ইনসাইড বাংলাদেশ

সুনামগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা খায়েরসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা


প্রকাশ: 05/08/2022


Thumbnail

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা এবং সুনামগঞ্জের তাহিরপুর কয়লা আমদানী কারক গ্রুপের আন্ত:র্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক দাবিদার আবুল খায়েরসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০৪ আগস্ট) বিকেলে তাহিরপুর থানার এসআই মো. হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে সরকারি কাজে বাঁধা দান ও পুলিশের উপর হামলা চেষ্টার ঘটনায় ওই মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার অভিযুক্ত আসামীরা হলেন, উপজেলার উওর শ্রীপুর ইউনিয়নের গোলকপুর গ্রামের মৃত গোলেনুরের ছেলে আবুল খায়ের, ফৌজদার আলীর ছেলে নজির, মোছাব্বির মিয়ার ছেলে মাহমুদ আলী,বালিয়াঘাট সড়কপাড়ার হারুন মিয়ার ছেলে আব্দুল্লাহ,হাশিম কলির ছেলে হেলাল মিয়া,পাশ্ববর্তী অমৃতপুর গ্রামের ইসকান্দর আলীর ছেলে আলিমুল ইসলাম, কাজিম উদ্দিনের ছেলে শামিরুল তার সহোদর একরামুল,নয়াবন্দ গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে হোসাইন,জামালগঞ্জ উপজেলার ছোট ঘাগটিয়া গ্রামের আহম্মদ আলীর ছেলে আলী হোসেন সহ অজ্ঞাত নামা আরও ৭ থেকে ৮জন।

আসামীদের মধ্যে ইজারাবিহিন শান্তিপুর হাওর থেকে খনিজ বালু লুটের পর পাটলাই নদীর নৌপথে পুলিশ কতৃক বালু বোঝাই নৌকা আটকের পর থানায় নিয়ে যাবার পথে পুলিশের উপর হামলা চেষ্টার মূল হোতা আবুল খায়ের।

মামলার পলাতক আসামী আবুল খায়ের নিজেকে সুনামগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি ও তাহিরপুর কয়লা আমদানী কারক গ্রুপের আন্ত:র্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক দাবিদার।

মামলার আসামীর তালিকায় তাহিরপুর কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের নামে খায়েরের নৌপথ শাসন- শোষণ কয়লা চুনাপাথর বালু লুপাটে লালিত সেট্রি (পাহাড়াদার) ও তার ব্যাক্তিগত লাঠিয়াল বাহিনীর কয়েকজন সদস্য এবং নৌকার মাঝি সুকানী রয়েছেন।      

ঘটনার সাথে জড়িত আটককৃত আব্দুল্লাহ, আলিমুল, আলী হোসেন, হোসাইনকে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধায় সুনামগজ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে(তাহিরপুর যোন) সোপর্দ করলে বিজ্ঞ আদালতের বিচারক তাদের জামিন না মঞ্জুর করে তাদেরকে জেলা কারাগারে প্রেরণের আদেশ প্রদান করেন।  

প্রসঙ্গত, গেল এক সপ্তাহ ধরে ইজারাপ্রাপ্ত নয়া ছড়ার বালু বলে ইজারা বিহিন শান্তিপুর হাওর থেকে লক্ষাধিক ঘনফুট খনিজ বালু লুটে নিয়ে এসে একটি প্রভাবশালী চক্র বালিয়াঘাট পাটলাই নদীতে ষ্টিল বাডি নৌকায় করে লোড করে নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা।

বিষয়টি স্থানীয় লোকজন প্রশাসন ও থানা পুলিশকে অবহিত করলে বুধবার রাতে থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত)’র নির্দেশে টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ দু’জন কনষ্টেবলকে নিয়ে এসে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পাটলাই নদী থেকে অবৈধ খনিজ বালু বোঝাই ষ্টিল বডি নৌকা আটক করেন। এরপর নৌকাটি থানায় নিয়ে যাবার পথে আবুল খায়ের মাদকাসক্ত অবস্থায় পুলিশ সদস্যদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে পৃথক নৌকা যোগে কয়লা আমদানিকারক গ্রপের তার লালিত বেশ কয়েকজন সেন্ট্রি (পাহাড়াদার) ও নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে এসে বালু বোঝাই নৌকা ছিনিয়ে নিতে ও পুলিশ সদস্যদের উপর হামলার চেষ্টা চালায়।  

পরে থানা সহকারি পুলিশ সুপার তাহিরপুর সার্কেল(তাহিরপুর-জামালগঞ্জ) মো. সাহিদুর রহমানের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলা চেষ্টা জড়িত থাকায় অভিযান চালিয়ে চার দুবৃত্তকে আটক করে।

অভিযোগ উঠেছে নিয়মিত মাদক সেবন করে বালিয়াঘাট এলাকায় গণঅশান্তি, সাদারন লোকজনের মধ্যে ভীতি প্রদান,গালিগালাজ, প্রভাব বিস্তার করা, সরকারি দলের ক্ষমতার অপব্যবহার ও কয়লা আমদানিকারক গ্রপের পদবী ব্যবহার করে গেল কয়েক বছর ধরে বড়ছড়া-চারাগাঁও শুল্ক ষ্টেশন থেকে দেশব্যাপী নৌপথে কয়লা চুনাপাথর পরিবহনকালে তার লালিত কয়েকজন সেট্রিদের দিয়ে নৌপথে চুরি, ভারতীয় চোরাচালানের কয়লা চুনাপাথর জব্দ করে নিজেরাই মনগড়া নিলামে ক্রয় বিক্রয় করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন খায়ের চক্র। খায়ের চক্র এরপর একটি প্রভাবশালী চক্রকে সাথে নিয়ে গেল এক সপ্তাহ ধরে ভুয়া ইজারার নামে সরকার মুল্য ভ্যাট আয়কর ছাড়াই শান্তিপুর হাওর থেকে লক্ষাধিক ঘনফুট খনিজ বালু লুটে নিয়ে যায়।

শুক্রবার অতিরিক্ত ডিআইজি (সদ্যপদোন্নতি প্রাপ্ত) সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বিপিএম বলেন, অপরাধী যত বড় প্রভাবশালীই বা যে কোন রাজনৈতিক দলেরই হোক না কেন তাদেরকে আইনের দৃষ্টিতে অপরাধী হিসাবে গণ্য করা হবে। তিনি আরও বলেন, পলাতক অন্য আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম তৎপর রয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭