ইনসাইড আর্টিকেল

মেঘালয় যেনো এক স্বর্গরাজ্য


প্রকাশ: 06/08/2022


Thumbnail

ভ্রমণ একজন মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। তবে কর্মব্যস্ত জীবনে ভ্রমণ করার সময় কোথায়! তাই বলে কি ভ্রমণ পিপাসু মানুষগুলো থমকে যায়! ভ্রমণ প্রিয় মানুষগুলো অপেক্ষায় থাকে ছুটির। কিছু সময়ের জন্য হলেও কর্মব্যস্ত জীবনকে বিদায় জানিয়ে ছুটে চলে পাহাড়, সমুদ্র কিংবা ঝর্ণায়। তাই তো ছুটির দিনগুলোতে বা দীর্ঘ সময়ের জন্য কোনো ছুটি পেলে ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের মধ্যে প্রথমেই প্রাধান্য পায় কোথাও না কোথাও ঘুরতে যাওয়ার। কেউ বা বাছাই করে নেয় পাহাড়-পর্বত। আবার কেউবা বাছাই করে নেয় সমুদ্র-সৈকত। তবে লম্বা ছুটি পেলে এবং পাহাড়-পর্বত, সাগর, মেঘ সব কিছুর অনুভূতি একসাথে নিতে চাইলে যেতে পারেন প্রতিবেশী দেশ ভারতের মেঘালয়ে। যেখানে বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ মানুষই একটু লম্বা সময়ে পেলে ঘুরতে যাচ্ছে। 

মেঘালয় যেখানে পাহাড় ছুয়ে যায় আকাশকে, আর পাহাড়ের বুক চিরে নেমে আসা অসংখ্য ঝর্ণা, মেঘেরা বিচরণ কিরে আকাশজুড়ে। এসব কিছুর সংমিশ্রণ যেনো এক স্বর্গ রাজ্য। তবে মেঘালয়ের সেরা জায়গা কোনটি বা কোথায় গেলে দেখতে পারবেন প্রকৃতির সেই অনাবিল অপরুপ দৃশ্য! এ নিয়েই আজকে বাংলা ইনসাইডারের ভ্রমণ আয়োজন। 

মেঘালয় রাজ্যের আকর্ষণীয় দুইটি শহর রয়েছে। যার মধ্যে শিলং ও চেরাপুঞ্জি অন্যতম। আর বাংলাদেশ থেকে আসা ভ্রমণ পিপাসুরা সব থেকে বেশি এই স্থানগুলোতেই ঘুরতে আসেন এবং পছন্দও করেন। এই স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান। যেমন-

মাওলিনং গ্রাম
শিলংয়ের মাওলিনং গ্রাম। মেঘালয়ের আকর্ষনের জায়গায় শিলং আর শিলংয়ের আকর্ষণ এই মাওলিনং গ্রাম। শিলংয়ের মূল শহর থেকে ৯০ কি.মি দূরে এই গ্রামের অবস্থান।

মাওলিনং গ্রামের পাহাড়ে আর এখানকার ঐতিহ্য বাড়িঘর গুলির মধ্যে লুকিয়ে আছে অফুরন্ত সৌন্দর্য। তবে এই গ্রামের মূল আকর্ষণ মাওলিনং ঝর্ণা। ঝর্নার আশেপাশে ঘিরে রয়েছে বাহারি রঙের অর্কিড আর নানা লতাপাতার সমাহার। যা একজন ভ্রমণ পিপাসুকে দেবে পূর্ণ তৃপ্তি। এই গ্রামে ঝর্নার পাশাপাশি রয়েছে ৮৫ মিটার উঁচু হাই-স্কাই ওয়াচ যেখান থেকে বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের পুরো সমতল দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও রয়েছে জীবন্ত শেকড়ের ব্রীজ যা এখানকার ভ্রমণাকর্ষণ গুলোর মধ্যে অন্যতম।

লাই লাতলুম গিরিখাত
যারা ট্রেকিং করতে পছন্দ করেন বা মেঘালয়ে গিয়ে ট্রেকের খোজ করেন তাদের জন্য রয়েছে শিলংয়ের লাই লাতলুম গিরিখাত। চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার এই ট্রেকে আপনি পৌঁছে যাবেন এমন এক স্বর্গীয় জায়গায় যেখান থেকে মেঘালয়ের পুরো দৃশ্যটা চোখের দৃষ্টিতে ধরা পড়বে। এই গিরিখাতে পৌছাতে চার-পাঁচ ঘণ্টার ট্রেক করা খুবই কষ্টসাধ্য। তবে একবার পৌঁছে গেলে চারদিকের অপরূপতা দেখে মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই।

এইদিকে ভারতে সব থেকে বেশি বৃষ্টি হয় চেরাপুঞ্জিতে। এখানে দেখার মত অনেক কিছুই আছে। তবে ভ্রমণ পিপাসুদের আকর্ষণ কেন্দ্রবিন্দু হলো ডাবল ডেকার জীবন্ত শেকড়।

ডাবল ডেকার জীবন্ত শেকড়
প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট বিশাল এই শেকড়। রূপ নিয়েছে প্রকাণ্ড সেতুতে, তাও আবার উপরে এবং নিচে মোট সেতু সংখ্যা দুটি।

এখানে আপনাকে পার হতে হবে মাসে আচ্ছাদিত পিচ্ছিল ২,০০০ সিঁড়ি যা পার হতে ভালো ভালো ট্রেকারদেরও লাঠির প্রয়োজন হয়। এই ২০০০ সিঁড়ি পার হয়ে এখানে পৌছাতে প্রয়োজন সাহসের। সাহস করে একবার এই লম্বা দুর্গম পথ পার করতে পারলেই দেখা মিলবে এই স্বর্গ রাজ্যের। 

দ্য এলিফেন্ট ফলস
প্রচুর ভ্রমণ আকর্ষণের মধ্যে এখানে লুকিয়ে আছে এলিফ্যান্ট ফলসের মতো আরো অনেক আকর্ষণ। এই জলপ্রপাতের কালো পাথরগুলো মিলিত হয়ে এক ঐরাবত আকৃতির সৃষ্টি করেছিল, সেই থেকে এর নাম দ্য এলিফ্যান্ট ফলস। যদিও দূর্ভাগ্যবশত মেঘালয়ের এক ভূমিকম্পে সেই আকৃতি আর এখন নেই, তারপরেও এই জলপ্রপাতের সৌন্দর্য একদমই কমেনি । তিন ধাপে গঠিত এই জলপ্রপাতের প্রতি ধাপেই খেলা করে অজস্র জলরাশি।

এছাড়াও আরও বেশকিছু ভ্রমণ স্থান রয়েছে যার মধ্যে মেঘালয়ের জোয়াইয়ের লালং পার্ক, ডন বস্কো সেন্টার অফ ইনডিজেনাস কালচার, উমিয়াম লেকের মত কিছু জায়গা।  

সবশেষে ভ্রমণ পিপাসুদের কিছু কথা জানা অবশ্যই প্রয়োজন।  সেটা হলো ভ্রমণে যাওয়ার আগে একটা ব্যাকপ্যাকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে নিন।

পাহাড়, পর্বত, সমুদ্র যেখানেই ভ্রমণে যান সেখানে সতর্কতা অবলম্বনে ভ্রমণ করুন। 

সবসময় সাথে একজন গাইড রাখুন এবং জায়গা সম্পর্কে সঠিক তথ্য নিয়ে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে রওনা হন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭