ইনসাইড টক

'সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার হতে হবে'


প্রকাশ: 29/07/2022


Thumbnail

বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, আমরা নির্বাচন কমিশনের সংলাপে অংশ নেইনি তার দুটি কারণ আছে। নির্বাচন কমিশন যদি আমাদের সাথে মত বিনিময় করতে চায়, তাহলে সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা থাকা দরকার। কিন্তু আমরা কোনো সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা দেখিনি। সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা ছাড়া নির্বাচন কমিশনের সংলাপে যাওয়া, গল্প করা বা কথা বলা ছাড়া এতে কোনো রেজাল্ট বেরিয়ে আসবে না। এটি একটি কারণ। দ্বিতীয় কারণটি হলো, নির্বাচন কমিশন যদি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চান তাহলে উনারা আমাদের কাছে পরামর্শ চাইতে পারেন। কিন্তু চিঠিতে আমরা দেখলাম যে, উনারা নিজেরাই বলছেন সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা আইনে করার দরকার, উনারা তার সবকিছুই করছেন। এদিকে ইভিএম নিয়ে বির্তক হচ্ছে কিন্তু তারপরও উনারা বলছেন ইভিএম নিয়ে ভালোভাবে ভোট করা যাবে। একটা হলো এজেন্ডা নাই, আরেকটা হলো উনারা উনাদের বিষয়টি নিশ্চিত করছেন যে, উনারা যা করছেন সবকিছু ঠিক আছে। তাহলে এধরনের এজেন্ডাবিহীন মতবিনিময় সভায় আমাদের কিছু কথা বলা আর উনাদের কিছু কথা বলা ছাড়া এর বাইরে কোনো কাজ হবে বলে আমরা মনে করি না। সে কারণে আমরা ইসির সংলাপে যাইনি।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। চলবে আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত। ইতোমধ্যে বেশ কয়েক দলের সঙ্গে সংলাপও অনুষ্ঠিত হয়েছে। কমিশনের সংলাপে অংশ নেয়নি বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। কমিশনের সংলাপে অংশ না নেওয়া এবং দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় রুহিন হোসেন প্রিন্স এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য রুহিন হোসেন প্রিন্স এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর প্রধান বার্তা সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসান।

দেশের চলমান পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, আগে আমরা কতগুলো ভুল নীতি গ্রহণ করেছি এবং এসব ভুল নীতি হলেও এগুলো সুফল পাচ্ছে কিছু কমিশনভোগী গ্রুপ এবং কিছু গোষ্ঠী। যার জন্য এখানে অবাধ দুর্নীতি হয়েছে। সেই ভুল নীতি এবং দুর্নীতির কারণে আমাদের খরচের পরিমাণ অনেক বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই খরচের একটা বিরাট অংশ বিশেষ বিশেষ ব্যক্তি এবং কমিশনভোগী কিছু লোক বা গোষ্ঠী পেরেছে এবং বিরাট অংকের টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। ঠিক এরকম একটি সংকটের মুখে দেশে ছিল। তার মধ্যেই সারা বিশ্বে একটা সংকট দেখা দিয়েছে। সুতরাং আমরা তো এখন একটা সংকটের মধ্যে আছি। যা প্রয়োজন ছিল না তার বাইরে বিদ্যুৎ উন্নয়নের নামে উন্নয়নের নামে লাখ লাখ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। সুতরাং এর যে নেতিবাচক উপসর্গ সেটা আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি। সুতরাং এ রকম একটা পরিস্থিতিতে যদি এখনই সরকার তার দুর্নীতি, লুটপাট কঠোর হস্তে দমন না করতে পারে, যারা ভুল নীতি সচেতনভাবে পরিচালনা করেছে তাদের বিরুদ্ধে যদি ব্যবস্থা না নিতে পারে এবং বর্তমান বাস্তবতায় আমাদের দেশে যারা দেশপ্রেমিক, বিশেষজ্ঞ, অর্থনীতিবিদ তাদের সাথে কথা বলে বিকল্প পথ নির্দেশ এখনই যদি গ্রহণ করতে না পারে তাহলে দেশ একটা বড় সংকটের মধ্যে পড়বে। 

তিনি আরও বলেন, দেশের এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য একটা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার। কিন্তু বর্তমান সরকার যেভাবে সারাদেশে ভয়ের রাজত্ব কায়েম করেছে, তার দলের লোকেরা বিভিন্ন জায়গায় যে ধরনের স্বৈরচারী এবং পরিবারতান্ত্রিক আচরণ করেছে, সেটা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে এই সংকট থেকে উত্তরণ হবে না। সর্বশেষ হচ্ছে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, অবাধ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হওয়া দরকার। সেটা হওয়ার জন্য অবশ্যই বাংলাদেশে একটি নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার হতে হবে। আমরা এজন্য বলেছি এই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার কেমন হবে এবং ওই সময়ে তার রুটিন কাজের বাইরে কোনো কাজ করবে না, সেটাও সুনিদিষ্ট করে দেওয়া দরকার। যাতে এই ধরনের সরকার অন্য কোনো দিকে টার্ন না নিতে পারে। নির্বাচন করাটাই হবে তার প্রধান কাজ। নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করাটাই হবে তার প্রধান কাজ। সেজন্য সকলের সাথে পরামর্শ করেই এই ধারায় এগোনো দরকার বলে আমি মনে করি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭