কালার ইনসাইড

নির্মাতার মিথ্যাচার, নিজেই চাচ্ছেন না ছবি আলোচনায় আসুক


প্রকাশ: 14/08/2022


Thumbnail

মাহিয়া মাহি ও জিয়াউল রোশান অভিনীত সিনেমা ‘আশীর্বাদ’। সরকারি অনুদানে নির্মিত এ সিনেমা পরিচালনা করেছেন মোস্তাফিজুর রহমান মানিক।সিনেমাটির কাহিনি, সংলাপ, চিত্রনাট্য রচনা করেছেন জেনিফার ফেরদৌস।

আগামী ১৯ আগস্ট সিনেমাটি মুক্তি পাবে। তবে মুক্তির আগেই ছবির প্রযোজক ও নায়ক-নায়িকা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছেন। প্রযোজক অভিযোগ করছেন নায়ক-নায়িকাকে নিয়ে আবার তাঁরা করছেন প্রযোজককে নিয়ে। 

জেনিফার বলেন, নায়ক-নায়িকা যখন নিজের সিনেমার প্রচার না করে, তখন আমরা তো আর জোর করে করাতে পারি না। নিজের সিনেমার ভালো না বুঝলে আমাদের কিছু করার নেই। সিনেমার প্রচার না করলে এক সময় মাইনাস হয়ে যাবে তারা। আমার আর কিছু বলার নেই। আশা করছি, নির্মাণ এবং গল্পের জন্য আমার সিনেমা ভালো চলবে।

শুটিংয়ের সময়েও খারাপ আচরণ করেছেন মাহি। তা উল্লেখ করে জেনিফার বলেন, করোনার সময়ে শুটিং করা কতটা কঠিন ছিল তা আপনারা সবাই জানেন। ওই সময়ে অনেক কলাকুশলীর অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয় ছিল। ওই সময়ে শুটিং করছিলাম। আমার সহকারী হিসেবে একটি ছেলে ছিল। কিন্তু মাহির কারণে ওই ছেলেকে শুটিং থেকে বাদ দিতে হয়। পরে কাঁদতে কাঁদতে সেট থেকে বেরিয়ে যায় ছেলেটি।

শুটিং বয়কে বাদ দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে জেনিফার বলেন, আমার সিনেমার নায়িকা সম্ভবত নারকেল তেল চেয়েছিল। ওই সময়ে ছেলেটি আমার মাথায় ছাতা ধরেছিল। যার কারণে নায়িকাকে তেল দিতে দেরি হয়। এতে মাহি বেঁকে বসে। ওই ছেলেকে বাদ না দিলে মাহি শুটিং করবে না বলে জানায়। পরে বাধ্য হয়ে ছেলেটিকে বাদ দিই।

তবে তাঁর অভিযোগকে মিথ্যা বলে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন মাহি। মাহি জানান, আপা বলেছে আমাকে তেল দেয়া হয়নি বলে আমি শুটিং করবো না জানিয়েছিলাম এবং আমার কারণে নাকি একটি ছেলেকে শুটিং সেট থেকে বের করে দেয়া হয়ে ছিলো। বিষয়টি পুরোটাই মিথ্যা। আমরা সেদিন শুটিং করছিলাম ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে। শুটিংয়ের কিছুক্ষন আগে বৃষ্টি হয়েছিলো। এর কিছুক্ষন পরেই আমাদের শট ছিলো মাঠে। বৃষ্টির কারণে মাঠ অনেকটাই ভেজা ছিলো। সেই অবস্থায় শুট করতে গিয়ে আমার এলার্জির কারণে শরীরে চুলকানি শুরু হয়। আমি তখন তাড়াতাড়ি গাড়িতে গিয়ে ড্রেস চেঞ্জ করি। আমাদের প্রোডাকশনে মেয়ে বলতে আমরা দুইজনই ছিলাম। কাউকে তেমন ভাবে কিছু বলতেও পারছিলাম না। এমন অবস্থায় আমার সহকারী বললো নারিকেল তেল দিতে কিন্তু আশাপাশে তেমন কোন দোকানও ছিলো না। যার কারণে বেশ বেকায়দায় পড়ে গিয়েছিলাম আমি। তখন বেশ কয়েকবার আমার সহকারী সেই প্রোডাশন বয়কে একটু তেল ব্যবস্থা করে দিতে বললে সে এক প্রকার রেগে যায়, বলে ম্যাডামের জন্য আগে গরুর মাংস ব্যবস্থা করি তারপর সব হবে। একটা মানুষ মারা যাচ্ছে আর অন্য জন্য গরুর মাংস খাবে সেটা কী করে হয় ? মানবতা বলতেও তো একটা কথা থাকে। শুধু আমি নই আমাদের অনেক আর্টিস্টদের কোন সম্মান করা হয়নি শুটিং সেটে। 

মাহি আরও বলেন, ছবিটি সরকারি অনুদানের ছবি তাই আমরা আর্টিস্টরা অনেক কম পারিশ্রমিক নিয়েছি। কিন্তু সেই তুলনায় আমরা সম্মান পাইনি। একটি সিনেমা আমার সন্তানের মত, অথচ আমার চোখের সামনে সেই সন্তানটি মারা যাচ্ছে এটা আমি সহ্য করতে পারবো না। 

এদিকে ছবির পরিচালক সম্প্রতি মোস্তাফিজুর রহমান মানিক প্রযোজকের সঙ্গে সুর মিলেয়ে কথা বলেছেন। যদিও এর আগে মাহি বলেছিলেন পরিচাক স্যার যদি বলেন সব সত্য তাহলে আমি মাথা পেতে নিবো সব। নির্মাতা এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, মাহির অভিযোগ অসত্য। প্রথমে আমিই ফেসবুকে সিনেমাটির পোস্টার শেয়ার করে প্রচারণা শুরু করি। মাহি আমাকে অনুরোধ করেছিলেন সিনেমাটি আরও পরে মুক্তি দেয়ার জন্য। তখন আমি তাকে জানিয়েছিলাম এটি এখন আর আমার হাতে নেই। আমি তাকে কখনোই বলিনি এই সিনেমার প্রচারণা থেকে দূরে থাকতে। এসব মিথ্যা কথা। কেন তিনি এসব মিথ্যা কথা বলছেন বুঝতে পারছি না।

নির্মাতার এমন মন্তব্যে বেশ চটেছেন মাহি। তাঁর কথা সত্য গোপণ করা হচ্ছে। এরপর পরই বাংলা ইনসাইডারের হাতে আসে নির্মাতা ও মাহির কিছু চ্যাটিং। যেখানে নির্মাতা নিজেই বলছেন তিনি চান না ছবিটি আলোচনায় আসুক। চিপা চাপা দিয়ে ছবিটি বের হয়ে যাক। পাশাপাশি তিনি এক ভয়েস পাঠিয়ে বলেন, ছবি ১৯ তারিখ মুক্তি পাবে না কারণ এরকিছুই প্রস্তুত নয়।

এদিকে শোনা যাচ্ছে নির্মাতাও বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন। যেখানে ছবির নায়ক-নায়িকা সহ ছবির আরও অনেকেই উপস্থিত থাকবেন। শুধু তাইনয় পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে তিনি ঐ মিথ্যা ভিডিও বাইট দিয়েছেন। 

২০১৯-২০ অর্থ বছরে সরকারি অনুদান পেয়েছে ‘আশীর্বাদ’ সিনেমাটি। পরিচালক মানিক জানান, সিনেমায় সত্তর দশকের ছাত্র রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ের পরিস্থিতি নিয়ে কয়েকটি ধাপ।

সিনেমাটিতে আরো অভিনয় করেছেন, কাজী হায়াৎ, রেহানা জোলি, রেবেকা, শাহনূর, অরণ্য বিজয়, হারুন রশিদ, সায়েম আহমেদ, সীমান্ত, শিশুশিল্পী জেনিলিয়া, আরিয়ান প্রমুখ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭