কালার ইনসাইড

আফরান নিশো 'একাই একশো'


প্রকাশ: 04/08/2022


Thumbnail

ভার্সেটাইল অভিনেতা আফরান নিশো। বিভিন্ন সময় তাকে দর্শক বিচিত্র সব চরিত্রে দেখেছেন। ছোটপর্দায় ব্যাপক জনপ্রিয় এই অভিনেতা। তার নাটক মানেই ইউটিউবে মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ। শুধু ছোট পর্দায় নয় বর্তমানে ওটিটি মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। শিহাব শাহীনের পরিচালনায় 'মরীচিকা' ওয়েব সিরিজে অভিনয় করে নেগেটিভ চরিত্র দিয়ে বেশ আলোচনায় এসেছিলেন। এবার একই পরিচালকের 'সিন্ডিকেট' ও 'কাইজার'  নামে আরও ওয়েব সিরিজে অভিনয় করে বেশ প্রশংসা। সব কিছু মিলিয়ে যেন তিনি একাই একশো।



নিশোর শুরুটা শিক্ষা নয়, জেদ দিয়ে। একটি কথার জন্যই আফরান নিশো অভিনয় নিয়ে উঠেপড়ে লাগেন। ১৯৯৯ বা ২০০০ সালের দিকে আফরান নিশো মডেল হিসেবে কাজ শুরু করেন। তখন বন্ধুদের সঙ্গে মজার ছলেই মডেলিংয়ে জুড়ে যান। অত আগপিছ ভাবেননি সে সময়। একটা–দুটো কাজ করতে করতে মডেলিং থেকে জুড়ে যান বিজ্ঞাপন চিত্রের সঙ্গে। এই ক্ষেত্রে তাঁর শুরুটা হয় অমিতাভ রেজার সঙ্গে, এরপর আফজাল হোসেন। ২০০৫ সালে নিশো প্রথম অভিনয় করেন বাংলাভিশনের একটি ধারাবাহিকে, নাম ঘরছাড়া। পরিচালক ছিলেন গাজী রাকায়েত। নিশো নিজেই আমাদের বললেন, ‘শুরুতে আমি অত বেশি সিরিয়াস ছিলাম না। বিরতি দিয়ে দিয়ে কাজ করতাম। অনেক পরে গিয়ে অভিনেতা হিসেবে সিরিয়াস হই।’ কী এমন ঘটল, যা ‘এলোমেলো’ নিশোকে সিরিয়াস অভিনেতা হিসেবে গড়ে তুলল! জবাবে নিশো জানালেন, আশপাশের লোকের একটা কথা তাঁকে বদলে দিয়েছে। মানুষ নাকি বলত, মডেলরা ভালো অভিনেতা হতে পারে না। ব্যস, এ কথাই জেদ হয়ে চাপল নিশোর মাথায়। অভিনেতা তিনি হয়েই দেখাবেন। যেই কথা সেই কাজ। নিশো এখন কতটা ‘অভিনেতা’ হয়ে উঠেছেন, তা তো তাঁর নাটক আর ইউটিউবে থাকা নাটকগুলোর নিচে মন্তব্য দেখলেই বোঝা যায়।



নিশো অভিনয়ের আদর্শ হুমায়ুন ফরীদিকে নিয়ে। ফরীদি তাঁর আদর্শ, অনুপ্রেরণা, গুরু, শিক্ষক সব। প্রয়াত এই অভিনেতার প্রতি নিশোর ভালোবাসার মাত্রাটা বলি একটা ঘটনা দিয়ে। লোটাকম্বল নামে একটি নাটকের পাণ্ডুলিপি এসেছে নিশোর হাতে। সেই পাণ্ডুলিপিতে নিশোর চরিত্রের ভাষাটা অন্য রকম। এমন কোনো চরিত্রে আগে তাঁর কাজ করা হয়নি। হাতে সময় খুব কম, এর মধ্যেই এই চরিত্রের জন্য তৈরি হতে হবে নিশোকে। কীভাবে নিজেকে তৈরি করবেন, কোন দিক থেকে শুরু করবেন, কোথা থেকে রেফারেন্স নেবেন—কিছুই বুঝতে পারছিলেন না। অনেক রাত অবধি চিন্তাভাবনা করে নিশো ঘুমাতে গেলেন। স্বপ্নে এলেন গুরু হুমায়ুন ফরীদি। বেশি কিছু না, ফরীদি স্বপ্নে নাকি নিশোকে শুধু বলেছিলেন, ‘তুই পারবি। চেষ্টা কর।’ ব্যস, পরদিন গেলেন সেটে। গিয়ে দেখলেন, আগের রাত পর্যন্ত যে বিষয়টা অসম্ভব ঠেকছিল, সেটাই হয়ে গেছে ভীষণ সহজ। এভাবেই হুমায়ুন ফরীদি না থেকেও প্রভাবিত করে যাচ্ছেন আফরান নিশোকে।

নাটক-কিংবা ওটিটি মাধ্যম যেখানেই যাক না কেন এখন নিশো সেখানেই যেন সোনা ফলে। ক্যারিয়ারে এমন কোন ক্যারেক্টার যা নিশো করেননি। আর প্রতিটা চরিত্রই দর্শকদের মাঝে ফেলেছে সাড়া। এক কথায় নির্মাতাদের এক আস্থার নাম নিশো।



প্রায় প্রতিটি নির্মাতা বেশ আনন্দিত থাকেন নিশোকে নিয়ে কাজ করে। নির্মাতা শিহাব শাহীন এই অভিনেতা নিয়ে বলেন, নিশো এক কথায় অসাধারণ অভিনেতা। যে কিনা ভালো ক্যারেক্টার করার জন্য সব কিছু স্যাক্রিফাইস করেন। আমার 'সিন্ডিকেট' ওয়েব সিরিজের জন্য অনেক কিছু করেছে সে।

এদিকে এই অভিনেতার ভক্তদের দীর্ঘদিনের দাবি, তাকে বড়পর্দায় দেখা। অবশেষে সেই প্রতীক্ষার পালা শেষ হতে যাচ্ছে। চলতি বছরই বড় পর্দায় দেখা যাবে নিশোকে। আর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন এই অভিনেতা নিজেই। তিনি বলেন, আমি তো বড় পর্দায় করতে চাই। কিন্তু গল্প পছন্দ হলে চরিত্র পছন্দ হয় না, চরিত্র পছন্দ হলে গল্প ঠিক থাকে না; গল্প-চরিত্র দুটোই পছন্দ হলে বাজেট ঘাটতি দেখা যায়। সত্যি কথা বলতে আমিও সবসময়ই বড় পর্দায় কাজ করার কথা ভাবি। তবে বড় পর্দা তো বড় ব্যাপার। হুট করে তো কাজ করলে হবে না। অনেক ব্যাপার আছে। ফিল্ম করার জন্য বড় প্রস্তুতির দরকার হয় উল্লেখ করে এই অভিনেতা বলেন, অনেকেই বলেন, একমাস পরে সিনেমার শুটিং! এমনটা করতে পারবো না। আর আমি সবসময় বলি, ফিল্মের নামে চ্যারিটি করতে পারবো না। নাথিং কামস ফ্রি। যখন মুভ করবো সেখানে চ্যারিটি করার কিছু নাই। প্রফেশনালি কাজ করবো। সেখানে পারিশ্রমিক ও প্রপার বাজেট থাকতে হবে। তবে  এবার চলতি বছরই হয়তো বড় পর্দায় কাজ করবো।

নিশো আরও বলেন, এবার সত্যি সত্যিই দেখা যাবে সিনেমায়। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি গল্প রয়েছে আমার কাছে। কয়েকটি পছন্দও হয়েছে। সিনেমার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। এরই মধ্যে চরিত্রের জন্য বডি ট্রান্সফরমেশন শুরু করছি। ওজন কমাচ্ছি। আশা করি, এ বছরের যে কোনো সময় আমার ভক্তদের সিনেমার সুখবরটা দিতে পারব।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭