ইনসাইড আর্টিকেল

শিশুদের প্রতি আচরণ এবং এর প্রভাব


প্রকাশ: 05/06/2022


Thumbnail

শিশুদের যথাযথ সঠিক পরিবেশে সঠিক যত্ন সহকারে গড়ে তোলার জন্য কত আলোচনা এবং সমালোচনা!  বাড়ির অভ্যন্তর থেকে বাইরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অবধি সর্বত্র সঠিক ব্যবহারের নানা আলাপ উঠে এসেছে বহুবার। তবু কি যথাযথ ভাবে এই নির্দেশনা পালন করা হচ্ছে?

সাইকোলজিক্যাল অ্যানালাইসিস এর ভিত্তিতে গবেষকরা দাবি করেন শিশুদের মন মস্তিষ্কের বৃদ্ধি এবং সঠিক বুদ্ধি বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময় হলো ১-৭ বছর। এই সময় তারা যা দেখে, যা শুনে তার প্রভাব বাকি জীবনে বেশ গাঢ় হয়। সেটা কনশাস এবং সাব-কনশাস দুই ভাবেই হতে পারে। তাই শুরু থেকেই তাদের প্রতি ব্যবহার, আলাপ ইত্যাদি নানা কাজে অভিভাবক শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট বাকিদের যত্নবান হতে হবে। কোনো প্রকার বিরূপ ব্যবহার হতে পারে তাদের মানসিক স্থিতিশীলতার ক্ষতির কারণ।

সম্প্রতি এক সমীক্ষার মাধ্যমে দেখা যায়, বাংলাদেশের শতকার ৪৮ শতাংশ শিশুরা বাবা, মা কিংবা অভিভাবকের দ্বারা শারীরিকভাবে নির্যাতিত হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২২ শতাংশ আর অন্যান্য ক্ষেত্রে ১১ শতাংশ। দেশের এখনো অবদি অনেকে বাচ্চাদের অবাধ্যতার উপশমক হিসেবে মারধরের পন্থাতেই বিশ্বাসী। যার কারণে খুব অল্প বয়সেও অনেক শিশুরই এমন ভয়ংকর অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।

শহর অঞ্চলে এই চিত্র কিছুটা উন্নত হলেও গ্রামাঞ্চলে এখনো এর অবস্থা ভালো না। শহরাঞ্চলের শিক্ষার হার এমন জ্ঞান চর্চার সুযোগ আছে বলে এখানে শিশুদের প্রতি শারীরিক নির্যাতনের হারের গ্রামের তুলনায় তুলনামূলক কম বলে দাবী করেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, গ্রামে মাদ্রাসাতে পড়তে যাওয়া শিশুদের উপর যে শারীরিক নির্যাতন হয় তা তাদের মন-মস্তিষ্কে এমন প্রভাব ফেলে যে পরবর্তীতে তাদের নানা মানসিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। যেমন, অ্যাংগার ডিসওর্ডার, বিকৃত মানসিকতা, ট্রমা ইত্যাদি সহ আরো নানা জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

শিশু বয়সে কারো মনে কোনো ঘটনার বাজে প্রভাব পড়লে তা তাদের একটা লম্বা সময় মানসিক চাপের কারণ হতে পারে। এমনি, ঘটনার তীব্রতা, আচরণের উপর ভিত্তি করে কিছু কিছু শিশুর সাথে ঘটে থাকা শারীরিক নির্যাতন এর ঘটনার প্রভাব সারাজীবনও পরবর্তীতে বহন করতে হয়। কয়েকদিন আগে সাইকো অ্যানালেইটিক্যাল রিসার্চ ফর চাইল্ড ট্রমার কেইস স্টাডি তে দেখা গিয়েছে, একজন ২৫ বছর বয়সী যুবক তার ছোটবেলায় মাদ্রাসায় পড়তেন এবং সেখানে তার শিক্ষকের দ্বারা প্রতিনিয়ত শারীরিক মারধর এবং নির্যাতনের শিকার হতেন। যা তার ছোটবেলায় মানসিক বিকাশে সময় এমন প্রভাব ফেলেছিল যে এখনো তিনি স্বপ্নে একই ঘটনা প্রায়শ দেখতে পান। অর্থাৎ যেকোনো ঘটনা মানুষের সহনশীলতার উপর ভিত্তি করে এর প্রভাব এর কাল সাময়িক কিংবা দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে।

যেকোনো মানুষের পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে গড়ে উঠার জন্য তাদের শৈশব ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শৈশব থেকে শিশুরা যা দেখতে বা শুনতে অভ্যস্ত হয় তা তাদের পরবর্তী জীবনে তাদের মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে অনেকখানি অবদান রাখে। তাই মনোবিজ্ঞানীরাও বারবার সর্তক করেন যেন প্রতিটি ঘর এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাচ্চাদের সাথে যথাযথ আচরণ করা হয়। সেক্ষেত্রে তাদের যেকোনো কথা বুঝাতে বা মানিয়ে নিতে "নন ভায়োলেন্স কমিউনিকেশন" সব থেকে কার্যকারি হিসেবে দাবি করেন তাঁরা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭