ইনসাইড টক

‘অর্থনীতি নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি’


প্রকাশ: 30/07/2022


Thumbnail

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত বলেছেন, অর্থনীতি নিয়ে যে শঙ্কার কথা হচ্ছে সেই শঙ্কা বিশ্বব্যাপীই আছে। তাছাড়া এখন যে ডলারের সংকটের কথা বলা হচ্ছে অর্থাৎ ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া আর টাকা মান কমে যাওয়া, সেটা কিছুটা আছে। তবে ডলার এবং চাইনিজ কারেন্সি ছাড়া সব কারেন্সির ঘটনা প্রায় একই রকম। 

সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ডলারের সংকট এবং অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত বলেন, আমরা ফরেন কারেন্সি দিয়ে আমদানি ব্যয় নির্বাহ করে থাকি এবং ইদানিং আমদানি ব্যয় কমার একটা প্রবনতা দেখা যাচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে আমাদের আমদানি ব্যয় যদি না বেড়ে যায়, তাহলে আমাদের যে রিজার্ভ আছে সেটা নিয়ে খুব বেশি দুচিশ্চার কোনো কারণ নেই। এছাড়া আমদানিই একমাত্র জায়গা না, যেখানে ফরেন কারেন্সি লাগবেই বা শুধু ব্যয় হবে। ফরেন কারেন্সি উপার্জন করা করার জায়গাও আমাদের আছে। এগুলো হলো আমরা যা রপ্তানি করি, সেটা একটা। ফরেন কারেন্সি উপার্জনের আরেকটি জায়গা হলো আমাদের প্রবাসী আয়। যেটাকে আমরা রেমিট্যান্স বলে থাকি। প্রবাসীরা যদি ব্যাংকিং সেক্টরের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠান তাহলে আমাদের রিজার্ভ আরও বাড়ে। কিন্তু ডলারের যে বিনিময় হার, এটা কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারণ করা, আরেকটি ডলারের খোলা বাজার, এই দুটোর মধ্যে যদি ব্যবধানটা বড় হয়ে যায় তাহলে প্রবাসীরা হুণ্ডি করতে উৎসাহিত হবে। সেজন্য সরকারের উচিত বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া। সেটা সরকার করছেও। প্রবাসীরা ব্যাংকিং সেক্টরের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠালে তাদের প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া সেটা নিয়ে আরও কিছু কাজ করা যায় কিনা সেটা করা, যেন প্রবাসীরা ব্যাংকিং সেক্টরের মাধ্যমে তাদের উপার্জিত আয় দেশে পাঠাতে উৎসাহিত হয়। এছাড়া দেশের খোলা বাজারে যে ডলার বিক্রি করা হচ্ছে সেটা পুরোপুরি আইন সঙ্গত বা বৈধ নয়। সুতরাং এখানে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং দায়িত্ব প্রাপ্ত সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত বলে আমি মনে করি।

তিনি আরও বলেন, সরকার এখন কৃচ্ছ্রতাসাধন নীতি গ্রহণ করেছে। কিন্তু কৃচ্ছ্রতাসাধন যেসব জায়গায় করা খুব জরুরী সেসব জায়গায় পরিকল্পিতভাবে করতে হবে। সেটা ঠিকমতো করা হচ্ছে কিনা সেটা একটা বিষয়। বাইরে থেকে আমাদের বোঝারও কোনো উপায় নেই। তবে অর্থনীতি নিয়ে খুব বেশি শঙ্কিত হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি।

অর্থনীতির ব্যবস্থাপনার কথা বলতে গিয়ে অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারাকাত বলেন, পুরো অর্থনীতির যে ব্যবস্থাপনা, সেটা আরও সমন্বিত আকারে, সারা বিশ্বের পরিস্থিতি মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। সেখানে এক ধরনের সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। সীমাবদ্ধতা হলো অনিশ্চিয়তা। বহিঃবিশ্বের অনিশ্চিয়তা যদি আমাদের দেশের ওপর ভর করে, তাহলে আমাদের করার তেমন কিছু থাকে না। তবে  কি কি ধরনের অনিশ্চিয়তার সম্ভাব্য সামনে আছে সে বিষয়গুলো বাছাই করতে হবে এবং সে অনুসারে পরিকল্পনা এ, বি এবং সি এই টাইপের বিকল্প পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার। এর বাইরে খুব বেশি কিছু করার নাই। এর বাইরে যা কিছু বলা হবে সেগুলো স্লোগান ছাড়া কিছুই হবে না।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭