ইনসাইড পলিটিক্স

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কারা ষড়যন্ত্র করছে?


প্রকাশ: 04/08/2022


Thumbnail

আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বুধবার বলেছেন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র জোরদার হচ্ছে। তিনি বলেন, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। এখন নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় আমাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য ষড়যন্ত্রকারীরা আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। গতকাল গণভবনে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নবনির্বাচিত বোর্ড সদস্যরা সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এই মন্তব্য করেন। শেখ হাসিনা সবসময় স্পষ্টবাদী একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত। তিনি যা মনে করেন সরাসরি বলেন। তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী, কাজেই নিঃসন্দেহে তার কাছে ষড়যন্ত্রের তথ্য আছে। প্রধানমন্ত্রী এটিও বলেছেন, যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদেরকে আমি জানি, তাদেরকে আমি ভালো করেই চিনি। তার মানে এই ষড়যন্ত্রগুলো সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী খুব ভালোমতোই অবহিত। রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে, প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র কারা করছে?

বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে যে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পাঁচটি ফ্রন্ট থেকে এই মুহূর্তে ষড়যন্ত্র হচ্ছে এবং এই ষড়যন্ত্রকারীরাও পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র গুলো ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে তার মধ্যে-

১. আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় ষড়যন্ত্রটি হচ্ছে এখন আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। পশ্চিমা দেশগুলো এই ষড়যন্ত্র করছে বলে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক সময় বাংলাদেশের ওপর নানারকম চাপ প্রয়োগ করছে এবং এটির প্রধান উদ্দেশ্য হলো আওয়ামী লীগকে বা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় থেকে সরিয়ে দেওয়া। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের মানবাধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে অযাচিত বিতর্ক তৈরি করে একটা আবহ তৈরি করার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন তুলছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস কয়েক দফা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং আগামী নির্বাচন নিয়ে কিছু কথাবার্তা বলেছেন। এটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের একটি অংশ বলে অনেকে মনে করেন। শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয়, তার সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলো এই নীলনকশায় যুক্ত হয়েছে বলে একাধিক সূত্র দাবি করেছে।

২. সুশীল সমাজের ষড়যন্ত্র: বাংলাদেশের সুশীল সমাজ শেখ হাসিনাকে হটানোর জন্য ২০০৭ সালেও একবার চেষ্টা করেছিলেন ওয়ান-ইলেভেনের মাধ্যমে কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হয়নি। শেখ হাসিনাকে প্রায় এক বছর কারাভোগ করতে হয়েছিল। এখন সুশীল সমাজ নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে, দেশের তীব্র অর্থনৈতিক সংকট, সামনে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে ইত্যাদি নানা কথা বলে জনমনে অস্বস্তি তৈরি করার চেষ্টা করছে। সুশীল সমাজ বাংলাদেশের অর্থনীতির শুধুমাত্র নেতিবাচক দিকগুলো বিকৃত করে প্রচার করছে, যাতে জনগণ বিভ্রান্ত হয়।

৩. কয়েকটি গণমাধ্যম: বাংলাদেশের কয়েকটি গণমাধ্যম শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে যুক্ত বলে বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে। কিছু কিছু গণমাধ্যম পড়লে মনে হয় যে, দেশে বোধ হয় অস্থির অবস্থা চলছে। জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। যেকোনো সময় দেশ গভীর সঙ্কটের মুখে পড়বে। সেখান থেকে উদ্ধার পাবে না। এই গণমাধ্যমগুলো একতরফা ভাবে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে যাচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন যে এই গণমাধ্যমের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে সুশীল সমাজ এবং আন্তর্জাতিক চক্রের একটি যোগসূত্র রয়েছে।

৪. আমলাদের ষড়যন্ত্র: বাংলাদেশের আমলাদের একটি অংশ যারা বিএনপি-জামায়াত ঘরনার, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অস্তিত্ব বিশ্বাস করে না। তারাও এখন আস্তে আস্তে উন্মোচিত হচ্ছে এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ষড়যন্ত্র করছে।

৫. বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র: যে সমস্ত যুদ্ধাপরাধী স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশের বাইরে অবস্থান করছে এবং লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াসহ যারা দণ্ডপ্রাপ্ত, তারা বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করছে এবং এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করছে, জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। এছাড়াও তারা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক তথ্য পরিবেশন করছে। এইসব ষড়যন্ত্রমূলক গুলোকে মোকাবেলা করেই শেখ হাসিনাকে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭