কালার ইনসাইড

আদালতের নির্দেশ তোয়াক্কা না করেই চলছে নিপুণের কার্যক্রম


প্রকাশ: 04/08/2022


Thumbnail

আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসার অভিযোগে চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ করেছিলেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। যা নিয়ে এখনো আইনি লড়াই চলছে। জায়েদ খান নাকি নিপুণ আক্তার কে হবেন ২০২২-২০২৪ মেয়াদের সাধারণ সম্পাদক তা নির্ধারণ করবে আদালত। আদালতের রায় না হওয়ার আগ পর্যন্ত এ সময় তারা কেউ-ই চেয়ারে বসতে পারবে না। আপাতত পদটি শূন্য থাকবে।

তবে আদালতের এ নির্দেশ না মানার অভিযোগ উঠেছে নিপুণ আক্তারের বিরুদ্ধে। এবারই প্রথম নয়। এর আগেও বেশ কয়েকবার তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ উঠেছে। এমনকী আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করেই শিল্পী সমিতির চেয়ারে বসা ও দায়িত্ব পালনেরও অভিযোগ রয়েছে ‘আই ডোন্ট কেয়ার’ নায়িকার বিরুদ্ধে।



সম্প্রতি শিল্পী সমিতি থেকে বাদপড়া শিল্পীদের পরিচয়পত্র দেওয়া হয় সমিতি থেকে। সেই পরিচয়পত্রে সভাপতি হিসেবে ইলিয়াস কাঞ্চন ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিপুণ আক্তারের স্বাক্ষর দেখা গেছে। পরিচয়পত্র পাওয়ার পর বেশ কয়েকজন শিল্পী সেগুলো ফেসবুকে শেয়ার করেন। এর পরই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নিপুণের এ কাজে নীরব ভূমিকায় থেকে বরেণ্য অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চণের সমর্থন থাকায় তাকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন অনেকেই। আদালতের আদেশ অমান্য করায় এ নিয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা। 

আপত্তি জানিয়ে জায়েদ খান বলেন, নিপুণ অবৈধভাবে স্বাক্ষর করে পরিচয়পত্র দিচ্ছেন। এখানে সে অন্যায় করছে। কারণ, আদালত সাধারণ সম্পাদক পদের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়ে রেখেছেন। আদালতের রায়কে শ্রদ্ধা জানিয়ে আমি কোনো ধরনের কাজে অংশ নিচ্ছি না।

এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেবেন কি না- জানতে চাইলে জায়েদ খান জানান, অবশ্যই আমি আইনি পদক্ষেপ নেব। কারণ, নিপুণ আইনের তোয়াক্কা না করে সমিতির সব ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। আমি আমার আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে শিগগিরই পদক্ষেপ নেব।

আদালতের চূড়ান্ত রায় হওয়ার আগেই শিল্পীদের পরিচয়পত্রে কেন তার স্বাক্ষর, এ সম্পর্কে জানতে চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এরপর কথা হয় শিল্পী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক চিত্রনায়িকা শাহনূরের সঙ্গে। তিনি জানান, যারা চাঁদা পরিশোধ করেছেন, তাদেরকে পরিচয়পত্র দেয়া হচ্ছে। সেখানে নিপুণের স্বাক্ষর কেন প্রশ্ন করলে শাহনূর বলেন, এ বিষয়ে আমাদের সভাপতি কাঞ্চন ভাই-ই ভালো বলতে পারবেন।

পরে যোগাযোগ করা হয় সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে। শিল্পীদের পরিচয়পত্রে কেন নিপুণের স্বাক্ষর? এই প্রশ্নের জবাবে অভিনেতা বলেন, হ্যাঁ, নিপুণ স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু উচ্চ আদালতে তো পদটির ব্যাপারে কোনো সুরাহা হয়নি! কাঞ্চন বলেন, আদালত থেকে তো তাকে নিষেধও করেনি।

শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো সুরাহা হয়নি সাধারণ সম্পাদকের পদটি। সাধারণ সম্পাদকের পদ নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং জায়েদ নিপুণের পরস্পরের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলার বিষয়ে আপিল বিভাগে গত ১২ জুন শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তবে নির্ধারিত দিনে শুনানি হয়নি। সিডিউল জটিলতার কারণেই এই শুনানি হয়নি বলে জানা গেছে। তবে তা কবে হচ্ছে, এখনো জানা যায়নি। 

গত ৬ জুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ শুনানির এ তারিখ ধার্য করে। এর আগে গত ২৩ মে দায়িত্বরত প্রধান বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ শুনানি ৫ জুন পর্যন্ত মুলতবি করেছিলেন।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি নিপুণ আক্তারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেন জায়েদ খান। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসায় এ মামলা দায়ের করা হয় বলে জানান জায়েদ খানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আহসানুল করিম।

উল্লেখ্য, জায়েদ খান-নিপুণ আক্তার একসঙ্গে অভিনয় ও নানা সেবামূলক কাজে যুক্ত থাকলেও শিল্পী সমিতির নির্বাচন কেন্দ্র করে তাদের মাঝে তৈরি হয় দূরত্ব। নির্বাচনে ১৭৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন জায়েদ খান। নিপুণ আক্তার পান ১৬৩ ভোট। এরপর টাকা দিয়ে ভোট কেনাসহ একাধিক অভিযোগ আনেন নিপুণ। সেই জটিলতা এখনো ঝুলে আছে আদালতে। চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি এফডিসিতে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭