ইনসাইড বাংলাদেশ

ভারত শেখ হাসিনাকেই চায়, তবে...


প্রকাশ: 14/08/2022


Thumbnail

আগামীকাল ভারতের স্বাধীনতা দিবস। ৭৫ বছর পূর্ণ করা ভারত তাদের মৌলিক লক্ষ্য হিসেবে চিন্তা করে অখণ্ডতা এবং বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভাব। আর এই যাত্রাপথে ভালোভাবে এগুচ্ছে ভারত। ভারত মনে করে যে, ভারত এখন বিশ্বে একটি পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে। যদিও ভারতের এখন অন্যতম মাথাব্যথা হিসেবে কাজ করছে চীন। ৭৫ তম স্বাধীনতা উদযাপনের আগেই শ্রীলঙ্কায় চীনের জাহাজ গেছে ভারতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে। কিন্তু এসব আন্তর্জাতিক রাজনীতির নানা মেরুকরণ থাকার পরও ভারত যে বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে গত ৭৫ বছরে, এ নিয়ে কারো কোনো সংশয় নেই। শুধু ভারত তার নিজের দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায়নি, এই উপমহাদেশে অভিভাবক হিসেবেও আবির্ভূত হয়েছে ভারত। এটি এখন বিশ্ব বাস্তবতা। একটা সময় ছিলো ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ। কিন্তু পাকিস্তান এখন দেউলিয়া হতে হতে নিঃস্ব এবং ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। আর যেই হোক না কেন এই অঞ্চলের রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের নিজের কোনো শক্তি নেই। অবশ্য কখনো কখনো পাকিস্তান চীন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ভর করে এই এলাকায় কিছু একটা করতে চায় কিন্তু সেটি সাময়িক। এখন পাকিস্তানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খুব একটা আস্থা রাখতে পারছে না। যে কারণে উপমহাদেশের নিয়ন্ত্রণ এখন ভারতের হাতে। কাজেই, উপমহাদেশের দেশগুলোর রাষ্ট্রক্ষমতার কাঠামো, মেরুকরণ এবং রাজনীতির গতি-প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ভারত বড় ভূমিকা পালন করে নিঃসন্দেহে।

বিশেষ করে বাংলাদেশের গত এক যুগের রাজনীতির গতি-প্রকৃতি ভারতের প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য অনেক ভূমিকা রয়েছে। স্বাধীনতা দিবসে ভারতের যে আকাঙ্ক্ষাগুলো রয়েছে তার মধ্যে বড় আকাঙ্ক্ষা হলো বিচ্ছিন্নতাবাদ মুক্ত ভারত। অখণ্ড ভারত নিয়ে যে দুশ্চিন্তা ছিলো ভারতের রাজনীতিতে সেই দুশ্চিন্তা এখন অনেকটাই কমে গেছে। গত এক যুগ ধরে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা আস্তে আস্তে কোণঠাসা হতে হতে নিঃস্ব প্রায়। এর প্রধান কারণ হিসেবে ভারতের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশের ভূমিকা অনস্বীকার্য। একটা সময় ভারত শেষ পর্যন্ত অখণ্ড থাকবে কিনা, সে নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিলো। বিশেষ করে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এবং বাংলাদেশের ৭৫ পরবর্তী সরকারগুলো ভারতকে অস্থিতিশীল করার জন্য প্রায় একসাথে কাজ করেছিলো। কিন্তু সময় পাল্টে গেছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলাদেশের মাটিকে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জন্য আর ব্যবহার করতে দেয়া হচ্ছে না। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থানে রয়েছে। আর এ জন্য ভারত যে ঋণী সেটি নিয়ে ভারত এখন আর লুকোচুরি করে না, এটি ভারতের নেতারা প্রকাশ্যে স্বীকার করেন। এজন্য শেখ হাসিনার প্রতি তার কৃতজ্ঞতা। আর এ কারণেই ভারতের একটা আলাদা প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে শেখ হাসিনার সরকারের। দুটি নির্বাচনেই ভারত শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতায় আসার ক্ষেত্রে পরোক্ষভাবে কিছুটা হলেও সহযোগিতা করেছে। আগামী নির্বাচনে ভারতের ভূমিকা কি হবে? ভারতের স্বাধীনতা দিবসে এটি একটি বড় প্রশ্ন হিসেবে সামনে এসেছে।

একাধিক রাজনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ভারতে শেখ হাসিনার ব্যাপারে একটি রাজনৈতিক ঐক্য মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কংগ্রেস, বিজেপি কিংবা তৃণমূল, সব রাজনৈতিক দলগুলোই মনে করে যে, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। তবে ক্ষমতাসীন বিজেপি যেমন মনে করে যে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই তিনি আওয়ামী লীগের ব্যাপারেও বেশকিছু আপত্তি তাদের রয়েছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যালঘুদের ওপর নানারকম নিপীড়ন, মৌলবাদীদের সাথে আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতার নানা রকম সখ্যতা, কোনো কোনো নেতার পাকিস্তানপ্রীতি এমনকি সরকারের দুই একজন মন্ত্রীর ভারতবিরোধী চিন্তা-চেতনার ব্যাপারে ভারতের সুস্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। আর এ কারণেই এসব বিষয়গুলোর ব্যাপারে ভারতের থিংকট্যাংকরা বাংলাদেশের সঙ্গে খোলামেলা আলাপ করছে বলেও জানা গেছে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করবেন। এই সফরটা বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭