প্রশাসন ক্যাডারে আবার চুক্তির মিছিল শুরু হচ্ছে। একের পর এক চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হতেই পারে। কিন্তু ঢালাওভাবে আবার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া নিয়ে প্রশাসনের মধ্যেই শুরু হয়েছে হতাশা।
সর্বশেষ সড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা কী তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তার পাশাপাশি এবার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আলী হোসেনকে। আগামী ৩ জুলাই তার অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গতকাল তার চুক্তির মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের এই মিছিল প্রশাসন ক্যাডারের মধ্যে নতুন করে অস্থিরতা, হতাশা এবং অস্বস্তির সৃষ্টি করেছে। অনেকেই মনে করছে, এই প্রবণতার ফলে সামনে যারা অবসরে যাবে তারাও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য দেন দরবার করবেন, তদবির করবেন এবং বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের কাছে ধরনা দেবেন।
ফলে সাধারণভাবে অধস্তনদের সচিব হওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে। ১৫তম ব্যাচের সচিব হওয়া কেবল শুরু হয়েছে। কিন্তু এত চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের প্রবণতার কারণে যে সংখ্যক তাদের এতদিনে সচিব হওয়ার কথা ছিল, সে সংখ্যক তারা হতে পারছেন না। এ নিয়ে তাদের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভও তৈরি হয়েছে।
আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বেশ কয়েকজন সচিব অবসরে যাচ্ছেন। এখন তারা আবার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাবেন, নাকি তারা অবসরে চলে যাবেন, এ নিয়েও এক ধরনের ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে।
পরিসংখ্যান বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আফরিনের চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে আগামী ২৮ অগাস্ট। এছাড়া ট্যারিফ কমিশনের দায়িত্বে থাকা সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন এর মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে ২৯ আগস্ট। ২৯ সেপ্টেম্বর শেষ হচ্ছে যুব ক্রীড়া সচিব ড. মহিউদ্দিন আহমেদের চাকরির মেয়াদ। বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মোঃ হাবিবুর রহমানের চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১০ অক্টোবর। ধর্ম বিষয়ক সচিব এ হামিদ জমাদ্দারের চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৫ নভেম্বর। ২৫ নভেম্বর শেষ হচ্ছে ভূমি সচিব খলিলুর রহমানের চাকরির মেয়াদ। এ বছরের ডিসেম্বরে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য আব্দুল বাকীর চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। একই মাসে সংস্কৃতি সচিব খলিল আহমেদের চাকরির মেয়াদও শেষ হয়ে যাবে। অন্যদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩১ ডিসেম্বর। ওইদিনই তথ্য সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার চাকরির মেয়াদও শেষ হয়ে যাবে।
এই বছরে এতগুলো সচিবের চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। এখন তারা যদি তাদের মধ্যে থেকে কয়েকজনও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান তাহলে অন্যদের পদোন্নতি নিয়ে সৃষ্টি হবে অনিশ্চয়তা। এ কারণে প্রশাসন ক্যাডারের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।
তবে একাধিক সূত্র বলছে যে, অক্টোবরে বর্তমানে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনের চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে। আগামী ১৪ অক্টোবর তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। তার জায়গায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর মন্ত্রিপরিষদ সচিব হওয়ার কথা রয়েছে।
কিন্তু একাধিক সূত্র বলছে, এখন মাহবুব হোসেনকেও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার গুঞ্জন রয়েছে। মেজবাহ উদ্দিন যদি শেষ পর্যন্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব হন, সেক্ষেত্রে তারও চাকরির মেয়াদ বাড়তে পারে। এখন দেখার বিষয়, চলতি বছরে যে বিপুল সংখ্যক সচিব অবসরে যাচ্ছেন তাদের কয়জন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান, আর কয়জন অবসরে যান।
সবিচ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রশাসন ক্যাডার মন্ত্রণালয় সচিবালয়
মন্তব্য করুন
পাহাড়ি ঢল আর কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় অনেক পরিবার বিপাকে পড়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র ও উঁচু স্থানে ছুটছে মানুষ। পানি উঠে যাওয়ায় কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধায় তিন শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলাসহ সব নদ-নদীর পানি আরও বেড়েছে। এতে জেলার ২৫৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এগুলোর মধ্যে ১৪০টিতে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখা এবং জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে ১৪৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিবন্দী হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৩৭টিতে শ্রেণি পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। দুটি বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মাধ্যমিক পর্যায়ের ১০৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। এসবের মধ্যে বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল ৭১টি এবং মাদ্রাসা ৩২টি। চিলমারী ও রাজিবপুরে তিনটি বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়া রৌমারী ও রাজিবপুর এলাকায় ছয়টি কলেজে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
গাইবান্ধার ৪টি উপজেলার ২৭টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার পরিবার। নদীতীরবর্তী ৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
গতকাল দুপুরে জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার চরাঞ্চলের ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। অনেক টিনশেড ঘর বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। অনেকে নৌকায় করে ঘরের জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। জমিতে পানি আটকে বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলায় পাঠদান বন্ধ থাকা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা।
কুড়িগ্রাম গাইবান্ধা স্কুল কলেজে বন্যা পানি
মন্তব্য করুন
রাজশাহীর বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাঘা পৌরসভার মেয়র মো. আক্কাছ আলীকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ২২টি মামলা ও ১৭টি সাধারণ ডায়েরি রয়েছে।
শুক্রবার (৫ জুলাই) রাতে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বাঘা থানার একটি হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরবর্তীতে তাকে বাঘা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
গত ২২ জুন বাঘা উপজেলা পরিষদ চত্বরের সামনে পৌর মেয়র আক্কাছের অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগ। এ সময় পৌর মেয়রের নেতৃত্বে ওই মানববন্ধনে হামলা চালানো হয়। এতে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল গুরুতর আহত হন। পরে ২৬ জুন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর থেকে আক্কাছ আলী ঢাকায় এসে আত্মগোপন করেন।
বাঘা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, বাবুল হত্যায় পৌর মেয়রকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা করা হয়। এই মামলায় মেয়রের ভাগিনা ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগ নেতা মেরাজুর ইসলাম মেরাজসহ এরই মধ্যে আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি বাস্তবায়নের বিরোধিতা করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। ১ জুলাই চালু হওয়া প্রত্যয়ের বিরুদ্ধে ওঠা শিক্ষকদের আপত্তিগুলো খণ্ডন করে পাল্টা যুক্তি দেওয়া হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের মন গলছে না এসব যুক্তিতে।
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ২ জুলাই আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন। শিক্ষকদের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। তবে এ সপ্তাহে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ, বুয়েটসহ দেশের ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা প্রত্যয় বাতিলসহ মোটাদাগে তিন দাবিতে ক্লাস, পরীক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জন করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এ আন্দোলনে শরিক হয়েছেন এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা–কর্মচারীরাও।
প্রতিবাদ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি করছেন তাঁরা। ছুটি থাকায় গতকাল শুক্রবার নিয়মিত কোনো কর্মসূচি ছিল না, আজ শনিবারও নেই। কাল রোববার থেকে কর্মসূচি চলবে। শিক্ষকেরা বলছেন, এ সপ্তাহের যেকোনো দিন প্রত্যাশিত বৈঠকটি হবে।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন , ‘প্রত্যয় শুধু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, ৪০৩টি সংস্থায় নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের ওপর কার্যকর হবে। শিক্ষকেরা শ্রদ্ধেয় মানুষ। গণতান্ত্রিক দেশে আন্দোলন তাঁরা করতেই পারেন। তবে বেশির ভাগ সংস্থায় যেহেতু পেনশন ব্যবস্থাই ছিল না, ফলে তাঁদের জন্য এটা একটা ভালো উদ্যোগ।’
সাবেক সচিব এ কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পুরো বিষয়টি নিয়ে দায়িত্বশীল মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখতে পাচ্ছি। আমি মনে করি, লম্বা সময় নিয়ে এ ব্যাপারে মতবিনিময় ও পর্যালোচনা করার দরকার ছিল। সে সুযোগ এখনো আছে।’
প্রত্যয় স্কিম সরকার বনাম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক লড়াই
মন্তব্য করুন
এনবিআরের সাবেক সদস্য ড. মতিউর রহমানের দুর্নীতি তদন্ত নিয়ে খুব ধীর গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশন এখন পর্যন্ত কেবল তার বিদেশযাত্রার উপর নিষেধাজ্ঞা এবং তার কিছু সম্পত্তি জব্দ করেছে মাত্র। কিন্তু তাকে দুর্নীতি দমন কমিশনে হাজির করা বা তার অন্যান্য সম্পদের উৎস অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে তেমন কোন উদ্যোগ এখনও দৃশ্যমান নয়। বিশেষ করে, বেনজীর আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যদের যেমন তদন্তের শুরুতেই দুদকে তলব করা হয়েছিল। ড. মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে সেটি এখন পর্যন্ত করা হয়নি। এটি কেন করা হয়নি এবং তদন্তে কেন ধীর গতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
উল্লেখ্য যে, এর আগেও দুর্নীতি দমন কমিশনের চার বার মতিউরের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হয়েছিল এবং চার বারই দুর্নীতি দমন কমিশন তাকে শ্বেত-শুভ্রতার ক্লিন শিট দিয়েছিল। আর এই কারণেই দুর্নীতি দমন কমিশন সতর্কতার সঙ্গে এই তদন্ত করছে কি না, সেটি নিয়ে কেউ কেউ ভাবছেন।
তবে অনেকেই মনে করেন যে, ড. মতিউর রহমান অনেক প্রভাবশালী ছিলেন। প্রশাসন এবং সরকারের অন্দরমহলে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তাদের কারণেই মতিউর রহমানের ব্যাপারে একটি স্থবির তদন্ত হচ্ছে কিনা সেটিও ভেবে দেখা প্রয়োজন বলে অনেকে মনে করেন৷ বিশেষ করে, মতিউর রহমানের স্ত্রী লায়লা যেভাবে এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে নানা রকম কথাবার্তা বলছেন, তাতে অনেকেরই সন্দেহ হচ্ছে যে লায়লা এবং মতিউর রহমান হয়তো সরকারের কারও কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
বিশেষ করে, মতিউর রহমানের সঙ্গে সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ছবি ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেই সমস্ত ছবিগুলো ব্যাপারে ঐ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও মন্তব্য করেননি। তারা বিব্রত হয়েছেন কি না সেই তথ্যটিও জানা যায়নি। আর তারাই শেষ পর্যন্ত মতিউর রহমানকে বাঁচানোর জন্য কোন গোপন চেষ্টা করছেন কিনা সেটা নিয়েও জনমনে সন্দেহের উদ্রেক হয়েছে।
বিশেষ করে, দুর্নীতি দমন কমিশনে মতিউর রহমান তার স্ত্রী-পুত্রকে না ডাকার বিষয়টি নিয়ে এক ধরনের ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। মতিউর রহমান কোথায় আছেন সে তা নিয়েও প্রশ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। মতিউর রহমানকে ইতোমধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে সংযুক্ত করা হলেও এখন পর্যন্ত তিনি সেখানে অফিস করেননি। শুধুমাত্র ই-মেইলের মাধ্যমে একটি যোগদানপত্র দিয়েছেন।
বেনজীর আহমেদের ক্ষেত্রে যেমন দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তের একটি সাজ সাজ রব ছিল। সেরকম অবস্থাটি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না ড. মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে। মতিউর রহমানের স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার পরও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় মতিউর রহমানের স্ত্রীকে উপজেলা পরিষদ থেকে অব্যাহতি দেয়নি বা বরখাস্ত করেনি।
বিভিন্ন সময় আমরা দেখি যে এই ধরনের অভিযোগ আসার সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত শুরু করার পর জনপ্রতিনিধিদের সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয় এবং তার স্থলে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয় বা ভাইস চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু এখনও লায়লা রায়পুরা উপজেলার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার দায়িত্বে থাকার পিছনে স্থানীয় এমপির ভূমিকার কথা শোনা যাচ্ছে। স্থানীয় এমপির সঙ্গে তার বেশ কিছু ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে সরকার যে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করেছে তা ব্যাপক ভাবে প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু মতিউর রহমানের তদন্ত যদি প্রভাবশালীদের প্রভাবের কারণে বিঘ্নিত হয় বা শ্লথ হয়ে যায় তাহলে সাধারণ মানুষের দুর্নীতিবিরোধী অভিযান সম্পর্কে আস্থা নষ্ট হয়ে যাবে। আর এই কারণে দ্রুত মতিউর রহমান এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে সাধারণ মানুষ মনে করেন।
সাধারণ মানুষ মনে করেন, মতিউর রহমান যেহেতু চাকরি স্থলে উপস্থিত হচ্ছেন না। সেহেতু তাকে অনতিবিলম্বে সাসপেন্ড করা উচিত। মতিউর রহমানের স্ত্রী রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যানকে অনতিবিলম্বে দায়িত্ব থেকে সাময়িক দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত। আর এই বিষয়গুলো দেরি হলে দুদকের স্বচ্ছতা এবং দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের পক্ষপাতহীনতাকে নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।
মতিউর দুর্নীতি লায়লা কানিজ দুদক ধীরে চলো নীতি
মন্তব্য করুন
পাহাড়ি ঢল আর কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় অনেক পরিবার বিপাকে পড়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র ও উঁচু স্থানে ছুটছে মানুষ। পানি উঠে যাওয়ায় কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধায় তিন শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি বাস্তবায়নের বিরোধিতা করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। ১ জুলাই চালু হওয়া প্রত্যয়ের বিরুদ্ধে ওঠা শিক্ষকদের আপত্তিগুলো খণ্ডন করে পাল্টা যুক্তি দেওয়া হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের মন গলছে না এসব যুক্তিতে।
এনবিআরের সাবেক সদস্য ড. মতিউর রহমানের দুর্নীতি তদন্ত নিয়ে খুব ধীর গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশন এখন পর্যন্ত কেবল তার বিদেশযাত্রার উপর নিষেধাজ্ঞা এবং তার কিছু সম্পত্তি জব্দ করেছে মাত্র। কিন্তু তাকে দুর্নীতি দমন কমিশনে হাজির করা বা তার অন্যান্য সম্পদের উৎস অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে তেমন কোন উদ্যোগ এখনও দৃশ্যমান নয়। বিশেষ করে, বেনজীর আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যদের যেমন তদন্তের শুরুতেই দুদকে তলব করা হয়েছিল। ড. মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে সেটি এখন পর্যন্ত করা হয়নি। এটি কেন করা হয়নি এবং তদন্তে কেন ধীর গতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।