ইনসাইড বাংলাদেশ

লোডশেডিং: শ্রীলঙ্কা বনাম বাংলাদেশ প্রসঙ্গ


প্রকাশ: 20/07/2022


Thumbnail

দেশব্যাপী শুরু হয়েছে শিউডিলভিত্তিক লোডশেডিং। জ্বালানি তেল ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে জ্বালানি সাশ্রয়ে লক্ষ্যে  সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশে লোডশেডিং শুরু হওয়ার পর থেকেই জনমনে নানা প্রশ্ন আর আশঙ্কা লক্ষ্য করা গেছে। লোডশেডিং নিয়ে গুজব ছড়িয়ে। মানুষের মুখে মুখে এখন শোনা যাচ্ছে দেশ শ্রীলঙ্কা হওয়ার অভিমুখে। অথচ শ্রীলঙ্কার লোডশেডিং আর বাংলাদেশের লোডশেডিংয়ের প্রসঙ্গের মধ্যে যোজন যোজন পার্থক্য রয়েছে। ডিজেল-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে বলে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বস্তুত দেশের উৎপাদন সক্ষমতা অক্ষুণ্ণ রয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপকরণের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপকরণ ক্রয় করে উৎপাদনে গেলে উৎপাদনের খরচ বহুগুণে বেড়ে যাবে। ফলে দেশের জনগনেরই ওপর চাপ তৈরি হবে। যেকারণে বৃহত্তর জনস্বার্থে উৎপাদন বন্ধ রেখে কৃচ্ছ্বতা সাধণের নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।

দেশে লোডশেডিং হচ্ছে মানেই দেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে এ কথার কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। কারণ বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কা লোডশেডিংয়ের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। শ্রীলঙ্কা বিদ্যুৎ খাত সম্পূর্ণ ডিজেল নির্ভর। অন্যদিকে বাংলোদেশের বিদ্যুৎ খাত শুধু ডিজেল নির্ভর নয়। আমাদের কয়লা বিদ্যুৎ আছে, পানি বিদ্যুৎ আছে, গ্যাস বিদ্যুৎ আছে, ডিজেল বিদ্যুৎ আছে, এখন পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে, ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে। অনেকগুলো বিকল্পতে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। সুতরাং লোডশেডিং মানেই যে দেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে এটা নিছক গুজব ছাড়া আর কিছুই নয়।

এদিকে দেশের অর্থনীতির দিক বিচার করলেও দেশ শ্রীলঙ্কা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। সম্প্রতি কানাডাভিত্তিক সংবাদ প্রতিষ্ঠান ভিজুয়াল ক্যাপিটালিস্ট পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, জিডিপির আকার অনুযায়ী বাংলাদেশ বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। শুধু বিশ্বেই নয়, দক্ষিণ এশিয়াতেও বাংলাদেশ রয়েছে শক্ত অবস্থানে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। দেশের জিডিপির আকার এখন ৩৯৭ বিলিয়ন বা ৩৯ হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার। অন্যদিকে ঋণখেলাপির শীর্ষ ২৫ টি দেশের তালিকায় নেই বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়েছে কারণ শ্রীলঙ্কা শুরু বৈদেশিক লোনই নেয়নি, তারা বাণিজ্যিক লোনও নিয়েছিল। অর্থাৎ বন্ড বিক্রি করেও তারা লোন করেছে। পরে সে বন্ডের উচ্চ হারে সুদ হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ কখনো এক বন্ডও কারো কাছে বিক্রি করে লোন করেনি। বাংলাদেশের বৈদেশিক যে লোন এবং জিডিপির যে পরিস্থিতি সেটা একেবাবে স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে। সুতরাং লোডশেডিং হচ্ছে বলে দেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে এমনটা ভাবা হবে বোকার স্বর্গে বাস করা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭