ইনসাইড টক

‘বাংলাদেশ সম্পর্কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা পাল্টাচ্ছে’


প্রকাশ: 25/09/2022


Thumbnail

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী জাাতিসংঘে যে ভাষণটি দিয়েছেন সেটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ভাষণ। বিশেষ করে বর্তমান বিশ্ব সংকটময় পরিস্থিতি নিয়ে তিনি যেভাবে দৃঢ়চিত্তে কথা বলেছেন সেটা অত্যন্ত তাৎপর্য বহন করে। আমি মনে করি তিনি যথেষ্ট খোলাখুলিভাবে বিষয়গুলো জাতিসংঘে তুলেছেন। বিশেষ করে ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে একটি দেশকে স্যাংশন দেওয়ার কারণে পুরো বিশ্ব যে সংকট তৈরি হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের যে ভোগান্তি এ ব্যাপারে তিনি স্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন। তার এই বক্তব্যের কারণে বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা আরও বাড়বে। 

জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত এবং দুই দেশের সম্পর্কসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, সংকট নিয়ে কাউকে না কাউকে কথা বলতে হবে। আর এক্ষেত্রে বাংলাদেশের কথা বলাটাই যুক্তি সঙ্গত। কারণ বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তির ব্যাপারে কখনো দ্বিমত রাখেনি। আমাদের পররাষ্ট্র নীতিই সেটি। ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে যুদ্ধ নয়।’ সে বিবেচনায় জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ অর্থ বহন করে। আমরা আশা করি যে, বাংলাদেশের মতো একটি দেশ যখন এভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই বিষয়গুলো তুলে আনলো তখন যারা এই সব যুদ্ধের মধ্যে লিপ্ত তারা বুঝতে পারবে যে, তাদের শান্তির জন্য কাজ করতে শুরু করা দরকার। কারণ একটি দেশের ওপর স্যাংশন দিয়ে পুরো বিশ্বের উন্নয়ন নষ্ট হবে সেটা তো  হতে দেয়া যায় না। 

তিনি বলেন, র‌্যাবের ওপর স্যাংশন নিয়ে যতটা না গুরুত্ব পাওয়া কথা আমরা তার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। আর এটা হয়েছে দেশের বিরোধী দল এটিকে অনেক বড় করে দেখেছে। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে সম্পর্ক বহুমাত্রিক। সে বিবেচনায় র‌্যাবের ওপর স্যাংশন একটি ছোট বিষয়। সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়ও বটে। কারণ যে তথ্যের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্যাংশন দিয়েছে সেই তথ্যের মধ্যেই বড় ঘাটতি রয়েছে। পাশাপাশি যে সংখ্যার কথা তারা বলছে সে সংখ্যাটিও বড় নয়। যদিও গুমের বিষয়টি শূন্যে নিয়ে আসার দরকার। তাছাড়া আমেরিকা নিজেই তো সেটা রক্ষা করতে পারছে না। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতিবছর এক হাজারের লোক পুলিশের দ্বারা নির্যাতন বা হয়রানি শিকার হয়ে থাকে। গুমের সংখ্যাও তাদের অনেক বেশি। সুতরাং তারপরও স্যাংশন দেওয়া সেটা বুঝাই যাচ্ছে যে, কোনো একটা দল বা গোষ্ঠী তাদের যেভাবে বুঝিয়েছে তারা সেটার ওপর ভিত্তি করেই স্যাংশন দিয়েছে। 

অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, আমেরিকার মনে রাখতে হবে যে, বাংলাদেশে তাদের প্রচুর বিনিয়োগ আছে। আমাদের যে মাকের্ট সেটি কিন্তু আমেরিকায়। তাদের দেশে আমাদের মাকের্টের কারণে যেমন আমাদের লাভ হয়, তেমনি তাদের লোকেদেরও লাভ হয়। লাভ ছাড়া তো তারা ব্যবসা করছে না। সে তো ক্ষতি করে বাংলাদেশ থেকে পণ্য কিনছে না। সুতরাং বাংলাদেশের সাথে আমেরিকারও একটা বড় স্বার্থ  জড়িত আছে। বাংলাদেশের সাথে আমেরিকা যে বহুমাত্রিক সম্পর্ক আছে সেটা তারাও জানে। বেশ কিছু আলোচনা হওয়া পর আমেরিকা হয়তো বুঝতে পেরেছে যে, তারা যে তথ্যের ওপর ভিত্তি করে স্যাংশন দিয়েছে সেটার পেছেন অন্য কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। আর একারণে বাংলাদেশ সম্পর্কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা পাল্টাচ্ছে। যার জলন্ত প্রমাণ হলো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জো বাইডেনের সাক্ষাত এবং সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের প্রতি বাইডেনের সমথর্ন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭