ইরানে হিজাব বিরোধী আন্দোলনে শোরগোল দুনিয়া জুড়ে। আর এই বিষয়টি নিয়ে শনিবার ( ২৪ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
তসলিমা নাসরিন এর ফেসবুক স্ট্যাটাসটি পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো-
হিজাব বিরোধী আন্দোলনের ৫০ জনকে এই দু'দিনেই মেরে ফেলেছে ইরানের সিকিউরিটি ফোর্স। বাধ্যতামূলক হিজাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে ইরানের মেয়েরা, নিজেদের হিজাব পোড়াচ্ছে, নিজেদের চুল কাটছে, নিজেদের মত নিজেদের মতো করে প্রকাশ করছে, এতে কার কী জ্বলে পুড়ে নষ্ট হয়ে গেল? জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মেয়েরা আজ রাস্তায় ।
দেয়ালে পিঠ ঠেকলে, পেছনে যাওয়ার আর পথ না থাকলে, মানুষ এভাবেই সামনে এগিয়ে যায়। হারাবার কিছু আর অবশিষ্ট না থাকলে মানুষ এভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়ে কিছু অন্তত পাওয়ার জন্য। তারা ধন সম্পদ চাইছে না। শুধু মান ইজ্জত চাইছে। নিজেদের প্রাপ্য অধিকারটুকু শুধু চাইছে। মানুষের মতো বাঁচার অধিকার। মাথা উচুঁ করে চলার অধিকার। নিতান্তই যৌনবস্তু হিসেবে চিহ্নিত না হওয়ার অধিকার, নিজের শরীর নিয়ে অস্বস্তিতে না পড়ার অধিকার, নিজের চুল, নিজের মুখ, নিজের হাত পা লুকিয়ে না রাখার অধিকার।
ইরানী মেয়েদের নিরলস সংগ্রাম দেখে উপমহাদেশের হিজাবি নিকাবী বোরখাওয়ালী মেয়েদের লজ্জায় মাটির সঙ্গে মিশে যাওয়া উচিত। ঠিক ওদের মতো করে পুড়িয়ে দেওয়া উচিত তাদের হিজাব, নিকাব, বোরখা। আজ যদি ছুঁড়ে না ফেলে, একদিন আসবেই, যেদিন তারা ইরানের মেয়েদের মতোই ছুঁড়ে ফেলে দেবে তাদের হিজাব। স্বতঃস্ফূর্তভাবেই হিজাব পোড়াবে। কেউ কেউ অবশ্য পোড়ানোর সময়ও পাবেনা। তার আগেই ধর্মপুলিশের হাতে জীবন হারাবে। মাসা আমিনীর জন্য যেমন মিছিল হচ্ছে, তাদের জন্যও হবে। এই উপমহাদেশেই হবে।