার্জী পরিচালিত সিনেমা 'পদাতিক' দেখতে উদগ্রীব দুই বাংলার দর্শক।
মৃণাল সেনের ভূমিকায় এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। গল্পে মৃণাল সেনের স্ত্রী গীতা সেনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন মনামি ঘোষ। ছবিটির প্রথম লুক ও টিজার প্রকাশের পর থেকেই দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। চঞ্চল চৌধুরীর এমন রূপ দেখে অনেকে বিভ্রান্ত হয়েছেন, যেন চঞ্চল নিজেই মৃণাল সেন হয়ে উঠেছেন। কবে ছবিটি মুক্তি পাবে তা নিয়ে আগে থেকে কিছু জানানো না হলেও, গতকাল (২ জুলাই) সন্ধ্যায় পরিচালক সৃজিত মুখার্জী একটি পোস্টার শেয়ার করে জানিয়েছেন যে ছবিটি এই আগস্টে মুক্তি পাবে। ছবি মুক্তির তারিখ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে ভারতের স্বাধীনতা দিবস, অর্থাৎ ১৫ আগস্ট।
মৃণাল সেন জন্মেছিলেন বাংলাদেশের ফরিদপুরে। ১৭ বছর বয়সে চলে যান কলকাতায়। সেখানেই তাঁর বেড়ে ওঠা, রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়া, গণনাট্য আন্দোলনে অংশগ্রহণ এবং পরে চলচ্চিত্রে আগমন।
তার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘রাতভোর’। অভিনয় করেছিলেন উত্তম কুমার ও সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’ আর মৃণাল সেনের ‘রাতভোর’ একই বছর কাছাকাছি সময়ে মুক্তি পেলেও ‘পথের পাঁচালী’র আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ‘রাতভোর’কে সেইভাবে আলোচনায় আনতে পারেনি।
সৃজনশীল মানুষ আসলে অন্যের প্রত্যাশা অনুযায়ী পথ হাঁটতে পারেন না। তাঁরা পথ হাঁটেন মহাজগতের দূরপ্রান্তের দিকে চোখ রেখে। শিল্পসৃষ্টির আকাঙ্ক্ষায় নিজের গড়া চরিত্রে হয়তো নিজেই বাস করেন অনেকটা জুড়ে। কে জানে, চিত্রনাট্যের আড়ালে মৃণাল সেন নিজেই হয়তো ছিলেন তাঁর নির্মিত ‘পদাতিক’-এর বিপ্লবপ্রত্যাশী তরুণ।
তাঁর চলচ্চিত্রে রাজনীতি আসে সরাসরি, মূল বিষয়বস্তু হিসেবে। অনেকে এই অভিযোগও করেছেন, রাজনীতি ও সামাজিক বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষাকে প্রায় রোমান্টিকতার পর্যায়ে তিনি নিয়ে গেছেন কি না। তবু দর্শক হিসেবে তাঁর চলচ্চিত্রে সমাজভাবনার যে চিত্র দেখা যায়, যে জীবনভাবনার খোরাক পাওয়া যায়, তা অতুলনীয়।
যে বছর, ১৯৬৭ সালে, বামফ্রন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়, সেই বছরই নকশালবাড়িতে সংগঠিত হয় সশস্ত্র কৃষক বিদ্রোহ। এই বিদ্রোহের আগুন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে পশ্চিমবঙ্গ, অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তরাঞ্চল, কেরালা ও পূর্ব উড়িষ্যায়। এই সময়ে ভারতে বিভিন্ন ভাষায় বিদ্রোহ ও রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে যেমন সাহিত্য রচিত হয়, তেমনি কলকাতাতেও ছবি বানান মৃণাল সেন। নির্মাণ করলেন একে একে তিনটি ছবি: ইন্টারভিউ [১৯৭০], কলকাতা ৭১ [১৯৭২] ও পদাতিক [১৯৭৩]— যা কলকাতা ত্রয়ী নামে পরিচিতি পায়।
একই সময়ে চলচ্চিত্রের তিন মহারথী সমান দক্ষতা ও গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করে গেলে কিছুটা তুলনা চলেই আসে। তবু সত্যজিৎ, মৃণাল ও ঋত্বিকের মধ্যে মিলের জায়গা যেটুকু ছিল, তা হলো বাণিজ্যচিন্তাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইতালিয়ান নিউ রিয়েলিজম, তথা নব্যবাস্তববাদের ধারায় বিশ্বাস রেখে স্বল্প বাজেটে সৃজনশীল ও আপোসহীন নির্মাণ।
তবে তিনজনের মধ্যে মৃণাল সেনের কিছু বাড়তি যোগ আছে। তিনি বাংলা ও হিন্দি ছাড়াও তেলেগু এবং ওড়িয়া ভাষায়ও চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। টেলিভিশনের জন্য নির্মাণ করেছেন আলাদা ১২টি গল্প নিয়ে ১২ পর্বের ধারাবাহিক। মৃণাল সেনই একমাত্র নির্মাতা, যিনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ তিনটি চলচ্চিত্র উৎসব—কান, বার্লিন ও ভেনিস উৎসবে পুরস্কৃত হয়েছেন।
চঞ্চল চৌধুরী এই ছবিতে অভিনয়ের বিষয়ে বলেন, "মৃণাল সেনের চরিত্রে অভিনয় করা একটি দুঃসাহসিক ব্যাপার। এই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সাহস এবং যোগ্যতা প্রয়োজন, যা আমার আছে কিনা তা তৃতীয় ব্যক্তির দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করলে অবিশ্বাস্য মনে হয়। তবুও দুঃসাহস এবং কাজের প্রতি ভালোবাসার কারণে এই চরিত্রে অভিনয় করেছি।"
মৃণাল সেনের চরিত্রে চঞ্চল চৌধুরীকে নেয়া প্রসঙ্গে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সৃজিত বলেন, দুইজনের মুখের মিল আছে। মৃণাল বাবুর মতোই চঞ্চলের চোখের দৃষ্টি অত্যন্ত ধারালো ও সজাগ। তাছাড়া মৃণাল বাবুর রাজনীতি চেতনা, তার যাপন ও দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গেও চঞ্চলের প্রচুর মিল।
গত বছর ১৫ জানুয়ারি শুরু হয় পদাতিক-এর শুটিং। কলকাতা, মুম্বাইসহ বেশ কিছু স্থানে শ্যুটিং হয়। দেশের বাইরেও কিছু দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে। গত বছর মৃণাল সেনের জন্মশতবার্ষিকী ছিল। তাকে শ্রদ্ধা জানাতেই প্রয়াত পরিচালকের জীবন, কর্ম ও সময়ের গল্প নিয়ে সৃজিত মুখার্জি তৈরি করছেন ‘পদাতিক’।
মৃণাল সেন বাংলা সিনেমার আইকোনোক্লাস্ট। কালাপাহারের মতই চলচ্চিত্রের প্রচলিত প্রথাকে সিনেমার প্রয়োজনে তিনি বারবার ভেঙেছেন। সময় পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে বদলেছেন তিনি। বদলেছেন তাঁর সিনেমার ভাষা। ‘পদাতিক’ সিনেমাতে কতটুকু ‘মৃণাল সেন’ হয়ে উঠতে পেরেছেন চঞ্চল চৌধুরী, মৃণাল সেনের জীবনীকে কতটা ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন পরিচালক সৃজিত মুখার্জি, এই প্রশ্ন সকল চলচ্চিত্রবোদ্ধাদের মনে। চঞ্চল-সৃজিত কি পারবে পূর্ণাঙ্গ ‘মৃণাল সেন’কে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে? এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে সবাই মুখিয়ে আছেন ১৫ আগস্ট ‘পদাতিক’ মুক্তির অপেক্ষায়।
পদাতিক মৃণাল সেন চঞ্চল চৌধুরী সৃজিত মুখার্জী
মন্তব্য করুন
পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতিমান পরিচালক সৃজিত মুখার্জি গত বছর নির্মাণ করেছেন একটি নতুন ছবি, যার নাম 'পদাতিক'। এই ছবিটি বরেণ্য চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেনের জীবনী অবলম্বনে নির্মিত। মৃণাল সেনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী।
ছবিটির প্রথম লুক ও টিজার প্রকাশের পর থেকেই দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। চঞ্চল চৌধুরীর এমন রূপ দেখে অনেকে বিভ্রান্ত হয়েছেন, যেন চঞ্চল নিজেই মৃণাল সেন হয়ে উঠেছেন। কবে ছবিটি মুক্তি পাবে তা নিয়ে আগে কিছু নিশ্চিত করা হয়নি, কিন্তু গতকাল সন্ধ্যায় পরিচালক সৃজিত মুখার্জী একটি পোস্টার শেয়ার করে জানিয়েছেন যে ছবিটি এই আগস্টে মুক্তি পাবে। ছবির মুক্তির তারিখ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে ভারতের স্বাধীনতা দিবস, অর্থাৎ ১৫ আগস্ট। পোস্টারে চঞ্চলের ভিন্ন ভিন্ন সময়ের ছবি রয়েছে। চঞ্চল ছাড়া পোস্টারে অন্য ব্যক্তিটিকে দেখে অনুমান করা যায় যে এটি মৃণাল সেনের শৈশবের চরিত্র, যা একজন তরুণ অভিনেতা অভিনয় করেছেন।
চঞ্চল চৌধুরী কিছুদিন আগে এই ছবিতে অভিনয়ের বিষয়ে বলেন, "মৃণাল সেনের চরিত্রে অভিনয় করা একটি দুঃসাহসিক ব্যাপার। এই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সাহস প্রয়োজন, যা আমার আছে কিনা এবং যোগ্যতা আমার আছে কিনা তা তৃতীয় ব্যক্তির দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করলে অবিশ্বাস্য মনে হয়। তবুও দুঃসাহস এবং কাজের প্রতি ভালোবাসার কারণে এই চরিত্রে অভিনয় করেছি। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা ছিল, কারণ তার কাজগুলো দেখে আমি মুগ্ধ।"
মৃণাল সেন হয়ে ওঠা প্রসঙ্গে চঞ্চল বলেন, "আমাকে কিছু বই ও ভিডিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মানুষের অন্তরটা, দৃঢ়তা তো দেখা যায় না, সেগুলো অনুভব করতে হয়।"
চঞ্চল চৌধুরী সৃজিত মুখার্জি পদাতিক মৃণাল সেন
মন্তব্য করুন
ছোট পর্দার অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর মৃত্যু নিয়ে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ পেয়েছে এবং তার এক বন্ধুকে আটক করা হয়েছে। হুমায়রা হিমুর মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়ে আগামী ১ আগস্ট নির্ধারণ করেছেন আদালত।
সোমবার (১ জুলাই) শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নুরুল হুদা চৌধুরীর আদালত এই তারিখ নির্ধারণ করেন। এদিন মামলাটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ছিল, কিন্তু পুলিশ তা দাখিল করতে পারেনি। এজন্য বিচারক নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ঘটনার দিন হিমুর বাসায় তার প্রেমিক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ওরফে রুফি (৩৬) এবং মেকআপম্যান মিহির ছিলেন। মিহির হিমুর বাসাতেই থাকতেন এবং রুফি ছয় মাস ধরে নিয়মিতভাবে সেখানে যাতায়াত করতেন এবং মাঝে মাঝে রাত্রীযাপন করতেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ১ নভেম্বর হিমু রুফির মোবাইল নম্বর ও ভিগো আইডি ব্লক করে দেন, যা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা হয়। ২ নভেম্বর বিকাল ৩টার দিকে রুফি বাসায় এসে কলিং বেল বাজালে মিহির মেইন দরজা খুলে দেন এবং রুফি বাসায় প্রবেশ করেন। মিহির তার রুমে চলে যান। ৫টার দিকে রুফি মিহির রুমে এসে চিৎকার করে জানান হিমু আত্মহত্যা করেছে।
পরে মিহির জিজ্ঞাসা করলে রুফি জানান তিনি বাথরুমে ছিলেন। এসময় হিমু সিলিং ফ্যানের হুকের সঙ্গে রশি লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। মিহির হিমুর রুমে গিয়ে তাকে ফাঁস নেওয়া অবস্থায় পান এবং রুমে দুটি কাঁচের গ্লাস ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান। তাৎক্ষণিক তারা দুজন হিমুকে নামিয়ে উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রুফি হিমুর মোবাইল ফোন দুটি নিয়ে কৌশলে চলে যান।
গত বছরের ২ নভেম্বর ছোট পর্দার অভিনেত্রী হুমায়রা হিমু মৃত্যুবরণ করেন। রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসায় আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হয়।
হিমুর মৃত্যুর ঘটনায় তার খালা নাহিদ আক্তার ২ নভেম্বর রাতে জিয়াউদ্দিন ওরফে রুফিকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার পর রুফিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
হুমায়রা হিমু আত্মহত্যা গ্রেফতার পুলিশ
মন্তব্য করুন
আজ চিরসবুজ তারকা জয়া আহসানের জন্মদিন। দুই বাংলায় একের পর এক সফল সিনেমায় অভিনয় করে প্রতিনিয়ত নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি। নির্মাতা, প্রযোজক এবং দর্শকের কাছেও জনপ্রিয়তার শীর্ষে জয়া আহসান। নিজের এই বিশেষ দিনে ‘কলঙ্ক’ মোছার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও শেয়ার করে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
তবে কোন ‘কলঙ্ক’ মোছার কথা বলছেন জয়া-এমন প্রশ্ন অনেকের মনে। সৌকর্য ঘোষাল পরিচালিত ‘ওসিডি’ সিনেমা দেখলেই বোঝা যাবে পুরো ঘটনা। মূলত, জয়া তার জন্মদিনে এই সিনেমার ফার্স্টলুক টিজার শেয়ার করেছেন। ক্যাপশনে লিখেছেন, "চাঁদের কলঙ্ক কি পরিষ্কার হয়? জীবনের কলঙ্ক? সমাজের কলঙ্ক? উত্তর নিয়ে আসছে #ওসিডি এবার প্রাণপণে সরাবে জঞ্জাল!"
জয়া আহসানের জন্মদিন উপলক্ষে টালিউডে তার প্রথম সিনেমার পরিচালক অরিন্দম শীল আনন্দবাজারে লিখেছেন। সেখানে তিনি তুলে ধরেছেন জয়ার শিল্পী হিসেবে দায়বদ্ধতার একটি ঘটনার কথা। যখন জয়া কলকাতায় ‘আবর্ত’ সিনেমার শুটিং করছিলেন, তখন দেশে তার বাবার মৃত্যু হয়। নির্মাতা অরিন্দম শীল তখন জয়াকে ঢাকায় ফিরে যেতে বললেও, শ্যুটিং শেষ করে ফিরতে চেয়েছিলেন জয়া।
অরিন্দম শীলের ভাষ্য, "জয়া প্রসঙ্গে একটি ঘটনা না বললেই নয়। 'আবর্ত' সিনেমার শেষ দিনের শুটিং। লোকেশনের ফ্ল্যাটটি আমার বন্ধু হর্ষ নেওটিয়ার। লাঞ্চ ব্রেকের পর কাজ শুরু হবে। হঠাৎ আমার একজন সহকারী এসে বললেন, 'দাদা, জলদি আসুন। জয়াদি খুব কান্নাকাটি করছেন!' আমি ছুটে যেতেই দেখলাম, জয়ার দুচোখ বেয়ে জল পড়ছে। করুণ মুখে বলল, 'দাদা, বাবা আর নেই!' আমি সঙ্গে সঙ্গে ওকে ঢাকায় ফিরে যেতে বললাম, কিন্তু জয়া বলল, 'দাদা, আজকে শুটিং শেষ করতে না পারলে তো অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। আমি সিনটা করি।' আমি ওর কথা শুনে হতবাক! কী বলব, বুঝতে পারছি না। কিছুক্ষণ চুপ থেকে আমি ওকে তা-ও কাজ করতে বারণ করেছিলাম। তৎক্ষণাৎ ওর ঢাকা ফেরার ব্যবস্থা করলাম। হর্ষকে জানাতেই ও বলল, বাড়িটা রাখাই থাকবে। সবকিছু মিটিয়ে জয়া কলকাতায় আসার পর আমরা ছবির শুটিং শেষ করেছিলাম। এই হচ্ছে জয়া আহসান।"
জয়ার জন্য শুভকামনা জানিয়ে অরিন্দম লিখেছেন, "জয়াকে নিয়ে আমি খুবই গর্বিত। অভিনেত্রী হিসেবে ও বারবার আমাদের চমকে দিয়েছে। আরও অনেকটা পথ ওকে অতিক্রম করতে হবে। জন্মদিনে আমার কামনা, জয়া যেন তার পারিবারিক জীবনে সুখে-শান্তিতে থাকে। ভবিষ্যতে যেন ও আরও ভালো কাজ করে, সেটাই চাই। ওর সঙ্গে খুব দ্রুত একটা নতুন কাজ শুরু করার অপেক্ষায় রয়েছি।"
জয়ার অর্জনের ঝুঁলিতে রয়েছে এপার-ওপার বাংলার একঝাঁক পুরস্কার। এ পর্যন্ত তিনি পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, দুবার বাচসাস পুরস্কার, সাতবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, তিনবার ভারতের ফিল্মফেয়ার এবং একবার টেলি সিনে পুরস্কার অর্জন করেছেন। এছাড়াও অসংখ্যবার পেয়েছেন মনোনয়ন।
জয়া আহসান জন্মদিন টালিউড চিত্রনায়িকা
মন্তব্য করুন
চিত্রনায়িকা ইয়ামিন
হক
ববির
বিরুদ্ধে চুরি
ও
হত্যার
উদ্দেশ্যে মারপিট
করার
অভিযোগে মামলা
করেছেন
মুহাম্মাদ সাকিব
উদ্দোজা। গত
২৩
জুন,
শুক্রবার দুপুরে
গুলশান
থানায়
এই
মামলাটি দায়ের
করা
হয়,
যার
নম্বর
১৩/১৬৪। গুলশান থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম
মামলার
সত্যতা
নিশ্চিত করেছেন। মামলার
প্রথম
আসামি
মির্জা
আবুল
বাশার
(৩৪)
এবং
দ্বিতীয় আসামি
হিসেবে
উল্লেখ
করা
হয়েছে
ববিকে।
এ
বিষয়ে
তদন্ত
করছেন
গুলশান
থানার
উপপরিদর্শক আনোয়ার হোসাইন। তিনি
জানান,
‘২৩
জুন
মামলাটি হয়েছে। এরপরই
১৩
নম্বর
মামলার
বাদীর
আসামিরা পাল্টা
মামলা
করেছেন। দুটি
মামলাই
বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই
কিছু
বলা
যাচ্ছে
না।’
মামলার
অভিযোগে উল্লেখ
করা
হয়েছে,
‘হত্যার
উদ্দেশ্যে মারপিট
করে
সাধারণ
ও
গুরুতর
জখম,
চুরি,
ক্ষতিসাধন ও
ভয়ভীতি
প্রদর্শনের অপরাধ।’
মামলার
বাদী ওয়াইএন সেন্টারের এজিএম
মুহাম্মাদ সাকিব
উদ্দোজা জানান, তাঁদের কাছ থেকে
রেস্টুরেন্ট ভাড়া নেন আমান নামের একজন। এটার অবস্থান গুলশান ২–এর ১১৩ নম্বর সড়কে। আমান
অর্থনৈতিকভাবে পুষিয়ে উঠতে পারছিলেন না। পরে ব্যবসায় তৃতীয় পক্ষ হিসেবে যুক্ত করেন
আবুল বাশার ও চিত্রনায়িকা ববিকে। রেস্টুরেন্টের জিনিসপত্র তাঁরা কিনে নিয়েছেন, সেভাবেই
চুক্তি করেন বলে জানান সাকিব।
চুক্তি
অনুযায়ী, আমানকে
৫৫
লাখ
টাকা
দেওয়ার
কথা
ছিল।
ববি
ও
বাশার
প্রথমে
১৫
লাখ,
পরে
১০
লাখ
টাকার
চেক
প্রদান
করেন,
যা
পরে
ডিজঅনার হয়।
এ
নিয়েই
দ্বন্দ্বের সূত্রপাত।
সাকিব
উদ্দোজা আরও
জানান,
আমান
একসময়
তাঁদের
তৃতীয়
পক্ষের
কাছে
ভাড়া
নিতে
বলেন
এবং
কয়েক
মাসের
ভাড়া
বকেয়া
থাকা
সত্ত্বেও মে
মাসের
ভাড়া
দেন।
কিন্তু
একই
রসিদ
দিয়ে
আরও
একটি
বিল
তৈরি
করা
হয়,
যেখানে
লেখা
ছিল,
‘ওয়াইএনসি কর্তৃপক্ষ আরও
সাত
লাখ
টাকা
বুঝে
পেয়েছে।’ যা
ছিল
মিথ্যা। এ
নিয়ে
বিরোধ
চরমে
পৌঁছালে সাকিব
থানায়
অভিযোগ
ও
১৩
জুন
জিডি
করেন।
রেস্টুরেন্ট তালাবন্ধ করার
পর
বাশার
উত্তেজিত হয়ে
জনতার
হাতে
পিটুনি
খেয়েছিলেন। পরে
আবার
এসে
গেট
ভেঙে
ভেতরে
প্রবেশ
করে
ম্যানেজার জয়নালসহ অন্যদের ভয়ভীতি
দেখান।
সাকিবের দাবি,
বাশার
তাঁর
নাকে
ঘুষি
মারেন,
যার
ফলে
ছয়
ঘণ্টা
রক্তপাত হয়। পরে পুলিশ
এসে
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে
এবং
মামলা
দায়ের
হয়।
সাকিব উদ্দোজা আরো বলেন, ‘আমরা দুজনের নামে মামলা করেছি। তাঁরা আমাদের
মালিকসহ সব কর্মীর নামে মামলা করেছেন। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ১০ জন। এ ঘটনার পর আমরা
বসি। ঘটনার কোনো মীমাংসা হয় না। এর মধ্যেই গত শুক্রবার বাশার আবার তালা ভেঙে অনেক মালামাল
নিয়ে যান। আমাদের হুমকি দিয়ে যান। পরে আমরাই এই খারাপ মানুষের হাত থেকে রক্ষার জন্য
থানায় বসার পরিকল্পনা করেছি।’
ববির
পক্ষ
থেকে
মো.
আব্বাস
বাদী
হয়ে
মামলা
দায়ের
করেন
ভবনের
মালিক
শাহিনা
ইয়াসমিন, তাঁর
সন্তান
জাওয়ান আল
মামুনসহ ৭
জন
ও
অজ্ঞাতনামা ১০
থেকে
১২
জনের
বিরুদ্ধে। মামলার
এজাহারে উল্লেখ
করা
হয়,
‘পরস্পর যোগসাজশে হত্যার
উদ্দেশ্যে মারপিট
করে
গুরুতর
জখম
করা
হয়েছে। ৫৫
লাখ
টাকার
মালামাল চুরি
করা
হয়েছে। একটি
ঘড়ি
চুরি
হয়েছে,
যার
দাম
চার
লাখ
টাকা।
এছাড়া
নগদ
১
লাখ
৪৫
হাজার
টাকা,
দেড়
ভরি
স্বর্ণের চেইন
ও
একটি
আইফোন
চুরি
হয়েছে। যা
উদ্ধার
হয়নি।’
এ
বিষয়ে
আবুল
বাশার
বলেন,
‘রেস্টুরেন্ট করার
জন্য
আমরা
চুক্তিবদ্ধ হই।
মূলত
এটা
ববির
রেস্টুরেন্ট হওয়ার
কথা
ছিল,
আমি
ছিলাম
অপারেশন পার্টনার। মে
মাসের
ভাড়াও
দিয়েছি। আমাদের
ইনভেস্টমেন্ট ৮০
থেকে
৯০
লাখ
টাকার
মতো
হয়ে
গেছে।
আমরা
মালিকপক্ষের কাছে
বৈধতার
কাগজ
চাই।
তাঁরা
তা
না
দেওয়ায়
ঝামেলা
শুরু
হয়।’
ঘটনার
ফুটেজে দেখা যায়,
ভবন
থেকে
আবুল
বাশারকে মারধর
করা
হয়।
বাশার
জানান,
‘আমি
ছিলাম
একা,
তাঁরা
১৫
থেকে
২০
জন
ছিলেন।’
গুলশান
থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম
জানান,
‘থানায়
দুই
পক্ষের
মধ্যে
বৈঠক
হয়েছে। মালিক
ও
ভাড়াটের মধ্যে
বিরোধ
আছে।
তারা
মামলা
করেছে।
দুই
পক্ষই
জামিনে
আছে।
তাদের
মধ্যস্থতা করে
দেওয়ার
কোনো
ইচ্ছা
আমাদের
নেই।
যদি
তাঁরা
নিজেরা
মিউচুয়াল করতে
চায়,
তাহলে
তা
তাদের
ব্যাপার।’
ববি চিত্রনায়িকা হত্যা চুরি মামলা
মন্তব্য করুন
বিংশ শতাব্দীর ত্রিশের দশকটি বাংলা সংস্কৃতির ভবিষ্যত ধারক-বাহকদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই দশকেই জন্মগ্রহণ করেন বাংলা চলচ্চিত্রের তিন মহারথী। ১৯২১ সালে জন্মগ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়, ১৯২৩ সালে মৃণাল সেন এবং ১৯২৫ সালে ঋত্বিক ঘটক। বাংলা চলচ্চিত্রের এই তিন মহারথীর একজন বিশ্ববরেণ্য পরিচালক মৃণাল সেনের জীবনী অবলম্বনে নির্মিত সিনেমা ‘পদাতিক’ অবশেষে বড়পর্দায় মুক্তি পেতে চলেছে।
আজ চিরসবুজ তারকা জয়া আহসানের জন্মদিন। দুই বাংলায় একের পর এক সফল সিনেমায় অভিনয় করে প্রতিনিয়ত নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি। নির্মাতা, প্রযোজক এবং দর্শকের কাছেও জনপ্রিয়তার শীর্ষে জয়া আহসান। নিজের এই বিশেষ দিনে ‘কলঙ্ক’ মোছার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও শেয়ার করে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।