ইনসাইড টক

'তৃণমূলে যখন আদর্শবিরোধী লোক ঢুকে পড়বে তখন উদ্বিগ্ন না হওয়ার কারণ নেই'


প্রকাশ: 01/08/2022


Thumbnail

বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে কিন্তু ষড়যন্ত্রের বিচার হয়নি এবং যারা ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত ছিল তাদের মুখোশ উন্মোচন করা দরকার এবং আগস্টের কমিশন করা দরকার এমন কথা গত কয়েক বছর ধরেই আপনি বলছেন, কেনো আপনি এটা বলছেন এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা, এটি একটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের ফল। যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছেন তাদের দেখতে পাওয়া গেলো, কিন্তু তাদের পেছনে যারা কলকাঠি নাড়লো, যারা এই ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা গ্রহণ করলো, সেই পরিকল্পনা গ্রহণকারীদের চিনতে পারা গেলো না। তাহলে ইতিহাসের কাছে এই বিষয়টি সবসময় অস্পষ্ট থেকে যাবে। কাজেই ইতিহাসকে স্পষ্ট করার জন্যই আমি কমিশন গঠন করতে বলেছি এবং এই কমিশন গঠনের দাবি আমি এখনও করছি। 

বঙ্গবন্ধু হত্যায় ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িতদের মুখোশ উন্মোচন, ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করার জন্য কমিশন গঠনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে আলাপচারিতায় জাহাঙ্গীর কবির নানক এসব কথা বলেন

গত আগস্টে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে, এত বড় রাজনৈতিক দল এবং এই রাজনৈতিক দলে এত কর্মী, কেউ প্রতিবাদ করলো না, সবাই দাঁড়িয়ে থাকলো, মন্ত্রীসভার অধিকাংশ সদস্য শপথ নিলো, আওয়ামী লীগ সভাপতির এই বক্তব্যটিকে আপনি কিভাবে ব্যাখ্যা করেন এমন প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, প্রধানমন্ত্রী সঠিকভাবেই বলেছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে এবং এ দেশের নাগরিক হিসেবে তিনি যেমন বলেছেন, তেমনিভাবে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবেও বলেছেন। সেকারণে মনে করি, এই বক্তব্য সঠিক। ৭৫ এর ১৫ আগস্টে যারা দায়িত্ববান ছিলেন, তারা নয় দোদুল্যমানতায় ছিলেন অথবা ভীরুতা ছিল তাদের অথবা আত্মসমর্পনের প্রবণতা ছিল। তারা ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত ছিল।

একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে আপনি বললেন ভীরুতা ছিল, দ্বিধাদন্দ ছিল এটাকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি আসলে একটি বিরাট ব্যার্থতা। এই ব্যার্থতার দায়, তখনকার যারা নেতা ছিলেন তারা এড়াতে পারবেন না। কারণ আমরাও তখন রাজধানী ঢাকা শহরে তীর্থের কাকের মতো ঘুরে বেরিয়েছি যে কিভাবে প্রতিবাদ করা যায়, প্রতিরোধ করা যায়। কিন্তু কোনো জায়গা থেকেই কোনো ধরনের চেষ্টা করা হয়নি। সে সময় জনগণ কিন্তু প্রত্যাশা করেছিল। 

বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রীসভার অধিকাংশ সদস্য (হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া) সবাই খুনি মোশতাকের মন্ত্রীসভায় যোগদান করলো এটা কি একটি আদর্শিক বিচ্যুতি? আপনি এটাকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর কবির নানক আরও বলেন, এটা আদর্শিক বিচ্যুতিই শুধু নয়, এটা বিশ্বাসঘাতকতাও। দলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা, দেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা, বঙ্গবন্ধুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা তারা করেছে। 

কোনো সময়ই সংকটে আওয়ামী লীগ রুখে দাঁড়াতে পারে না, ৭৫ এ পারেনি, এক-এগারোর সময় পারেনি, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সময় পারেনি, এত বড় সংগঠনের এটি একটি দুর্বলতার জায়গা, এটাকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগগতভাবে বলতে গেলে, আমার জায়গা থেকে খুবই দুঃসাধ্য ব্যাপার। তবে এটা দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এটিই বাস্তবতা। এই বাস্তবতায় আওয়ামী লীগ সেইভাবে দাঁড়াতে না করতে পারলেও, অন্যান্য সহযোগী সংগঠনগুলি দাঁড়িয়েছে। 

একটা কথা বলা হয় যে, তৃণমূলই আওয়ামী লীগের সব থেকে বড় শক্তি, কিন্তু এখন বলা হচ্ছে তৃণমূলও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তৃণমূলের মধ্যেও নানা রকম সুবিধাবাদ দেখা যাচ্ছে। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আপনি কি এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তৃণমূলে যখন আদর্শবিরোধী লোকজন ঢুকে পড়বে তখন উদ্বিগ্ন না হওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে আমি মনে করি যে, এখনও সময় রয়েছে আমাদের সমস্ত দলকে আদর্শিকতার দিকে ধাবিত করার এবং দলের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়া এই অনুপ্রবেশকারীদের ঝেটিয়ে বের করে দেওয়ার এখনও সময় রয়েছে। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭