ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির আন্দোলন: নেপথ্যে যারা


প্রকাশ: 28/09/2022


Thumbnail

বিএনপি এখন সরকার বিরোধী আন্দোলন করছে। বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বললে বোঝা যায় অন্যান্য বারের চেয়ে তারা এবার অনেক আশাবাদী। বিএনপি নেতারা বলছেন দেখেন, কিছু একটা ঘটবে। আন্দোলন সামনের দিনগুলোতে আরও বেগবান করবে বলে বিএনপি নেতারা বলছেন। নির্বাচনের বাকি এখনো প্রায় দেড় বছর। দেড় বছর আগে থেকেই বিএনপি আন্দোলনে মারমুখী আচরণ করছে কেন এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা প্রশ্ন। আবার বিএনপি এত আগে থেকে আন্দোলন করে সে আন্দোলন ধরে রাখতে পারবে কিনা সে নিয়ে সংশয় রয়েছে বিভিন্ন মহলে। কিন্তু এসব সংশয়ের জবাবে বিএনপি নেতারা এখন পর্যন্ত আশাবাদী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন বিএনপি একক ইচ্ছায় বা একক শক্তিতে আন্দোলন করছে না। বরং বিএনপির আন্দোলনের পেছনে নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছেন কিছু কিছু মহল। যারা বিএনপিকে রাজপথে নামার জন্য প্রলুব্ধ করেছে এবং রাজপথে মেনে সরকার পতনের প্রলোভন দেখিয়েছে। যে সমস্ত ব্যক্তিরা বিএনপির এই আন্দোলনকে উৎসাহিত করছে এবং যাদের আগ্রহের কারণে বিএনপি রাজপথে আন্দোলন করছে তাদের কিছু নিজস্ব স্বার্থ রয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মূলত সুশীল সমাজের একটি অংশ এবং বিভিন্ন পশ্চিমা মহল বিএনপিকে আন্দোলনের প্রলুব্ধ করছে। বিএনপির আন্দোলন করে একটি উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে এবং সেই পরিস্থিতিতে কোনো কোনো মহল ফায়দা লুটবে- এমন একটি পরিকল্পনা নিয়ে বিএনপির আন্দোলন এগোচ্ছে বলে কোনো কোনো মহল মনে করেন। বিএনপির এই আন্দোলনের নেপথ্যে যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছে পশ্চিমা কিছু মহল। পশ্চিমা কিছু মহল বিএনপিকে এখন আন্দোলনের জন্য প্রলুব্ধ করছে। কারণ বাংলাদেশের যে উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের স্বনির্ভরতা ইত্যাদি নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে কিছু ঈশ্বা এবং অস্বস্তি রয়েছে। তারা মনে করছে যে, যদি বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা না হয় তাহলে তাদের কর্তৃত্ব এখানে প্রতিষ্ঠিত হবে না। আর বিবেচনা থেকেই পশ্চিমা দেশের কোনো কোনো মহল বিএনপিকে আন্দোলনের পথ দেখাচ্ছে বলে কেউ কেউ মনে করে।

বিএনপির আন্দোলনের নেপথ্যে সুশীল সমাজের একটি অংশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে বিভিন্ন মহল মনে করেন। সাম্প্রতিক সময়ে অর্থপাচারসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার বিরুদ্ধে একাধিক তদন্ত চলছে এবং এই তদন্ত গুলোতে যদি শেষ পর্যন্ত তিনি প্রাথমিকভাবে দোষী প্রমাণিত হন। তাহলে তার বিরুদ্ধে মামলা হবে। আর এ সমস্ত এড়ানোর জন্যই বিএনপিকে মাঠে নামানোর ক্ষেত্রে উদ্বুদ্ধ করেছেন বলে কেউ কেউ মনে করেন। বিএনপির সাম্প্রতিক আন্দোলনের বক্তব্যগুলো একটু বিচার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, এ সমস্ত বক্তব্যগুলো সবই সুশীল সমাজের শেখানো বক্তব্য। বাংলাদেশের অর্থনীতি, দ্রব্যমূল্য, অর্থপাচার, রিজার্ভ ইত্যাদি নিয়ে যে সমস্ত কথাবার্তাগুলো বলা হচ্ছে সেই সমস্ত কথাবার্তাগুলো প্রতিনিয়ত সুশীল সমাজ বলছেন। সুশীল সমাজের কথাগুলোই লুফে নিচ্ছে বিএনপি। তাহলে কি সুশীল সমাজের ইঙ্গিতেই বিএনপির এই আন্দোলন? স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির রচনা? বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি বিভিন্নভাবে সক্রিয়। তারা দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। আর অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করা তখনই সম্ভব হবে যখন রাজনীতিতে একটি সহিংস এবং উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। আর এ কারণেই বিদেশে বসে যে সমস্ত স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি কাজ করছে তারা বিএনপিকে আন্দোলন করার জন্য প্রলুদ্ধ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিদেশে পলাতক কিছু ব্যক্তি নিরন্তর সরকারবিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। আর এই অপপ্রচারের প্রধান লক্ষ্য হলো বিএনপিকে তাকিয়ে তোলা। এখন প্রশ্ন হল যে, বিএনপি যে এই ত্রিমুখী পরামর্শে আন্দোলন করছে সেই আন্দোলনের ফল কি ঘরে তুলবে? শেষ পর্যন্ত যদি এই আন্দোলন থেকে ইতিবাচক কিছু হয় তাহলে কি বিএনপি লাভবান হবে? বিএনপির কোন কোন নেতার মধ্যেই এখন এই প্রশ্নটি বেশ বড় করে দেখা দিয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭