এডিটর’স মাইন্ড

শেখ হাসিনার পাশে নানক


প্রকাশ: 26/03/2022


Thumbnail

আওয়ামী লীগের পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক কে হবে এ নিয়ে নানা রকম গুঞ্জন-আলোচনা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এখন সার্বক্ষণিক বিষয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অফিসগুলোতে, চায়ের আড্ডায় নতুন সাধারণ সম্পাদক কে হতে পারে এ নিয়ে নানামুখী আলাপ-আলোচনা চলে। আর এসব আলোচনায় যে কটি নাম উঠে আসে তার মধ্যে অন্যতম হলো আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। এ গুঞ্জন আরও বাড়লো আজ স্বাধীনতা দিবসে। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আজ প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি সাভারের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যান। শ্রদ্ধা নিবেদনের দুটি পর্ব ছিলো। প্রথম পর্বে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আর দ্বিতীয় পর্বে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে শহীদ স্মৃতি বেদীতে তিনি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন। লক্ষণীয় ব্যাপার হলো যে, শহীদ বেদীতে যখন তিনি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন, সে সময় তাঁর এক পাশে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, অন্যপাশে ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।

শেখ হাসিনার পাশে জাহাঙ্গীর কবির নানক থাকার প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগে নতুন করে আলাপ-আলোচনা এবং জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য যে, শেখ হাসিনার পাশে থাকার একটি প্রতীকী গুরুত্ব রয়েছে। সাধারণত দলের ভেতর যারা শেখ হাসিনার আস্থাভাজন, ঘনিষ্ঠ এবং প্রভাবশালী তারাই শেখ হাসিনার পাশে এ ধরনের শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ অনুষ্ঠানে থাকেন। যখন ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হননি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তাকে নিয়ে নানামুখী আলাপ-আলোচনা চলছে, সেই সময় সৈয়দ আশরাফকে একপাশে এবং ওবায়দুল কাদেরকে আরেক পাশে রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেছিলেন। বিভিন্ন কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির পাশে ওবায়দুল কাদেরকে দেখা গিয়েছিলো। এখন জাহাঙ্গীর কবির নানককেই শেখ হাসিনা সেভাবে গড়ে তুলছেন কিনা সেই গুঞ্জন আওয়ামী লীগের ভেতরে বেশ তীব্রভাবেই উঠেছে। 

জাহাঙ্গীর কবির নানক অবশ্য ২০১৮ সালের পর থেকেই আস্তে আস্তে লাইমলাইটে আসছেন। একটি ট্রাজেডির মধ্য দিয়ে তিনি যেন আওয়ামী লীগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রধান নেতা হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছেন। ২০১৮ এর নির্বাচনে মোহাম্মদপুরের আসন থেকে জাহাঙ্গীর কবির নানককে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এই মনোনয়ন না দেওয়ার ফলে অনেকেই মনে করেছিল যে, নানকের রাজনৈতিক জীবন হয়তোবা শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দীর্ঘদিনের ত্যাগী এবং পোড় খাওয়া এই রাজনীতিবিদ এই মনোনয়ন না পাওয়াটাকে কোনো ব্যর্থতা হিসেবে মেনে নেননি। বরং শেখ হাসিনা যে নির্দেশ দেবেন, শেখ হাসিনা যা করবেন সেটি নিঃসন্দেহে দলের স্বার্থে করা হবে এই বিবেচনাবোধ থেকে তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় থেকেছেন এবং মনোনয়ন না পাওয়ার পর পরই যারা মনোনয়ন পাননি তাদেরকে নিয়ে শেখ হাসিনা উচ্চ পর্যায়ের একটি বিশেষ টিম গঠন করেন। এই টিমের মাধ্যমেই ২০১৮ এর নির্বাচন পরিচালিত হয়েছে।

১৮ এর নির্বাচনের পর ১৯ এর কাউন্সিলে জাহাঙ্গীর কবির নানককে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রেসিডিয়ামে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পরই জাহাঙ্গীর কবির নানক তার সাংগঠনিক দক্ষতা নতুন করে প্রমাণ শুরু করেন। বিশেষ করে এই সময় করোনাকাল এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অসুস্থতার প্রেক্ষিতে জাহাঙ্গীর কবির নানকই যেন হয়ে ওঠেন আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তি। এই সময় তিনি এককভাবে দল পরিচালনা না করে, দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদেরকে একত্রিত করেন এবং তাদেরকে নিয়েই একটি টিমওয়ার্ক তৈরি করেন। এই টিমওয়ার্কের সাফল্য দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জে নির্বাচনে, সিলেটের নির্বাচনে এবং অন্যান্য সাংগঠনিক বিষয়ে। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা জাহাঙ্গীর কবির নানক এর উপরই যেনো নির্ভরশীল হতে শুরু করেন এবং জাহাঙ্গীর কবির নানককে তারা তাদের বিভিন্ন সমস্যা বলার জায়গা হিসেবে বিবেচনায় নেন। এর মধ্যেই জাহাঙ্গীর কবির নানক শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তার পুরস্কারই তিনি পেতে যাচ্ছেন কিনা এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সভাপতির পাশে তাকে দেখার পর অনেকেই মনে করছেন শেখ হাসিনা হয়তো তাকেই গড়ে তুলছেন দলের পরবর্তী নেতৃত্ব তুলে দেওয়ার জন্য।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭