এডিটর’স মাইন্ড

ড. ইউনূসের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নীলনকশা?


প্রকাশ: 03/09/2022


Thumbnail

রাজনীতিতে ক্রমশ উত্তাপ-উত্তেজনা বাড়ছে, সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। এই সহিংসতার মাঝেই সুশীল সমাজ তার নীলনকশা বাস্তবায়নের কার্যক্রম শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির রাজপথের সংঘাত-সহিংসতা যদি তীব্র হয় তাহলে সুশীল সমাজের ক্ষমতা আহরণের পথ পরিষ্কার হবে বলে অনেকে ধারণা করছে। ইতিমধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে যে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আগামী নির্বাচনে তারা অংশ গ্রহণ করবে না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার কীভাবে হবে, কে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবে, কতদিন তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকবে ইত্যাদি নিয়ে পর্দার আড়ালে নানারকম খেলা চলছে। আরেকটি ওয়ান-ইলেভেনের ফর্মুলা মাথায় রেখেই সুশীল সমাজের কিছু কিছু ব্যক্তি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করছেন। আর এই সমস্ত মেরুকরণের মূল কুশীলব হলেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

ইউনূস এখন প্রতারণা, জালিয়াতি এবং অর্থপাচারসহ নানা মামলার চাপে রয়েছেন। আর এই চাপ সরাতে তিনি সরকার উৎখাতেরই একটি ষড়যন্ত্র করছেন এবং সেই ষড়যন্ত্রে সুশীলরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে নিতে চাইছে বলেও একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, গত কয়েকদিনের সুশীলদের সঙ্গে বিএনপি, জাতীয় পার্টি, বাম দলগুলোসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের কথা হয়েছে। তারা বলছেন যে, বর্তমান যে সংবিধান রয়েছে সেই সংবিধান অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা অসম্ভব ব্যাপার। তাছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অতীতের যে কার্যক্রম (২০০৭ সাল বাদ দিলে) তাতে দেখা যায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ ৯০ দিন। এই স্বল্প সময়ের মধ্যে একটি নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব নয়। এজন্য সুশীল সমাজ আবার এক-এগারোর মত একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামছে। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, বিএনপির সঙ্গে এবং জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈঠকে সুশীলরা একটি আপদকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের ফর্মুলা হাজির করেছে। এই ফর্মুলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করা হয়েছে। এখনই নির্বাচন নয় বরং আগে সংবিধান সংশোধন, তারপর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ এবং সকলের মতামতের ভিত্তিতে একটি নতুন নির্বাচনী ব্যবস্থা এবং নতুন সংবিধান প্রতিষ্ঠার পর নির্বাচনের বিষয়টি এখন সুশীলদের পরিকল্পনা।

সুশীলরা বলছেন যে, যেহেতু সংবিধানের ৭(১) অনুচ্ছেদে এখন নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো পন্থায় ক্ষমতা গ্রহণকে তাড়িত করা হয়েছে সেই জন্যই ক্ষমতা গ্রহণের আগে দরকার সরকারের পতন। সরকারের পতনের জন্য তারা মনে করছে একটি সহিংস পরিস্থিতি দেশের তৈরি করতে হবে। এই কারণে বিএনপিকে তারা আরও আগ্রাসী এবং উস্কানিমূলক ভূমিকা গ্রহণের জন্য একাধিকবার অনুরোধ করেছে। মূল পরিকল্পনায় রয়েছে যে, যদি আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে সংঘাত-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে সেক্ষেত্রে সংবিধান স্থগিত করে একটি অরাজনৈতিক সরকার গঠিত হবে যে সরকারকে নেতৃত্ব দিবেন ইউনূস। পাশাপাশি এই সরকারকে বৈধতা দেওয়ার জন্য দেশে একটি গণভোট আয়োজন করা হবে। অতীতেও জিয়াউর রহমান এবং এরশাদ একই পদ্ধতিতে গিয়েছিলেন। তারা প্রহসনের গণভোট করে তাদের ক্ষমতাকে জায়েজ করেছিলেন। সুশীল সমাজের পরিকল্পনা অনুযায়ী গণভোটের মাধ্যমে ড. ইউনূসের সরকারকে বৈধতা দেওয়ার পর তারা একটি সংবিধান প্রণয়ন কমিটি করবে এবং সেই সংবিধান প্রণয়ন কমিটিতে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ছাড়াও রাজনৈতিক প্রতিনিধিদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তাদের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করা হবে এবং নির্বাচন ব্যবস্থা তৈরি করা হবে। তারপর নির্বাচন হবে। অর্থাৎ তিন থেকে পাঁচ বছরের মেয়েদের পরিকল্পনা নিয়ে সুশীল সমাজ এগুচ্ছে। আর এ কারণেই বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলে গলা ফাটানো এখন পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা কি রকম হবে তা ঘোষণা করেনি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭